Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

এবার টবে লাগান ফলগাছ

বাড়ির ছাদে কিংবা বারান্দার টবে কী-কী ফলের গাছ লাগাতে পারেন এবং কীভাবে তার যত্ন নেবেন, রইল তার বিবরণ!বাড়ির ছাদে কিংবা বারান্দার টবে কী-কী ফলের গাছ লাগাতে পারেন এবং কীভাবে তার যত্ন নেবেন, রইল তার বিবরণ!

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

দিঘিদের দোতলা বাড়িটার দিকে পথচলতি মানুষ না তাকিয়ে পারে না। এমন নয় যে, তাদের ঝাঁ-চকচকে তাকলাগানো বাড়ি। কারণটা হল, বাড়ির সামনে ছোট্ট বাগান। সেখানে বড় যত্নে তার দাদু লাগিয়েছিল অনেক গাছ। এখন সেই শখ শিকড় বিছিয়েছে দিঘির মায়ের মধ্যেও। বাগানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আম, কাঁঠাল, লিচু, লেবু... হরেক গাছ। ফলের কী বাহার! দিঘিদের বাগানের রসালো ফলের সুখ্যাতি গোটা এলাকা জুড়ে।

এটুকু পড়ে আপনি ভাবছেন তো, আপনার বাড়িতে এত জায়গা নেই, যেখানে এমন সাধের বাগান বানাবেন। থাকেন দু’কামরার ফ্ল্যাটে, তাই ও সব শখের জায়গা নেই। দাঁড়ান-দাড়ান! এত তাড়াতাড়ি হার মানলে চলে? ইচ্ছে যখন আছে, তখন তা পূরণও হবে। ফলগাছ লাগানোর জন্য যে একখানি

বাগান থাকতেই হবে, তা নয়। আপনার বারান্দায় কিংবা ছাদের টবেই লাগাতে পারেন আপনার পছন্দের ফলের গাছটি।

কোন কোন ফলের গাছ আপনি টবে লাগাতে পারেন?

আম, সবেদা, জামরুল কিংবা মুসুম্বি অথবা কুল, আপনি যে ফল খেতে ভালবাসেন, তারই বীজ রোপণ করতে পারেন আপনার টবে। টবে ফলগাছ লাগানোর মজা কোথায় জানেন? বাগানে গাছ লাগালে শিকড় অনেকটা ছড়িয়ে যায়। তাই ফল আসার জন্য বেশ কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু টবে বছরের দুয়েকের মধ্যে ফল ধরতে দেখা যায়। আর নিজের হাতে লাগানো গাছে হওয়া ফল খাওয়ার মজাই আলাদা।

গাছ লাগাবেন মাটিতে না কি ঘেঁষে?

গাছ লাগানোর জন্য আপনি ঘেঁষ (পাথুরে কয়লার ছাই) কিংবা মাটি যে কোনওটাই বেছে নিতে পারেন। ভাল মাটি পাওয়াটা অনেকের কাছেই বর্তমানে একটি সমস্যা। তাই অনেকেই ইদানীং গাছ লাগাতে মাটির পরিবর্তে ঘেঁষ ব্যবহার করেন। নার্সারিতে এটি কিনতে পাওয়া যায়। মাটিতে যখন জল দেওয়া হয়, তখন জল বেশি হলে তা বেরোতে পারে না। ফলে গাছের শিকড় পচে যায়। উলটো দিকে মাটির তুলনায় ঘেঁষের দানা অনেক বেশি আলগা। এতে সুবিধে হল, গাছের যেটুকু জল শুষে নেওয়ার সে টেনে নেয়। বাকিটা বেরিয়ে যায়। এতে গাছ নষ্ট হয় না, ভাল থাকে। কিন্তু ঘেঁষে গাছ লাগালে আবার সার অনেক বেশি দিতে হয়। কারণ ঘেঁষের নিজস্ব কোনও উর্বরতা শক্তি নেই। তবে ঘেঁষে গাছ লাগালে জলের উপর নিয়ন্ত্রণটা থাকে বলে, এতে গাছ লাগানো সুবিধেজনক।

সার নিয়ে সারকথা

যাই হোক, সাত দিন অন্তর গাছে খোল দিতে হবে। সার দিয়ে খোল ভেজাতে হবে। তবে খোল দেওয়ার সময় খেয়াল রাখবেন, যদি মাটিতে গাছ লাগিয়ে থাকেন, তা হলে খোলের জল একটু ভারী হবে। আর যদি ঘেঁষে গাছ লাগানো হয়, তা হলে খোলের জল পাতলা হবে। অন্তত সাত দিন যাতে খোল পচে, সেটা হিসেব করে জল দেবেন।

শিকড় কাটতে হবে

এর সঙ্গে আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে রাখি। টবের মধ্যে যেহেতু গাছটা বাড়ে, শিকড় তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে যায়, তাই প্রত্যেক বছর শিকড় কাটতে হয়। এর জন্য টব উলটে, মাটি ছাড়িয়ে পাশ থেকে শিকড় কেটে ছোট করে দিতে হয়, যাতে ছড়ানো শিকড়গুলো না থাকে। তার পর গোবর সার দিয়ে মাটি তৈরি করে, ঝুরঝুরে করে, আবার ওই টবের মধ্যে গাছ বসিয়ে দিতে হবে। তবে যখন এই শিকড় কাটার ‘অপারেশন’টা চালানো হবে, তার পর দিন-তিনেক গাছটিকে ছায়ায় রাখতে হবে, কারণ তখন তার জোর কম থাকে।

আর আলাদা করে বিশেষ যত্নের দরকার হয় না। ফলের গাছ হলেও সাত-আট বছর দিব্যি বেঁচে থাকবে ও ফল দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Planting Mangoes Tub
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE