Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

ওর বোধহয় একটা প্রেম ছিল। পরস্পরের প্রতি গভীর ভালবাসা ছিল। কিন্তু এদের বিয়ে হবার কোনও সম্ভাবনা ছিল না’ লিখেছেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়। আবার গৌরী ভট্টাচার্যের কলমে চূড়ান্ত অবিশ্বাস, ‘আমি কোনওভাবে বিশ্বাস করতে পারি না যে ‘তারা’-র সান্নিধ্যের ফসল হল দাদার ‘দুহু প্রেম ও দোঁহা’ নামের কাব্যগ্রন্থটি।’

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৬ ০০:২৭
Share: Save:

প্রকাশের আলোয় অন্য চিত্তপ্রসাদ

ওর বোধহয় একটা প্রেম ছিল। পরস্পরের প্রতি গভীর ভালবাসা ছিল। কিন্তু এদের বিয়ে হবার কোনও সম্ভাবনা ছিল না’ লিখেছেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়। আবার গৌরী ভট্টাচার্যের কলমে চূড়ান্ত অবিশ্বাস, ‘আমি কোনওভাবে বিশ্বাস করতে পারি না যে ‘তারা’-র সান্নিধ্যের ফসল হল দাদার ‘দুহু প্রেম ও দোঁহা’ নামের কাব্যগ্রন্থটি।’ কিন্তু মুরারি গুপ্ত ও সমর সেনকে লেখা শিল্পীর নিজের একাধিক চিঠি অকপটে তুলে ধরে উভয়ের মধ্যে এক গভীর সম্পর্কের বয়ান। পঞ্চাশের মন্বন্তরের শিল্পী হিসেবেই আমরা বেশি চিনি চিত্তপ্রসাদ ভট্টাচার্যকে (১৯১৫-১৯৭৮)। ‘পিপলস ওয়র’ পত্রিকায় ছাপা তাঁর ছবি, কমিউনিস্ট পার্টির জন্য অজস্র প্রচারমূলক পোস্টার, হারিয়ে গিয়েছে এ সবের অধিকাংশই। হাংরি বেঙ্গল বা এঞ্জেলস উইদাউট ফেয়ারি টেলস বই দুটি কিছু দিন আগে পুনর্মুদ্রণের মুখ দেখেছে ঠিকই, কিন্তু দুঁহু প্রেম দোঁহা ছিল সুদুর্লভ।

শিল্পী সঞ্জয় সেনগুপ্ত মুম্বইয়ে গিয়ে চিত্তপ্রসাদের ঘনিষ্ঠ হন, ১৯৬৪ সালে বন্ধুদের সঙ্গে এ দেশে তাঁর প্রথম প্রদর্শনীও আয়োজন করেন কলকাতায়। তাঁরাই ‘শিল্পায়ন আর্টিস্টস সোসাইটি’র পক্ষ থেকে ১৩৭৩ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ প্রকাশ করেন দুঁহু প্রেম দোঁহা। ছবি ও কবিতা আলাদাই ছিল, ওঁরাই সাজিয়ে নেন। নাভানা কম টাকায় বই ছেপে দিয়েছিল। কবিতার থেকেও বইয়ের ছবিগুলির অন্তর্নিহিত বিস্ফোরক শক্তি আজও সমান আশ্চর্য করে। সঞ্জয় চিত্তপ্রসাদের উপর ‘তারা’-র প্রভাবের কথা স্পষ্টই লিখেছেন, ‘কিছু কিছু ছবির মধ্যে পোর্ট্রেটের আভাস পেয়েছি। সেগুলো স্পনটেনিয়াসলি বের হয়ে এসেছে।... আত্মার যোগাযোগ না থাকলে এরকম হতে পারে না।’ সে বই তেমন বিক্রি হয়নি।

ছোটবড় মিলিয়ে গোটা কুড়ি ছবি আর কাছাকাছি সংখ্যক কবিতায় সাজানো এই বই অর্ধশতক পরে পাঠকের কাছে তুলে ধরল এক অজানা চিত্তপ্রসাদকে, সপ্তর্ষি-র উদ্যোগে। নানা জনের মতামতে বইয়ের পরিপ্রেক্ষিতটি সাজিয়ে দিয়েছেন সৌম্যেন পাল। সঙ্গের ছবি, বাঁ দিকে প্রচ্ছদ (সিল্ক স্ক্রিনে ছাপা হয়েছিল), মাঝে ও ডান দিকে চিত্তপ্রসাদের বইয়ের অপর দুটি ছবি।

নতুন বিতর্ক

কেন্দ্রের প্রকাশিত ‘নেতাজি ফাইল’ কি নতুন ভাবে উস্কে দেবে বিতর্ক? সুভাষ জয়ন্তী উপলক্ষে গত শুক্রবার নেতাজি ভবনে আয়োজিত ‘নেতাজি ওরেশন’-এ এ বারের বক্তা লেনার্ড এ গর্ডন খানিক বিরক্তই ভারত সরকারের ‘হঠাৎ উৎসাহে’। সুভাষচন্দ্রকে নিয়ে তাঁর বই ‘ব্রাদার্স আগেনস্ট দ্য রাজ’-এর গবেষণা পর্বে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন নেতাজির ‘শেষ বিমানযাত্রার’ সফরসঙ্গী কর্নেল হবিব-উর রহমান খানের সঙ্গে। সাক্ষী ছিলেন সুভাষ-কন্যা অনিতা বসু পাফ স্বয়ং। এ বছর তিনি এ বিতর্ক নিয়ে বলতে আসেননি, তাঁর বিষয় ‘রেড ফোর্ট ট্রায়াল’। তবু গর্ডন বলেন, ‘‘আমি সাক্ষ্য-প্রমাণে বিশ্বাসী।

আমার কথা হয়েছে সেই ডাক্তারের সঙ্গে, যিনি বিমান দুর্ঘটনার পরে সুভাষচন্দ্রের চিকিৎসা করেছিলেন। তাঁর অস্থিও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জাপানে। কিন্তু ভারত সরকার সে সবে উৎসাহ দেখায়নি কখনও।’’ শনিবার গর্ডন শরৎ ও সুভাষচন্দ্রকে নিয়ে আর একটি ভাষণ দেন নেতাজি ইনস্টিটিউট-এ। প্রকাশিত সরকারি নথি এই বিতর্ককে কোন মাত্রা দেয় এখন সেটাই দেখার। ছবি: সুমন বল্লভ

জায়গা বদল

ঠাকুরমা আর ঠাকুরদাদাদের ঝুলির অফুরান রূপকথা, ঘুমপাড়ানি গান, আর প্রাণঢালা ভালবাসা নিয়ে বাঙালির গর্ব কখনও কমে না। কিন্তু আজ ওই মানুষেরা খুব একা। বড় কষ্টে দিন কাটে, কখনও নিঃশব্দ চার দেওয়ালে, কখনও বা বৃদ্ধাশ্রমে। এঁদের জন্য ‘কুশীলব’ নাট্যগোষ্ঠী একটি নতুন পত্রিকা এনেছেন। ‘নাতি নাতনির বুলি’। দাদু-দিদারা পাঠক, আর গল্প-গান-কবিতা-ছড়ায় মন ভরাবে নাতিনাতনিরা।

প্রথম সংখ্যা জুড়ে নতুন প্রজন্মের জীবন ও ভাবনা। কবিতার নাম ‘রিয়্যালিটি শো’, একটি বিভাগের নাম ‘ট্যুইট’। গল্প, নাটক, রেসিপি, বিজ্ঞানের মতো চেনা বিভাগও। প্রচ্ছদকাহিনি জয় গোস্বামী, প্রচ্ছদশিল্পী শুভাপ্রসন্ন (সঙ্গের ছবি)। সম্পাদক বৈশাখী মারজিৎ।

নারী সেবা সঙ্ঘ

যোধপুর পার্কের নারী সেবা সঙ্ঘের উদ্যোগে শীতের কলকাতায় ফের মেলা। দুর্ভিক্ষক্লিষ্ট মহিলা ও শিশুদের সাহায্যের জন্য ১৯৪৪-এ সঙ্ঘের জন্ম। সরোজিনী নাইডু, বিধানচন্দ্র রায়, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যুক্ত ছিলেন। এটি এখন আঠারো বছরের ঊর্ধ্বে অনাথ মেয়েদের বাসস্থান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বটে। সেবামূলক কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান ও ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগী মহিলাদের পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে ’৭৭-এ তৎকালীন সভানেত্রী সীতা চৌধুরীর নেতৃত্বে শুরু হয়েছিল এই সঙ্ঘের বসন্ত মেলা। ১৫টি স্টল দিয়ে শুরু, এখন বেড়ে হয়েছে ১৭০। প্রবাসী বাঙালিরাও আসেন স্টল নিয়ে। হস্তশিল্প, বিভিন্ন প্রদেশের শাড়ি, গয়না ছাড়াও খাবারের স্টল আছে। ২৯-৩১ জানুয়ারি (১২-৮টা), উদ্বোধনে মালবিকা সরকার।

‘টু আশু, ফ্রম...’

সাহিত্য অকাদেমির ‘ব্যক্তি ও বই’ অনুষ্ঠানটি সুপরিচিত। বিজ্ঞানী, গায়ক, অভিনেতা, লেখক, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি— বহু মানুষ এসেছেন এই অনুষ্ঠানে, বলেছেন তাঁদের প্রিয় বই নিয়ে। অকাদেমি সভাঘরে সাম্প্রতিক বক্তা ছিলেন বম্বে ও কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়। তাঁদের তো ‘বইয়ের বাড়ি’, ঠাকুরদা স্যর আশুতোষের বিপুল সংগ্রহ তো প্রবাদপ্রতিম, সেজো কাকা উমাপ্রসাদও বই-অন্ত প্রাণ। রামায়ণ-মহাভারত, মনোরঞ্জন-হেমেন্দ্রকুমার পেরিয়ে বনফুল-তারাশঙ্কর-বিভূতিভূষণ-রাজশেখর বসু বা জেন অস্টেন-স্কট-গল্সওয়ার্দি ছিল খুব কাছের। প্রাণিত করেছে ‘আরণ্যক’, ‘জঁ ক্রিস্তফ’, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের জীবনী, বিবেকানন্দ ও রবীন্দ্রনাথের লেখা। আইন পড়তে গিয়ে বহু বই কাছে এসেছে, প্রিয় তারাও। আর এখনও বাড়িতে থাকা সেই অমূল্য বইটি, যার পাতায় লেখা ‘টু আশু, ফ্রম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’।

সাংগীতিক

দু’দশকের ওপর জর্জদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তাঁর— গোলাম মুরশিদ। বাংলাদেশের এই মনস্বী লেখক-গবেষক এ শহরে আসছেন ‘দেবব্রত বিশ্বাস স্মারক বক্তৃতা’ দিতে। তাঁর স্বাদু সরস বাচনে অডিয়ো-ভিসুয়ালও পেশ করবেন মুরশিদ, রবীন্দ্রগানে জর্জদার গায়নভঙ্গির শিল্পকুশলতা চিনিয়ে দিতে। ৩০ জানুয়ারি বিকেল ৫টায় ইন্দুমতী সভাগৃহে (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়) দেবব্রত বিশ্বাসকে নিয়ে এই উদ্‌যাপনে প্রকাশিত হবে তাঁর অপ্রকাশিত ৫৭টি গানের এমপিথ্রি সিডি: ‘এসো এসো বসন্ত’। সে সন্ধ্যায় রবীন্দ্রগানে প্রবুদ্ধ রাহা, রেখা চক্রবর্তী ও বাংলাদেশের চঞ্চল খান। উদ্যোগে দেবব্রত বিশ্বাস স্মরণ কমিটি। অনুষ্ঠানটি পরে হবে ঢাকায়, ফেব্রুয়ারিতে। অন্য দিকে, ত্রিগুণা সেন প্রেক্ষাগৃহে (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়) ২৬ জানুয়ারি সন্ধে সাড়ে ৬টায় বাঙালির অতিপ্রিয় সদ্যপ্রয়াত গায়ক সুবীর সেনকে নিয়ে স্মরণানুষ্ঠান।

সাফল্য

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত। তবু সবচেয়ে আকর্ষণ করত খেলার মাঠ। তাঁর গান লেখা, সুর করার পিছনে কবীর সুমন, নচিকেতা, অঞ্জন দত্ত, শিলাজিত্‌। তা ছাড়া, বাংলা ব্যান্ড বা ওয়েস্টার্ন রক ব্যান্ড তো আছেই। তবে মায়ের কাছেই গানের হাতেখড়ি অনুপম রায়ের। মা ছিলেন সুচিত্রা মিত্রের ছাত্রী। চাকরিসূত্রে বেঙ্গালুরুতে নিবেদিতা দত্ত-র কাছে হিন্দুস্থানি ক্লাসিক্যালে তালিম অনুপমের। এই মুহূর্তে প্রত্যুষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে শিখছেন। তাঁর লেখা ‘আমাকে আমার মতো থাকতে দাও...’ এখন বাঙালির মুখে-মুখে। তাঁর গানে নতুন সুর, নতুন কথা— চমক একটা না একটা থাকবেই। সাম্প্রতিক বাংলা ছবিতে তিনি প্রায় অনিবার্য, তবু নিজের সম্পর্কে অনুপম বলেন ‘প্লেব্যাক সিঙ্গিং আমার ভবিষ্যত্‌ নয়।

আমার জায়গা সিঙ্গার সং রাইটার হিসেবে। আমার অন্য দিকটা হল সংগীত পরিচালনা।’ তিনি মনে করেন, এক জন সংগীতশিল্পীকে চেনা যায় তাঁর নিজস্ব অ্যালবাম থেকে, যেটা কোনও ছকে বাঁধা নয়, যেটা মন থেকে বেরিয়ে আসে। গান ছাড়া কিছু উদ্ভট স্বপ্নও দেখেন তিনি। যেমন, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে একটা অন্তত ফুটবল ম্যাচ খেলা, সিনেমা বানানো, গদ্য লেখা। স্বপ্ন তাঁর আংশিক সফলও। ইতিমধ্যেই তাঁর দুটি কবিতার বই, একটি উপন্যাস বেরিয়েছে, আর গদ্যসংকলন অনুপমকথা। এমনকী একটি গ্রাফিক নভেল অ্যান্টনি ও চন্দ্রবিন্দু। সম্প্রতি হিন্দি ছবি ‘পিকু’র আবহসংগীতের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতে বলিউডে নিজের ভিত তৈরির স্বপ্নটা পূরণ করে ফেললেন।

সেই রবীন্দ্রনাথ

নিজেরই কবিতায় সুরযোজনা করে তাকে গানে রূপান্তরিত করেছেন, এর অজস্র উদাহরণ মিলবে রবীন্দ্ররচনায়। আবার কয়েকটি শব্দ পালটে গানকে করে তুলেছেন কবিতা, তার দৃষ্টান্ত আছে রবীন্দ্রনাথের সানাই কাব্যগ্রন্থে। এমনই একগুচ্ছ কবিতা ও গানের সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘একটি রক্তিম মরীচিকা’। সূত্ররচনা সংকলন বিন্যাস: শঙ্খ ঘোষ। কবিতাগুলি পাঠ করবেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, জয় গোস্বামী প্রমুখ। গান শোনা যাবে জয়তী চক্রবর্তী, অনিরুদ্ধ সিংহ, ইন্দিরা-র শিল্পীদের কণ্ঠে। ‘ইন্দিরা’রই ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শেক্সপিয়র সরণির শ্রীঅরবিন্দ ভবন-এর সহযোগিতায় ভবন প্রেক্ষাগৃহে ৩০ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টায়। অন্য দিকে, বৃহত্তর বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য মানুষের চিরপথের সঙ্গী আজও সেই রবি ঠাকুর— এই ভাবনা নিয়ে ‘প্রবাসী বন্ধু’ ২ ফেব্রুয়ারি, সন্ধে সাড়ে ৫টায় গ্যালারি গোল্ড-এ উপস্থাপিত করতে চলেছে ‘টেগর— বিয়ন্ড বাউন্ডারিজ’। আমেরিকা, কানাডা, ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও ভারতের কিছু বাচিক ও সঙ্গীতশিল্পী থাকবেন এই প্রচেষ্টায়।

8

এই শহরেও

সেই ১৯৯০ থেকে শুরু, দ্বিবার্ষিক হওয়ার সুবাদে এ বার ১৪তম সংস্করণ মিফ-এর (মুম্বই ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল)। ডকুমেন্টারি-শর্ট-অ্যানিমেশন-এ ঋদ্ধ এই অ-কাহিনিমূলক আন্তর্জাতিক সিনেমার উৎসব শুধু এদেশেই নয়, এশিয়ায়ও সাড়া জাগানো। মুম্বইতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রায় একই সময় এ শহরের মানুষও দেখতে পাবেন ওই উৎসব: ‘মিফ জোন-কলকাতা’। নন্দনে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি, দেখানো হবে ১৮টি সেরা ছবি। ৩১-এ বিকেল সাড়ে ৪টেয় উদ্বোধন, সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে থাকবেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় ও শতরূপা সান্যাল। উদ্যোক্তা ফিল্মস ডিভিশন, কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক।

একই মঞ্চে

এক সময়, তাঁর রেওয়াজে প্রতিবেশী বেনামে চিঠি দেন— ‘প্রিয় কোকিলবাবু, দয়া করে আপনার চেঁচামেচি বন্ধ করুন।’ ‘তোমাকে চাই’-খ্যাত শিল্পীর বাবা শুনে বললেন, দেখবি যদি গানটা চালিয়ে যেতে পারিস তো এই লোকটাই এক দিন লাইন দিয়ে টিকিট কেটে তোর গান শুনতে যাবে। তিনি নব্বইয়ের দশকে বাংলা গানের ভিন্ন ধারার পথিকৃৎ কবীর সুমন। অন্য দিকে, সমসাময়িক নন ঠিকই, কিন্তু তাঁর সঙ্গে ‘জাতিস্মর’ ছবিতে কাজ করতে পেরে তাঁর জীবনে অর্ধেক পাওয়া হয়ে গিয়েছে।

আর ‘এ তুমি কেমন তুমি’ অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে মঞ্চ শেয়ার করতে পারবেন ভেবে তিনি খুব উত্তেজিত। কথা হচ্ছিল ‘গভীরে যাও’ খ্যাত সংগীতশিল্পী রূপঙ্করের সঙ্গে। এই দুই শিল্পীর গান একই মঞ্চে এই প্রথম শুনতে পাবেন, পরম্পরা খুঁজে পাবেন রসিকজন। আয়োজনে অরা এন্টারটেনমেন্ট। ৫ ফেব্রুয়ারি, সন্ধে ৬টায়, বিড়লা সভাঘরে।

শতবর্ষে

নারীশিক্ষা প্রসারে উদ্যোগী নীলকান্ত রায়চৌধুরী বড়িশা সাজের আটচালায় প্রাথমিক শিক্ষাদান শুরু করেন ১৯১৭-য়। সাবর্ণ রায়চৌধুরীরা জমি দিলে স্থায়ী ভবন হয়। ১৯৩৮-এ সরকারি স্বীকৃতি এবং অনুদান মেলে। বড়িশা গার্লস হাই স্কুল ১৯৫২-য় হাই স্কুলের অনুমোদন পায়। এই বিদ্যালয় আজ এক মহীরুহ। আই সি এস মহুয়া হালদার, গীতশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, রমা প্রামাণিক, নৃত্যশিল্পী অনুরাধা রায় বা অর্পিতা বেঙ্কটেশ কৃতি ছাত্রী। শতবর্ষের উদ্‌যাপন শুরু হল ৮ জানুয়ারি, চলবে বছরভর। অন্য দিকে আর এক শতবর্ষ-প্রাচীন রানী ভবানী স্কুলে সর্বশিক্ষা মিশনের উদ্যোগ ও সহায়তায় ২০১২-য় যুক্ত হয় পথশিশুদের আবাসিক স্কুল। অনেক বাধা পেরিয়ে এই উদ্যোগ সাফল্য পেয়েছে, এতে এখন আছে ১০০ জন শিশু। ১৯১৬-য় রায়বাহাদুর খগেন্দ্রনাথ মিত্রের উদ্যোগে নাটোর রাজপরিবারের অর্থ সাহায্যে স্কুলটি স্থাপিত হয়। ১৯৬৭-তে গোয়াবাগানে স্কুলের নিজস্ব ভবন তৈরি হয়। প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন নেতাজি-র শিক্ষক বেণীমাধব দাস, বীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, যতীন্দ্রমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। উত্তর কলকাতার এই ঐতিহ্যশালী স্কুলটি সারা বছর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছে।

স্মরণ

সত্যেন বসু তিনি ফুল ভালবাসেন শুনে এক দিন এক বস্তা কলাবতী ফুল বয়ে নিয়ে প্রায় দু’মাইল পায়ে হেঁটে তাঁকে উপহার দেন ঢাকার বাড়িতে! দিলীপকুমার রায়ের কাছে তাঁর সংগীতপ্রীতির কথা শুনে নজরুল ইসলাম নিজেই চলে এসেছিলেন আলাপ করতে। খুব ছোটবেলায় প্রতিভা বসুর গানে হাতেখড়ি। বড় হয়ে গুলাম আলির কাছে তালিম, আর এক জনকে পান গানের গুরু হিসেবে— দিলীপকুমার রায়, তাঁর জীবনে যাঁর ভূমিকা অপরিসীম। বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে বিয়ের ব্যাপারেও। নজরুলও দিলীপকুমারের কাছেই তাঁর নাম প্রথম শোনেন— ‘রানু সোম নামে এক কিশোরী ভাল গান করছে।’

তখন থেকেই নজরুলের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক, নজরুল তাঁকে প্রাণ খুলে গানও শিখিয়েছিলেন। মা-বাবার সঙ্গে দার্জিলিং বেড়াতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে এতটাই অন্তরঙ্গতা হয়েছিল যে, কবি গায়ের শাল খুলে উপহার দিয়েছিলেন। দীর্ঘ সাহিত্যজীবনে লিখেছেন বহু গল্প-উপন্যাস ও অন্য গদ্য। পেয়েছেন বিপুল জনপ্রিয়তা। সাহিত্যসৃষ্টির জন্য যেমন আনন্দ পুরস্কার ও ভুবনমোহিনী পদক পেয়েছেন, তেমনই তাঁর সাহিত্য থেকে তৈরি হয়েছে সুচিত্রা-উত্তম অভিনীত অনেক বাংলা ছবিই। তাঁর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে গীতিনাট্য ‘জীবনের জলছবি’, আই সি সি আর-এ ৩১ জানুয়ারি সন্ধে সাড়ে ৫টায়। পাঠ-অভিনয়ে প্রণতি ঠাকুর, সঙ্গীতে শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার এবং নবনীতা কোনার সামন্ত। ভাবনা ও নির্দেশনায় রাইনন্দিনী কোনার। আয়োজনে গীতাঞ্জলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE