Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

....

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৫ ০১:০০
Share: Save:

দুর্লভ অবনীন্দ্র-চিত্রকলার প্রদর্শনী

অবনীন্দ্র-চিত্রকলার অসাধারণ সম্ভার যেমন রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির সংগ্রহে, তেমনই এক বিচিত্র সম্ভার লুকিয়ে ছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের সংগ্রহে— তা-ও সংখ্যায় অর্ধশতাধিক। আর শিবকুমারের সম্পাদনায় প্রতিক্ষণ প্রকাশিত অ্যালবামের কল্যাণে রবীন্দ্রভারতী সংগ্রহের একাংশ যেমন আগ্রহীদের অনেকটাই নাগালে চলে এসেছে, ভিক্টোরিয়ার সংগ্রহ কিন্তু প্রকাশ্যে আসেনি বললেই চলে, ছাপা তো দূরের কথা। বিশেষ করে গোড়ার দিকের, এমনকী ১৮৮৭ সালে আঁকা ছবিও আছে এর মধ্যে। এ বার ভিক্টোরিয়াতেই এই দুর্লভ ছবিগুলি দেখার সুযোগ।

পোর্ট্রেট গ্যালারিতে দুটি সংগ্রহের ১২৩টি ছবির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে ৩ মার্চ, ছ’টায় উদ্বোধন করবেন আর শিবকুমার। রতন পরিমু প্রদর্শনীর ছবিগুলি বেছে দিয়েছেন। বৈষ্ণব ভাবকেন্দ্রিক, আরব্যরজনী বা মঙ্গলকাব্য পর্যায়ের বহু ছবি এক সঙ্গে দেখা সম্ভব হবে এখানে। সঙ্গে বাঁ দিকে ‘মেঘদূত’ এবং ডান দিকে ‘অভয়া’, রবীন্দ্রভারতী সোসাইটির সংগ্রহ থেকে। ৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলবে, ১০-৫টা, সোমবার ও ছুটির দিন বাদে।

এ দিকে অবনীন্দ্রনাথের উনিশ বছর বয়সের স্কেচবই এবং চিত্রে বর্ণমালা-র খসড়া পাণ্ডুলিপি দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর আড়ালে রবীন্দ্রভারতী এবং ভারতীয় সংগ্রহালয়ে সংরক্ষিত ছিল। ভারতীয় সংগ্রহালয়ের প্রাক্তন নির্দেশক শ্যামলকান্তি চক্রবর্তী এ বারে এই দুটিকে এক মলাটে প্রকাশ করলেন (সঙ্গের প্রচ্ছদ) অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর/ চিত্রে বর্ণমালাআদিপর্বের স্কেচবই (কাজল প্রকাশনী)। বইটি আজ বিকেল ৫টায় গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের শিবানন্দ হলে প্রকাশ করবেন শঙ্খ ঘোষ, স্বামী সুপর্ণানন্দের সভাপতিত্বে এবং ক্যালকাটা আর্ট লাভার্স অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানে।

বাঙালির ইতিহাস

বইটি ‘একাধারে বাঙ্গালীজাতির জীবনী ও ইতিহাসের উপক্রমণিকা’, জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী-র প্রথম খণ্ডে এ মন্তব্য ছিল প্রকাশকের। অভিধানকার জ্ঞানেন্দ্রমোহন সুপরিচিত, কিন্তু শতবর্ষ আগে প্রকাশিত এই বইটিতে উত্তর ও মধ্য, উত্তর-পশ্চিম ভারত, পঞ্জাব-কাশ্মীর-সিকিম-নেপাল-ভুটানে উনিশ শতকে বাঙালির সুবিস্তৃত কর্মকাণ্ডের যে অসাধারণ ইতিবৃত্ত তিনি সংকলন করেছিলেন, দীর্ঘ দিন দুর্লভ থাকায় আজ তা বিস্মৃত। প্রথম খণ্ড প্রকাশের পরও তাঁর অনুসন্ধান থামেনি, সেটিকে তিনি দু’খণ্ডে বিভক্ত করার কথা ভেবেছিলেন, যে জন্য দক্ষিণ, পূর্ব ও বহির্ভারত নিয়ে ‘তৃতীয়’ খণ্ড প্রকাশ করেন ১৯৩১-এ। কিন্তু ১৯৩৯-এ প্রয়াত হন তিনি, প্রথম খণ্ডের নতুন সংস্করণ আর হয়নি। হারিয়ে গেছে পাণ্ডুলিপিও। এত দিনে নিমাইচন্দ্র পালের সম্পাদনায় প্রথম খণ্ডটি পুনঃপ্রকাশ করল সাগ্নিক বুকস, মূল ছবিগুলির সঙ্গে আরও ছবি যোগ করে।

সহমর্মিতার স্মারক

বাংলাদেশে নাট্য আন্দোলনকে আন্তর্জাতিকতায় পরিণত করার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। বস্তুত, নাটকের আঙিনায় রামেন্দু মজুমদারের সাবলীল চলাচল দু’দেশের কাঁটাতারের বেড়া ভেঙেছে বারে বারে। রামেন্দু ‘থিয়েটার’ নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, ৪৩ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রথম নাট্যপত্রিকা ‘থিয়েটার’ সম্পাদনা করছেন। মঞ্চে অভিনয় করছেন পঞ্চাশ বছরেরও বেশি। সেই রামেন্দু আসছেন আজ, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমিতে, কুমার রায় স্মারক বক্তৃতা দিতে। বিষয়: ‘গ্রুপ থিয়েটার: স্বপ্ন, সম্ভাবনা ও সঙ্কট।’ এই অনুষ্ঠানেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় প্রদত্ত চতুর্থ বর্ষ স্মারকবক্তৃতা: ‘শিশির কুমার ও তাঁর সময়’ পুস্তিকাটি প্রকাশ করবেন শঙ্খ ঘোষ। শিল্পীর পরিবারের আনুকূল্যে কুমার রায় স্মৃতিস্মারক সম্মান পাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের ‘তমলুক আনন্দলোক’ নাট্যসংস্থা।

অনুভবী

‘যে সাধক গীতোক্ত কর্ম, জ্ঞান এবং ভক্তির সমন্বয় করতে পেরেছেন তিনি সমগ্র পুরুষ, পরম পুরুষ।... তাঁর নাম শ্রীরামকৃষ্ণ।’— সৈয়দ মুজতবা আলী লিখেছিলেন ‘মাসিক বসুমতী’তে (১৩৬১), সে রচনা গ্রন্থিত হচ্ছে: শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব, কথামুখ-এ স্বামী শাস্ত্রজ্ঞানন্দ লিখেছেন ‘রামকৃষ্ণ জীবনের সন্ধানী পাঠক মুজতবা, রামকৃষ্ণ-জীবনের সার্থক অনুভবী ব্যাখ্যাতায় উত্তীর্ণ...’। প্রকাশ পাচ্ছে স্বামী লোকেশ্বরানন্দের অভিভাষণ ‘বিশ্বশান্তি’। সূত্রধর-এর উদ্যোগে, ৪ মার্চ সন্ধে ৬টায় ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়িতে। সে সন্ধ্যায় স্বামী লোকেশ্বরানন্দ স্মারক বক্তৃতা দেবেন স্বামী শিবপ্রদানন্দ।

সিনেমা নিয়ে

‘শীতে কলকাতা চলচ্চিত্রোত্‌সবের পর বসন্তে সিনেমা নিয়ে অ্যাকাডেমিক সেশন— নন্দনে।’ জানালেন অধিকর্তা যাদব মণ্ডল। ৪ মার্চ সাড়ে ৪টেয় দর্শকের মুখোমুখি হবেন নাসরিন মুন্নি কবীর। জন্মসূত্রে ভারতীয় ও লন্ডন-নিবাসী নাসরিন ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বলিউড-ব্যক্তিত্ব নিয়ে অডিয়ো-ভিস্যুয়াল তৈরি করেছেন, তাঁদের নিয়ে তাঁর সাক্ষাত্‌কার-ভিত্তিক রচনাও গ্রন্থিত হয়েছে। ‘ডকুমেন্টিং হিন্দি সিনেমা’, এই শিরোনামে সেদিন তাঁর আলোচনা রত্নোত্তমা সেনগুপ্তের সঙ্গে। লতা মঙ্গেশকরকে নিয়ে তাঁর পরিচালিত ৪৭ মিনিটের ছবি ‘লতা ইন হার ওন ভয়েস’ দেখানো হবে শেষে। নন্দনেই আন্তর্জাতিক নারীদিবস উপলক্ষে ৮ মার্চ বিকেল ৪টেয় ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ-এর উদ্যোগে আলোচনা ‘উইমেন, পলিটিক্স অ্যান্ড মিডিয়া’। বলবেন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়, শাশ্বতী ঘোষ, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সঞ্চালক শতরূপা সান্যাল, তাঁর পরিচালিত ‘অনু’ দেখানো হবে আলোচনার শেষে।

সাংস্কৃতিক

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিল্পকৃতির সঙ্গে পরিচয় করাতে উদ্যোগ গুরুসদয় সংগ্রহশালায়। গতকাল শুরু হওয়া ‘ঈশানী’ নামের উত্‌সবে হস্তশিল্প ও লোকশিল্পের পসরা নিয়ে হাজির অসম, অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা এবং সিকিমের শিল্পীরা। কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রক, পর্যটন দফতর ও ভোপালের ইন্দিরা গাঁধী রাষ্ট্রীয় মানব সংগ্রহালয়ের সহযোগিতায় এই উত্‌সবে রয়েছে আলোচনা ও প্রদর্শনী। ৫ মার্চ পর্যন্ত, ১২-৮ টা। এই প্রাঙ্গণেই শিল্পার্ঘ্য জালখুরা আয়োজন করেছিল উত্তরবঙ্গ লোকশিল্প ও লোকসংস্কৃতি উত্‌সব। ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোচনাসভা। এদিকে বিশ্ব আদি জনজাতি দিবসের অনুষ্ঠান আজ বিকেলে, বিধাননগরে ভারতীয়ম কালচারাল মাল্টিপ্লেক্সে। ভারতীয় মানববিজ্ঞান সর্বেক্ষণের পূর্বাঞ্চলীয় কেন্দ্র এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সম্ভব-এর যৌথ উদ্যোগে ‘পরম্পরা’ অনুষ্ঠানে থাকছে লেপচা, রাভা ও সাঁওতালদের নাচগান। চলবে ৪ মার্চ পর্যন্ত, ৪-৮টা, রোজ। পরম-এর আয়োজনে আজ সন্ধে ৬টায় জীবনানন্দ সভাঘরে প্রকাশ পাবে পরমের ‘বাংলার দাই’ সংখ্যাটি। সঙ্গে ‘বাংলার জ্ঞানচর্চা আর উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষকে বলবেন জয়া মিত্র এবং উদ্বোধন হবে বাংলার পরম্পরা শিল্পের ই-কমার্স সাইট।

কবিতার সঙ্গে

কবিতার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কৈশোর থেকেই। এখন পেশার সূত্রে ঘুরতে হয় দেশে-বিদেশে কিন্তু সেই কবিতা-টান আজও অটুট প্রবালকুমার বসুর। তাঁর সম্পাদিত সাইনপোস্টস: বেঙ্গলি পোয়েট্রি সিন্স ইন্ডিপেন্ডেন্স এক নির্ভরযোগ্য সংকলন। নতুন কবিদের জায়গা করে দিতে শুরু করেছেন ‘যাপনচিত্র’ পত্রিকা। যাপনচিত্র এখন প্রতি বছর তরুণ কবিদের প্রথম কবিতার বই প্রকাশ করছে। প্রবালের সাম্প্রতিক কবিতার বই এই যে আমি চলেছি (সিগনেট)। এ বার প্রবালের একক কবিতাপাঠ, ৪ মার্চ জীবনানন্দ সভাঘরে, সন্ধে ছটায়। আয়োজক পিকাসো।

নদীসন্ধ্যা

নদীর কাছে বইয়ের গল্প। পৃথিবীর বহু সাহিত্য-শিল্প-সংগীতে নদীই প্রেরণা। সে কথা মাথায় রেখে ইতালিতে গত বছর তৈরি হয়েছে ‘লিব্রি দ অ্যাকোয়া’। বিভিন্ন দেশের মধ্যে বৌদ্ধিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের লক্ষ্যে তৈরি এই সংস্থা এই প্রথম আসছে এ শহরে। ‘ফ্রিড’ ও রাজ্য পর্যটন দফতরের সহযোগিতায় ৬ ও ৭ মার্চ অনুষ্ঠান। প্রথম দিন এশিয়াটিক সোসাইটিতে বলবেন ইতালীয় লেখক ভেরা স্লেপোজ ও আন্তোনিও মোনডা। গৌতম ঘোষ বলবেন তাঁর বই বিয়ন্ড দ্য হিমালয়াজ সম্পর্কে। ৭ মার্চ মিলেনিয়াম পার্কে নদীবক্ষে অনুষ্ঠান উপেন্দ্রকিশোর ও অবনীন্দ্রনাথ চিত্রিত রবীন্দ্রনাথের নদী ও নদী-বিষয়ক রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে। পাঠে সুবোধ সরকার এবং গানে শর্মিষ্ঠা দত্ত পাঠক। সঙ্গে ইতালীয় লেখকদের সঙ্গে আড্ডা, থাকবেন অনেকেই।

অচেনা চিন

২০১৪-র সেপ্টেম্বরে কলকাতায় চিনের কনসাল জেনারেল ওয়াং জু ফেং মালা মুখোপাধ্যায়কে ভারতীয় আলোকচিত্রীদের নিয়ে চিনের ইউনান সফরের প্রস্তাব দিলেন। নভেম্বরে কলকাতারই ছ’জন আলোকচিত্রী রওনা হলেন দশ দিনের সফরে। ইউনানের রাজধানী কুনমিং পৌঁছেই ছবি তোলা শুরু। চিনের জনজীবন, ঐতিহ্য, সংগ্রহশালা, স্থাপত্য, সংস্কৃতি, পরিবেশ সবই ধরা পড়েছে ওঁদের ক্যামেরায়। কলকাতায় চিনা কনসুলেট জেনারেল ও মালা মুখোপাধ্যায় গ্যালারির যৌথ উদ্যোগে বিড়লা অ্যাকাডেমিতে ৩ মার্চ মালা মুখোপাধ্যায়, বিজয় চৌধুরী (সঙ্গে তাঁর তোলা ছবি), জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, শঙ্কর মণ্ডল, সমরেন্দ্রনাথ মণ্ডল প্রমুখের দুশো ছবি নিয়ে শুরু হচ্ছে আলোকচিত্র প্রদর্শনী। চলবে ৮ পর্যন্ত, রোজ ৩-৮।

অন্য রকম

বেলঘরিয়া ডানলপ ব্রিজের পাশে ‘অন্যরকম’ পরিবার গড়ে তুলেছে রঞ্জন, লক্ষ্মী, দেবার্চনারা। সম্প্রতি তারা কামারহাটি জল-প্রকল্পের পিকনিক পার্কে গান, নাটক, আবৃত্তি, নাচ ও মূকাভিনয় করে সব বয়সি শ্রোতা-দর্শককে অভিনব আনন্দ দিল। পরিবেশ রক্ষা নিয়ে প্রদর্শনী সাজিয়েছিল পার্কের একদিকে। ডা. দেবাশিস বক্সী এবং ঈপ্সিতা যথাক্রমে বিকল্প চিকিত্‌সাপদ্ধতির সুবিধা এবং রাস্তায় ঘুরে ফেরা প্রাণীদের বিষয়ে যত্নবান হওয়ার কথা বলেন। এই অনুষ্ঠানে মীরাতুন নাহার সম্পাদিত ‘দোলনচাঁপা’ পত্রিকার দ্বিতীয় সংখ্যার উদ্বোধন ঘটে এই পত্রিকার সমাজের বিপন্ন শ্রেণিভুক্ত কিশোর-লেখক মহাদেবের হাত দিয়ে। ‘অন্যরকম’-এর সদস্যরা নিজেরাও প্রকাশ করে একটি পত্রিকা: ‘এক্কা দোক্কা’। বৈষম্য-জর্জর দুনিয়াকে বদলাতে চায় ‘অন্যরকম’, ‘দোলনচাঁপা’ও রয়েছে তাদের পাশে।

নারীর মঞ্চ

ষাটের দশকের শেষে অভিনয়-জীবন শুরু সোহাগ সেনের, উত্‌পল দত্তের তত্ত্বাবধানে থিয়েটারে আসা। সত্তরের শেষ থেকে নির্দেশকও হয়ে উঠলেন। ’৮৩-তে তৈরি করলেন নিজের নাট্যগোষ্ঠী ‘অন্সম্বল’। তাঁর নির্দেশনায় উত্তরাধিকার, উত্তরপুরুষ, পাপ, সোনাটা প্রভৃতি নাটক নতুন মোড় নিয়ে এল বঙ্গরঙ্গমঞ্চে। নির্দেশক হিসেবে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন এখনও, এই তো সেদিন দিল্লিতে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-য় মহেশ এলকুঞ্চোয়ার রচিত ‘পার্টি’ তাঁর হাতের ছোঁয়ায় সৃষ্টির নতুন স্বাদ পেল। সত্যজিত্‌ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ও শিক্ষক হিসেবে পায় তাঁকে। অভিনয় শেখান, ওয়ার্কশপ করিয়ে তৈরি করে দেন মঞ্চ আর পর্দায় আসা নবীনদের, এমনকী বেশি-বয়সিদেরও।

হালে অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর ‘বুনো হাঁস’, বা কিছু কাল আগে ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’-এ তাঁর অভিনয়ে থ’ হয়ে গেছিলেন সকলে, কিন্তু সত্তর দশকেই তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছিল সিনেমার দর্শক, ক’জনই-বা জানে নতুন প্রজন্মের! চিদানন্দ দাশগুপ্তের ছবি ‘বিলেত ফেরত’-এর ভিতর তিনটি ছবির প্রথমটি ‘ষাঁড়’, আর তাতেই নির্মলকুমারের বিপরীতে আত্মপ্রকাশ সোহাগ সেনের। এমন একজন মানুষকে সারা জীবনের সম্মানে ভূষিত করে ‘নারীর মঞ্চ’ নাট্যোত্‌সব শুরু করবে নান্দীপট। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারীদিবসে। গিরিশ মঞ্চে এ-উত্‌সব চলবে ১৪ অবধি। কলকাতার নারী নির্দেশকদের সঙ্গে থাকছে অসমের কিসমত বানো-র নাটকও। নেপথ্যশিল্পী সুকুমার বেরাকেও সম্মানিত করা হবে উদ্বোধনের দিন, নান্দীপট-এর পক্ষ থেকে জানালেন প্রকাশ ভট্টাচার্য।

স্মৃতির ঝাঁপি

তাদের সর্দার শঙ্কর রোডের বাড়ির পাশের বাড়ির ফুলের বাগানে মেয়েটি যেত রোজ ফুল চুরি করতে। এক দিন পড়ে যাওয়ায় ঝপাং করে আওয়াজ হয়, বেরিয়ে এলেন এক ভদ্রলোক। এর পরে দেখা হলেই ভদ্রলোক মেয়েটিকে হাত জোড় করে প্রণাম করতেন। এক দিন সে কথা বলতে, মা জানালেন, তিনি কে এল সায়গল, যাঁর গান রোজ ওদের বাড়িতে বাজে! সেই মেয়ে স্মৃতিরেখা ওরফে রেখা চট্টোপাধ্যায়। জন্ম ১৯২৬-এ। বাবা শ্যামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারী। ঠাকুর্দা কৃষ্ণচন্দ্র ‘বঙ্গবাসী’ পত্রিকার সম্পাদক। ১৪ বছরে কবি ও লেখক কামাক্ষীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ে। স্বামী অনুবাদকের চাকরি নিয়ে মস্কো গেলে তিনিও রুশ ভাষা শিখে রুশ সাহিত্য অনুবাদ করতেন। জীবন জুড়ে নানা অভিজ্ঞতা। স্মৃতির সরণি বেয়ে লিখেছেন স্মৃতিরেখার স্মৃতির ঝাঁপি (দে’জ)। চট্টগ্রামের স্কুলে পড়াতে এসেছিলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। মনে আছে, প্রীতিলতার হাতখোঁপা বা মাস্টারদার ফাঁসির দিনটি বা বাবার দাঙ্গা থামানো অথবা সোদপুরের আশ্রমে গাঁধীজিকে দেখা। শ্বশুরবাড়ির সাহিত্যসভায় দেখা আলাউদ্দিন খাঁ, আলি আকবর, রবিশঙ্কর, যামিনী রায়, শচীন দেববর্মনকে। তাঁদের বাড়ি থেকেই প্রকাশিত হত ‘রংমশাল’ পত্রিকা। সংসারের কাজ সেরে রেখাদেবীরাও লেগে পড়তেন ছবি আঁকা, গ্রাহকদের পত্রিকা পাঠানোর কাজে। ডায়েরির আদলে লেখা স্মৃতিকথাটি অত্যন্ত সুখপাঠ্য। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kolkatar karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE