অ্যানিমেশন: আকার প্রকার গ্যালারিতে গণেশ পাইনের আঁকা কার্টুন ছবির প্রদর্শনী
গণেশ পাইন তাঁর শিল্পী-জীবনের গোড়ার দিকে প্রায় ১৬ বছর, ১৯৬১ থেকে ১৯৭৭, অ্যানিমেশন ফিল্মের জন্য ছবি এঁকেছেন। ১৯৬১-তে তাঁর কাছে আহ্বান আসে এই অ্যানিমেশন ছবি করার জন্য। কর্নওয়ালিস স্ট্রিট ছিল মন্দার মল্লিকের স্টুডিও। এই মন্দার মল্লিক, গণেশ পাইনের কথায়—‘কার্টুন ফিল্মের ব্যাপারে একজন পথিকৃৎ মানুষ।’ তাঁর কাছে ছবির প্রকরণ-পদ্ধতি শিখে গণেশ পাইন এই কাজে দক্ষতা অর্জন করেন।
আকার প্রকার গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হল কার্টুন ছবি নিয়ে প্রদর্শনী। মিশ্র-মাধ্যমে আঁকা ১৫টি পশু-পাখির অ্যানিমেশন কার্টুন ছাড়াও ১২টি জলরঙের নিসর্গচিত্র। পশুপাখির চিত্রায়ণগুলি শিল্পী পশুপাখির অবয়ব বিন্যাসে, অভিব্যক্তিতে ও গতিভঙ্গিতে মানুষের মতো কিছু বৈশিষ্ট্য আরোপ করেন। স্বাভাবিকতা থেকে তাদের দূরে সরিয়ে নেন। অবয়বকে কোথাও প্রসারিত, কোথাও সংকুচিত করে আনন্দ, বিস্ময় ও কৌতুকবোধ সঞ্চারিত করেন। পশ্চাৎপটে থাকে অরণ্য। নীল আকাশের নীচে শান্ত, সমাহিত পরিমণ্ডলে পশু-পাখিরা তাদের সৌহার্দ্য ও প্রীতির জগৎ উন্মীলিত করে। কোথাও পশুদের অভিব্যক্তিকে বোঝাতে তিনি ‘বিগ ক্লোজআপ’ ব্যবহার করেন। পঞ্চতন্ত্রের কথামালার পরিমণ্ডলকে এ ভাবে তিনি দৃশ্যতায় রূপান্তরিত করেন। এই রূপায়ণ-কর্মে শিল্পী ভারতীয় পদ্ধতিতে তাঁর দক্ষতাকে পরিশীলিত করেছেন।
প্রদর্শনীতে তাঁর জলরঙে আঁকা নিসর্গের ছবিগুলিও সমান মাত্রায় মুগ্ধ করে। যেখানে বাংলা বা বিহার অ়ঞ্চলের বিস্তীর্ণ প্রান্তরের ছবি। তাঁর নিজস্ব চিত্রধারায় এই প্রশান্তিই একমাত্র পরিচয় নয়। সেখানে আসা রহস্যময়তা, শূন্যতার বোধ তাঁর অবচেতনের গভীর থেকেই উৎসারিত হত। সেই শূন্যতা এই নিসর্গের ছবিগুলিতেও সম্পৃক্ত হয়ে থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy