Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পরিচিত স্টাইলই বজায় রাখলেন অঞ্জন

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘উপসংহার’ আর ‘অগ্নিবাণ’ দুটো গল্পকে নিয়ে এ বারের ব্যোমকেশ। পাঠক মাত্রই জানেন, দুটোই বেশ জোরালো গল্প। এর সঙ্গে ‘সত্যান্বেষী’ গল্পের হালকা রেফারেন্স এসেছে। গল্পের মাঝে ব্যোমকেশ আর অজিতের প্রথম সাক্ষাৎ।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:১৬
Share: Save:

ব্যোমকেশ ও অগ্নিবাণ

পরিচালনা: অঞ্জন দত্ত

অভিনয়: যিশু সেনগুপ্ত, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, অঞ্জন দত্ত

৬/১০

হাইলি সাসপিশিয়াস! জটায়ুর অনেক দিন আগেকার সেই অমোঘ উক্তি আবার আওড়াতে ইচ্ছে করে। দুটো ভাল গল্প হাতে রয়েছে। সেই গল্প দুটোকে খুব সুন্দর করে মেলানো হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রেজেন্টেশন এত জোলো হয় কী করে? অঞ্জন দত্ত খুব সুন্দর করে নন-লিনিয়র চিত্রনাট্য সাজালেন আর পরদায় তুলে ধরতে গিয়ে জিনিসটা একেবারে ছড়িয়ে ফেললেন!

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘উপসংহার’ আর ‘অগ্নিবাণ’ দুটো গল্পকে নিয়ে এ বারের ব্যোমকেশ। পাঠক মাত্রই জানেন, দুটোই বেশ জোরালো গল্প। এর সঙ্গে ‘সত্যান্বেষী’ গল্পের হালকা রেফারেন্স এসেছে। গল্পের মাঝে ব্যোমকেশ আর অজিতের প্রথম সাক্ষাৎ। কোকেনের কারবারি মেস মালিক অনুকূলের ধরা পড়া ফ্ল্যাশব্যাকের মতো আসে। সুতরাং তিনটে ট্র্যাক রয়েছে ছবিতে। সেগুলো কিন্তু পরিচালক দিব্যি মুনশিয়ানার সঙ্গে মিশিয়েছেন। কোথাও ধৈর্যচ্যুতি ঘটে না, কারণ তিনি এক ঘণ্টা পঁয়তাল্লিশ মিনিটে বিষয়টা গুটিয়ে ফেলেছেন। এডিটিংয়েরও প্রশংসা করতে হয় যে কারণে।

আরও পড়ুন: ‘কপিল নিজেই ওর শোয়ের মান খারাপ করেছে’

ধৈর্যচ্যুতি একটা জায়গাতেই। অঞ্জনের এই ব্যোমকেশেরও কোনও উত্তরণ ঘটল না। যেটা তিনি এ বার দাবি করেছিলেন। তাঁর দাবি অনুযায়ী বড় ক্যানভাস, গ্র্যাঞ্জার, লার্জার দ্যান লাইফ ব্যাপার-স্যাপার...কিচ্ছুটি মিলবে না। রাস্তার ধারে কিছু লোক হইহই করে ছুটে গেল, দুম করে একটা বোম ফাটল...ব্যস! উত্তাল কলকাতার দৃশ্য দেখানো হয়ে গেল?

তবে অঞ্জনের ব্যোমকেশের একটা ফ্যান ফলোয়িং আছে। যে কারণে প্রতি বছর ধারাবাহিক ভাবে তাঁর ব্যোমকেশ বক্স অফিসে ভাল ফল করছে। এই ছবিও নিশ্চয়ই সেই ধারা অব্যাহত রাখবে। কারণ অঞ্জনোচিত স্টাইল এখানেও আছে। তিনি আড়ম্বরের মধ্যে না গিয়ে ঘরোয়া ভাবে গল্পটা বলেন। ভাল লাগবে যিশু আর শাশ্বতকেও। তাঁরা যে তুখড় অভিনেতা, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। যিশু প্রতিটা ব্যোমকেশে ক্রমাগত উন্নতি করেছেন। যিশু-শাশ্বতর গোয়েন্দাগিরিতে ফাঁকি নেই।

অঞ্জন আফসোস করেন এখনকার কোনও পরিচালক তাঁর অভিনেতা সত্তাকে ঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারেন না বলে। তিনি নিজেও কি ব্যবহার করতে পারলেন? ব্যোমকেশ-অজিত বাদে বাকি চরিত্ররা স্রেফ উপস্থিত। আলাদা করে মনে থাকে না। তবে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ছাড়া বোধহয় আর কেউ মালতীর চরিত্রে এতটা ‘চিজি’ হতে পারতেন না! যথার্থ বাছাই। কিন্তু আদৌ কি প্রয়োজন ছিল?

অঞ্জন যে স্টাইলে ব্যোমকেশ বানান, এ বারেও তা-ই করেছেন। তাতে সমস্যা ছিল না। খামোকা গুচ্ছের প্রতিশ্রুতি না দিলেই বোধহয় ভাল হতো!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE