Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

মাত্র চুয়ান্ন বছর আয়ু ছিল তাঁর। কিন্তু তাতে কী, এক জীবনে বহু জীবন বাঁচার গোপন ফর্মুলা জানতেন যে সিদ্ধার্থ ঘোষ (১৯৪৮-২০০২)। যাদবপুর থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিলেন, তাঁর অনুসন্ধানে ঔপনিবেশিক পর্বের প্রযুক্তি অনেকটাই জায়গা অধিকার করে ছিল।

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

ফের পুরনো চেহারায় সেই সব বিখ্যাত বই

মাত্র চুয়ান্ন বছর আয়ু ছিল তাঁর। কিন্তু তাতে কী, এক জীবনে বহু জীবন বাঁচার গোপন ফর্মুলা জানতেন যে সিদ্ধার্থ ঘোষ (১৯৪৮-২০০২)। যাদবপুর থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিলেন, তাঁর অনুসন্ধানে ঔপনিবেশিক পর্বের প্রযুক্তি অনেকটাই জায়গা অধিকার করে ছিল। তার সঙ্গে উপেন্দ্রকিশোর-সুকুমার রায় হয়ে ছোটদের জন্য ছিল একটা বিশেষ আনন্দের জায়গা। সেই জায়গা থেকেই টুনটুনির বই, আবোল তাবোল কি হ য ব র ল, পাগলা দাশু-র আদি সংস্করণ খুঁজে বার করে সেই চেহারায় প্রকাশ করা, সুকুমার রায়ের অগ্রন্থিত লেখা তাঁর ‘সাহিত্য সমগ্রে’ নিয়ে আসা, সুকুমার-শতবর্ষে প্রদর্শনী সাজানো। বিজ্ঞানকে ছোটদের হাতের নাগালে নিয়ে আসতে কত না বই তাঁর, যেমন অঙ্ক আতঙ্ক নয়, মজার খেলা অঙ্ক। লু সুন, জ্যাক লন্ডন, জন রিডের লেখা যেমন অনুবাদ করেছেন, তেমনই লিখেছেন মৌলিক ছোটগল্প। বিজ্ঞান থেকে কল্পবিজ্ঞানের পথেও স্বচ্ছন্দে পা বাড়িয়েছেন। সায়েন্স ফিকশন লেখালিখির পাশাপাশি ১৯৯২-এ স্টকহলমে ‘ফ্যান্টাসটিকা ৯২’-তে আমন্ত্রিত হন সিদ্ধার্থ।

কলকাতার কারিগরি-উদ্যোগের বিস্মৃত নায়কদের নিয়ে লিখেছিলেন কারিগরি কল্পনা ও বাঙালি উদ্যোগ, সে বই আজ দুর্লভ। কিন্তু তাঁর কলের শহর কলকাতা, যেখানে ভারতের প্রথম ‘ইঞ্জিনিয়র’ গোলোকচন্দ্র, নবাবি স্টিমার, দ্বারকানাথ ও হানিফ সারেং, বাষ্পীয় রথ, বিজলি কল, নীলমণি মিত্রের কলকাতা-র মতো নানা কৌতূহল-জাগানো লেখা ছিল, সে বই আনন্দ পুনঃপ্রকাশ করেছে পুরনো চেহারাতেই। আর তাঁর প্রথম বই, ছবি তোলা/ বাঙালির ফোটোগ্রাফি চর্চা (১৯৮৯) সদ্য ফিরে এল আনন্দ-র সৌজন্যেই। ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে ফিরিয়ে দেওয়া গেছে হুবহু সেই বইটিই। অনেক কিছুর মধ্যে এই গবেষণাকর্মটির জন্য নিঃসন্দেহে সিদ্ধার্থ আমাদের শ্রদ্ধাভাজন হয়ে থাকবেন। পথিকৃৎ বাঙালি আলোকচিত্রী, তাঁদের স্টুডিয়ো, বিশেষ করে অন্নপূর্ণা দত্তের মতো মহিলা আলোকচিত্রীদের কথা, বিখ্যাত নানা আলোকচিত্রের নেপথ্য কাহিনি এ বইয়ের পাতায় পাতায়। আর বঙ্কিমের যুবাবয়সের ছবির মতো দুর্লভ ছবিগুলি ফিরে দেখার সুযোগই বা কী কম প্রাপ্তি!

শতবর্ষে

‘এই চক্ষে— ভাবে নয়— দেখলাম চৈতন্যদেবের সংকীর্তন বটতলা থেকে বকুলতলা যাচ্ছে।’ এই কথাটি ঠাকুর বলিলেন তাঁহার তিরোভাবের প্রায় ছয়মাস পূর্বে।... ওইসময়ে শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন শ্রীচৈতন্যের জীবনের সঙ্গে একাকার হইয়া এক অখণ্ড ভক্তিলীলার সৃষ্টি করিয়াছিল।’’— লিখেছেন রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্ত তাঁর ‘শ্রীরামকৃষ্ণের শ্রীচৈতন্য’ প্রবন্ধে। এর সঙ্গে তাঁর ‘শ্রীরামকৃষ্ণের রামপ্রসাদ’ নিয়ে সূত্রধর প্রকাশনা: শ্রীরামকৃষ্ণের শ্রীচৈতন্য ও রামপ্রসাদ। প্রকাশ করবেন সৌরীন ভট্টাচার্য ৯ জুলাই সন্ধে ৬টায় ইনস্টিটিউট অব কালচার, গোলপার্ক-এর বিবেকানন্দ হল-এ। রবীন্দ্রকুমারের (১৯১৫-২০০৯) জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ওই দিন স্মারক বক্তৃতা দেবেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সহ-সম্পাদক স্বামী বলভদ্রানন্দজী: ‘শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের দর্শন’। পৌরোহিত্যে রাধারমণ চক্রবর্তী। রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে উদ্যোগে সূত্রধর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্রকুমারের অনুরাগীদের উদ্যোগে তাঁর জন্মশতবর্ষ স্মারক বক্তৃতা ১১ জুলাই বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চন্দ্রমুখী-কাদম্বিনী হল-এ। বক্তা: নবনীতা দেব সেন, বিষয়: ‘তুলনামূলক সাহিত্য ও আমরা’।

প্রতিকৃতি

প্রতিকৃতি-আলোকচিত্রের জগতে, কি বিভিন্ন অভিজাত প্রাসাদ-উদ্যানের অন্দর-বাহিরের ছবিতে ডেরি মুর বিশ্ববিখ্যাত। অশীতিপর এই আলোকচিত্রীর সঙ্গে ভারতের যোগও ঘনিষ্ঠ, সত্তর দশক থেকে বহু বার ভারতে এসেছেন, দেশের নানা প্রান্তের সঙ্গে কলকাতার পুরনো প্রাসাদ তাঁর ছবিতে জায়গা করে নিয়েছে। সত্যজিৎ, রবিশঙ্কর কি সৌমিত্রর অসামান্য প্রতিকৃতি তুলেছেন তিনি। শহরের ঐতিহ্যবাহী বাড়িঘরের ছবি নিয়ে লন্ডনে প্রদর্শনী করতে গিয়ে তঁার সঙ্গে সাক্ষাৎ দেখা কলকাতার তরুণ আলোকচিত্রী অনির্বাণ মিত্রের। পকেট ক্যামেরায় সসঙ্কোচে ডেরি মুরের একটি প্রতিকৃতিও তোলেন অনির্বাণ (সঙ্গের ছবি)। কে জানত, সেই ছবি তাঁর এত ভাল লেগে যাবে যে লন্ডনের ন্যাশনাল পোর্ট্রেট গ্যালারি তাঁর প্রতিকৃতি চাওয়ায় সেটিকেই পাঠাবেন বিশ্ববন্দিত আলোকচিত্রী! ন্যাশনাল গ্যালারিতে ঠাঁই পাওয়ার খবরে অনির্বাণও উচ্ছ্বসিত। এই শহরের গর্বের খবর বইকী।

চে স্মরণ

চে গেভারা-র (১৯২৮-’৬৭) হত্যাকাণ্ডের পর অর্ধশতক পেরোতে চলল, আজও তিনি বিপ্লবের প্রতীক। কলকাতায় বছর দুই ধরে সক্রিয় ফ্রেন্ডস অব লাতিন আমেরিকা এ বার তাঁকে নিয়েই আলোচনার আয়োজন করেছে। ১০ জুলাই ৫টায় মৌলালির রাজ্য যুব কেন্দ্রে চে-র জীবন ও দর্শন নিয়ে এই আলোচনায় সভাপতিত্ব করবেন অমিয় বাগচী। থাকছেন শোভনলাল দত্তগুপ্ত ও বিকাশ ভট্টাচার্য। দেখানো হবে স্বল্পদৈর্ঘের ছবিও।

ইসলামি গান

কোচবিহারের এক মিলাদ অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল আব্বাসউদ্দিনের সঙ্গে কাজি নজরুলের। ইসলামি গান রচনায় নজরুলকে অনুপ্রাণিত করেন আব্বাসউদ্দিন-ই। নজরুলের লেখা প্রথম কালজয়ী ইসলামি গান ‘রমজানের ওই রোজার শেষে এল খুশীর ঈদ’ প্রথম আব্বাস-ই গেয়েছেন। এ ছাড়াও গাইতেন নজরুলের ‘ও মন রমজানের ওই’, ‘তোরা দেখে যা আমিনা’, ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মহম্মদ’-এর মতো আরও অনেক ইসলামি গান। লোকশিল্পী সুখবিলাস বর্মার কণ্ঠে তেমনই ১১টি ইসলামি গান নিয়ে প্রকাশিত হল সিডি ‘বিশ্বদুলালী’ (ভাবনা)।

খেলাঘর

মার্কিন চিত্রগ্রাহক লরা ম্যাকফি পনেরো বছরের পরিশ্রমে কলকাতাকেন্দ্রিক তাঁর প্রথম বই হোম অ্যান্ড দি ওয়ার্লড-এ যে সব প্রাচীন ঐতিহ্যের ছবি ধরে রেখেছিলেন, তাতে আছে বিডন স্ট্রিটের একটি বাড়ির ছবি, যেখানে প্রশস্ত লনের এক পাশে শ্বেতপাথরের একটি অনন্য মূর্তি। বাড়িটি এখন রূপান্তরিত হয়েছে বহুতলে। সেই বাড়ির কন্যা মীনাক্ষী সিংহ লিখেছেন নানা অকথিত কাহিনি খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি (পুনশ্চ)। সে যুগের কলকাতার কথার সঙ্গে উপরি পাওনা বেশ কিছু ছবি। লেখিকার কথায়, ‘আত্মকথা নয়, জীবনী নয়, এ লেখায় ধরা আছে আমাদের পরিবারের ঐতিহ্যবাহী বাসভূমির কথা।’

রবি চক্রবর্তী

চলে গেলেন রবি চক্রবর্তী। একদা ময়দান কাঁপিয়ে রেফারিং করেছেন। সেই দুরন্ত সময়ের ইস্টবেঙ্গল আর তার ক্যাপ্টেন মহম্মদ হাবিবকে দেখিয়েছিলেন লাল কার্ড। ব্যস্, যায় কোথায়। টালিগঞ্জ থানার কালো গাড়িতে অফিস যাতায়াত। কেন? গোটা লেক মার্কেটের মাছের বাজার বঁটি-হাতে বাড়ির দরজায় হাজির। রেফারিং করার পাশাপাশি রেফারিং নিয়ে লেখেন ফুটবলের রেফারিং, যে বই আজও রেফারি জগতের প্রবেশিকা পরীক্ষার অন্যতম পাঠ। ময়দান থেকে সরে এসে ছোট ছেলের সঙ্গে খেলাচ্ছলেই জড়িয়ে পড়েন দেশলাই বাক্স জমানোয়। সেই নেশায় প্রায় পঞ্চাশ হাজারের কাছাকাছি দেশলাই বাক্স জমিয়ে ফেললেন। দেশবিদেশের সংগ্রাহকরা আসতেন দেখতে। ৮৪ বছর বয়সে সব ছেড়ে চলে গেলেন।

সীতা থেকে শুরু

মঞ্চে রামায়ণের পুনর্নির্মাণ। হনুমানের আকাশে ওড়া, রকেটাকৃতি ধারণ করে সীতাকে মহেন্দ্রপর্বতে হাজির করা, কিংবা শূর্পনখার বিকট রূপ ধারণ— সবই আছে এই নাট্যপ্রয়াসে। লক্ষ্মণ নাক কেটে নিলে শূর্পনখার বিলাপে শোনা যাচ্ছে, ‘কে যে রাক্ষস আর কে যে মানুষ— সেই সত্য আজ সব ভুল হয়ে যায়!’ নবনীতা দেবসেন রচিত চারটি কাহিনি— ‘মূল রামায়ণ’, ‘রাজকুমারী কামবল্লী’, ‘অমরত্বের ফাঁদে’ এবং ‘সীতার পাতাল প্রবেশ’ নিয়ে এই নাটক ‘সীতা থেকে শুরু’। মঞ্চায়নে ‘নির্বাক অভিনয় একাডেমি’। নবনীতার কলমের পরিহাস মঞ্চে উঠে এসেছে সুরঞ্জনা দাশগুপ্তর নাট্যরচনা ও নির্দেশনায়। ৯ ও ১২ জুলাই দু’টি অভিনয় জ্ঞান মঞ্চ এবং অ্যাকাডেমিতে।

নদীর ছবি

ঝাড়খণ্ডের চাকাই পাহাড় থেকে নেমে এসে কাটোয়ার কাছে হুগলিতে মিশেছে অজয় নদী। চিত্তরঞ্জনে সে প্রবেশ করেছে বাংলায়। পাড় বরাবর নানা গাছ নদীর রূপে এনেছে অন্য মাত্রা। গ্রীষ্মের শুকনো নদী খাত থেকে শীতের রোদ, বালি, জলের প্রবাহ সব মিলিয়ে অজয়ের রূপে নানা বৈচিত্র। রূপনারায়ণপুরের বাসিন্দা পেশায় জীবনবিমা নিগমের কর্মী দিবাকর দাস আলোকচিত্রে ধরেছেন সেই সৌন্দর্যকে। পাশাপাশি এঁকেছেন অজয়ের রূপ-পরিবর্তন। তাই নিয়েই প্রদর্শনী ‘সাঁঝবিহানের নদী’ ৮-১০ জুলাই গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় (৩-৮টা)।

নাটকের দিন

১৯৬৬-তে বিভাস চক্রবর্তী-সহ অনেকের সঙ্গে মিলে যে ‘থিয়েটার ওয়ার্কশপ’ তৈরি করেন অশোক মুখোপাধ্যায়, সে নাট্যগোষ্ঠীর প্রধান পুরুষ এখন তিনিই, আর দলটিও পা দিল পঞ্চাশে। মধ্য-সত্তরে পৌঁছেও অশোক তাঁর একক অভিনয় ও নির্দেশনায় মঞ্চস্থ করবেন ‘কুশীলব’, স্বপ্নময় চক্রবর্তীর গল্প থেকে। এর সঙ্গে আগের প্রযোজনা, চন্দন সেনের নাটক ‘বিয়ে-গাউনি কাঁদনচাপা’ নিয়ে প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান, ১১-১২ জুলাই সন্ধেয়, অ্যাকাডেমিতে। প্রথম সন্ধ্যায় দেবাশিস দাশগুপ্তের সুরে নাটকের গান, গাইবেন তাঁরই পুত্র-কন্যা দেবপ্রতিম ও দেবশ্রী। শেষ সন্ধ্যায় প্রকাশ পাবে অশোক মুখোপাধ্যায়ের নাটকের সংকলন (সপ্তর্ষি)। অন্য দিকে গোবরডাঙা শিল্পায়ন-এর ৩৫ বছর পূর্ণ হল। নাট্য প্রযোজনা ছাড়াও এ নাট্যগোষ্ঠী নিয়মিত নাট্য কর্মশালা ও সেমিনার করে। তাদের এই নাট্যচর্চা সংক্রান্ত পুস্তিকা প্রকাশ ও বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন ব্রাত্য বসু। ১০ জুলাই সন্ধে ৬-১৫য় অ্যাকাডেমিতে। এ বছরের ‘শিল্পায়ন সম্মান’ তুলে দেওয়া হবে তাঁরই হাতে। মঞ্চস্থ হবে তাদের নতুন নাটক ‘পড়শি’, সঙ্গে ‘খোয়াব’। নির্দেশনায় আশিস চট্টোপাধ্যায়।

অন্য চিত্রলেখা

মায়ের কাছেই তাঁর গানের শিক্ষা শুরু৷ মা, চিত্রনিভা চৌধুরী সরাসরি শিখেছেন রবীন্দ্রনাথের কাছে৷ কন্যা চিত্রলেখা শান্তিনিকেতন ঘরানার গায়কীতে রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখান তাঁর নিজের স্কুল উত্তরায়ণে৷ শান্তিনিকেতন ছেড়ে এ শহরে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক পড়তে আসা৷ স্নাতকোত্তর পড়ছেন যখন তখন শিখলেন অতুলপ্রসাদ সেন আর দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান, রাজ্যেশ্বর মিত্রের কাছে৷ তার পরে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যাওয়া৷ ততদিনে আকাশবাণীর নিয়মিত শিল্পী তিনি৷ বিদেশ থেকে ফিরে একের পরে এক প্রস্তাব আসতে লাগল রেকর্ড প্রকাশ করার৷ মেগাফোন, এইচএমভি-র পাশাপাশি প্রস্তাব করল হিন্দুস্থান রেকর্ডও৷ হিন্দুস্থানের জন্যই মূলত রবীন্দ্রসঙ্গীতের শিল্পী চিত্রলেখা রেকর্ড করলেন অতুলপ্রসাদ সেন আর দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান৷ আর গাইতে গাইতে দেখলেন, অতুলপ্রসাদের কয়েকটি গানের সঙ্গে মিলে যায় কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর৷ চিত্রলেখার চারটি অতুলপ্রসাদের গান ও চারটি দ্বিজেন্দ্রগীতি নিয়ে সম্প্রতি হিন্দুস্থান রেকর্ড থেকে প্রকাশিত হল একটি অ্যালবাম৷ ‘মিলনসভা’ ছাড়াও অ্যালবামে আছে ‘ঝরিছে ঝরঝর’, ‘মোর যে গাঁথা হল না মালা’ বা ‘ওগো দুখী কাঁদিছ কী সুখ লাগি’র মতো অল্পশ্রুত অতুলপ্রসাদের গান৷ আর ‘হেসে নাও এ দুদিন বই ত নয়’, ‘বসিয়া বিজনবনে’-র মতো দ্বিজেন্দ্রগীতিও৷ রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাশাপাশি সমকালের অন্য স্রষ্টাদের গান রেকর্ডের ধারায় উজ্জ্বল হয়ে রইল চিত্রলেখা চৌধুরীর নামও৷

শেষ অঙ্ক

মানুষের মনের অন্ধকার দিকটা নিয়ে ছবি করেছি নিশ্চয়ই, কিন্তু সেটাকে সমাদর করছি না, সেটা থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলছি।’ নিজের প্রথম ছবি নিয়ে বলছিলেন তথাগত বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্য মুক্তি পেল তাঁর ‘শেষ অঙ্ক’, কাহিনি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রহস্য ছবি, টান-টান সাসপেন্স, তদন্ত, অপরাধী খুঁজে বের করা, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দর্শককে সিটের হাতল চেপে বসিয়ে রাখা— সবই আছে, কিন্তু কখনওই নিছক থ্রিলার করতে চাননি তথাগত। ‘মানবিক দিকটার ওপরই জোর দিতে চেয়েছি। সামাজিক কারণেই তো এ ধরনের অপরাধপ্রবণতা তৈরি হয়, সে মনস্তত্ত্ব খুঁড়ে অপরাধীর প্রতি সমবেদনাই তৈরি হবে দর্শকের।’ ১৯৬৩-র ছবি ‘শেষ অঙ্ক’ দেখে যেমনটা হয়েছিল উত্তমকুমারের প্রতি? ‘হ্যাঁ, ওটুকুই, আর নামে মিল, তা ছাড়া আর কোনও মিল নেই আমার ছবির সঙ্গে।’ ছোট পর্দার জন্য আগে যে সব টেলি-ছবি করেছেন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে, সেগুলির মধ্যেও নিজের পছন্দের ছবিটি ছিল ‘রোমান্টিক থ্রিলার’, কবুল করেন তথাগত, ‘মার্ডার মিস্ট্রি-র মধ্যে দিয়ে মানুষের গহন মনটাকে ছোঁয়া যায়।’ ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র, ছেলেবেলা থেকেই ছবি দেখায় আসক্তি। আশির দশকের শেষ থেকে ফিল্ম সোসাইটির সূত্রে দেশ-দুনিয়ার তাবড় পরিচালকদের ছবি দেখা, একই সঙ্গে সত্যজিৎ-সহ বিশিষ্ট বাঙালি পরিচালকের ছবি দেখে প্রাণিত হওয়া। নতুন শতকের শুরুতে পাকাপাকি পরিচালনার কাজে আসা। তাঁর এ-ছবির বিভিন্ন চরিত্রে দেবলীনা-পার্নো-জুন-শংকর-সমদর্শীর সঙ্গে দীপঙ্কর দে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE