Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

আমি তখন মেক্সিকোতে পড়াই, এখানে মেজ জেঠু খুব অসুস্থ শুনে ফোন করলাম। ধরতে পারলেন, বললেন ‘বুঝলি টার্নিং পিচ ছিল, বলটা ঘুরছিল খুব, আমি কিন্তু বোকার মতো খোঁচা দিইনি, ছেড়ে দিয়েছি। আউট হইনি, বেঁচে গেছি।’ জেঠু-বাবা-কাকারা বাঙাল কথা বলতেই ভালবাসেন, আর ভালবাসেন মৃত্যু নিয়ে মজা করতে।’’

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০০:০৩
Share: Save:

মৃত্যু নিয়ে তিন বন্ধুর থোড়াই কেয়ার

আমি তখন মেক্সিকোতে পড়াই, এখানে মেজ জেঠু খুব অসুস্থ শুনে ফোন করলাম। ধরতে পারলেন, বললেন ‘বুঝলি টার্নিং পিচ ছিল, বলটা ঘুরছিল খুব, আমি কিন্তু বোকার মতো খোঁচা দিইনি, ছেড়ে দিয়েছি। আউট হইনি, বেঁচে গেছি।’ জেঠু-বাবা-কাকারা বাঙাল কথা বলতেই ভালবাসেন, আর ভালবাসেন মৃত্যু নিয়ে মজা করতে।’’— নতুন ছবি ‘পিস হ্যাভেন’-এর প্লটটা কী করে মাথায় এল, বলছিলেন সুমন ঘোষ। ‘এই পরিবারের মতো কাউকে মৃত্যু নিয়ে এমন হাসি-ঠাট্টা-মশকরা বা আলোচনা করতে দেখিনি। বাবা সল্টলেকে তাঁর সমবয়সি পড়শিদের নিয়ে একবার পিস হ্যাভেন করতে উদ্যোগী হন। এসব থেকেই এ-ছবির ভাবনা শুরু।’ ফ্লোরিডায় অর্থনীতির শিক্ষক সুমনের প্রথম ছবির বিষয় অমর্ত্য সেন। এরপর কাহিনিচিত্র... পদক্ষেপ, দ্বন্দ্ব, নোবেল চোর, শ্যামলকাকু, কাদম্বরী... প্রতিটি ছবিই দেশ-বিদেশের নানা ফিল্মোৎসবে প্রদর্শিত, সম্মানিত, পুরস্কৃত। ‘পিস হ্যাভেন’-এরও ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছে বুসান ফেস্টিভ্যালে, দেখানো হয়েছে মুম্বই ফেস্টিভ্যালে। ‘পদক্ষেপ’-এ মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুবাদে দেশের সেরা অভিনেতার শিরোপা পান সৌমিত্র, ‘পিস হ্যাভেন’-এও তিনি তিন মুখ্য চরিত্রের অন্যতম। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বা অমর্ত্য সেন এ-ছবির প্রেরণা, ‘ব্যক্তিজীবনে ওঁরা মৃত্যু নিয়ে একেবারেই সেন্টিমেন্টাল নন, নির্মোহ।’ জানান সুমন। সৌমিত্রর দুই বন্ধুর চরিত্রে অরুণ মুখোপাধ্যায় ও পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘তিন বন্ধুর এটা একটা জার্নি (বাঁ দিকে স্থিরচিত্র)। মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া। আমরা মৃত্যুর কথা শুনলে ভেঙে পড়ি, দুঃখ পাই, এঁরা পরোয়াই করেন না, মৃত্যু এঁদের কাছে যেন জীবনেরই একটা রূপ। ছবির ভিস্যুয়াল বদলে-বদলে যায়, ঘন সবুজ থেকে শুরু, ধূসর পাহাড় হয়ে, মরুভূমি হয়ে, সমুদ্রে এসে শেষ।’ সুমনের এ-ছবি ৮ জানুয়ারি থেকে দেখতে পাবেন কলকাতার মানুষজন।

বারোমাস

‘বারোমাস’-এর তহবিল তৈরির জন্যে ১৯৭৮-এ শম্ভু মিত্র তৃপ্তি মিত্র শেষ বার ‘রাজা অয়দিপাউস’ করেন ‘বহুরূপী’-র ব্যানারে। জুনে ‘বারোমাস’ বেরল অশোক সেনের সম্পাদনায়। আগের বছর জরুরি অবস্থার অবসানের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক ক্ষমতারও পালাবদল। ‘সেই যুগান্তের মুহূর্তে অশোক সেন বারোমাস পত্রিকা শুরু করেন... সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু-সহকর্মী একাধিক প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিক, শিল্পী, ঐতিহাসিক, সমাজবিজ্ঞানী। আর এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী যাদের তিনি উৎসাহ দিয়ে, শিক্ষিত করে, লেখক বানালেন।’ লিখছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক। নানা পর্বে প্রচ্ছদ এঁকেছেন রামকিঙ্কর থেকে গণেশ পাইন। অর্থনীতি নিয়ে ভবতোষ দত্তের লেখা, নীহাররঞ্জন রায়ের ‘ভারতেতিহাস জিজ্ঞাসা’, দেবব্রত বিশ্বাসের ‘গানের মানুষ’, যামিনী রায়ের চিঠিপত্র বা সত্যজিৎ রায়ের দুর্লভ সাক্ষাৎকার... এমন সব রচনা, ৩৭ বছর ধরে বাংলা ভাষায়— ইতিহাসে বিরল। এ বারের পত্রিকাও এক গুচ্ছ নতুন চিন্তার রচনা নিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে। এই সংখ্যার সমস্ত কাজ শেষ করে নিঃশব্দে চলে গেলেন অশোক সেন। দীপেশ চক্রবর্তীর বই দ্য কলিং অব হিস্ট্রি নিয়ে তাঁর শেষ সম্পূর্ণ রচনাও ধরা রইল সংখ্যাটিতে। তাঁকে নিয়ে স্মরণসভা, ৩০ ডিসেম্বর ত্যাগরাজ হলে সন্ধে ৬টায়।

নিজস্ব

কলকাতার রাত্রির রদেভুঁতে, বিশেষত কবিদের আড্ডায় একটা কথা চালু ছিল অনেক দিন থেকেই। বাংলা কবিতার দুটো ‘স্ট্রিম’: ‘মেন’ আর ‘ভূমেন’। ভূমেন্দ্র গুহ। পোশাকি নাম ডক্টর বি এন গুহরায়। জাঁদরেল চিকিৎসক কিন্তু সম্পূর্ণ কাব্যে ডুবে থাকতেন সব সময়। ফতুয়া-ঢোলা পাজামা-কাঁধে কাপড়ের ব্যাগ আর এক মুখ উজ্জ্বল হাসি। আড্ডাধারী হিসেবে চমৎকার ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে কবি ও জীবনানন্দ গবেষক হিসেবে সুপরিচিত। পেয়েছেন রবীন্দ্র পুরস্কার। জন্ম বিলাসপুরে ১৯৩৩-এ, বিদায় নিলেন ২২ ডিসেম্বর সকালে। জীবনানন্দ দাশের গুরুতর আহত হওয়া ও চলে যাওয়া পর্যন্ত ছায়াসঙ্গী, পরম মমতায় অপ্রকাশিত জীবনানন্দ-রচনা প্রকাশের কাজ করেছেন আজীবন। পাশাপাশি সম্পূর্ণ নিজস্ব কাব্যস্বর ছিল তাঁর, কিছুটা আ়ড়ালেই থেকে গেল তা।

শেষ ও শুরু

‘ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা সামাজিক ভাবে বর্ষশেষে নবীন বর্ষবরণ উদ্‌যাপন করেন সকলেই। তাহলে নাটকের লোকজন কী ভাবে বর্ষ শেষ বা শুরুর উৎসব করবে, সে ভাবনা থেকেই আমাদের নাট্যস্বপ্নকল্প-এর আয়োজন।’ বলছিলেন বিভাস চক্রবর্তী, অন্য থিয়েটার-এর কর্ণধার। ১৯৯৯-এ সূচনা, এ বারও ৩১ ডিসেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায় অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠান শুরু। বক্তৃতায় পবিত্র সরকার, মেঘনাদ ভট্টাচার্যকে সম্মাননা। রাত ১০টায় রবীন্দ্রসদনে নাট্যোৎসবের সূচনায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অভিনীত হবে বিজন ভট্টাচার্য মোহিত চট্টোপাধ্যায় মনোজ মিত্র রচিত নাটক। শম্ভু মিত্র বিজন ভট্টাচার্যের জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে তাঁদের নিয়ে নাট্যব্যক্তিত্বদের রচনায় ঋদ্ধ পুস্তিকাও প্রকাশ পাবে। অন্য দিকে বছর শুরুতেই পুনর্মিলনের ডাক। ছোট মাঠ, বড় মাঠ, চ্যাপেলের কাছে, জামরুলতলায়। আবার সকলের সঙ্গে সকলের দেখা। যে যেখানেই থাকুন না কেন। দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ গার্লস হাইস্কুলের প্রাক্তনী সংগঠনের উদ্যোগে ৩ জানুয়ারি পুনর্মিলন উৎসব। স্কুল অডিটোরিয়ামে সকাল ১০টায়।

রবীন্দ্রতীর্থ

১৯২৬ সালে রবীন্দ্রনাথের ইউরোপ ভ্রমণ নানা কারণেই ব্যতিক্রমী। ফাসিস্ত ইতালির বিষয়ে কবির মনোভাব নিয়ে তখন দেশবিদেশে নানা তর্ক। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর, এই আড়াই মাসে হঠাৎ দেখা দিল ২৪টি গানের স্তবক, কবি কোলাহল থেকে সঙ্গীতে আশ্রয় নিলেন। এগুলি নিয়েই রবীন্দ্রতীর্থের সহায়তায় লন্ডনের ‘দক্ষিণায়ন’ নিবেদন করছে ‘বাসায়-ফেরা ডানার শব্দ।’ ২ জানুয়ারি সন্ধে ৬টায় রবীন্দ্রতীর্থ প্রেক্ষাগৃহের এই অনুষ্ঠানে ভাষ্যপাঠ, সঙ্গীত ও নৃত্যে অংশগ্রহণ করবেন সুবীর মিত্র, অনিন্দিতা কাজী, আনন্দ গুপ্ত, দেবলীনা কুমার, অর্কদেব ভট্টাচার্য প্রমুখ। অন্য দিকে, নিজেরা কিছু করবেন ভেবেই লেক অ্যাভিনিউ অঞ্চলের ক’জন গৃহবধূ তৈরি করেন ‘দক্ষিণের বাতায়ন’। নাচ-গান চর্চার পাশাপাশি চলত প্রশিক্ষণও। ২ জানুয়ারি উত্তম মঞ্চে তাদের দশম বার্ষিক অনুষ্ঠানে মঞ্চস্থ হবে বুদ্ধদেব গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গীত পরিচালনায় নৃত্যনাট্য মর্জিনা-আবদাল্লা। সংবর্ধনা দেওয়া হবে নৃত্যশিল্পী মধুবনী চট্টোপাধ্যায় ও সঙ্গীতশিল্পী মনোজমুরলী নায়ারকে।

সিঞ্চন

চরম আর্থিক দুর্দশাতেও প্রতিভার জ্যোতি সব অন্ধকার ম্লান করে দেয় যদি কেউ সাহায্যের হাত বাড়ায়। দশ বছর ‘সিঞ্চন’ গোষ্ঠী এই কাজ করছে। জনা চার মেধাবী ও দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীকে সাহায্যের মধ্যে যে চলা শুরু, আজ সেই সংখ্যা পাঁচশোর কাছাকাছি। তবু সংগ্রাম নিরন্তর, প্রয়োজন অর্থ, কাজের মানুষের। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধে ছ’টায় গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ হলে ‘সিঞ্চন’-এর সাহায্যে একটি সঙ্গীতানুষ্ঠানে রাগসঙ্গীত পরিবেশন করবেন সংগীতশিল্পী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুগত মারজিৎ।

ধ্রুপদী

সারদা মায়ের জন্মতিথিকে স্মরণ করে গত বছর থেকে যে সংগীতানুষ্ঠান শুরু করেছে খেমপুর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ ভাবচক্র এবং গোকুল নাগ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, সেখানে মুখ্য শিল্পীরা সকলেই নারী। ২ জানুয়ারি বেলা ১.৩০ থেকে শোভাবাজার নাটমন্দিরে সরোদে চন্দ্রিমা মজুমদার, কণ্ঠসঙ্গীতে সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মিতালি ভৌমিক, আরতি আঙ্কলেকর, বেহালায় কলা রামনাথ আর সেতারে মিতা নাগ। অন্য দিকে, চৌধুরীদের পারিবারিক ঐতিহ্যের মধ্যেই ছিল থিয়েটার ও গান, জানালেন অনিরুদ্ধ চৌধুরী। এ বারও নতুনদের সুযোগ ও প্রবীণদের সম্মান জানাতে গড়িয়াহাট চৌধুরী হাউস-এ ১-৩ জানুয়ারি দুপুর ১.৩০ থেকে চৌধুরী হাউস মিউজিক কনফারেন্স এবং ৮-১০ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬.৩০-এ চৌধুরী বাড়ির থিয়েটার উৎসব। আয়োজনে ক্যালকাটা পারফর্মিং আর্টস ফাউন্ডেশন।

টেলিস্কোপ

যত তারা আছে আকাশে তাদের সাপেক্ষে কোথায় আমাদের অবস্থান? উত্তর পেতে সপ্তদশ শতাব্দীর গোড়ায় তৈরি হয়েছিল দুরবিন, যা দূরকে কাছে আনে। আজ এসেছে তার নানা রকমফের। কলকাতায় রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজে ফলিত গণিত বিভাগ এ বার শুরু করল দুরবিনে আকাশ দেখা। এন আর সেন ভবনের ছাদে সম্প্রতি বসল এক অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ। ‘এই দুরবিন সম্পূর্ণ কম্পিউটারচালিত, এমন যন্ত্র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম,’ বললেন পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের প্রাক্তন সায়েন্টিফিক অফিসার বিপাশ দাশগুপ্ত। তাঁর উপর দায়িত্ব ছিল এটি বসানর। উদ্বোধন করলেন উপাচার্য সুগত মারজিৎ। ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষক তনুকা চট্টোপাধ্যায় জানালেন, ‘এই মুহূর্তে ফলিত গণিতের জ্যোতির্পদার্থ বিজ্ঞানের স্নাতকোত্তররাই হাতেকলমে শিখবে। তবে এর ব্যবহার নিয়ে ওয়ার্কশপ করাতে চাই।’

নৃত্যধারা

নব্বই দশকের মাঝামাঝি এক চিলতে ঘরে অল্প ক’জন ছাত্রী নিয়ে ‘বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন’-এর সূচনা। সেই থেকে বার্ষিক অনুষ্ঠান কখনও বাদ পড়েনি। এ বারও রবীন্দ্র-নজরুল, ছড়া গান রূপকথায় ছোটদের নাচ আর পরে শ্রাবণী সেনের পরিচালনায় রবীন্দ্রসংগীত— এ ভাবেই সাজানো হয়েছে জয়িতা বিশ্বাসের সংস্থার ২০তম বার্ষিক অনুষ্ঠান। থাকবে নৃত্য আলেখ্য ‘বন্দেমাতরম’। ২৯ ডিসেম্বর দমদম রবীন্দ্রভবনে। অন্য দিকে সে দিনই সন্ধ্যায় বেলগাছিয়া দত্তবাগানের মহিলা সমিতিতে অনুষ্ঠিত হবে সঞ্জীব ভট্টাচার্যের মণিপুরির সঙ্গে মধুমিতা পাল ও তাঁর কলকাতা শিল্পাঙ্গনের সদস্যদের ছো নাচ। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ, ঝাড়খণ্ডের সেরাইকেলা আর পুরুলিয়া— ত্রিধারার ছো নাচ একই মঞ্চে উপস্থাপন করবেন নৃত্যশিল্পী মধুমিতা পাল। আবাহন ও অঙ্গহার নৃত্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি থাকবে ২৩-৩০ পাঁচ দিনের মণিপুরি ও ছো নাচের কর্মশালা।

গবেষক

বিবাহসূত্রে শিলং বসবাসের সূত্রে মালবিকা বিশারদের নজরে পড়ে ব্রুকসাইড বাংলো। সেটির তখন বেহাল অবস্থা। ১৯১৯-এর অক্টোবর মাসে এই বাংলোয় ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বাংলোর টেগোর আর্ট গ্যালারির করুণ অবস্থা দেখে মালবিকা এটি সংস্কারের জন্য চেষ্টা শুরু করেন। শেষে গ্যালারিটি ২০১৩-য় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। বাংলোর সামনে স্থাপিত হয় রবীন্দ্রমূর্তি। নিজে গবেষণা করে লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ ও শৈলাবাস শিলং বই ও নানা প্রবন্ধ। সম্প্রতি শিলংয়ের এই রবীন্দ্র-গবেষককে সংবর্ধনা জানাল দীপ্তি সোম সিনহা ও ইন্দ্রদীপা সিনহা পরিচালিত ‘রবিরশ্মি’।

বিতর্কিত

বদনাম তাঁর পিছু ছাড়ে না। অথচ ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এ তিনি যখন সব বাধা পেরিয়ে পাকিস্তানি বোবা মেয়েটিকে মার কাছে পৌঁছে দেন, গোটা সিনেমাহলের দর্শক সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে অভিবাদন জানাচ্ছেন— কয়েক মাস আগেও এ দৃশ্য বিরল ছিল না কলকাতায়। এই ক’দিন আগেই তো ‘প্রেম রতন ধন পাও’-এর সুবাদে কলকাতা মাতিয়ে গেলেন সলমন খান। কিন্তু শুধু কি বদনাম, সরকারও তাঁর পিছু ছাড়ে না। তেরো বছর আগে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যার মামলায় সদ্য তাঁকে বেকসুর খালাসের রায় দিল বম্বে হাইকোর্ট।

মহারাষ্ট্র সরকার সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ফের সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে! এত ঝক্কি-ঝামেলা নিয়েও গতকাল হাফ সেঞ্চুরি করে ফেললেন সলমন, আর বড়দিনের উৎসবে শীতের সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় বইপ্রেমীদের হাতে এসে গেল বিইং সলমন। জসিম খানের লেখা এ-বই বের করল পেঙ্গুইন/ ভাইকিং (অনুবাদক: দীপক শর্মা)। শুরুর অধ্যায়টির শিরোনামই— সলমন খান: হোয়াট মেকস হিম দ্য ‘ব্যাড বয়’ অব বলিউড। লেখক স্বচ্ছন্দে ঘোরাফেরা করেছেন তাঁর ‘রিল লাইফ’ থেকে ‘রিয়েল লাইফ’-এর মধ্যে। তাঁর ছেলেবেলাটা কেমন ছিল, বাবা সেলিম খান ছিলেন বলিউডের দাপুটে চিত্রনাট্যকার, ঠাকুর্দা আবদুল রশিদ খান ইন্‌দওরে পুলিশের বড়কর্তা... এমন নানা কিছু থেকে কী ভাবে তাঁর উত্থান, সবই জানতে পারবেন পাঠক। প্রায় পাতায় পাতায় ছবি, চমৎকার ছাপা, সঙ্গে সলমনের ফিল্মপঞ্জিও। তাঁকে দুচ্ছাই করেন যাঁরা, কিংবা মাথায় তুলে নাচেন, দু’দলেরই অবশ্যপাঠ্য এ-বই। সঙ্গের ছবি বই থেকে।

আশি পেরিয়ে

রুদ্রর সঙ্গে বুঝি নরেনের পরিচয় নেই? ইনি নরেন্দ্রনাথ মিত্র আর এ হল রুদ্র, আমার ছাত্র, ভাল গল্প লেখে।’ এ ভাবেই নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্রনাথ মিত্রর। এ রকম তিনি সমাজের বহু বিশিষ্ট মানুষের সান্নিধ্যে এসেছেন। আর এই সান্নিধ্য সূত্রেই পাওয়া অন্তরঙ্গ জীবনের দুর্লভ কাহিনি নিয়ে তিনি রচনা করে ফেলেছেন চেনা মুখ অচেনা কথা। গবেষক, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তীর জন্ম পশ্চিম মেদিনীপুরের কিসমত কলোড়া গ্রামে, ১৯৩৫ সালের ৪ নভেম্বর। আট বছর বয়সে তিনি কলকাতায় আসেন।

পড়াশোনা ব্রাহ্ম বয়েজ স্কুল, সিটি কলেজ হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি কর্মজীবন শুরু করেন হুগলির শ্রীগোপাল ব্যানার্জি কলেজে গ্রন্থাগারিক হিসেবে। আর অবসর নেন কলকাতার আনন্দমোহন কলেজের বাংলা ভাষা-সাহিত্যের অধ্যাপক হয়ে। অবসরের পর তিনি বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতনে চার বছর ভিজিটিং ফেলো হিসেবে ছিলেন। তাঁর গবেষণার মূল বিষয় রবীন্দ্রনাটক ও অজিতকুমার চক্রবর্তী। দুটি বিষয়েই লিখেছেন বেশ ক’টি গ্রন্থ। অজিতকুমারের পূর্ণাঙ্গ জীবনী ছাড়া তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় অমিতা ঠাকুরের রচনা সংকলন। রুদ্রপ্রসাদ রচনা করেছেন বহু নাটকও। যেমন, ফুল্লকেতুর পালা, শকুনির পাশা, দেড়পয়সার পালা, স্বপ্নের ঠিকানা, রাতের পথিক... ইত্যাদি। আবার কলকাতার গাছ নিয়ে বাংলায় প্রথম বইটিও তাঁর লেখা। আশির ‘যুবক’টি এখন স্মৃতিকথা লেখায় ব্যস্ত!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE