Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

ফ্রান্সের ‘আলেফ থিয়েটার’ দল নিয়ে কলকাতায় আসছেন অস্কার কাস্ত্রো রামিরেজ (বাঁ দিকে)। ৫ জুন তাঁদের নাটক ‘দ্য মিস্ট’ মঞ্চস্থ হবে অ্যাকাডেমিতে। ১৯৬৭-তে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ‘আলেফ থিয়েটার’ তৈরি করেন চিলি-র অস্কার কাস্ত্রো। সারা দুনিয়া তখন অগ্নিগর্ভ, রাজনৈতিক ভাবে রীতিমতো সক্রিয় ছিল কাস্ত্রোর নাট্যদল। ১৯৭৩-এ ফ্রান্স সফরের সময় তাঁর মঞ্চস্থ নাটকে রাজরোষ নেমে আসে।

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৫ ০০:০০
Share: Save:

আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব

ফ্রান্সের ‘আলেফ থিয়েটার’ দল নিয়ে কলকাতায় আসছেন অস্কার কাস্ত্রো রামিরেজ (বাঁ দিকে)। ৫ জুন তাঁদের নাটক ‘দ্য মিস্ট’ মঞ্চস্থ হবে অ্যাকাডেমিতে। ১৯৬৭-তে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ‘আলেফ থিয়েটার’ তৈরি করেন চিলি-র অস্কার কাস্ত্রো। সারা দুনিয়া তখন অগ্নিগর্ভ, রাজনৈতিক ভাবে রীতিমতো সক্রিয় ছিল কাস্ত্রোর নাট্যদল। ১৯৭৩-এ ফ্রান্স সফরের সময় তাঁর মঞ্চস্থ নাটকে রাজরোষ নেমে আসে। কাস্ত্রো তাঁর নির্বাসন আর কারাবন্দি জীবনের পর ফরাসি দেশকেই বেছে নেন নিয়মিত নাটকের জন্যে। এখনও কাজ করে চলেছেন অস্কার, লাতিন আমেরিকার নাটকের প্রায় প্রতিশব্দ হয়ে উঠেছেন তিনি। ফ্রান্স, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, এক সঙ্গে এতগুলি আন্তর্জাতিক প্রযোজনা দেখার সুযোগ সহজে মেলে না। কালিন্দী ব্রাত্যজন-এর চতুর্থ আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব এ বার সেই সুযোগটা করে দিচ্ছে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ, ৪-১০ জুন। উদ্বোধনে থাকবেন বাংলাদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর, প্রধান অতিথি ওড়িশার সুবোধ পট্টনায়ক। থাকবে মীরা গোপালকৃষ্ণনের রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং দিল্লির আকার কলা সঙ্গম পরিবেশিত নাটক ‘চতুষ্কোণ’। ৩ জুন অক্সফোর্ড বইবিপণিতে এক অন্তরঙ্গ আলাপচারিতায় থাকবেন সুরেশ ভরদ্বাজ, অস্কার রামিরেজ, শ্রীলঙ্কার নাট্যপরিচালক পরাক্রম নিরিয়েল্লা, কলকাতায় ফ্রান্সের কনসাল জেনারেল ফাব্রিস এতিয়েন, আলিয়ঁস ফ্রঁস্যাজ-এর অধিকর্তা স্তেফান আমালির এবং কালিন্দী ব্রাত্যজন-এর কর্ণধার ব্রাত্য বসু। এই প্রসঙ্গে ব্রাত্য জানালেন, ‘সারা দুনিয়ায় কে কোথায় কী কাজ করছেন তার একটা ঝলক ধরা থাকছে এ উৎসবে। সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’ পাকিস্তানের প্রযোজনা ‘স্টাম্পড’-এর সঙ্গে মঞ্চস্থ হবে শ্রীলঙ্কার নাটক ‘পয়নিহাল’ (ডান দিকের ছবি)। ৭ জুন ড. বিষ্ণু বসু স্মারক বক্তৃতায় বলবেন পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়, বিকেল ৫টায় অ্যাকাডেমির লনে আফ্রিকার বুরুিন্ড সঙ্গীতকলা। থাকছে ব্রাত্যজন-এর নতুন নাটক ‘বোমা’ও।

চিন্তাবিদ

‘উনিশ শতকের ঊষালগ্নে প্রতীচ্য ভাবধারা, এবং ইউরোপীয় বিশেষ করে ইংরেজ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতি আমাদের মোহ কি অনেকাংশেই আধুনিকতার সমার্থক ছিল না?’— অর্থনীতি বিষয়ে রামমোহনের মতামতের স্বরূপ বিচারের সূত্রে সৌরীন ভট্টাচার্যের এমন মন্তব্য বাঙালির চিন্তাচর্চার সংকটকেই চিহ্নিত করে। তাঁর মতো এক চিন্তাবিদের রচনা দীর্ঘকাল ধরেই বাঙালিমানসকে নিয়ত প্রশ্নাতুর, তার্কিক ও প্রথাবিরুদ্ধ ভাবনার শরিক করে তুলেছে। অভিযান থেকে বেরল তাঁর রচনাসংগ্রহ (প্রথম খণ্ড)। পরিবর্তনের ভাষা, উন্নয়ন: অন্য বিচার ও আধুনিকতার সাধ-আহ্লাদ, এই তিনটি বই ঠাঁই পেয়েছে এ খণ্ডে। পাঠক এই গ্রন্থিত সমাহারে খুঁজে পাবেন বিবিধ বিষয়ে তাঁর মননের বিস্ময়কর স্ফূরণ ও বিস্তার।

কথা মানবী

বাষট্টি বছরে তালাক পাওয়ার পর খোরপোষ পান না শাহবানু। আদালতে ঘুরেও বিচার অধরা। মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন থেকে যায়। ইতিহাসের আনাচে কানাচে রয়েছে মেয়েদের অপমান ও অবহেলার কাহিনি। তবে তাঁরাও ভালবাসতে পারেন, প্রতিবাদ করতে পারেন। তাই নতুন নতুন জন্ম নিয়ে ফিরে ফিরে আসেন দ্রৌপদী, সুলতানা রিজিয়া, মাধবী, মেধা পটেকর, শাহবানু। এঁদের কথাই মল্লিকা সেনগুপ্তের কাব্যনাটক ‘কথা মানবী’-তে। এটি মঞ্চস্থ হতে চলেছে সন্ধ্যা দে’র নির্দেশনায়। ‘দ্রৌপদী’, ‘মেধা’ ও ‘শাহবানু’ (সঙ্গের ছবি) চরিত্রেও সন্ধ্যা। আজ সন্ধে সাতটায় তপন থিয়েটারে মঞ্চস্থ হবে ‘কথা মানবী’।

বাউল-কর্মশালা

এক সহজ জীবনযাপনের সঙ্গী হল বাউলগান। বৌদ্ধ সহজতন্ত্র থেকে সৃষ্টি হয়ে কালক্রমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত সুফিবাদ এবং পরে চৈতন্য-প্রবর্তিত সহজিয়া বৈষ্ণববাদের সঙ্গে মিশে বাংলার জল-মাটি মেখে বাংলার একান্ত নিজস্ব সম্পদ হয়ে উঠেছে বাউল। সঠিক বাউলের সংরক্ষণ, প্রচার ও প্রসারের জন্যে ৩-৬ জুন বিধাননগরের পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রে বাউল গানের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। পরিচালনায় প্রবীণ গায়ক-সাধক-তত্ত্বজ্ঞানী বাউল গুরুরা। থাকছেন বিশ্বনাথ দাস, দেবদাস, কানাই দাস, রাধেশ্যাম দাস, শ্যামসুন্দর দাস বাউল এবং সুধীর খ্যাপার সঙ্গে দেব চৌধুরী ও তাঁর লোকগানের দল সহজিয়া। পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র ও সহজিয়ার যৌথ উদ্যোগে ৬ জুন বিকেল ৫টায় পূর্বশ্রী প্রেক্ষাগৃহে আছে বাউল উৎসব।

ছোটদের ছবি

সদ্য উচ্চমাধ্যমিকের ফল বেরিয়েছে ঋষি অরবিন্দ কলোনির বছর সতেরোর সেলিম শেখের। এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে সংসদে দরবার করেছিল সে। গত দুই বছর ধরে ওর এলাকার লোকেরা জল পাচ্ছে। সম্প্রতি সেলিম বানিয়েছে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘আস্তে লেডিজ’। সেলিম তুলে ধরেছে সমাজের চোখে মেয়েদের ছবি। বস্তি এলাকায় অনেক ছোটই গালাগাল শুনতে শুনতে বিধ্বস্ত। তাই নিয়ে নেহরু কলোনির শিখা পাত্রর ছবি ‘গালি’। এই ভাবে ১৭-২১ বছরের আট জন তাদের নানা স্থানীয় সমস্যা ও তার প্রতিকার নিয়ে তৈরি করেছে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি। মূলত সল্টলেক ও সন্নিহিত এলাকার বস্তির এই সব ছেলেমেয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘প্রয়াসম’-এর সদস্য। সংস্থাটি জোর দেয় ছোটদের অধিকারে। তাই ওদের ব্যক্তিত্ব ও দক্ষতার বিকাশে দেওয়া হয় চলচ্চিত্র নির্মাণ, সম্পাদনা, মিডিয়ার কাজকর্মের প্রশিক্ষণ। ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটে বেলা ১১-১.৩০ দেখা যাবে ওদের ছবির উৎসব ‘ব্যাড অ্যান্ড বিউটিফুল ওয়ার্ল্ড’। সহায়তায় অ্যাডোিব ইয়ুথ ভয়েসেস।

ভাল থেকো নেপাল

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত নেপালের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে ‘বাংলানাটক ডট কম’। সঙ্গে বাংলা ব্যান্ড ‘ক্যাকটাস’, এবং ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাব। ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সন্ধে ছ’টায় নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ওদের অনুষ্ঠান ‘ভাল থেকো নেপাল’। ক্যাকটাসের সঙ্গে থাকবে তন্ময় বসুর ‘তালতন্ত্র’, এবং ঢাকার ‘অর্ণব এবং বন্ধুরা’। অনুষ্ঠানে টিকিট থাকবে না। উপস্থিত সকলকে অনুরোধ করা হবে নেপালের জন্য সাহায্যের হাত বাড়াতে। সংগৃহীত অর্থ তুলে দেওয়া হবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেপালের কনসাল জেনারেলের হাতে।

চিত্রকর

কুড়ি বছর ধরে ছবি আঁকছেন দেবাংশু দাস। বাবা শিশুরঞ্জন দাস প্রত্নতত্ত্ব সর্বেক্ষণের শিল্পী হিসেবে অজিণ্ঠায় ছবি এঁকেছেন ষোলো বছর। ছবি নিয়ে রাতভর কথায় বিভোর বাবা আর তাঁর বন্ধু ইন্দ্র দুগার, দেবাংশুর স্মৃতিতে ভাসে। আর্ট কলেজের প্রাক্তনী দেবাংশু আঁকার দিগ্‌দর্শন পেয়েছেন সুনীল পাল, ধীরেন ব্রহ্ম, গণেশ পাইন, অজয় ঘোষের কাছে। প্রিয় বিষয় ও মাধ্যম ওয়াশ। গত কয়েক বছর আঁকছেন ড্রাই প্যাস্টেলে, সেই সব ছবি নিয়েই ২-৮ জুন প্রদর্শনী অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের ‘নিউ সাউথ এ’ গ্যালারিতে। অন্য দিকে গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় ৪ জুন শুরু হচ্ছে মনোরঞ্জন বিশ্বাসের প্রদর্শনী ‘দ্য ফেসেস দ্য ইটারনিটি’। মানুষের মুখের নানা অভিব্যক্তি তাঁর প্রিয় বিষয়। মনের ভাবের বিস্তার ঘটাতেই হাতে তুলে নিয়েছিলেন রঙ-তুলি। ব্যাঙ্ককর্মী মনোরঞ্জনবাবু নাটকও লিখেছেন, আকাশবাণী থেকে তা প্রচারিতও হয়েছে। অবসরের পর রঙের জগতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড়। শিল্পীর পূর্বাপর কাজ নিয়ে প্রদর্শনী ৬ জুন পর্যন্ত।

ইউরোপ থেকে

কত তফাত তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে, হাঁটাচলায় সংস্কৃতিতে এমনকী শ্বাস নেওয়ায়ও! কত ধরনের মানুষজন— বুড়ো ও তরতাজা, বড়লোক ও অসচ্ছল, সামাজিক ও রক্ষণশীল। অথচ ইউরোপেরই অধিবাসী তাঁরা। এই স্বাতন্ত্র্যের সমাহার নিয়েই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ফিল্মোৎসব। এ বার ২০তম উৎসবে নতুন নতুন সব ছবি। ‘ফর আ ফিউ ইউরোজ, উই বিকাম দিজ লার্জার দ্যান লাইফ ক্যারেকটার্স অন দ্য স্ক্রিন অ্যান্ড ফরগেট আওয়ার ডিফারেন্সেস’, মুখপাতে জানিয়েছেন জোয়াও ক্র্যাভিন্‌হো, এ দেশে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত। নন্দনে উদ্বোধন ২ জুন সন্ধে ৬টায়। বেলজিয়ামের ‘গো, এডি!’ উদ্বোধনী ছবি। তারপর ৩-৯ জুন, প্রতিদিন ২টো ৪টে ৬টায়। ডেলিগেশন অব দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নন্দন ও সিনে সেন্ট্রাল।

ছাত্র কল্যাণ

১৯৬৬-র মার্চ মাস। উত্তর কলকাতার দুই তরুণ বিমান দাশগুপ্ত ও সমরেশ মুখোপাধ্যায় স্থানীয় দুঃস্থ ছাত্রদের পাঠ্যবই বিতরণের সংকল্প নেন। নিজেদের বেতন ও পরিচিতদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে চলত এই ‘ছাত্র কল্যাণ সংস্থা’। বিভিন্ন স্কুল থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে বেছে নেওয়া হত পঞ্চম থেকে দশম শ্রেিণর দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের। সঙ্গে বিনামূল্যে কোচিং, সুস্বাস্থ্যের পরামর্শ, শিক্ষাসফর, বিতর্ক সভার আয়োজন করা হত। আস্তে আস্তে বহু উৎসাহী মানুষের আর্থিক সাহায্যে কয়েক বছর আগে দমদমের জপুর রোডে গড়ে উঠেছে সংস্থার নিজস্ব কেন্দ্র। দেখতে দেখতে পেরিয়ে এল পঞ্চাশটি বছর। সম্প্রতি শুরু হয়েছে সংস্থার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষের অনুষ্ঠান।

কালক্রেতা

বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলা থিয়েটার ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি নির্দেশনা ও চিত্রনাট্য রচনা করছেন প্রেমাংশু রায়। বছর চারেক আগে থিয়েটার কর্মী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি তৈরি করেছিলেন সরশুনা পূর্বপাড়ায় ‘স্বপ্নালু’ নাট্যদলটি। অভিনয়ের কর্মশালার পাশাপাশি ওরা নানা নাটক মঞ্চস্থ করে। এ বারের নাটক ‘কালক্রেতা’। কাল বিমূর্ত, যা ক্ষণিককে আবদ্ধ করে চিরন্তনের গর্ভে। এই কালকেই তুলে ধরা হয়েছে নাটকটিতে। শুরুতেই দেখা যাবে এক রাজাকে যিনি তোষামোদে আচ্ছন্ন। রাজার মুখোশ খুলে দিতে এগিয়ে আসে নানা চরিত্র। সেই নিয়েই প্রেমাংশু রায়ের নাটক। মূল চরিত্রে গৌতম হালদার (সঙ্গের ছবি)। ৭ জুন তপন থিয়েটারে প্রথম অভিনয়।

যত মত

মানুষের মন এবং জীবন অতলান্ত। মৃত্যুশাসিত এই জীবনে মানুষের সাফল্য কোথায়! প্রশ্নটি তুলেছিলেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। ঈশ্বর-সৃষ্টিকর্তা আছে কি নেই সে বিতর্ক নয়, তিনি বলেন, আমার মনে হয় রামকৃষ্ণ বলতে চেয়েছেন মত অনেক, পথ কিন্তু একটাই, সেটি রাজপথ। সম্প্রতি আবগারি দফতরের যুগ্ম কমিশনার বরুণকুমার রায়ের লেখা যত মত তত পথ (দীপ প্রকাশন) বইটি উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রসঙ্গটি তোলেন তিনি। লেখক এই বইতে নিজস্ব যুক্তির বিস্তারে বুঝতে চেয়েছেন ঈশ্বরের অস্তিত্ব, জীবনে হতাশার কারণ ইত্যাদি। এ দিন ‘নো ওয়ান ইজ আ বার্ডেন ইন লাভ’ শীর্ষক একটি আলোচনাসভাও ছিল বই প্রকাশের পরে।

স্মৃতির ঝাঁপি

সুচিত্রা মিত্র। তাঁর কণ্ঠের জাদু চির অমলিন। আর, সেই কিংবদন্তি শিল্পীর অত্যন্ত প্রিয় ছাত্র রবীন মুখোপাধ্যায় প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানে থেকেছেন তাঁর সঙ্গে। তাঁর মেজদা, বিশিষ্ট শিল্পী ও সুরকার শৈলেন মুখোপাধ্যায়। সেই ছোটবেলায়, ১৯৫৭ সালে সুচিত্রা মিত্রের সন্তানসম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রবিতীর্থ-এ পা রাখেন ছাত্র হিসেবে। পরে সেখানেই শিক্ষকতায়। নিজেকে রবিতীর্থ-এর ‘আশ্রমিক’ মনে করেন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অধ্যক্ষ রবীনবাবু। খুব কাছে থেকে দেখেছেন সুচিত্রার অনন্য ব্যক্তিত্বকে, ধরা পড়েছে তাঁর মানবিক নানা রূপ। যা দেখেছেন, যা শুনেছেন, তা দিয়েই তাঁর ঝাঁপি ভর্তি। ‘‘সুচিত্রা মিত্রকে আমার প্রথম দেখা ও গান শোনা ওয়েলিংটন স্কোয়ার মাঠে। সাল ১৯৫৩-’৫৪। তখন আমার অল্প বয়স। আমরা ছোটরা কয়েকজন... সুকুমার রায়ের ‘অবাক জলপান’ নাটকে অভিনয় করতে সেখানে গিয়েছিলাম। তখনই দেখলাম ... স্টেজের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা খুব ফরসা, কালো রঙের লং কোট-পরা সেই শিল্পীকে। উদাত্ত কণ্ঠে খালি গলায় গাইছেন, ‘ও আমার দেশের মাটি’। শুনে অভিভূত হয়ে গেলাম। কী উচ্চারণ, কী জোরালো কণ্ঠ!’’ তার পর আরও এক দিন সন্ধ্যায় তাঁকে দেখলেন ‘‘সোজা হয়ে বসে গাইছেন, ‘সার্থক জনম আমার’। আবারও আমার মুগ্ধ হওয়ার পালা।’’ সুচিত্রাকে নিয়ে এই স্মৃতির ঝাঁপি সম্প্রতি গাঙচিল থেকে প্রকাশিত হল: কত কথা পড়ে মনে/ প্রসঙ্গ সুচিত্রা মিত্র।

দ্রৌপদী

পূর্ব জন্মে দ্রৌপদী ছিলেন ঋষিকন্যা। শিবের কাছে পরের জন্মের জন্য ভাল বর প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু বর চাইবার সময় ‘পতিং দেহী’ পাঁচ বার বলায় শিব তাঁকে পাঁচ জন স্বামীর আশীর্বাদ দেন। দ্রৌপদীর জীবনকে ওড়িশি নাচের মাধ্যমে তুলে ধরতে চলেছেন দেবমিত্রা সেনগুপ্ত। তিন দশক ধরে নাচে মগ্ন দেবমিত্রা। গুরু কেলুচরণ মহাপাত্রের কাছে তালিম নিয়েছেন। শিখেছেন সংযুক্তা পাণিগ্রাহী ও সুতপা তালুকদারের কাছেও। আর দেবমিত্রার নিজের সংস্থা ‘কলকাতা ময়ূর ললিত ডান্স অ্যাকাডেমি’র বয়সও দশ পেরিয়েছে। বললেন, ‘শাস্ত্রীয় নৃত্য মানেই খুব কঠিন, এই ধারণা ভাঙতে চেয়েছিলাম। আগ্রহীরা যাতে সহজভাবে শিখতে পারে, এবং দর্শকরাও উপভোগ করতে পারেন।’ ওড়িশি নাচের প্রথাগত পোশাকের বাইরে দেবমিত্রার পরিকল্পিত নাচের পোশাকেও থাকে আধুনিকতা। প্রতি বছরই দেবমিত্রা এক একটি বিষয়কে তুলে ধরেন নাচের মাধ্যমে। এর আগে রাসলীলা, মেঘনাদবধ, চিত্রাঙ্গদা, মেঘদূত, পদ্মাবতী উঠে এসেছে দেবমিত্রার নৃত্যপরিকল্পনায়। এ বারে দ্রৌপদী। আগুন থেকে বেরোনো, দ্রৌপদীর বিয়ে, বনবাস থেকে দুঃশাসনের রক্তে দ্রৌপদীর স্নান— সব তুলে ধরা হবে নাচের মাধ্যমে। রাজরানি হয়েও জীবনভর নানা দুঃখকষ্টের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু ভেঙে পড়েননি। দুঃখকে দ্রৌপদী কী ভাবে অতিক্রম করেছিলেন সেটাই দেবমিত্রার নাচের মূল উপজীব্য। ২ জুন সন্ধে সাড়ে সাতটায় রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হবে ‘দ্রৌপদী’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE