Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

,,,

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

থিম কলকাতা

কল্লোলিনী কলকাতা নিজেই এ বারে পুজোর থিম। হরিদেবপুর বিবেকানন্দ পার্কের মণ্ডপ সাজছে টালিগঞ্জ, শ্যামবাজার বা কালীঘাটের চিত্র দিয়ে। রয়েছে বিভিন্ন মূর্তির ছবি, লিথোয় পুরনো কলকাতা। ‘তিলোত্তমা’ ভাবনাটি শিল্পী পার্থ দাশগুপ্তের। ‘কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে’ এই পঙক্তি মনে রেখে ত্রিমাত্রিক ছবি আঁকছেন ট্রেসি লি স্টাম। মণ্ডপের ভেতরে গিয়ে মনে হবে মেঝে যেন চলে গেছে অন্তত সত্তর ফুট মাটির নীচে (বাঁ দিকে)। ট্রেসির জাদুকাঠির ছোঁয়ায় সেখান থেকে উঠে এসেছে উত্তমকুমারের মূর্তি, আর হুস করে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে হলুদ ট্যাক্সি। বাকিটা ফ্যান্টাসি! সঙ্গে শব্দে থাকছে শহরের হইচই, খেলার মাঠের চিত্‌কার, উত্তমকুমারের ডায়ালগ। ট্রেসির সঙ্গে রয়েছেন দীপ্তীশ, শান্তনু, সোমাগ্নিরা।

কলকাতার পুজোর সংস্কৃতিতে আপ্লুত ট্রেসি। অন্য দিকে শিল্পী পরেশ মাইতির শিল্পকর্ম দেখা যাবে বকুলবাগান সর্বজনীনে। সেই ১৯৭৫-এ প্রথম শিল্পী নীরদ মজুমদারকে দিয়ে মূর্তি গড়িয়ে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল বকুলবাগান। তার পর একে একে অন্য শিল্পীরা। এ বারে পোড়ামাটির মন্দিরে সোনার মূর্তি নিয়ে ‘পৌরাণিক দুর্গা’র ভাবনায় মেতে রয়েছেন পরেশ মাইতি (ডান দিকে), প্রতিমা নির্মাণে সঙ্গে রয়েছেন অরুণ পাল। ওদিকে ওড়িশার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে বেহালা ক্লাবে এসেছেন সাউরা-শিল্পীরা। রূপক বসুর ভাবনায় ‘আটপৌরে উপকথা’র থিমে এখানে কাজ করছেন ময়ূরভঞ্জ ও কেওঞ্ঝরের শিল্পী মানসরঞ্জন নায়েক এবং দীনবন্ধু সরেন। প্রতিমা গড়েছেন সৌমেন পাল।

ছবি: গোপী দে সরকার।

শতবর্ষ

আদিসপ্তগ্রাম থেকে রুজির টানে কানাইলাল ধর এসেছিলেন কলকাতায়। চিনাবাজারে কাচের দোকানে কাজ শুরু, পরে নিজের যোগ্যতায় কাচ ও টিনের ব্যবসায় সাফল্য পান। আহিরিটোলা ধরবাড়ির দুর্গাপুজোর সূচনা তাঁর হাতেই। একমাত্র ছেলে শরত্‌চন্দ্রও ছিলেন সফল ব্যবসায়ী, তাঁর আমলে পুজোর রমরমা বাড়ে। চতুর্থ প্রজন্মের হাতে পুজোর শতবর্ষে নানা পরিকল্পনা রয়েছে। একচালার প্রতিমা, শিল্পী কুমোরটুলির শ্যামল পাল। প্রতিমাশিল্পী, পুরোহিত বংশপরম্পরায় এই পুজোয় যুক্ত।

পুজোর বিধি

দুর্গাপুজোয় প্রথমে দেবীকে জাগাতে হয়। তাই বোধন। দেবীর মহাস্নানে ব্যবহার করা হয় সপ্তনদীর জল থেকে শিশিরকণা। দুর্গাপুজো সংক্রান্ত এমন নানা তথ্য নিয়ে নবকুমার ভট্টাচার্য লিখেছেন দুর্গোত্‌সব: বোধন থেকে বিসর্জন (নিস্তারিণী চতুষ্পাঠী, ২০০.০০)। কলকাতার বনেদি বাড়িতে যে পুজো প্রশিক্ষণ শিবির হয়, তার পুরোধা নবকুমারবাবু। দুর্গাপুজো নিয়ে গবেষণা করেছেন।

অকাল বোধন, নবপত্রিকা, পুজোয় বেশ্যাদ্বার মৃত্তিকা, কুমারী পুজো, সন্ধিপুজো এ সবের তাত্‌পর্য, রীতিনীতি এবং শাস্ত্রবিধি মেনে কী ভাবে বোধন থেকে বিসর্জন হবে, সে সব তথ্য বইটিকে সমৃদ্ধ করেছে। রয়েছে নানা প্রাসঙ্গিক গল্প। পুরনো কলকাতায় পুজোর নানা তথ্য আলাদা মাত্রা যোগ করেছে।

পতিতপাবনী

খিদিরপুর ভূকৈলাস রাজবাড়িতে ‘পতিতপাবনী’র প্রতিষ্ঠা করেন জয়নারায়ণ ঘোষাল, ১৭৮২ সালে। ঘোড়ামুখো সিংহের উপর অসুরনিধনরত অষ্টধাতুর দেবীমূর্তি, উচ্চতা প্রায় তিন ফুট। শুধু দুর্গা হিসেবে নয়, কোজাগরি পূর্ণিমায় লক্ষ্মী, অমাবস্যায় কালী, ঝুলন ও জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণরূপে একই মূর্তির পুজো হয়, বিভিন্ন অংশের রদবদল ঘটিয়ে। রাজবাড়ির পুজোয় একদা জাঁকজমকের অন্ত ছিল না, আজ সে সব নেই, তবু বত্রিশ শরিকের পুজো টিকে আছে। মন্দির সংস্কার হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই, ছিমছাম হয়েছে পরিবেশ। তবে মন্দির সংলগ্ন এলাকা দ্রুত বদলে যাচ্ছে। সাধক রামপ্রসাদ যে বাড়িকে মর্ত্যের কৈলাস বলেছিলেন, নিত্যনতুন গজিয়ে ওঠা বাড়িঘর তাকে গ্রাস করে নিচ্ছে।

ট্রাম-সংগ্রহ

কলকাতার ইতিহাসের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে ট্রাম। কিছুদিন আগেই এই ইতিহাস উদ্ধারে উদ্যোগী হয়েছিল ট্রাম কর্তৃপক্ষ, জানিয়েছিলেন সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য। বিভিন্ন ট্রামডিপো ও অন্যান্য সূত্র থেকে সম্প্রতি উদ্ধার হয়েছে পুরনো ছবি, টিকিট, বহু মূল্যবান নথি। এ থেকেই বাছাই করা নিদর্শন নিয়ে ১৯৩৮ সালের একটি ট্রামের মধ্যে সাজানো হয়েছে ছোট প্রদর্শশালা। ট্রামের ইতিহাসের সঙ্গেই স্থান পেয়েছে চারটি ট্রামের মডেল, দুষ্প্রাপ্য ছবি, টিকিট, পাঞ্চিং মেশিন, ব্যাজ এবং উর্দি। পরিকল্পনায় আছে কলকাতার ট্রাম নিয়ে স্যুভেনির। অন্য কামরায় থাকছে একটি সুসজ্জিত কাফেটেরিয়া। শারদোত্‌সবের প্রাক্কালে খুলে দেওয়া হবে ‘স্মরণিকা’র দরজা, এসপ্ল্যানেড ট্রাম ডিপোয় আজ বিকেল ৪ টেয়।

আঞ্চলিক ছবি

আঞ্চলিক ছবিই যে প্রকৃত ভারতীয় ছবি, এ তো আমরা প্রায় ভুলতে বসেছি। ইন্ডাস্ট্রি-শাসিত ফর্মুলা-ফিল্মের বাইরে এখন নিরন্তর নানা প্রদেশের পরিচালকেরা তাঁদের শিকড়-সংস্কৃতি নিয়ে ছবি করে চলেছেন, তার খবর কতটুকুই বা রাখি আমরা? এ ব্যাপারে সিনেমা-রসিক বাঙালিকে ওয়াকিবহাল করতেই মূলত রত্নোত্তমা সেনগুপ্তের উদ্যোগে এক আঞ্চলিক ছবির উত্‌সব আয়োজন করেছিল নন্দন, ২৬-২৮ সেপ্টেম্বর। ‘ভারতের রাজ্যগুলির ভৌগোলিক সীমারেখা ভেঙে ভাব ও ভাষার বিনিময় করার জন্যেই এ-উত্‌সব’, জানালেন অধিকর্তা যাদব মণ্ডল। বিশিষ্ট পরিচালকদের পুরস্কৃত কোঙ্কনি, গুজরাতি, ওড়িয়া, অসমিয়া, তামিল, মালয়ালম ছবি ছিল এ-উত্‌সবে।

দশভুজা

বাঁকুড়ার গীতা ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় বিকনার গোপাল কর্মকারের। শ্বশুরবাড়িতে শেখেন ডোকরার কাজ। ক্রমে বড় কাজেও দক্ষ হয়ে ওঠেন। স্বামীর মৃত্যুর সময় মেয়ে নবম শ্রেণিতে আর ছেলে কোলে। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে আঁকড়ে ধরেন শিল্পকেই। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় গীতা কর্মকারের নাম এখন সারা বিশ্বে। বাঁকুড়ায় ডোকরা শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব সংস্থা। ছেলেও সঙ্গে কাজ করেন। পেয়েছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার।

দক্ষিণ কলকাতায় রয়েছে তাঁর শিল্পকর্ম রাখবার স্থান। ওঁর দুর্গামূর্তিরও (সঙ্গের ছবি) চাহিদা ভালই। সম্প্রতি আলিপুর সিংহানিয়া স্কুলে দাবা প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বসেছিল লোকশিল্পের প্রদর্শনী। সেখানে আজকের দশভুজাদের মধ্যে ছিলেন পটে মণিমালা চিত্রকর, খেজুরপাতার কাজ নিয়ে রাসিনা বেওয়া, ডোকরায় গীতা কর্মকার, তালপাতার সিপাই নিয়ে মদনমোহন দত্ত ও আরও অনেকে।

পরিযায়ী

পলকা মেঘের জলপাহাড়ে... শুনলেই কেমন মন পালাই-পালাই, পুজোয় দমবন্ধ শহর ছেড়ে দূরে কোথাও দূরে দূরে। যারা পরিযায়ী-এর (সম্পা: হীরক নন্দী) শারদ সংখ্যায় প্রথম পদ্য ওটি, রাজীব চক্রবর্তীর লেখা। প্রতি বারের মতো এ বারেও ভ্রমণপত্রটিতে পায়ের-তলায়-সর্ষে লাগানো এক গুচ্ছ গদ্য, সঙ্গে চোখজুড়নো সব ছবি। কেদার থেকে কিলিমানজারোর চূড়া, যেন গোটা দুনিয়া কড়া নাড়ছে দরজায়। সৌমিত্র দত্তের ছবির সঙ্গে কমল চক্রবর্তীর লেখা ‘মুটা’, রাঁচি থেকে ৩৬ কিমি, ‘চাঁদের মাখামাখি নির্জনতা’। বিজিত্‌ বসুর ‘ঢুন্ডুর দেশে’, অমিতাভ ঘোষের ‘পাতালকোট’, দেবাশীষ দেবের লেখা ও আঁকায় ‘শীতের কাশ্মীর’, লোপামুদ্রা তালুকদারের ‘মধ্য এশিয়ার সিল্করুটে’। ভ্রমণপ্রিয় পাঠকের মনের মতো।

দুই পৃথিবী

ছ’ভাই চার বোনের মধ্যে পঞ্চম পশুপতি রুদ্রপাল। ছোটবেলায় মৃত্‌শিল্পে হাতেখড়ি বাবা গোবিন্দচন্দ্র পালের কাছে। নতুন কিছু করার তাগিদে কুমোরটুলি এলাকায় ‘ফটো স্টুডিয়ো’তে অনিল চক্রবর্তীর কাছে যাওয়া। কাশী মিত্র ও নিমতলা ঘাটে শবদাহ করতে আসা পরিজনদের ছবি তুলতে ডাক পড়ত সেখানে। অনিলবাবু পশুপতিকে প্রথম ক্যামেরা দিয়ে পাঠান মৃতদেহের ছবি তোলার জন্য। সেই শুরু। পরে ১৯৯৩-এ চিত্রপরিচালক গৌতম হালদারের হাত ধরে মঞ্চ নাটকের ছবি তুলতে যাওয়া। নাটকের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক জগতের বহু ব্যক্তিত্বের ছবি তুলেছেন। ঊনপঞ্চাশ বছরের এই জীবনে ফটোগ্রাফির পাশাপাশি মৃত্‌শিল্পে সমান ভাবে সক্রিয়। এ বারেও পনেরোটা প্রতিমা তৈরি করেছেন।

ওঁদের প্রতিমা

দক্ষিণ বারাসতের সন্ধ্যা পাল ছোট থেকেই হাঁড়িকলসি বানানোর সঙ্গে তার গায়ে নকশা আঁকতেও সিদ্ধহস্ত। ১৯৮০-তে কুমোরটুলির মৃত্‌শিল্পী কানু পালের সঙ্গে বিয়ের পর প্রতিমা গড়ায় ঝোঁক, হাতেখড়ি স্বামীর কাছেই। আড়াই থেকে চার ফুটের মোট বাইশটি মূর্তি এ বার তাঁর হাতে রূপ পেয়েছে (বাঁ দিকের ছবি)। ছোট প্রতিমার এত চাপ থাকায় বড় প্রতিমা তৈরির সুযোগ হচ্ছে না, ঊনষাটের শিল্পীর আক্ষেপ এটাই।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

অন্য দিকে কৃষ্ণনগর গোয়াড়ি ষষ্ঠীতলার মায়ারানি পাল ছোটবেলা থেকেই মাটির ছোট ছোট পুতুল, ফল আর নানা জিনিস বানাতে পারতেন। শিল্পী দুলালচন্দ্র পালের সঙ্গে বিয়ের সূত্রে কুমোরটুলিতে। স্বামীকে সাহায্য করতে করতেই ছোট মূর্তি গড়া শুরু। সেই মূর্তি বিক্রি করেই চার মেয়ের বিয়ের গয়নার জোগাড় করেছেন তিনি। পঁয়ষট্টিতে শরীর অশক্ত হয়ে পড়ছে, তবু এ বারেও পাঁচটি ছোট মূর্তি গড়েছেন (ডান দিকে)। ‘কুমোরটুলিতে না এলে জীবনে অনেক কিছু না পাওয়া থেকে যেত’, দু’জনেই একমত।

মাটির কাছাকাছি

কলকাতা আমার খুব প্রিয় শহর। আমার নিজের বাসভূমির মতোই প্রিয়। এর আগেও কয়েক বার এসেছি, এ বারেও এসে একই রকম ভাল লাগল। মুম্বই বা দিল্লির চেয়ে কলকাতা অনেক বেশি আমার কাছের শহর।’ সদ্য আশ্বিনের এক সান্ধ্য আড্ডায় বলছিলেন হিমাংশুশেখর খাটুয়া। ভুবনেশ্বর নিবাসী হিমাংশু ওড়িশার বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার। ফিল্ম-টিভি-মিডিয়া কমিউনিকেশন সংক্রান্ত শিক্ষকতার কাজে প্রায়ই তাঁকে ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয়, সেই সূত্রেই কলকাতার সঙ্গে আত্মীয়তা। তাঁর প্রথম ছবি ‘শূন্য স্বরূপ’-এই জিতে নিয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। তারপর ‘কথান্তর’ ও ‘মাটির বন্ধন’, সে দু’টি ছবিও একই ভাবে জাতীয় স্তরে পুরস্কৃত।

শুধু এ দেশে নয়, আন্তর্জাতিক নানা ফিল্মোত্‌সবে নিত্য আমন্ত্রিত তিনি। ইতিমধ্যে শিশুশিক্ষা, কুষ্ঠরোগ থেকে শুরু করে নানান সামাজিক সমস্যা নিয়ে প্রামাণ্যচিত্রও করেছেন। দীর্ঘকাল যুক্ত ওড়িশার ফিল্ম সোসাইটি আন্দোলনে। সাম্প্রতিক ছবি ‘ক্রান্তিধারা’, স্বাধিকারের প্রশ্নে পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় মেয়েদের নেতৃত্ব ওড়িশার নারী উন্নয়নের ব্যাপারে কতটা সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে, এই নিয়েই ছবি। ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ-এর সহ-সভাপতি প্রেমেন্দ্র মজুমদারের উদ্যোগে ছবিটি দেখানোর বন্দোবস্ত হয়েছিল কলকাতায়। দেখার পর দুই প্রজন্মের দুই চলচ্চিত্রকার বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত ও শেখর দাশ জানালেন ‘ছবিটি খুবই মাটির কাছাকাছি।’ ভুবনেশ্বরের যে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসূত্রে যুক্ত এখন হিমাংশু, ‘সেখানে নিয়মিত জনজাতি-শিশুদের সিনেমা শেখাই’, জানালেন তিনি।

কথাকার

দেবেশ রায়ের বরিশালের যোগেন মণ্ডল সম্পর্কে শঙ্খ ঘোষ: ‘এখনও পর্যন্ত ঐতিহাসিক ওই মহাগ্রন্থের পূর্ণ সমাদর হতে পেরেছে বলে আমার মনে হয় না, আমাদের স্বাধীনতা-ইতিহাস-পর্বের মস্ত এক উপেক্ষিত অধ্যায় গাঁথা হয়ে আছে এখানে।... এখানেও আছে ঔপন্যাসিকের ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে এক ‘অপর’-এর সন্ধান। ’ এই লেখাতেই ফুটে ওঠেন নিঃসঙ্গ প্রান্তিক মানুষের কথাকার দেবেশ রায়। তাঁকে নিয়ে ‘কঙ্ক’ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যার সম্পাদকরা জানাচ্ছেন, দেবেশ ‘‘যে-বিচিত্র আখ্যান পরিকল্পনা করেন, গদ্যভাষার যে নির্জন সৌন্দর্য আবিষ্কার করেন, দুই বাংলা শীর্ষ সারস্বতেরা, সে-বিস্ময়ের কথাই বলেছেন।’’ অশোক সেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় সৌরীন ভট্টাচার্য অনিরুদ্ধ লাহিড়ী রামকুমার মুখোপাধ্যায় সুমন মুখোপাধ্যায় প্রমুখর আলোচনায় দেবেশের সেই বিস্ময়কর শিল্পরীতি। বন্ধু অরুণ সেনের মন্তব্য ‘দৈনন্দিন কাজকর্মে যাঁর সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি চলেছি, তিনিই আড়ালে বা বিরলে এই সৃজনের অসামান্য গভীরতায় কীভাবে ডুবে থাকতে পারেন তা ভাবতে গেলে হতবাক হতে হয়।’ সমর চৌধুরী লিখেছেন ‘রাজনৈতিক’ দেবেশকে নিয়ে, আর ‘সম্পাদক’ দেবেশকে নিয়ে আফসার আমেদ। তাঁকে নিয়ে লেখার তালিকা সন্দীপ দত্তের। অসম্ভব পরিশ্রমী সমরেশ রায়ের কলমে তাঁর যাবতীয় লেখার হদিশ। সঙ্গে দেবেশের অসামান্য ‘কথোয়ালি’: সবই অতিথি সম্পাদক গৌতম সেনগুপ্তের হাতযশ। তবে ৭৮-এর এই মানুষটির একটি জীবনপঞ্জি এখানে প্রত্যাশিত ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kolkatar karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE