Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

স্বতন্ত্রতা সংগ্রাম, বিভাজন, আটষট্টি বছর

পাক্কা ৬৮ বছর পার করে এসেছি আমরা স্বাধীনতা অর্জনের। একটু অন্যরকম ভাবে যদি ব্যাখ্যা করি যে সেই ১৯৪৭ সালে জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তিদের বয়সটা আজ অনেকটা সময় পার করা বার্ধক্য। সময়টা অনেকখানি। অতগুলো বছর আগে মহাত্মাজি, মৌলনা আজাদ, নেহেরু প্রমুখ নেতৃমণ্ডলীর-সহ আরও প্রচুর মানুষ জন—যাঁরা স্বাধীনতা লাভের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, জেল খেটেছেন, ব্রিটিশ সিপাইদের অত্যাচার সহ্য করেছেন—তাঁরা ভেবেছিলেন ভারত স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা পেলেই জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা যা কিছু—পূর্ণ হবে।

মধুছন্দা মিত্র ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৫ ০০:০৩
Share: Save:

পাক্কা ৬৮ বছর পার করে এসেছি আমরা স্বাধীনতা অর্জনের। একটু অন্যরকম ভাবে যদি ব্যাখ্যা করি যে সেই ১৯৪৭ সালে জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তিদের বয়সটা আজ অনেকটা সময় পার করা বার্ধক্য। সময়টা অনেকখানি।
অতগুলো বছর আগে মহাত্মাজি, মৌলনা আজাদ, নেহেরু প্রমুখ নেতৃমণ্ডলীর-সহ আরও প্রচুর মানুষ জন—যাঁরা স্বাধীনতা লাভের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, জেল খেটেছেন, ব্রিটিশ সিপাইদের অত্যাচার সহ্য করেছেন—তাঁরা ভেবেছিলেন ভারত স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা পেলেই জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা যা কিছু—পূর্ণ হবে। অর্থাৎ কিনা মানুষের যেগুলি সাধারণ প্রয়োজন যেমন রোটি-কাপড়া-মকান অর্থাৎ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ছাড়াও শিক্ষা স্বাস্থ্য সুস্থ পরিবেশ, উপযুক্ত সৃষ্টি ও সংস্কৃতি এই সব ন্যূনতম চাহিদা সকল মিটবে। কিন্তু পরবর্তী স্তরে দেখা গেল একটা ভারতের মধ্যে আরও কয়েকটা ভারত। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ প্রয়োজনের অধিক সুযোগসুবিধা ভোগ করছেন, কিছু মানুষ রয়ে গেছেন যে তিমিরে ছিলেন, সেখানেই। আবার কিছু মানুষ এখনও দারিদ্র সীমার নীচেই অবস্থান করছেন। তা হলে কী বলা যাবে যে এখনও স্বাধীনতার ষাট দশক পেরিয়ে সত্তর দশকের গোড়াতেও অধিকাংশ মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ থেকে বঞ্চিত।
সেই দু’বছর কম সত্তর বছর আগে মহাত্মাজি, মৌলানা আজাদ, নেহেরুজি প্রমুখ নেতাগণ জাতীয় আন্দোলন শুরু করেছিলেন দেশাত্মবোধে উদিপ্ত হয়ে—একবারও এটা ভাবেননি যে তাঁদের দ্বিখণ্ডিত ভারতের স্বাধীনতাকেই ইচ্ছেয় হোক অনিচ্ছায় হোক মেনে নিতেই হবে। তাঁরা কিন্তু স্বতন্ত্র সংগ্রামে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন এক অখণ্ড ভারতের স্বাধীনতা লাভের আশায়। ও দিকে ইতিহাসের পাতা ওলটালে জানা যায় যে নেতাজি কিন্তু প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন আপসহীন নিরবচ্ছিন্ন চূড়ান্ত সংগ্রাম জারি রাখার কথা। তিনি ১৯৩৮-এর হরিপরা কংগ্রেসেও বলেছিলেন বৈঠকী রাজনীতিকে বেশি গুরুত্ব দিলে ব্রিটিশ গভর্মেন্ট কিন্তু দেশকে ভাগ করে যাবে। তবে নেতাজির কথা সে দিন কেউ কানেই তোলেননি।

দেশের তদানীন্তন রাজনৈতিক ইতিহাস ও ঘটনাবলির দিকে চোখ বোলালেই দেখা যাবে যে, সুভাষচন্দ্র বসু পর পর দু’বার কংগ্রেসের সভাপতি পদে নির্বাচিত হলেও গাঁধীজির সঙ্গে আদর্শগত সংঘাত কংগ্রেসের বৈদেশিক ও আভ্যন্তরীণ নীতির প্রকাশ্য সমালোচনা করার জন্য তাঁকে পদত্যাগও করতে হয়। কংগ্রেস ক্ষমতার লোভে বশবর্তী হয়ে ১৯৩৭ সালের নির্বাচন জিতে মন্ত্রিসভা গঠন করেছে। ও দিকে মুসলিম লিগ সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বলে সৃষ্টি করে রেখেছে দ্বি-জাতি তত্ত্ব। ফলত স্বাভাবিক ভাবেই চলে এসেছে পাকিস্তানের জন্য পৃথক রাষ্ট্রের দাবি। অর্থাৎ স্বাধীনতা লাভের দশ বছর আগে থাকতেই সে সময়ের ভারতীয় রাজনীতি খুব দ্রুত গতিতেই এগিয়ে যাচ্ছিল পরবর্তী দেশভাগের দিকে।

কংগ্রেস আর মুসলিম লিগের সম্পর্ক যখন চূড়ান্ত অবনতির পথে সেই সময়েই লর্ড মাউন্ট ব্যাটনের ভারতে আগমন। সে সময় কংগ্রেস নেতারা নিজেরাই যথেষ্ট দ্বিধাগ্রস্থ। লিগ নেতা জিন্না দাবি করে যাচ্ছেন পৃথক ইসলামী রাষ্ট্রের। শোনা যায় মাউন্টব্যাটনে নাকি কংগ্রেস নেতাদের এই দ্বিতাগ্রস্ত মানসিকতাকেই কাজে লাগিয়ে ছিলেন। প্যাটেল, গাঁধীজি, নেহেরু সবাইকেই বেশ সুযোগ মত কায়দা করে একটা পথে আনলেন। জিন্নার দাবি মতো ভারত ভাগের ব্যবস্থাও চূড়ান্ত হয়ে গেল। সর্দার বল্লভভাইয়ের যুক্তি ছিল, পাকিস্তানকে ঠেকাতে গেলে গোটা দেশটাই পাকিস্তান হয়ে যাবে। ওদিকে নেহেরু বলেছেন দেশভাগ মেনে না নিলে আবার আন্দোলন করতে হবে, আবার জেলে যেতে হবে। আর সেই চূড়ান্ত বৈঠকের দিন, গাঁধিজির নাকি মৌনব্রত দিবস ছিল। ভাবা যায়?

আর ও দিকে জিন্না? এক্কেবারে দুঁদে ব্যারিস্টার। পুরোদস্তুর সাহেসসুবো ব্যক্তিত্ব। কায়েদ-ই-মহম্মদ আলি জিন্নাকে স্বরাজ সংগ্রামের ইতিহাসে একেবারের জন্যও কিন্তু কারাগারে চৌকাঠও মারাতে হল না। জিন্নার জেদের কাছে শেষপর্যন্ত হার মানতেই হয়েছিল তদানীন্তন কংগ্রেসী নেতাদের। ওই রকম একটা সময় সাম্প্রদায়িক রাজনীতি তীব্র আকার নেয়। এমনকী সামাজিক জীবনেও সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ ও বিভাজন তীব্র হয়ে উঠেছিল। ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রগঠনের দাবিও শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। ফলত তখন ‘রিলিজিয়ন’ আর ধর্ম পদবাচ্য থাকে না। তা হয়ে উঠেছিল নৈতিকতা বর্জিত আরগানাইজড রিলিজিয়ন। স্বাধীনতার প্রস্তাব গৃহীত হল। ১৫৭টা ভোটের মধ্যে মাত্র ২৯টা ভোটে। ৩৯ জন নাকি সেই ভোট দান থেকে বিরত ছিলেন। গাঁধিজি দেশভাগের পক্ষেই তার নিজের মহার্ঘ ভোটই দিলেন। স্বাধীনতা এল বটে। তবে দ্বি-খণ্ডিত স্বাধীনতা। কোটি কোটি মানুষের ভিটেমাটি হারিয়ে উদ্বাস্তু শিরোনাম নিয়ে পালিয়ে আসার মর্মান্তিক কঠিন বাস্তবকে মেনে নিতে হয়েছিল।

দুশো বছরের বর্বরতাকে পর্যদস্তু করে সাধের স্বাধীনতা লাভ করেছিল আমাদের দেশ। আর ‘বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি’-এর মতো উপহার পেয়েছিল দেশভাগ। প্রসঙ্গত অন্নদাশংকর রায়ের লেখা সেই অতি চেনা ও জনপ্রিয় ছড়াটির কথা একই সূত্রে বলা যায়। খুব ছোট্ট বেলায় যখন ছড়াটা শুনতাম, ছড়াটির ছন্দের চলন—খুব মজা লাগতো শুনতে। অন্তর্নিহিত মানেটা তো বুঝতে শিখলাম অনেক বড় বয়সে এসে। সেই যে, সাংঘাতিক স্যাটায়ার—

‘‘তেলের শিশি ভাঙলো বলে

খুকুর ’পরে রাগ করো

তোমরা যে সব বুড়ো খোকা

ভারত ভেঙে ভাগ করো

তার বেলা? তার বেলা’’

অগস্ট পড়লেই স্বাধীনতা দিবসের কথাই প্রথম মনে আসে। তার পরই ইদানিং হুজুগ তোলা ‘বন্ধুদিবস’। এ কালের প্রজন্মের কাছে। তারপরই কবিগুরুর বাইশে শ্রাবণ। ঝুলন, রাখি এ সব আছেই। আমাদের দুই আড়াই প্রজন্মের আগে যে সব স্বতন্ত্রতা সংগ্রামের বীরগাথা কেবল ইতিহাসের পাতায়, স্কুলের পাঠ্য বইতে, তথ্যচিত্র, সিনেমা বা কিছু দেশাত্ববোধক গানের মাধ্যমেই জেনেছি। এও বহুবার বহু জনের কাছে শুনে এসেছি এবং এখনও প্রসঙ্গক্রমে আলোচিত হয় যে, সেই সময়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় মাথারা যদি ভারতকে নির্ভেজাল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গড়ার জন্য নিরপেক্ষ ভাবে সচেষ্ট থাকতেন, তা হলে কাগজ কাটার মতো কাঁচি দিয়ে দেশটাকে টুকরো করা হত না।

দুই বছর কম সত্তর বছর স্বাধীনতা লাভের বয়স হলেও এখনও ভারতকে অভ্যস্ত নজরে যা দেখছি—সেখানেও তো আটষট্টি বছর আগে ধর্মের নামে ঘটে যাওয়া দেশভাগের পরও—কখনও আমাদের চারপাশের সমাজকে দেখেও আতঙ্ক হয়। আমাদের এই ভারতে এখনও কোনও বড় ধরনের অপরাধ বা সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটে যেতেই পারে। জঙ্গি নাশকতা তো এখন রোজকার খবর প্রায়। কাগজ পড়ে বা ছবি দেখে, টিভিতে পরবর্তী রিপোর্টগুলো দেখে এখনও শিউরে উঠতে হয়। দেখেশুনে এও মনে হয়, এ যেন সেই অপরাধ ও পাল্টা প্রতিশোধের নিষ্ঠুর খেলা। সমাজের এই শোধবোধের ভারসাম্যের আসল কারণটা বোঝা হয়ে যায় সাধারণ মানুষের। তবু যেন এই বিপ্রতীপ অবস্থার নটে গাছটি কখনওই মুড়িয়ে ফেলতে পারিনি আমরা। আমাদের দেশে বদলে বদলে যাওয়া সরকারও। রাজনীতির তুখোর চতুরতা বন্যার মতোই সর্বগ্রাসী। সমস্ত বাঁধ ভেঙে সে সর্বত্র ঢুকে পরে সব নীতিকেই ভেস্তে দেয়। কখনও ভাষা, কখনও ধর্ম, কখনও সমাজ, কখনও প্রাদেশিকতা, কখনও বিভিন্ন নাশকতার মাধ্যমে অশুদ্ধ ভাবনার প্রতিফলন হচ্ছে। অন্ধ ভাবাবেগের দ্বারা চালিত কিছু শ্রেণীর মানুষ সমস্ত কিছুকে কুক্ষিগত করে রাখছে বা রাখতে চাইছে, তার নিজস্ব অ়ঞ্চলগত কোটরের মধ্যে।

স্বাধীনতা ও দেশভাগ নিয়ে যে কথা হচ্ছিল। সাহিত্য শিল্প চলচিত্রে নানা ভাবে দেখা গেছে ৪৭-এর উদ্বাস্তুদের জীবনযন্ত্রণা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। ভারতীয় সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও বিতর্কিত সাহিত্যিক সাদাত হাসান মান্টো ভারতে জন্মগ্রহণ করলেও দেশভাগের পরের বছরই পকিস্তানে চলে যান। স্বল্পায়ু তেতাল্লিশ বছরের জীবনে অজস্র গল্প লিখেছিলেন। প্রায় প্রতিটি গল্পই দেশভাগ-পরবর্তী ক্যাম্প, লুটতরাজ, দাঙ্গাফাসাদ, আগুন এ সবের প্রকট যন্ত্রণা থেকে উঠে আসা ঘটনাবলী যেন আরও খুলে গেছিল তাঁর লেখনীর কাছে। মান্টোর এক বিখ্যাত গল্প ‘তোবা টেক সিং’ গল্পের এক জায়গায় দেখা যায়, এক উন্মাদ হঠাৎ একটা গাছের ডালে চড়ে বসল। ঘণ্টা দুয়েক ওই গাছের জালে বসে থেকেই নাগাড়ে পাকিস্তান ভার্সেস হিন্দুস্থান নিয়ে চিৎকার করতে লাগল। তাকে আর কিছুতেই গাছ থেকে নামানো যায় না। গার্ডদের তাড়া খেয়ে সে গাছের আরও উঁচু ডালে উঠে গেল এবং চিৎকার করে বলতে লাগল ‘‘আমি পাকিস্তানেও থাকতে চাই না, হিন্দুস্থানেও না। আমি এই গাছেই আমার বাকি জীবন কাটাবো।’’

হিন্দি উর্দু এমনকী ইংরাজিতেও এই দেশভাগ ও সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে নানা গল্প লেখা হয়েছে। ওই সব গল্পের মর্ম নিরীক্ষণ ও উপলব্ধি করলে দেখতে পাব, তদানীন্তন সমাজে কী প্রবল উত্তেজনা, হিংস্রতা, উগ্রতা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-ফাসাদ-এর মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হয়েছিল। জাতপাত, শ্রেণিবিভাজন, প্রতিহিংসা প্রবল বিশ্বাস, নিরাপত্তাবোধে হারিয়ে যাওয়া সমাজের গল্প সে সব। অন্যের ধর্ম ও ধর্মহীনতা, ধর্মবিশ্বাস, গোঁড়ামি এ সব নিয়ে সে গল্পও এগিয়েছে।

সে সব গল্পের নিয়তিই হচ্ছে ‘দেশভাগ’। মানে দেশভাগটা না থাকলে গল্পগুলিই হত না। গল্পগুলির শুরু থেকে শেষ দেশভাগ। ক্রসিং ওভার নামে পার্টিশনের ওপর নির্বাচিত গল্প সংগ্রহে রাজিন্দর সিং বেদির লেখা গল্প ‘লাজবন্তী’। গুলজারের ‘হুজ স্টোরি’। কমলেশ্বর-এর ‘কিতনে পাকিস্তান’ খুশবন্ত সিং-এর ‘ট্রেন টু পাকিস্তান’। রাহি মাসুম রেজার ‘আধা গাঁও’য় বাপসি সিদ্ধার ‘দ্য আইসক্যান্ডি ম্যান’। সাদাত হাসান মান্টোর ‘তোবা টেক সিং’ ইত্যাদি গল্পগুলি যেন ওই ভ্রষ্ট সমাজের জীবন্ত দলিল। বাংলা সাহিত্যেও দেশভাগের ওপর তখনকার সময়ের লেখকদের অনেক মরমী গল্প আছে। সলিল চৌধুরীর ‘ড্রেসিং টেবিল’। ঋত্বিক ঘটকের ‘স্ফটিক পাত্র’। অমলেন্দু চক্রবর্তীর ‘অধিরথ সুতপুত্র’। প্রফুল্ল রায়ের ‘রাজা আসে রাজা যায়। দেবেশ রায়ের লেখা ‘উদ্বাস্তু’ এমন চোখে জল এনে দেওয়া গল্প সেই সব।

চলচ্চিত্রেও দেশ বিভাজনের প্রতিভাত হয়েছে সেলুলয়েডের পর্দায়। শ্যাম বেনেগালের ‘মাম্মো’, যশ চোপড়ার ‘বীরজারা’, ‘ধর্মপুত্র’। দীপা মেহেতার ‘আর্থ’। জে পি দত্তের ‘রিফিইজি’। চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিবেদীর ‘পিঞ্জর’, এম এস সথ্যুর ‘গরম হাওয়া’। অনিল শর্মার ‘গদর এক প্রেমকথা’, সাবিনা সুমর ‘খামোশ পানি’। এ ছাড়া আমির খান অভিনীত ‘মঙ্গল পাণ্ডে’। একদম হালের ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ এর গল্প দেশভাগের বহু বছর পরও দু’দেশের চোরা সম্পর্কের বাইরে মানবিকতার গল্প।

বাংলা চলচ্চিত্র জগতেও দেশের দ্বিখণ্ডিত হয়ে যাওয়াকে উপজিব্য করে বহু সিনেমা হয়েছে। যেমন ঋত্বিক ঘটকের ‘কোমল গান্ধার’ বা ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘নাগরিক’, ‘সুবর্ণরেখা’, নিমাই ঘোষের ‘ছিন্নমূল’ আরও কিছু আছে। গল্পকার বা চিত্রপরিচালকরা দেশভাগের পরবর্তী ঘাতপ্রতিঘাতের যন্ত্রণা নিজের মনন ও লেখনীর সংমিশ্রণে, ক্যামেরায় গল্প বলার মুন্সিয়ানায় মর্মান্তিক সময়ের নিদারুণ কঠিন বাস্তবকে নিজস্ব উপস্থাপনায় অন্য মাত্রা দিয়েছিলেন।

স্বাধীনতা দিবস নাকি শপথের দিন। আগামী ভারত গড়ার শপথ। কর্মস্থলে স্বাধীনতা দিবসের সবেতন ছুটি উপভোগ করেন সবাই। পাড়ার মোড়ে, হাইরাইজ টাওয়ারের নীচে লবিতে, স্কুল-কলেজে আবার সর্বভারতীয় তকমা লাগানো স্বাধীনতা উৎসব। সাদা ধোপপদুরস্ত পোশাকে স্থানীয় নেতা-মন্ত্রীদের ত্রিরাঙ্গা ঝান্ডা উত্তোলন। স্বতন্ত্রতা সংগ্রামীদের ছবিতে ফুল, মালা দান, কিছু মুখস্ত করা বুলি আওড়ানো। পরে লাড্ডু বিতরণ। মাইক্রোফোনে বেজে যাচ্ছে—

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE