Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

আমায় বোলো না গাহিতে বোলো না’— রবীন্দ্রনাথের গানটা মনে পড়ে গিয়েছিল গৌতম ঘোষের। ‘শঙ্খচিল’, নতুন ছবি তৈরির সময় যখন তাঁর স্মৃতিতে অবিরত ঘাই মেরে যাচ্ছিল দেশভাগ, তখনই গানটা ধুয়োর মতো ফিরে ফিরে এল, বুনে দিলেন ছবিতে: ‘এ যে নয়নের জল, হতাশের শ্বাস, কলঙ্কের কথা, দরিদ্রের আশ,/ এ যে বুক-ফাটা দুখে গুমরিছে বুকে গভীর মরমবেদনা।’

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৬ ০০:৩০
Share: Save:

যে মুক্ত পাখি দুই দেশেই উড়ে বেড়ায়

আমায় বোলো না গাহিতে বোলো না’— রবীন্দ্রনাথের গানটা মনে পড়ে গিয়েছিল গৌতম ঘোষের। ‘শঙ্খচিল’, নতুন ছবি তৈরির সময় যখন তাঁর স্মৃতিতে অবিরত ঘাই মেরে যাচ্ছিল দেশভাগ, তখনই গানটা ধুয়োর মতো ফিরে ফিরে এল, বুনে দিলেন ছবিতে: ‘এ যে নয়নের জল, হতাশের শ্বাস, কলঙ্কের কথা, দরিদ্রের আশ,/ এ যে বুক-ফাটা দুখে গুমরিছে বুকে গভীর মরমবেদনা।’ বাকরুদ্ধ স্তব্ধতা নেমে এসেছিল দেশভাগের পর, সীমান্ত পেরনো যায় না, শুধু স্মৃতিতে ফেরা যায়। ‘এই স্মৃতি নিয়েই আমার ছবি, দেশভাগের স্মৃতি।’ বলে চলেন গৌতম, ‘ব্রিটিশ রাজ, মুসলিম লিগ আর কংগ্রেস মিলে ভাগ করে ফেলল দেশটাকে। অথচ বাঙালির মন, ভাষা, সংস্কৃতিতে কোনও সীমানা নেই। সেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ক্ষমতার রাজনীতি দিয়ে দু’টুকরো করে ফেলা হল।’ গৌতমের ছবিতে, ওপার বাংলা ওরফে বাংলাদেশের সীমান্তবাসী শিক্ষক বাদল তার মেয়ে রূপসাকে গল্প বলতে-বলতে সেই দিনগুলোয় ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ‘এই সময়ের ছবি, কিন্তু বারে বারে স্মৃতিতে ফিরে না গেলে ইতিহাসটাকে ভুলে থাকবে নতুন প্রজন্ম, তাদের তো দুঃসহ অতীতটুকু মনে করিয়ে দেওয়া দরকার।’ পাশাপাশি পরিচালক স্বপ্নও বুনতে থাকেন... বাদল তার মেয়ে রূপসাকে শঙ্খচিল চেনাতে থাকে, যে উড়ন্ত মুক্ত পাখি দু’দেশেই উড়ে বেড়ায়, সীমান্ত মানে না। নদী, মাঠ, জল— সবই এক রকম, কখনও শঙ্খচিল উড়ে গেল ও-বাংলায়, আবার উড়ে এল এ-বাংলায়। ‘শঙ্খচিল আমার ছবিতে রূপক। জীবনানন্দ দাশের শঙ্খচিল: ‘আবার আসিব ফিরে...’, অবাধ সঞ্চরণে সীমান্ত পেরনো যাবে ভারত-বাংলাদেশের, যেমন যায় ইউরোপে, যেমন যায় ভারত-নেপালেও। এমন একটা স্বপ্ন নিয়েই আমার এ-ছবি করা।’ গৌতমের ‘শঙ্খচিল’-এ প্রসেনজিতের অভিনয়ে নতুন মোড়, স্ত্রী লায়লার চরিত্রে বাংলাদেশের কুসুম সিকদার, মেয়ে সাঁঝবাতি, সেও ঢাকার। দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনা। গৌতমের সহ-কাহিনিকার সায়ন্তনী পূততূণ্ড। পরিচালক-পুত্র ঈশান ঘোষের প্রথম সিনেমাটোগ্রাফি, অবশ্যই গৌতমের তত্ত্বাবধানে, সঙ্গীতও তাঁর। নববর্ষে মুক্তি পাচ্ছে কলকাতায়। সঙ্গের ছবিতে প্রসেনজিৎ ও সাঁঝবাতি।

হুসেন ১০০

এই শহরে এলেই তিনি অন্য মানুষ! আজাদ হিন্দ ধাবা বা আলোকচিত্রী সুব্রত মিত্রের বাড়ির দেওয়াল— এমন নানা জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে শিল্পীর চিত্রস্বাক্ষর। মকবুল ফিদা হুসেন বাংলায় হয়েছিলেন ‘ছবিদাস’। মুম্বইয়ের রাজপথে সিনেমার পোস্টার হোর্ডিং আঁকা থেকে বিশ্বের দরবারে— পথটা খুব সহজ ছিল না। মুম্বইয়ে জন্ম ১৯১৫-র ১৭ সেপ্টেম্বর। সম্প্রতি তাঁর শতবর্ষ অতিক্রান্ত হল। তারই স্মরণে রিফ্লেকশন অফ অ্যানাদার ডে, গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ, থার্ড আই, সোসাইটি অফ কনটেম্পোরারি আর্টিস্টস, ক্যালকাটা পেন্টার, কেমোল্ড, মঁমার্ত, অ্যাকাডেমি ও আরও কিছু সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ৯-১২ এপ্রিল অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস-এ আয়োজিত হয়েছে ‘হুসেন ১০০’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। শিল্পানুরাগী ও সংগ্রাহক গণেশপ্রতাপ সিংহের কথায়, ‘অনেকগুলি দৃষ্টিকোণ থেকে এই অনুষ্ঠানে দেখা হবে শিল্পীর সৃষ্টিকে।’ ৯ এপ্রিল মুখোশে একশো হুসেনের পদযাত্রা এবং অ্যাকাডেমি চত্বরে বৃক্ষচারা রোপণের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা। দেখানো হবে ‘ভিশন ২০ সেঞ্চুরি’, পরে আলোচনায় পি এম ভার্গব। মূল প্রদর্শনীতে থাকছে হুসেনের ছাপাই ছবি, ওঁকে নিয়ে আর ওঁর লেখা, ছবি ও ইনস্টলেশন। বিভিন্ন দিন পার্থ রায়ের পরিকল্পনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেখানো হবে ‘থ্রু দি আইজ অফ আ পেন্টার’ ও ‘গজগামিনী’, পরে সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের আলোচনা। প্রকাশ পাবে একটি স্মারক পুস্তিকা। ১৩ এপ্রিলের সমাপ্তি অনুষ্ঠান গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজে। সঙ্গের ছবি প্রদর্শনী থেকে।

প্রথাভাঙা প্রেম

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বেশ কিছু গল্প, উপন্যাস, নাটক ও নৃত্যনাট্যে দেখা যায় প্রেম সম্পর্কে নারীর অবস্থান প্রচলিত পুরুষবাদী ধারণার একেবারেই বিপরীতে। এই মেয়েরা কেউই প্রেমাস্পদ পুরুষের প্রতি আত্মসমর্পিত নয়। এখানে নারীই ‘প্রেমিক’ হয়ে ওঠে, সর্বোপরি তারাই মান্যতা পায়। এই উপলব্ধি থেকেই অন্য আঙ্গিকে ঈপ্সিতা হালদারের গ্রন্থনায় পৃথা চট্টোপাধ্যায় ও ঊষসী চক্রবর্তীর নতুন অ্যালবাম ‘রবীন্দ্রসাহিত্য ও সংগীতে প্রথাভাঙা প্রেম’ (বিহান মিউজিক), ৫ এপ্রিল দুপুর ৩টেয় প্রেস ক্লাবে প্রকাশ করবেন শতরূপা সান্যাল ও সব্যসাচী দেব।

দুই শিল্পী

রবীন্দ্রনাথের কবিতা ‘দিনের শেষে ঘুমের দেশে’ এবং আরও কয়েকটি গানের তিনিই একমাত্র গায়ক যিনি তাতে নিজের সুর আরোপ করার সৌভাগ্য পেয়েছিলেন। সেই বিশিষ্ট গায়ক, শিক্ষক, পরিচালক, অভিনেতা পঙ্কজ মল্লিককে স্মরণ করে ‘আদি থেকে অনাদি’ শীর্ষকে আই সি সি আর-এ ৮ ও ৯ এপ্রিল (বিকেল ৩-৮টা) এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ‘পঙ্কজ মল্লিক মিউজিক অ্যান্ড আর্ট ফাউন্ডেশন’। উদ্বোধন করবেন বাণী বসু। শিল্প এবং সাহিত্যের বিবর্তন নিয়ে বলবেন ঊর্মিমালা বসু, পঙ্কজ সাহা, অনিন্দিতা কাজি, পৌলোমী চট্টোপাধ্যায়, সেঁজুতি মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। থাকবে পুরনো ছবি দেখা, গান শোনা। অন্য দিকে, জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের সারা জীবনের সৃষ্টিকে ফিরে দেখতে রবীন্দ্র সদনে ৯ এপ্রিল সন্ধে ৬টায় ‘জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় ও গুরু-শিষ্য পরম্পরা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে লালন আকাদেমি। অনুষ্ঠানে সংগীেত বনশ্রী সেনগুপ্ত, হৈমন্তী শুক্ল, শ্রীকান্ত আচার্য, অরুন্ধতী হোমচৌধুরী, মনোময় ভট্টাচার্য, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম ঘোষাল, লোপামুদ্রা মিত্র, রাঘব চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

নেপথ্য নায়ক

জন্ম ১৯৫৪, ২২ জানুয়ারি। বাবা গৌতম মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে থিয়েটারে প্রবেশ মাত্র সাত-আট বছর বয়সে, তারপর বহু নাটকে অভিনয়। কিন্তু প্রাণের টান অভিনয় নয়, থিয়েটারের সাংগঠনিক কাজ। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে ‘রঙরূপ’ নাট্যদলের নেপথ্য নায়ক তিনি। থিয়েটারের যে-কোনও কাজে অক্লান্ত। সর্বক্ষণের থিয়েটারকর্মী। থিয়েটারকে ভালবেসে নির্দ্বিধায় ছেড়েছেন লোভনীয় চাকরি। শুধু নিজের রঙরূপ নয়, শহর-মফসস্‌ল যে-কোনও জায়গার থিয়েটারের মানুষ যে-কোনও রকম সমস্যায় পাশে পেয়েছেন তাঁকে। নেপথ্য সাধনার জন্য ২০১৫-য় পান নান্দীকার সম্মাননা। সেই শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, সবার ‘মিন্টুদা’ চলে গেলেন সম্প্রতি। তাঁর স্মরণসভা ৯ এপ্রিল, সকাল ১০টায়, অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে।

তোমার আমি

একজন তিন প্রজন্মের পড়ুয়া, অন্যজন সদ্য আগত বইয়ের জগতে। এমনই দুই চরিত্র অজিত ও মায়া তাঁদের বইব্যবসার ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে অন্য এক বোধে উত্তীর্ণ হয়। গণকৃষ্টি-র নতুন নাটক ‘তোমার আমি’ এগিয়েছে এ ভাবেই। সত্তর দশকের শেষ দিকে জন্ম নেওয়া ‘গণকৃষ্টি’ এ যাবৎ পঁচিশটিরও বেশি নাটক প্রযোজনা-অভিনয় করেছে। তারাই ৫ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায় অ্যাকাডেমিতে স্লোভেনিয়ার নাট্যকার এভাল্ড ফ্লিশার-এর নাটক ‘টেক মি ইনটু ইয়োর হ্যান্ডস’-এর বাংলা রূপান্তর ‘তোমার আমি’ মঞ্চস্থ করছে। অভিনয়ে দেবশঙ্কর হালদার ও বিন্দিয়া ঘোষ। সংগীতে গৌতম ঘোষ। রূপান্তর ও নির্দেশনায় অমিতাভ দত্ত। এর আগে এই নাট্যকারেরই ‘এখন আন্তিগোনে’ ও ‘শকুন্তলা’ মঞ্চস্থ করেছিল গণকৃষ্টি।

রূপকথা

বাবার কাছে রূপকথার গল্প শোনা, আবার বড় হয়ে শিল্পের প্রথম পাঠও তাঁরই কাছে। সেই রূপকথাই এবারে মূর্ত হয়েছে ভাস্কর গোপীনাথ রায়ের কন্যা মৌসুমীর ভাস্কর্যে। কলকাতার একটি স্কুলে কর্মরত মৌসুমীর কাজ ইতিমধ্যেই নানা প্রদর্শনীতে প্রশংসা কুড়িয়েছে। এবারে তাঁর একক সেরামিক ভাস্কর্যের প্রদর্শনী অ্যাকাডেমিতে (সঙ্গে তারই ছবি)। অন্য দিকে শিল্পী সমীর কুণ্ডু অনেকদিন ধরেই তাঁর ছবির বিষয় হিসেবে কাজ করছেন বাঘ নিয়ে। তাঁর সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে অ্যাকাডেমিতেই একক প্রদর্শনী ‘বাঘ-আবেগ’। দুটি প্রদর্শনীই চলবে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত, ৩-৮ টা প্রতিদিন।

প্রসারিত

রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৭৬ সালে ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’ বা ‘ভারত সভা’ প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এর গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এ হেন প্রাচীন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনটি কলকাতায় আবদ্ধ না থেকে সম্প্রতি দিল্লিতে ‘সামাজিক ন্যায় ও নাগরিক সমাজের ভূমিকা’ বিষয়ে এক আলোচনা সভার অয়োজন করেছিল। প্রেস ক্লাব অব ইন্ডিয়ার সভাপতি রাহুল জালালি এটি উদ্বোধন করেন। ‘ভারত সভা’র সভাপতি সত্যব্রত চৌধুরী বলেন, ‘সচেতন ও সক্রিয় নাগরিক সমাজই দেশকে নানা বঞ্চনা ও কুশাসনের হাত থেকে মুক্ত করতে পারে।’

দুঃসাহসিক

মাত্র তিন বছরের অভিজ্ঞতা। কিন্তু আমেরিকার আল-কাপিতান পাহাড়ের দুর্মর আকর্ষণে তা যেন ভুলেই গিয়েছিলেন এমিলি হারিংটন। টানা ছ’দিনের চেষ্টায় পৌঁছে গিয়েছিলেন শিখরে। জন গ্লাসবার্গের ১৬ মিনিটের ছবি ‘গোল্ডেন গেট’-এ ধরা পড়েছে এমিলির সেই অভিযানের কথা। এ সব দুঃসাহসিক অভিযানের মাঝে দু’মিনিটের ক্ষণিক ফুরসতের খোঁজ মিলবে জাস্টিন বোগারদাসের ছবি ‘নেচার আরএক্স’-এ (সঙ্গের ছবি)। অভিযান কেন্দ্রিক এমনই ন’টি স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রের দেখা মিলবে ৯ এপ্রিল ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে। কানাডার আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ‘বাঁফ মাউন্টেন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ থেকে বাছাই করে বেশ কয়েকটি ছবি প্রায় কুড়িটি দেশের ৩০৫টি শহরে দেখানো হয়। এ বার কলকাতায় ‘হিমালয়ান ক্লাব’-এর সহযোগিতায় সেই বিরল অভিজ্ঞতার স্বাদ পাওয়া যাবে। শো শুরু হবে বিকেল পাঁচটায়। টিকিটের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে স্থানীয় সহযোগী ‘ড্রিম ওয়ান্ডারলাস্ট’-এর ওয়েবসাইটে (www.dreamwanderlust.com)।

সংরক্ষক

১৯৬৪, ন্যাশনাল ফিল্ম আর্কাইভ-এর প্রতিষ্ঠার বছরটিতেই যোগ দিয়েছিলেন পরমেশ কৃষ্ণন নায়ার। পি কে নায়ার নামেই কেরলের মানুষটিকে চিনত ফিল্ম-পাগল লোকজন। সিনেমার আন্তর্জাতিক ও দেশীয় দিকপালদের ছবি এ দেশের সর্বস্তরে চেনানোর দা+য়-তুলে-নেওয়া অগ্রগণ্যদের মধ্যে ছিলেন তিনি। ভাল ছবির সংগ্রাহক ও সংরক্ষক হয়েই কাটিয়েছেন গোটা জীবন। ’৮২-তে আর্কাইভের অধিকর্তা। পুণেতেই থাকতেন অবসরের পর, অসুস্থতা সত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ ফিল্মোৎসবে আসতেন। গত মাসের গোড়ায় চলে গেলেন। নন্দন তাঁকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে ৭ এপ্রিল বিকেল ৫টায়। দেখানো হবে তাঁর উপর তৈরি শিবেন্দ্র সিংহ দুঙ্গারপুরের ছবি ‘সেলুলয়েড ম্যান’, আর বলবেন তাঁকে নিয়ে যুধাজিৎ সরকার ও বীরেন দাশশর্মা।

ভাষান্তরে

শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন, ‘পঁয়ত্রিশ বছর ধরে শান্তিনিকেতনে আছেন এই মানুষটি, মার্টিন কেম্পশেন।... রবীন্দ্রনাথকে তিনি পড়তে চেয়েছেন— পড়েছেন— বাংলায়, কেননা তিনি বুঝেছেন ইংরেজি-সূত্রে তাঁকে জানবার অপূর্ণতার কথা, সর্বার্থে অপূর্ণতা। তাই তিনি তাঁর স্বভাষীদের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছেন বাংলা-থেকে-অনুবাদ করা এক যথার্থ রবীন্দ্রনাথকে।’ মার্টিন কেম্পশেন রবীন্দ্র-গবেষক, সাংবাদিক ও অনুবাদক। জার্মান মনীষীদের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের যোগাযোগের তথ্যপ্রমাণ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ টেগোর অ্যান্ড জার্মানি: আ ডকুমেন্টেশন বইটির জন্য ১৯৯২ সালে পান রবীন্দ্র পুরস্কার। রবীন্দ্রনাথ টেগোর: ওয়ান হানড্রেড ইয়ার্স অব গ্লোবাল রিসেপশন (ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসোয়ান) বইটি ইমরে বাংঘা-র সঙ্গে যৌথ ভাবে সম্পাদনা করেছেন। জন্ম ১৯৪৮ সালে। ভিয়েনায় জার্মান সাহিত্যে পিএইচ ডি শেষ করে পাড়ি দেন ভারতে। তিন বছর ইনস্টিটিউট অব কালচারে (গোলপার্ক) জার্মান ভাষায় শিক্ষকতা করেন। এর পর চেন্নাইয়ে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা। ফের শান্তিনিকেতনে, দর্শন ও ধর্ম বিভাগে পিএইচ ডি-র জন্য। বাংলা শিখে প্রথমেই হাত দেন শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত জার্মান ভাষায় অনুবাদ করতে। রাবীন্দ্রিক শিক্ষাদর্শে শান্তিনিকেতনের অদূরে ঘোষালডাঙা আর বিষ্ণুবাটি— দুই আদিবাসী গ্রামে স্কুল চালু করেন। তাঁর অনুভবে অনুধ্যানে রবীন্দ্রনাথ (কারিগর) বইটির প্রকাশ ৮ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায় স্টারমার্ক সাউথ সিটি মলে। উপস্থিত থাকবেন লেখক স্বয়ং।

প্রথম একক

সুচিত্রা মিত্র ছিলেন তাঁর ‘গানঠাম্মা’। বাবার হাত ধরে তাঁর কাছে যাওয়া, গুনগুন করে ‘কৃষ্ণকলি’ গাইতে-গাইতে নিজের হাতে আম কেটে খাওয়াতেন, তিনিই তাঁর শিল্পী হয়ে ওঠার আবাল্য প্রেরণা। জানিয়েছেন ঐশিক। শিকাগো থেকে আইনবিদ্যা শিখে এসেও পুরোপুরি শিল্পচর্চায় নিবিষ্ট হয়ে আছেন সংবেদনশীল এই তরুণ। চিত্রকলায় স্বশিক্ষিত, বাঁধা গতে আঁকেন না, নিজের ব্যাকরণ নিজেই তৈরি করে নেন। এ নিয়ে সুচিত্রা মিত্রের স্মৃতিতে ফিরে যাচ্ছিলেন: ‘যখন ছবি আঁকবে, কখনও ইরেজার ব্যবহার করবে না, মুছবে না। ভুল হোক, যত ভুল হবে তত শিখবে, নিজের আঁকার ওপর বিশ্বাস জন্মাবে।— বলতেন গানঠাম্মা। তাঁর শিক্ষাই আমার শিল্পচর্চায় বিশ্বাসের ভিত গড়ে দিয়েছিল।’ আঁকতে অসম্ভব ভালবাসতেন ছেলেবেলা থেকেই, হাতের কাছে যা কিছু পেতেন তার উপরেই এঁকে ফেলতেন, এমনকী দেওয়ালেও আঁকতেন ঐশিক। আঁকার নানা রকম বিষয়: নিসর্গ, জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ, পৌরাণিক চরিত্রও। পুরাণের গল্প নিয়ে ছবির বই পড়তেন ছেলেবেলায়। বিশাল আকারের দুটি কুকুরও আছে তাঁর এখন, তাদের নিয়ে লাইন ড্রইংও করেছেন। ছবির সঙ্গে ছোট ছোট ইংরেজি গদ্যও লেখেন, ওই ছবির সঙ্গেই জড়ানো স্মৃতি নিয়ে। ৯ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায় উইভার্স স্টুডিয়োতে তাঁর প্রথম একক প্রদর্শনী ‘আলো, লালন অ্যান্ড আদার্স’ উদ্বোধন করবেন বীণা ভার্গব, শুভাপ্রসন্ন ও অখিলেশ। থাকবেন শিপ্রা ভট্টাচার্য জয়শ্রী চক্রবর্তী পৌলমী চট্টোপাধ্যায় অরুণিমা চৌধুরী। ১৩ এপ্রিল অবধি, ৪-৮টা। উপস্থাপনায় শৌনক চক্রবর্তী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE