Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

কালীপুজোর সঙ্গে কলকাতার সম্পর্ক নিতান্ত ঘনিষ্ঠ। শক্তিপীঠ কালীঘাট থেকেই কলকাতার গৌরব, এমন কথা একদা অনেকেই বলতেন। চিতু ডাকাত বা রঘু ডাকাতের কালীর গল্প তো সুপরিচিত। কেওড়াতলা, কাশী মিত্র ঘাট কি গড়িয়ায় দেখা মেলে শ্মশানকালীর, এমনকী শিয়ালদহ অঞ্চলে শ্মশানকালীর মন্দিরও আছে।

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৫ ০১:০৯
Share: Save:

কালীক্ষেত্র কলিকাতা

কালীপুজোর সঙ্গে কলকাতার সম্পর্ক নিতান্ত ঘনিষ্ঠ। শক্তিপীঠ কালীঘাট থেকেই কলকাতার গৌরব, এমন কথা একদা অনেকেই বলতেন। চিতু ডাকাত বা রঘু ডাকাতের কালীর গল্প তো সুপরিচিত। কেওড়াতলা, কাশী মিত্র ঘাট কি গড়িয়ায় দেখা মেলে শ্মশানকালীর, এমনকী শিয়ালদহ অঞ্চলে শ্মশানকালীর মন্দিরও আছে। চেতলা এলাকা বহু বিচিত্র ধরনের সর্বজনীন কালীপ্রতিমার জন্য বিদেশি গবেষকদেরও নজর কেড়েছে। কালীপ্রতিমার স্থায়ী মন্দির নিমতলার আনন্দময়ী, সিদ্ধেশ্বরী, করুণাময়ী, ঠনঠনিয়া, শ্যামবাজারের কালীমন্দির, বউবাজারের ফিরিঙ্গি কালী কি পুঁটে কালী বিখ্যাত। তন্ত্রসাধক আশুতোষ মুখোপাধ্যায় মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে প্রতিষ্ঠা করেন অষ্টাদশভুজা গুহ্যকালীমূর্তি। রামদুলাল সরকার স্ট্রিটে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের ‘বসা কালী’ এমনই আর এক দুর্লভ রূপ। মতিলাল বন্দ্যোপাধ্যায় বিডন স্ট্রিটে থাকাকালীন জঙ্গলঘেরা জায়গায় হঠাৎ মাটির কালীমূর্তি দেখতে পান। স্থানীয় মিত্র পরিবার কালী প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাদের জায়গা দান করেন। বর্তমানে এই পরিবারের দুই কন্যা তনুশ্রী এবং মধুশ্রী এখন ‘আনন্দময়ী কালীমন্দির’ দেখভালের দায়িত্বে। বিবাহিতা দুই বোনের তত্ত্বাবধানে দৈনন্দিন পূজা করেন পুরোহিত। ফি-বছর কালীপুজোর আট-দশ দিন আগে অঙ্গরাগ হয় একই মাটির প্রতিমায় (সঙ্গের ছবি শুভাশিস ভট্টাচার্য)।

এই কালীপুজো নিয়েই এ বার একটি কাজের বই প্রকাশ করেছেন নবকুমার ভট্টাচার্য, এর আগে যিনি দুর্গাপুজো নিয়ে লিখেছেন একাধিক জরুরি বই। কালীপুজোর নিয়মকানুন ও জোগাড় (পরি: পুস্তক বিপণি) শুধু পুজো-প্রস্তুতির বই নয়, আছে কালীপুজো নিয়ে বহুবিচিত্র তথ্য, যেমন, ১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর কালীপুজোর দিনেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র আজাদ হিন্দ ফৌজ প্রতিষ্ঠা করেন। চৈতন্যময় নন্দ প্রকাশ করেছেন পুস্তিকা দেবী কালিকা, যেখানে আছে শ্রীচৈতন্যের নানা দেবীতীর্থ পরিক্রমার কথা, কাজি নজরুলের কালীসাধনার প্রসঙ্গ।

ধ্রুপদী হলিউড

আধুনিক চলচ্চিত্রের ভাষা তৈরি হয়েছিল তাঁর হাতে, সিনেমার অন্যতম পুরোধাপুরুষ মানতেন তাঁকে সত্যজিৎ, লিখেছেন ‘গল্প বলার প্রয়োজনে শট-এর পর শট জুড়ে গ্রিফিথ ক্রমে চলচ্চিত্রের সাংগীতিক দিকটা সম্পর্কে সচেতন হন।’ (প্রবন্ধসংগ্রহ। আনন্দ) ডি ডব্লিউ গ্রিফিথ-এর (১৮৭৫-১৯৪৮) ‘দ্য বার্থ অব আ নেশন’ দেখানো হচ্ছে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে। ১৯১৫-য় তৈরি এ-ছবি নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি আমেরিকায়, কারণ শিল্পগুণ সত্ত্বেও আফ্রো-আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গদের দুর্নীতিপ্রবণ হিসেবে দেখানো হয় এ-ছবিতে। প্রবল প্রতিবাদ সত্ত্বেও বক্স-অফিস রেকর্ড ভেঙে দেয় ছবিটি। শ্বেতাঙ্গ অভিনেতারা কালো মেকআপ নিয়ে কৃষ্ণাঙ্গ-চরিত্রে অভিনয় করেন, তেমনই একটি দৃশ্য সঙ্গের স্থিরচিত্রটি। ‘এমন এক ঐতিহাসিক ছবির শতবর্ষে তা সব প্রজন্মের দর্শককে বড় পর্দায় দেখানো আমাদের দায়িত্ব,’ জানালেন উৎসব-অধিকর্তা যাদব মণ্ডল। ১৪-২১ নভেম্বরের এ উৎসবে ‘ফোকাস অন হলিউড’ বিভাগটি শুরুই হবে এই ধ্রুপদী ছবিটি দেখিয়ে, সঙ্গে আরও ছ’টি ক্লাসিক: দ্য জেনারেল, মিস্টার স্মিথ গোজ টু ওয়াশিংটন, ক্যাসাব্লাঙ্কা, বেন-হার, ওয়েস্ট সাইড স্টোরি, অ্যাপোক্যালিপ্স নাও।

টোটো কন্যা

এক সময় সংখ্যাটি ছিল মাত্র তিনশো। গত ৫০ বছরে তা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। তবু তা-ই বা কতটুকু? টোটোরা দেশের অন্যতম ছোট জনজাতি বই তো নয়। আলিপুরদুয়ারের মাদারিহাট ব্লকে বিচ্ছিন্ন টোটোপাড়া। প্রকৃতির উপরে ভর করে বাঁচা। দারিদ্র নিত্যসঙ্গী। বাড়তি বিপদ ভুটান থেকে আসা নেপালিরা, যাঁদের প্রভাবে নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি হারিয়ে ফেলছেন টোটোরা। তবু নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। লেখাপড়া শিখছেন। তাঁদেরই এক জন শোভা টোটো (সঙ্গের ছবি)। গত বছর তিনি ভূগোলে স্নাতক হয়েছেন, আপাতত থাকেন কলকাতায়। তাঁরই ঘরে ফেরা ঘিরে বোনা হয়েছে টোটো ভাষায় তৈরি প্রথম ছবি ‘দ্য উইন্ড ইন দ্য মারুয়া ফিল্ড’। ফিল্মস ডিভিশন প্রযোজিত ৫২ মিনিটের ছবিটি দেখা যাবে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে। পরিচালক তথা সম্পাদক শঙ্খের এটি দ্বিতীয় ছবি। প্রথম ছবি ‘দুই ধুরানির গল্প’ গত বার এই উৎসবে সেরা তথ্যচিত্রের শিরোপা পেয়েছিল।

বৃক্ষনাথ

‘তোমার রৌদ্র, তোমার রুদ্র, তোমার তেজ, আমি মানি, কিন্তু ঐ তেজোময় পিণ্ড, আমি তোমার ভয়ংকর অগ্নি— ভল্লার বিরুদ্ধে। যেখানে গাছ নেই, জল নেই, ছাই ওড়া মাটিতে গাছ লাগাব।’ প্রায় ছয় লক্ষ গাছকে সম্বল করেই পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ানে ‘ভালোপাহাড়’ গড়ে তোলেন কমল চক্রবর্তী। সেটা ১৯৯৬। বছর কুড়ি কাটিয়ে তাঁর সঙ্গী ২০০ সাঁওতাল শিশু, গরু, পুকুর আর চাষবাস। কখনও ব্যস্ত ছোটদের পড়ানোয়, কখনও গাছের পরিচর্যায়, আবার কখনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে। নিয়মিত বৃষ্টির জল সংগ্রহ করেন। হয় কালো সুগন্ধি চালের মতো হরেক চাষবাসও। পাশাপাশি তিনি কবি ও গদ্যকার। জামশেদপুর থেকে প্রকাশিত ‘কৌরব’ পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। লিখেছেন নাটক। পেয়েছেন নানা পুরস্কার। ‘ভালোপাহাড়’-এর ‘বৃক্ষনাথ’ কমল চক্রবর্তীর কথা শোনা যাবে আজ সন্ধে ৬টায় বাংলা আকাদেমিতে। সূচনা দেবেশ রায়। আয়োজনে কলিকাতা লেটার প্রেস।

শিশু দিবসে

দেখা হয়ে যেতে পারে ডাইনোসোরের ডিমের সঙ্গে! ইচ্ছে হলে কুমোরের চাকা ঘুরিয়ে বানাতে পারো রকমারি পাত্র। কিংবা করতে পারো ব্লক প্রিন্টিং। মজে যেতে পারো ছবির খেলায়। ছবিতেই থাকবে সূত্র, সেটা ধরেই মিলবে কোনও পাখি বা সরীসৃপ। ইচ্ছে মতো ছোঁওয়া যাবে রকমারি পাথর, বারণ করার কেউ নেই। ছয় থেকে পনেরো বছরের স্কুল পড়ুয়াদের জন্য এমন অভিনব আয়োজন ১৪ নভেম্বর শিশু দিবসে, থিংক আর্টস-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে, ভারতীয় সংগ্রহশালায়। ছোটদের জন্য দরজা খুলে যাবে ১১টায়। শেষ হবে বিকেল পাঁচটায়। কর্মশালায় যোগ দিলে আগে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, বাকি সব সক্কলের জন্য। সাড়ে পাঁচটায় অনুষ্ঠান ‘উৎসবের বিজয়া’। থাকবেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়।

লৌকিক

কালীপুজোর সন্ধেতেই আয়োজিত হয় লক্ষ্মী-অলক্ষ্মীর পুজো। গোবর, ছেঁড়া চুল আর কড়ি দিয়ে তৈরি হয় কুরূপা অলক্ষ্মীর মূর্তি। পুরোহিত বাঁ হাতে এই অলক্ষ্মীর পুজো করে মূর্তিটি ফেলে আসেন আবর্জনা ফেলবার স্থানে। সঙ্গে ছোট ছেলেমেয়েরা কুলো বাজাতে থাকে, তারপর সেই কুলো ভেঙে ফেলা হয়। এরপর হাত-পা ধুয়ে পুরোহিত বসেন লক্ষ্মীর আরাধনায়। আতপ চালের গুঁড়োর সঙ্গে রং মিশিয়ে তৈরি করা হয় লক্ষ্মী নারায়ণ আর লক্ষ্মী কুবেরের মূর্তি। সংক্রান্তিতে গোবরের একটা মুখের মতো করে তাতে কড়ি আটকে লাগিয়ে দেওয়া হয় ধানের গোলাতে। এ সবই জড়িত কৃষির সঙ্গে। কৃষি না থাক, এ শহরে এখনও বেঁচেবর্তে রয়েছে লৌকিক পরম্পরা।

পুজোশিল্প

স্ট্রিট আর্ট তো বটেই, তবে এই সর্বজনীনের আবেদন এখন বিশ্বজনীন। কিন্তু কী ভাবে গড়ে ওঠে এই পথশিল্প! এ নিয়েই আজ সন্ধ্যে ৬টায় বিশিষ্ট ‘থিম’ শিল্পীদের নিয়ে আলোচনাসভা মায়া আর্ট স্পেস গ্যালারিতে ‘পুজোশিল্প’ শীর্ষকে। পার্থ দাশগুপ্ত, সনাতন দিন্দা, বিমল কুণ্ডু বা সুশান্ত পালের মতো পুজো শিল্পীরা স্থির এবং ভিডিয়োচিত্র সহযোগে বলবেন তাঁদের গত ১৪-১৫ বছরের কাজের কথা। ছোট্ট বিন্দু ভাবনা থেকে কী ভাবে গড়ে ওঠে পূর্ণাঙ্গ মণ্ডপ ও মূর্তি, তারই দিশা খুঁজবে এই অনুষ্ঠান, সম্ভবত এই প্রথম। থাকবেন বড় পুজোর সংগঠক, শিল্পবেত্তা ও রসিক এবং পুজো পাগল মানুষজন।

নিউ সিনেমা

মেয়েদের নিয়ে ছবি। সব কিছু খোয়ানোর পর শহর ছেড়ে তারা ঠাঁই নিয়েছে মফস্‌সলে। তিনটি প্রজন্ম, আর তাদের জীবনে কেবলই জন্মায় জটিলতা। ইতালির ছবি ‘কোয়ায়েট ব্লিস’ (সঙ্গের ছবি), পরিচালক এদোয়ার্দো উইনস্পিয়ার। এটি দিয়েই শুরু এ বারের সিনে সেন্ট্রাল-এর উৎসব ‘ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম অব নিউ সিনেমা’। ১৫-২১ নভেম্বর, এলিট-এ বেলা ১২টা, দুপুর ২টো, সন্ধে ৬টায় মোট ৫টি করে ছবি প্রতিদিন। নতুন ভাবনার সব ছবি— ইউরোপ এশিয়া আর লাতিন আমেরিকার। শতবর্ষ উপলক্ষে ইনগ্রিড বার্গম্যান, আর প্রয়াত ওমর শরিফ ও অনিতা একবার্গ-কে শ্রদ্ধা জানাতে তাঁদের ছবিও থাকছে। ১৫ নভেম্বর সন্ধে ৬টায় উদ্বোধন করবেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। সন্ধ্যা রায়কে সারা জীবনের কাজের জন্য ‘সত্যজিৎ রায় পুরস্কার’-এ সম্মানিত করা হবে সে সন্ধ্যায়।

শূদ্রক উৎসব

‘একদা বৃহৎ বঙ্গ বলে পরিচিত ছিল যে সব ভূখণ্ড, সেখানকার নাটকই দেখানোর আয়োজন করেছি, কলকাতার থিয়েটার-পাগল দর্শকের কাছে। অসম, ওড়িশা, বিহার— তিনটি প্রদেশের নাট্যগোষ্ঠীই আসছে তাদের নাটক নিয়ে আমাদের উৎসবে।’ বলছিলেন দেবাশিস মজুমদার, শূদ্রক-এর কর্ণধার। ১৩ নভেম্বর থেকে অ্যাকাডেমি’তে শুরু হচ্ছে যে ‘শূদ্রক উৎসব’, তাতে আদ্যোপান্ত ভারতীয়তার চিহ্ন। অন্য প্রদেশের সঙ্গে রয়েছে এ-বঙ্গেরও নাটক। ১৫ নভেম্বর অবধি নাট্যোৎসব। ১৫-২০ নভেম্বর অ্যাকাডেমিতেই কুড়ি জন বিশিষ্ট চিত্রকর ও ভাস্করের প্রদর্শনী, উদ্বোধন করবেন গণেশ হালুই।

জনগণের রবীন্দ্রনাথ

গীতবিতান-এর জন্মবৃত্তান্তে জড়িয়ে আছে শান্তিনিকেতন আশ্রমের তরুণ কর্মী সুধীরচন্দ্র করের নাম। কবির শেষ জীবনের আরও অনেক নতুন গ্রন্থ প্রকাশ পর্বেও তাঁর অনুচ্চারিত উপস্থিতি। স্বাধীনতা আন্দোলন এবং অভয়াশ্রমের কাজেও তাঁর যোগ। লবণ আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাবরণ করলে গীতবিতান প্রকাশের কাজ সাময়িক ভাবে গতিহারা। ৯ জুলাই ব্যথিত উদ্বিগ্ন কবি অমিয় চক্রবর্তীকে লিখলেন, ‘সুধীর কর জেলখানায়, আমার বই ছাপানো সম্প্রতি লবণাশ্রু জলে পরিপ্লাবিত।’ সুধীরচন্দ্র কর পঁচিশ বছর কাটিয়েছিলেন রবীন্দ্রসান্নিধ্যে। জনসাধারণের জন্য কবি কী ভেবেছেন, কী করেছেন, সে সবেরই আলোচনা জায়গা নিয়েছে তাঁর জনগণের রবীন্দ্রনাথ (সিগনেট প্রেস) গ্রন্থে। অভিজ্ঞতার আলোতে ও অনুভূতির শ্রদ্ধাদীপ্ত প্রকাশে সুধীরচন্দ্র করের প্রবন্ধগুলি উজ্জ্বল, দেশহিতব্রতী রবীন্দ্রনাথের পরিচয়বাহী।

জীবনীকার

আগ্রহ তাঁর উনিশ শতকের নানা বিচিত্র চরিত্রে। দক্ষিণ আফ্রিকার খোইখোই উপজাতির (ডাচরা যাঁদের নাম দিয়েছিল হটেনটট) সারা বার্টম্যান তাঁর বিচিত্র শারীরিক গঠনের জন্য উনিশ শতকের গোড়ায় ইউরোপে রীতিমত প্রদর্শবস্তু হয়ে উঠেছিলেন, তাই নিয়ে কত না বিতর্কের ঝড়। তাঁকে নিয়ে র‌্যাচেল হোমসের সাড়া ফেলা বই হটেনটট ভিনাস: দ্য লাইফ অ্যান্ড ডেথ অফ সার্টজি বার্টম্যান। এমনই আর এক বর্ণময় চরিত্রকে নিয়ে লিখেছেন দ্য সিক্রেট লাইফ অফ ড: জেমন ব্যারি। তবে তাঁর তৃতীয় জীবনী বোধহয় খ্যাতি পেয়েছে সর্বাধিক: কার্ল মার্কস-কন্যাকে নিয়ে ইলিয়ানর মার্কস: আ লাইফ। লেখক হিসেবে পেয়েছেন নানা সম্মান। পড়িয়েছেন লন্ডন ও সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে, যুক্ত ছিলেন ১৯৯৮-এ আমাজন ইউকে-র সূচনা পর্বে। ২০০০ সাল থেকেই ব্রিটিশ কাউন্সিলের বিভিন্ন সাহিত্য উৎসব ও আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে আছেন র‌্যাচেল। ইরাক ও প্যালেস্তাইন সাহিত্য উৎসবেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এ বারে কলকাতা ঘুরে গেলেন ব্রিটিশ কাউন্সিল ও টাটা স্টিল কলকাতা লিটারারি মিট-এর উদ্যোগে, মালবিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বললেন মার্কস-কন্যার জীবনীগ্রন্থ প্রসঙ্গে।

প্রতিক্রিয়া

শনিবার রাত থেকে ভাবনাটা মাথায় ঘুরছিল, রবিবার দুপুরে লিখেই ফেললেন। অসহিষ্ণুতার রাজনীতি যে ভাবে বিষাক্ত করে তুলছে পরিবেশ, তারই প্রতিক্রিয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলমে।

অসহিষ্ণু

ভাবনায় কেন এত খরা?

কেনই বা চিন্তা এত দীর্ণ?

কোথায় বিবেক? রুদ্ধ ফানুস।

আবেগ কেন এত জীর্ণ?

বিভেদের কঙ্কালীতলায় শুয়ে কেন এত বিভোর?

তবে কি দর্শনে অশনিসঙ্কেত, সঙ্কীর্ণতা জীবনভর?

কেন মুখে এত লাগামহীন কথা? কেনই বা এত ক্ষমতার দম্ভ?

অহঙ্কারের স্বর্ণমিনারে অসহিষ্ণুতাই স্তম্ভ।

ঔদ্ধত্যের তো কূলকিনারা নেই, না আছে ভাবনার শক্তি।

ক্ষমতার সূর্যোদয়ে বাড়ে অক্ষমতা, রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিনাশ-ভক্তি।

হঠাৎ গজিয়ে ওঠা অন্ধকারাচ্ছন্ন তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে।

বড় অহং ঝরে পড়বে, হবে লাশ।

সহনশীলতার গগনে দুর্ভিক্ষের মহামারী।

মগজে শুধু মরুভূমি আর মরুবৃক্ষের হুড়োহুড়ি।

চাপিয়ে দেওয়া ও চাপ দেওয়ায় লঙ্কাকাণ্ডের যাতনা।

আসলে সব লবডঙ্কা, নেই কোনও সীমানা।

দেবতারাও নাকি তাদের মেম্বার, তাদের উপরেও এদের অধিকার।

গ্রাসাচ্ছাদন কী ভাবে করছে কারা, সেটাও নাকি ঠিক করে দেবে এরা।

সহিষ্ণুতা আজ বড় অসহায়।

অসহিষ্ণুতায় ভরেছে ধরা।

কে কার বিচার করবে?

সহিষ্ণু হও ধরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE