Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

সত্য ডাক্তারের রুখে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। যে ছোট্ট মফস্‌সল শহরটায় তিনি ডাক্তার, সেখানকার জলে দূষণই যে স্থানীয় মানুষজনের চর্মরোগের কারণ, তা তিনি টের পেয়ে গিয়েছিলেন। অথচ ওই জল থেকেই নাকি প্রকল্প তৈরি করে অঞ্চলটাকে পালটে দেবে ম্যাক্স ইন্ডিয়া, বহিরাগত সেই কোম্পানিকে মদত দিচ্ছেন পুরসভার চেয়ারম্যান, তাঁর মুখেই উন্নয়ন-এর বুলি! উন্নয়নের নামে এমন লোক-ঠকানো তো গোটা দেশ জুড়ে, দুনিয়া জুড়ে... এই দুঃসময়কেই স্বপ্নসন্ধানী-র নতুন নাটক ‘দ্রোহকাল’-এ গ্রথিত করেছেন কৌশিক সেন।

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৬ ০০:৪৬
Share: Save:

স্টকম্যান থেকে সত্যবতী সেন

সত্য ডাক্তারের রুখে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। যে ছোট্ট মফস্‌সল শহরটায় তিনি ডাক্তার, সেখানকার জলে দূষণই যে স্থানীয় মানুষজনের চর্মরোগের কারণ, তা তিনি টের পেয়ে গিয়েছিলেন। অথচ ওই জল থেকেই নাকি প্রকল্প তৈরি করে অঞ্চলটাকে পালটে দেবে ম্যাক্স ইন্ডিয়া, বহিরাগত সেই কোম্পানিকে মদত দিচ্ছেন পুরসভার চেয়ারম্যান, তাঁর মুখেই উন্নয়ন-এর বুলি! উন্নয়নের নামে এমন লোক-ঠকানো তো গোটা দেশ জুড়ে, দুনিয়া জুড়ে... এই দুঃসময়কেই স্বপ্নসন্ধানী-র নতুন নাটক ‘দ্রোহকাল’-এ গ্রথিত করেছেন কৌশিক সেন। কারণ, তিনি বিশ্বাস করেন এক দিকে ব্যক্তিমানুষ আর এক দিকে সময়— এই দুই দায়ের ভিতর সংগতি আবিষ্কার করাই এক জন নাট্যনির্দেশকের কাছে শিল্পগত সবচেয়ে জরুরি প্রশ্ন। ‘প্রশ্ন তুলেছি উন্নয়ন নিয়ে গত দশকেও, সেখানেও আশ্রয় ছিলেন ইবসেন। এ বারে তাঁর অ্যান এনিমি অব দ্য পিপ্‌ল-এর আর্থার মিলার কৃত রূপান্তর, রাঢ় বাংলার পটভূমিতে নাটকটি লিখেছেন উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। উন্নয়নের বকলমে অসম বিকাশ, সাধারণ মানুষের প্রতি বঞ্চনা, শাসকের রক্তচক্ষু নিত্য গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে আমাদের। যে জমানাই আসুক, ছবিটা পালটায় না। উন্নয়ন নিয়ে তর্কটা চিরকালীন হয়ে উঠছে...’। কৌশিকের নাটকে ইবসেনের স্টকম্যান— ডাক্তার সত্যবতী সেন, ‘প্রোটাগনিস্ট কেনই শুধু পুরুষ? এক জন মেয়ে চিকিৎসক মানবিকতার প্রশ্নে কী ভাবে ক্রমশই একা হয়ে যেতে থাকেন সংখ্যাগরিষ্ঠের গণতন্ত্রে, তাঁর সেই নিঃসঙ্গতাকেই স্পর্শ করতে চেয়েছি।’ সত্যবতীর একাকিত্ব বা প্রতিবাদের ধরনটাকেও নতুন করে বুনতে হয়েছে কৌশিককে, ‘এখন তো সোশ্যাল মিডিয়া, বড় বড় মিডিয়া চারপাশে, সত্য ডাক্তারের সরব হতে তো বাধা নেই, তবে বাধাটা কোথায়? কেনই বা তার ছেলে তার আদর্শের পথে না হেঁটে আঞ্চলিক শাসকের সঙ্গে হাত মেলায়?’ এর উত্তরই ২৯ মে তপন থিয়েটারে সন্ধে সাড়ে ৬টায়, স্বপ্নসন্ধানী-র ২৫তম জন্মদিনে। আগের দিন সন্ধ্যায় ‘সেই সুমৌলি’ আর শ্যামল সেন স্মৃতি সম্মাননা। সত্যবতীর অভিনয়ে রেশমী, সঙ্গে ঋদ্ধি মোনালিসা ও কৌশিক। সঙ্গের ছবিতে রেশমী ও ঋদ্ধি।

নব সংস্করণ

১৯৬৭ সালে প্রথম প্রকাশিত হলেও, ফরাসি দার্শনিক জাক দেরিদা-র ‘অব গ্রাম্যাটোলজি’ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে ’৭৬ সালে, ইংরেজি অনুবাদের মাধ্যমে। ইউরোপীয় দর্শন ও তাত্ত্বিক ভাবনার ট্র্যাডিশনকেই আমূল বদলে দেওয়া বইটির সফল মূলানুগ অনুবাদ করেন গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক। ইংরেজি অনুবাদগ্রন্থটির চল্লিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশ করেছেন গায়ত্রীরই করা নতুন অনুবাদ-সংস্করণ। বস্তুত, দেরিদার সুদীর্ঘ তাত্ত্বিক উত্তরাধিকারকে মাথায় রেখে এটি এক নব-অনুবাদ। মুখবন্ধ লিখেছেন জুডিথ বাটলার, গায়ত্রীর উত্তরকথনও আছে। এই উপলক্ষে কলকাতার সিগাল বুকস ও ফরাসি দূতাবাস ২৪ মে সন্ধে সাড়ে ছটায় আইসিসিআর-এর সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহে একটি আলোচনার আয়োজন করেছেন। গায়ত্রীর সঙ্গে থাকবেন দিল্লির ‘জুবান বুকস’-এর প্রকাশক ঊর্বশী বুটালিয়া ও প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্যের শিক্ষক বেঞ্জামিন কনিসবি বেয়ার।

অহর্নিশ ২০

‘শহরের নানা জায়গা, নানা ঘটনা সত্যজিৎ যেমনটি লিখেছেন তাঁর হুবহু সাক্ষ্য তো পাওয়া যাচ্ছে বিজ্ঞাপনের পাতায়!’ লিখেছেন কৌশিক মজুমদার। তাঁর ‘সত্যজিতের কলকাতা সেকালের বিজ্ঞাপনে’ এই আশ্চর্য রচনাটি দিয়েই শুরু অহর্নিশ (সম্পা: শুভাশিস চক্রবর্তী)। এ ছাড়াও নানা বিভাগ। তবে নজরকাড়া বিশেষপত্রের বিষয়: ‘অহর্নিশ ২০’। এতে পত্রিকাটির কুড়ি বছরে প্রকাশিত বাছাই-করা কিছু রচনার পুনর্মুদ্রণ, পত্রপত্রিকায় অহর্নিশ-সংক্রান্ত আলোচনা, পত্রিকাটি আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, প্রচ্ছদচিত্র-সহ সব সংখ্যার সম্পূর্ণ পঞ্জি ও ছবির অ্যালবাম। ওদের বুদ্ধদেব বসু, নরেশ গুহ, সুভাষ ঘোষাল, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত ও সত্যপ্রিয় ঘোষ বিশেষ সংখ্যা এখন ইতিহাস। টের পাওয়া যায় অশোকনগরের এ-পত্রিকা কী ভাবে হয়ে উঠেছে সেই ইতিহাসের সাক্ষী। সংখ্যাটি প্রকাশ করবেন চিন্ময় গুহ, ২৭ মে জীবনানন্দ সভাঘরে বিকেল সাড়ে ৫টায়। প্রকাশ পাবে সোমা মুখোপাধ্যায় চক্রবর্তীর কাব্যগ্রন্থ সবুজ আলো। সংবর্ধিত হবেন কোরক-এর সম্পাদক তাপস ভৌমিক ও আদম-এর সম্পাদক গৌতম মণ্ডল। ‘লিটল ম্যাগাজিনের বাঁকবদল’ নিয়ে বলবেন অনির্বাণ রায়। সঙ্গের ছবিটি পত্রিকা থেকে, শিল্পী দেবাশীষ দেব।

সুবর্ণজয়ন্তী

‘সবাই বলেছিল গান দিয়ে আবার প্রদর্শনী হয় নাকি, যত সব খ্যাপার খেয়াল! কিন্তু সেখানে গিয়ে বুঝলাম এমন প্রদর্শনী জীবনে কখনো দেখিনি। এ-ও যে সম্ভব হতে পারে তা আমার চিন্তার বাইরে ছিল। গান মানুষ শোনে, প্রদর্শনী চোখে দেখে, দুইয়ের মধ্যে মিল কোথায়? মিল আছে রবীন্দ্রনাথের গানের মর্মমূলে।’ লিখেছিলেন লীলা মজুমদার, ১৯৭৭-এ কলকাতা তথ্যকেন্দ্রে ‘ইন্দিরা সংগীত শিক্ষায়তন’ আয়োজিত প্রদর্শনী ‘রবীন্দ্রনাথের গান’ উপলক্ষে। ১৯৬৫-তে শান্তিনিকেতন সংগীতভবনের তিন প্রাক্তনী সুভাষ চৌধুরী, সুপূর্ণা চৌধুরী (ঠাকুর) এবং জয়শ্রী রায়-এর উদ্যোগে ইন্দিরা দেবী চৌধুরানির নামাঙ্কিত সংগীত প্রতিষ্ঠানটির সূচনা। সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর এর উদ্বোধন করেছিলেন ১৯৬৬-র ৮ মে। প্রতিষ্ঠানের সিল নামাক্ষরে করে দেন সত্যজিৎ রায়। বিভিন্ন পর্বে হিরণকুমার সান্যাল, উমা সেহানবীশ, শান্তিশ্রী নাগ, শঙ্খ ঘোষ, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, সুধীর চক্রবর্তী, রাজ্যেশ্বর মিত্র প্রমুখের সহযোগিতায় ঠাকুরবাড়ির সংগীতচর্চা ও প্রসারের পাশাপাশি গ্রন্থপ্রকাশ, বিষয়ভিত্তিক সংগীতানুষ্ঠান, সংগীতগুণীদের স্মরণ ও সম্মাননা ইত্যাকার বহুমুখী কর্মে ইন্দিরা আত্মনিয়োগ করেছে। নতুন গৃহনির্মাণের জন্যও শুরু করেছে প্রস্তুতি। পঞ্চাশে পৌঁছনো প্রতিষ্ঠানটি ২৮ মে সন্ধে ৬টায় আইসিসিআর-এ ‘আপন গান’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। ‘রাগের আলোয় রবি’ নিয়ে সহযোগী শ্রীকান্ত আচার্য, জয়তী চক্রবর্তী, প্রত্যূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। নভেম্বরে একটি অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হবে সুবর্ণজয়ন্তী স্মারকগ্রন্থ।

আলোর দিশা

দেখতে দেখতে আটে পা দিল ‘সুগত ফাউন্ডেশন’। প্রতি বারের মতো এ বারও তারা ঢাকুরিয়া পরেশনাথ বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তিনদিনব্যাপী বিষয়ভিত্তিক এক কর্মশালার আয়োজন করেছে ২৪-২৬ মে, বেলা ২-৫টা, সকাল ১১টা-৬টা ও বিকেল ৫টা-রাত ৯টা। এ বারের বিষয়বস্তু ‘সাত তেজের এক তেজ আলো’। আসলে ছোটদের মনটিকে প্রকৃতি-পড়ুয়া করে তুলতে, বা তাদের মনে বৈজ্ঞানিক ভাবনা-শৃঙ্খল তৈরি করতেই এমন আয়োজন। কর্মশালায় বিষয়ভিত্তিক আঁকার আসর, মডেল তৈরি, প্রদর্শনী, প্রশ্নোত্তরের আসর, নাটক লেখা, রেকর্ডিং ও অভিনয়, স্লাইড শো, সংগীত-নৃত্যের আয়োজন থাকছে। শেষ দিন নাটক ‘আলো’। মূলত স্থানীয় স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের নিয়েই অনুষ্ঠান। প্রদর্শনী উদ্বোধন করবেন দেবীপ্রসাদ দুয়ারী।

প্রান্তিক

গোরা বা সুন্দরবিবির পালা-র পর আভাষ নাট্যগোষ্ঠীর নতুন প্রযোজনা বঙ্গরঙ্গমঞ্চের আবেগময় পুরুষ গিরিশচন্দ্র ঘোষকে নিয়ে। সমাজে থিয়েটারের মান্যতা গড়ে তোলায়, রঙ্গালয়ে জাতীয় ভাবের প্রতিষ্ঠায়, বা অভিনেত্রীদের দর্শক সমীপে পেশ করায় তিনি ছিলেন অবিসংবাদী। অথচ শিষ্ট সমাজে তিনি কতটুকু মান্যতা পেয়েছেন? ‘আশার নেশায়’ নামাঙ্কিত এ-নাটকের রচয়িতা শেখর সমাদ্দার মনে করেন, গিরিশচন্দ্র ‘বঙ্গসংস্কৃতিতে এক প্রান্তিক চরিত্র।’ পুরনো সময়ের পুনর্নির্মাণে পারদর্শী শেখরই নাটকটির নির্দেশক, গিরিশচন্দ্রের ভূমিকাতেও তিনি। প্রথম অভিনয় গিরিশ মঞ্চে ২৬ মে সন্ধে সাড়ে ৬টায়। সঙ্গে মহলার ছবি।

নিজেকে খোঁজা

কখনও লন্ডন, কখনও কেমব্রিজ, কখনও বা জুরিখ, ব্যাকড্রপে চোখজুড়নো নিসর্গ— এমন এক প্রবাসভ্রমণে এক মধ্যবয়সিনী বলে চলেন তাঁর ফেলে আসা দিনের কথা। কত স্বপ্ন, স্বপ্নভঙ্গ, সাফল্য, ব্যর্থতা, আনন্দ, বিষাদ, সব কিছু ছাপিয়ে সামনে তাকানো, হেঁটে চলা। এ ভাবেই এক মধ্যবিত্ত বাঙালি বা ভারতীয় মায়ের ক’টা দিন ক্যামেরাবন্দি করেছেন আদিত্য সেনগুপ্ত। বলেছেন, ২২ মিনিটের এ-ছবিটি তাঁর কাছে ‘পার্সোনাল ডকুমেন্টারি’, নিজেকে খোঁজা, জীবন নিয়ে নানান দুরূহ প্রশ্নের উত্তর হাতড়ানো। ‘দ্য ফোর্টিন্থ ডে’, আদিত্য পরিচালিত এ-ছবির প্রযোজক কেমব্রিজ স্কুল অব আর্ট। আদিত্য সেখানকার কৃতী ছাত্র, স্নাতকোত্তরে তৈরি করেছেন ছবিটি। ইতিমধ্যেই দেখানো হয়ে গিয়েছে লেবাননের ছোট ছবির উৎসবে। আর সদ্য দেখানো হল কান ফেস্টিভ্যালের শর্ট ফিল্ম কর্নার-এ। সোহিনী চট্টোপাধ্যায় আর খেয়ালী দস্তিদার অভিনয় করেছেন ছবিটিতে, সঙ্গে তারই একটি দৃশ্য।

সেই তথ্যচিত্র

আশির দশকের প্রথমার্ধে ‘ঘরে বাইরে’র শুটিং চলাকালীন সত্যজিৎকে নিয়ে আড়াই ঘণ্টার উপর যে তথ্যচিত্রটি তৈরি করেছিলেন শ্যাম বেনেগাল: ‘সত্যজিৎ রায়’, তাতে তাঁর শিল্পী হয়ে-ওঠার ইতিবৃত্তটি চিনে নেওয়া যায়। সে ছবিটিই সত্যজিতের জন্মমাসে দেখানোর আয়োজন করেছে ফিল্মস ডিভিশন, নন্দনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ২৩ মে সন্ধে ৬টায়। অন্য দিকে স্পেনের মেয়ে-পরিচালকদের তৈরি ছবির উৎসব, ২৪-২৬ মে। নন্দনের সঙ্গে যৌথ আয়োজক ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ, সঙ্গে দিল্লির স্পেনীয় দূতাবাস।

আগুনপাখি

‘সকাল হোক, আলো ফুটুক, তখন পুবদিকে মুখ করে বসব। সূর্যের আলোর দিকে চেয়ে আবার উঠে দাঁড়াব আমি। আমি একা।’— দেশভাগের এক নিদারুণ বয়ান তুলে ধরেছিলেন হাসান আজিজুল হক তাঁর প্রথম উপন্যাস আগুনপাখি-তে। যে নারী সমাজজীবনে মুখ বুজে কেবল সংসারের দায় টেনেছেন, সেই তিনিই সবাই যখন দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে তখন বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। এই একলা নারীর উপাখ্যানই এ বার সুমন্ত রায়ের পরিচালনায় ও যাদবপুর মন্থন-এর প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হবে মিনার্ভা থিয়েটারে, ২৮ মে সন্ধে সাড়ে ৬টায়। ওই দিন স্বয়ং লেখকও উপস্থিত থাকবেন।

সুফি পন্থা

ইসলামের অভ্যুদয় আরবে হলেও ভারতে তাকে ছড়িয়ে দেন মধ্য-এশিয়া এবং তুরস্ক থেকে আসা সুফি, সন্ত ও দার্শনিকরা। সুফিরা কাব্যকে দর্শনপ্রচারে ব্যবহার করতেন। এর ফলে প্রভাবশালী সুফি দর্শনই ভারতীয় ইসলামের শুদ্ধ দার্শনিকভাবনায় গ্রথিত ছিল। ‘সুফিবাদের পক্ষে ও বিপক্ষে অনেক তর্কবিতর্ক আছে। তথ্যচিত্রে মূলত এ সবই তুলে ধরেছি বা দেখানোর চেষ্টা করেছি। সারা ভারতে ছড়িয়ে আছে অজস্র মাজার, সেখানে হিন্দু-মুসলমান সবাই যান। কমিউনিটি লাইফ এখানে বেশি প্রাধান্য পায়। নিজের জন্য নয়, পরের জন্যই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়।’ বলছিলেন, সাতষট্টি মিনিট পনেরো সেকেন্ডের ‘আহল-এ-সুলুক (পিপল অব দ্য সুফি পাথ)’ বা ‘সুফি পথের লোক’-এর পরিচালক আবদুল রজ্জাক। দেড় বছরের ফসল ছবিটি। দিল্লিতে দেখানোর পর কলকাতায় ২৫ মে সন্ধে সাড়ে ৬টায় গ্যেটে ইনস্টিটিউটের ডকু-ফোরাম-এর উদ্যোগে ম্যাক্সমুলার ভবনে দেখানো হবে। এটি তাঁর দ্বিতীয় তথ্যচিত্র। প্রথমটি ‘মাদ্রাসা এডুকেশন ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল, ইন্ডিয়া’ ইফি-র ইন্ডিয়ান প্যানোরামায় নির্বাচিত হয়। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হওয়া বাহান্ন বছরের আবদুলের জন্ম ইছাপুরে। বাবা গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন। চিত্রশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও, পদার্থবিদ্যার ছাত্রটি সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে যান পুণের এফ টি আই-তে, এখন পড়ান এস আর এফ টি আই-এ।

শতবর্ষে

নির্বাক, সবাক, প্লে-ব্যাক— ভারতীয় ছবির সব যুগেরই নায়িকা ও গায়িকা। কানন দাস থেকে কাননবালা হয়ে কাননদেবী। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অভিনয় আর গান ছেড়ে দেন। শূন্যের নীচে থেকে শুরু করে পৌঁছেছিলেন খ্যাতির শীর্ষে। দুঃস্থ শিল্পীদের কল্যাণে ব্রতী ছিলেন আজীবন। জন্ম আনুমানিক ১৯১৬-য়, বাবা মারা যাওয়ায় চরম অর্থাভাবেই চলচ্চিত্রে আসা। বলতেন, ‘যে বয়সে পুতুল খেলে মেয়েরা, তখন আমি অভিনয় করে রোজগার করতে নেমেছিলাম।’ দশ বছর বয়সে নির্বাক যুগে ‘জয়দেব’ ছবিতে প্রথম অভিনয়। প্রথম সবাক ছবি ‘জোর বরাত’। ১৯৩৫-এ প্রথম রেকর্ড মেগাফোন-এ। ’৩৬-এ নিউ থিয়েটার্সে। ১৯৪৭-এ হরিদাস ভট্টাচার্যর সঙ্গে বিয়ে, পরের বছর প্রযোজিকা হিসেবে পত্তন করলেন ‘শ্রীমতী পিকচার্স’। মুক্তি, বিদ্যাপতি, শেষ উত্তর, মানময়ী গার্লস স্কুল, যোগাযোগ, চন্দ্রশেখর, মেজদিদি, দর্পচূর্ণ, শ্রীকান্ত ও অন্নদাদিদি— বহু ছবিতে তাঁর অভিনয় এবং প্রমথেশ বড়ুয়ার সঙ্গে তাঁর জুটি স্মৃতিধার্য। তাঁর গাওয়া রবীন্দ্রসংগীত ‘আজ সবার রঙে রঙ মিশাতে হবে’, ‘প্রাণ চায় চক্ষু না চায়’ ছাড়াও ‘আমি বনফুল গো’, ‘প্রণাম তোমায় ঘনশ্যাম’ ইত্যাদি গান ভোলার নয়। ১৯৬৮-তে পদ্মশ্রী, ’৭৬-এ পান ‘দাদাসাহেব ফালকে’। ১৯৯২-এ প্রয়াত শিল্পীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আইসিসিআর-এ হয়ে গেল ‘কিংবদন্তি কানন— স্মরণে ও বরণে’ অনুষ্ঠান। ছিলেন স্বপন মল্লিক, মাধবী চক্রবর্তী, হৈমন্তী শুক্লা, চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত প্রমুখ। আয়োজনে সৃষ্টি পরিষদ, পরিচালনায় শুভাশিষ মজুমদার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cultural news
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE