বিমূর্ত: অ্যাকাডেমিতে অনুষ্ঠিত চেঞ্জিং ন্যারেটিভ শীর্ষক প্রদর্শনীর একটি ছবি
চেঞ্জিং ন্যারেটিভ এই শিরোনামে সুমিত বেরা, সুমিত গুহ, বিশ্বনাথ রায় প্রদর্শনী করলেন অ্যাকাডেমিতে। সুমিত বেরা কনিষ্ঠ শিল্পী। ল্যান্ডস্কেপ তাঁর বিষয়, তবে বিমূর্ত রূপে। তিনি বিশ্বাস করেন ছবি যোগাযোগের মাধ্যম। চওড়া ফিতের মতো করে আনুভূমিক বর্ণবিন্যাসে ছবিতে তুলিচালনা করেছেন। শূন্য জমির বিশাল পশ্চাৎপট ছেড়ে দিয়েছেন, ওপরে একটু ফুটকির মতো চাঁদ তারা, যা সাধারণ দর্শকের বোধগম্য বলে মনে হল না। বর্ণ সংযোজন এবং করণকৌশল বেশ সংক্ষিপ্ত। বিশাল শূন্য আকাশ, অনেক নীচে নিস্তব্ধ জল, ঘাসজমি শান্ত পরিবেশ তৈরি করেছে। কোনও রকম ইলিউশন তৈরির চেষ্টা করেননি।
সুমিত গুহ সর্বদাই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। বোর্ডের উপরে মোটা রং দিয়ে আনুভূমিক টেক্সচারে ঘন রং প্রয়োগ করলেও ছবি সমতলধর্মী। বর্ণের এই সতেজ ভাব বজায় রাখার দরকার ছিল। ইন্ডিগো ব্লু এমনিতেই নেগেটিভ মুড, বিষণ্ণতা তৈরি করে। প্রত্যেকটি নীল রং-ই ছবিতে আলাদা ভাব নিয়ে আসে। কালো-নীল আর অনুজ্জ্বল ইয়েলো অকার ব্যবহার করেছেন। প্রকৃতির রহস্যময়তা তাঁর ভাবনার বিষয়। আলোর ব্যবহার সম্বন্ধে আর একটু সচেতন হলে রঙের মোটা পিগমেন্ট ছবিতে অন্য মাত্রা আনতে পারত। কোনও কোনও ছবিতে আলো-আধাঁরের খেলা উপভোগ্য।
বিশ্বনাথ রায় অনেকগুলি একক এবং সম্মিলিত প্রদর্শনী করেছেন। সাধারণ জনজীবন, সামাজিক অবক্ষয় তাঁর ভাবনার বিষয়। জলরং চারকোল কন্টি অ্যাক্রিলিক এনামেল পেন্ট সর্বত্রই তিনি সাবলীল এবং টেকনিক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। কাগজের ওপরে এনামেল পেন্ট দিয়ে ভারী অস্বচ্ছ জমিতে ব্রাশস্ট্রোকে টেক্সচার তৈরি করেছেন। সমস্ত চিত্রপট জুড়ে বড় মাঝারি ছোট ইমেজ, আবার কোথাও খণ্ডাংশ এনেছেন। অনেকটা ম্যুরালধর্মী তবে ম্যুরাল-এর ক্ষেত্রে রচনাবিন্যাসে অনেকটা গোছানো ব্যাপার থাকে। যেমন ‘ডিজাইনার অ্যান্ড সী’ ছবিটি। নীল-সাদা জমিতে কোথাও একটু রেখা, একটু রঙের আভা অনেক ধরনের টুকরো ইমেজ দেহাংশ। ছবিতে সমকালীন সামাজিক অবক্ষয় সংকট-অস্থিরতাকে তিনি রূপ দিতে চেয়েছেন। আলোর ব্যবহার ঘষা কাচের মধ্য দিয়ে আসা আলোর মতো। কোথাও ব্রাউন রঙের হালকা শেড, সরু মোটা রেখা। সাদাকালো ছোট কাজগুলি মন ছুঁয়ে যায়। সাদাকালো ছবির একটা পরিপূর্ণতা থাকে। কন্টির লাইন একটু ভেঙে করা চারকোলের হালকা শেড, ছোট ছোট টেক্সচারের ব্যবহার বেশ ভাল কাজ। সময়ের প্রেক্ষাপট জান্তব-মানবিকতাকে লঙ্ঘন করেছে বারে বারে। শিল্পীর এই ছবিগুলিতে বলিষ্ঠ আঙ্গিকে স্বাভাবিক গতিময়তা এসেছে এবং নিজস্ব দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। রেখাপ্রধান কুমোরটুলি সিরিজের ছবিগুলি অন্য রকম। সমস্ত পট জুড়ে বিভিন্ন ধরনের ইমেজ একটা পরিপ্রেক্ষিত তৈরি করেছে। ‘মাই পেট অ্যান্ড সী’ ছবিতে একটা বড় কোনাকুনি ফিগার ছবির ভারসাম্য নষ্ট করেছে। যা মানানসই নয়।
অনুষ্ঠান
• সম্প্রতি বিভিন্ন আঙ্গিকের বাংলা গান শোনা গেল কৃষ্ণেন্দু সেন, রাজ্যশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, শর্মি ভট্টাচার্য, অরুন্ধতী চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ শিল্পীর কণ্ঠে। কৃষ্ণেন্দু সেনের গাওয়া শ্যামাসঙ্গীতটি মনে দাগ কাটে। সংযোজনায় ছিলেন দেবাশিস ঘোষ।
• রবীন্দ্রসদনে কবিতা কোলাজ ও শ্রুতি অভিনয়ের অনুষ্ঠানটির শিরোনাম ছিল ‘শব্দের অন্তরালে’। কবিতা কোলাজের মধ্যে নজর কাড়ে প্রীতিশেখরের পরিচালনায় ‘প্রণমি স্বদেশজননী’, অমিতা ঘোষ রায়ের পরিচালনায় ‘রূপকথা নয়’ ও দেবাশিস ধারার ‘বন্ধ দ্বার’। শ্রুতি অভিনয়ে অনুপম চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘পথের দাবী’ ও কাজল সুরের পরিচালনায় ‘হিনু’ সুন্দর পরিবেশনা।
• কাজলরেখা মিউজিক্যাল সংস্থা আয়োজন করেছিল ‘কনসার্ট ফর মিউজিশিয়ানস’। শিল্পীরা ছিলেন সরোদে তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, তবলায় শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরে কণ্ঠসঙ্গীতে ছিলেন এম ভেঙ্কটেশ কুমার। সঙ্গতে ছিলেন হারমোনিয়ামে জ্যোতি গোহ এবং তবলায় শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
• সম্প্রতি সুকুমার রায়ের ১৩০ তম জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আইসিসিআর-এ অনুষ্ঠিত হল নিখিলের আনন্দগান। ভাবনায় রিনা দোলন বন্দ্যোপাধ্যায়। অংশ নিয়েছিলেন বরুণ চন্দ, প্রদীপ দত্ত, অনুতোষ মুখোপাধ্যায়, অনিরুদ্ধ রক্ষিত প্রমুখ।
• অতুলপ্রসাদের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে কুহুতান আয়োজন করেছিল গান ও পাঠের অনুষ্ঠান ‘সবারে বাস রে ভাল’। উদ্বোধনী সঙ্গীত গাইলেন সাহানা বক্সী। পরে একক গানের শিল্পী ছিলেন সংযুক্তা ভাদুড়ি। তাঁর পরিবেশিত গানগুলি শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যায়। সঞ্চালনায় ছিলেন উজ্জ্বল ভট্টাচার্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy