শিয়ার লিপস
ঠোঁট রাঙিয়ে নেওয়ার সাধ বড়ই মধুর। নারী সত্তার বহিঃপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই লিপস্টিকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় একটি মেয়ের। বয়স বাড়ার সঙ্গে বাড়ে চেনা-জানার পরিধি। ছোটবেলার কাঁপা কাঁপা হাতে লিপস্টিক পরাও তখন হয়ে ওঠে সুচারু শিল্প। সামনেই পুজো। তাই সাজে যেন কেউ আপনাকে টেক্কা দিতে না পারে। সাধারণ ভাবে লিপস্টিক তো সক্কলে পরে, তাতে আর বিশেষত্ব কোথায়! কিন্তু সেটাই যদি হয় ট্রেন্ডি এবং পরার কায়দায় থাকে নতুনত্ব, তবে না সেটা হবে নজরকাড়া! সে কথা মাথায় রেখেই লিপস্টিক পরার চারটি নতুন ধরনের কায়দা আপনাদের জন্য। পরাও বিশেষ কঠিন নয়, আবার এর যে কোনও একটি রকম ট্রাই করলে, আপনার মোহময়ী হওয়া আটকায় কে!
লিপস্টিক পরার ধরন
থ্রি ডি লিপস, ম্যাট লিপস ও অম্ব্রে লিপস
অম্ব্রে: যাঁরা এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করেন, এটা তাঁদের জন্য। উপরের ঠোঁটে আর নীচের ঠোঁটে দুটো সম্পূর্ণ আলাদা রং। হতে পারে সেটা পিঙ্ক আর অরেঞ্জের কম্বিনেশন। যদি একটু সাটল লুক চান, তবে ট্রাই করতে পারেন চেরি রেড আর ডার্ক বার্গান্ডির কম্বো। অম্ব্রে আরও এক ভাবে ট্রাই করা যায়। ডার্ক প্লাম কালারের লিপ পেন্সিল দিয়ে ঠোঁট এঁকে নিন। তার পর ব্রাশ দিয়ে লিপ লাইনারটাকে ব্লেন্ড করার চেষ্টা করুন। ঠোঁটের মাঝখানে লাগান রেড লিপস্টিক। এবং সেটাকে দু’দিকে মিশিয়ে দিন। আসলে অম্ব্রের মন্ত্র হচ্ছে, মাঝখানে ডার্ক আর দু’প্রান্তে রং হালকা করে দেওয়া।
থ্রি ডি: ঠোঁট ভরাট দেখাতে চাইলে ট্রাই করুন থ্রি ডি। ঠোঁটের মাঝখানে সাদা, গোল্ড বা সিলভার রঙের শিমারি শ্যাডো লাগাতে পারেন বা যে লিপ কালার লাগিয়েছেন, তার চেয়ে হালকা লিপ কালার ঠোঁটের মাঝ বরাবর লাগান।
শিয়ার: এই টেকনিকে ঠোঁট গ্লসি দেখাবে। তবে এটা কিন্তু সব অনুষ্ঠানের জন্য নয়। লিপ কালারের উপরে সুন্দর করে গ্লস বা লিপ বাম লাগিয়ে নিন।
ম্যাট: লিপস্টিকে ম্যাট ফিনিশও ভীষণ স্টাইলিশ। ম্যাট রঙা লিপস্টিক অ্যাপ্লাই করার আগে টিস্যু দিয়ে ঠোঁটের উপর হালকা করে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার লাগিয়ে নিন। তার উপর থাকবে লিপস্টিকের পরত। আরও একটা কথা বলে রাখি, লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁট ভরাট করলেও কিন্তু ম্যাট ফিনিশ লুক পাওয়া যায়।
লিপস্টিক স্থায়ী হওয়ার টিপ্স
অনেকের অভিযোগ, লিপস্টিক বেশিক্ষণ রাখতে পারেন না। লিপস্টিক যাতে বেশি সময় স্থায়ী হয়, তার জন্য রইল কিছু টিপস:
• প্রথমে ঠোঁট স্ক্রাব করুন। এর পর তেল ছাড়া লিপবাম লাগান।
• ঠোঁটে ফাউন্ডেশন বা কনসিলার লাগান। কনসিলার দিয়ে ঠোঁটের বাইরে বাউন্ডারি আঁকুন।
• এর পর লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে নিন। লিপ কালার ঠোঁটের মাঝখান থেকে দু’ধারে সমান করে লাগান।
• এর পর একটি টিস্যু ঠোঁটের উপর ধরে ট্রান্সলুসেন্ট পাউডার ব্রাশ দিয়ে লাগান।
• আর এক প্রস্ত লিপকালার লাগিয়ে নিন।
• লিপস্টিক তোলার সময় সাবান না ঘষে পেট্রোলিয়াম জেল, তুলোয় ময়শ্চারাইজার বা অলিভ অয়েল লাগিয়ে তুলুন।
ঠোঁটের যত্ন
লিপস্টিক পরার আগে ঠোঁটের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি। সুন্দর ঠোঁটেই কিন্তু ফুটে উঠবে পছন্দের রং।
• ঠোঁটের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য বেশি পরিমাণে জল পান করুন। ডায়েটে শসা, তরমুজ, আঙুর, লেবু এই ধরনের ফল অবশ্যই রাখবেন।
• শরীরের মতোই ঠোঁটেরও মৃত কোষ পরিষ্কার করা জরুরি। সপ্তাহে অন্তত এক দিন ঠোঁট স্ক্রাব করুন।
• অনেকেই মুদ্রাদোষবশত ঠোঁট কামড়ান বা ঠোঁট চাটেন। দুটোই কিন্তু ঠোঁটের স্বাস্থ্যের পক্ষে খারাপ। এতে ঠোঁট আরও শুকিয়ে যায়।
• আমন্ড অয়েল আর মধু মিশিয়ে ঠোঁটের উপর লাগান। মাসাজ করুন। সারারাত রেখে দিন।
• লেবুর রসের সঙ্গে গ্লিসারিন মিশিয়ে ঠোঁটে সারারাত লাগিয়ে রাখতে পারেন।
ঠোঁটের এমন যত্নে ও লিপস্টিকের সাজে দেখবেন, অন্য কারও প্রেমে পড়ার আগে আপনি নিজেই নিজের ঠোঁটের মায়াজালে আটকা পড়েছেন!
মডেল: অনিন্দিতা, শ্রীময়ী, নয়নিকা, দীপশ্বেতা
মেকআপ: নবীন দাস (নয়নিকা, শ্রীময়ী), অভিজিৎ চন্দ
(অনিন্দিতা, দীপশ্বেতা)
ছবি: সোমনাথ রায় (অনিন্দিতা, দীপশ্বেতা)
অমিত দাস (নয়নিকা, শ্রীময়ী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy