Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

মাছের রকমারি

কথায় আছে মাছে-ভাতে বাঙালি। তাই কিউপিস রেস্তরাঁর কর্ণধার রাখিপূর্ণিমা দাশগুপ্ত মাছের কয়েকটি সাবেকি রেসিপি বলে দিলেন, যা উনি শিখেছিলেন মায়ের কাছ থেকে! মাছের এই পদগুলো বানিয়ে দেখুন, রসনা তৃপ্তি হবে, প্রশংসা পেয়ে মনও ভরবে।কথায় আছে মাছে-ভাতে বাঙালি। তাই কিউপিস রেস্তরাঁর কর্ণধার রাখিপূর্ণিমা দাশগুপ্ত মাছের কয়েকটি সাবেকি রেসিপি বলে দিলেন, যা উনি শিখেছিলেন মায়ের কাছ থেকে!

মাছের দোপিঁয়াজি

মাছের দোপিঁয়াজি

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

মাছের দোপিঁয়াজি

উপকরণ: ৫০০ বা ৬০০ গ্রাম ওজনের মাছ ২ ইঞ্চি মাপের করে টুকরো করে নিন (শিিঙ, শোল, পমফ্রেট, রুই বা ভেটকি, যে-কোনও মাছ নিতে পারেন), মোটা করে স্লাইস করা মাঝারি সাইজের ২টো পেঁয়াজ, জল মিশিয়ে বেটে নেওয়া ১টি পেঁয়াজ, আদাবাটা হাফ চা-চামচ, রসুনবাটা ২ টেব্‌লচামচ, হলুদ ১ চা-চামচ, লংকাগুঁড়ো ১ চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়ো হাফ চা-চামচ, গরম মশলা গুঁড়ো ১ চা-চামচ, সরু করে কুচানো মাঝারি মাপের টম্যাটো ২-৩টি, ভাল করে ফেটানো দই ২ টেব্‌লচামচ, গরমজল দেড়কাপ, কুচানো পেঁয়াজকলি ২টো, কাঁচা লংকা ২-৩টি, কুচানো ধনেপাতা ১ টেব্‌লচামচ, কুচানো পুদিনাপাতা ১ টেব্‌লচামচ, তেল ৪ টেব্‌লচামচ, নুন ও চিনি স্বাদমতো।

পদ্ধতি: মাছের টুকরোগুলো নুন ও হলুদে গড়িয়ে নিন। একটি প্যান বা কড়াইতে ২ টেব্‌লচামচ তেল দিয়ে মাছগুলো হালকা করে ভেজে তুলে রাখুন। প্যানে বাকি তেল ঢেলে দিন। তেল গরম হলে আদা, রসুন ও পেঁয়াজ বাটা দিন। ভাল করে নাড়তে থাকুন, যতক্ষণ না তার রং বদলায়। এবার এর মধ্যে দিন লংকা ও গোলমরিচের গুঁড়ো, হলুদ ও দই। দইটা ভাল করে মিশে গেলে, এর মধ্যে টম্যাটো, স্বাদমতো চিনি এবং ১/৩ কাপ জল দিন। ভাল করে নাড়তে থাকুন, যতক্ষণ না টম্যাটো পুরো মশলার সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। এর মধ্যে মাছ ও স্লাইস করে কাটা পেঁয়াজটা ঢেলে দিন, জল দিন। নুন-মিষ্টি দেখে নিয়ে কম আঁচে ফুটতে দিন, যতক্ষণ না মাছ রান্না হচ্ছে এবং গ্রেভি ঘন হচ্ছে। হয়ে গেলে উপরে গরম মশলার গুঁড়ো, পেঁয়াজকলি ও লংকা কুচি ছড়িয়ে নেড়ে দিন। তার পর গ্যাস থেকে নামিয়ে উপরে ধনেপাতা ও পুদিনাপাতার কুচি ছড়িয়ে দিন। মাছের এই পদটি আপনি ভাত বা পোলাও, যে কোনওটির সঙ্গে খেতে পারেন।

সরষে ইলিশ

সরষে ইলিশ

উপকরণ: ১ কেজির ইলিশ (টুকরো করা), সাদা সরষে ও কালো সরষে ২ টেব্‌লচামচ করে (দু’রকম সরষে খুব ভাল করে বেটে নেওয়া, সঙ্গে দুটো কাঁচা লংকা, এর মধ্যে এক চা-চামচ নুন ও সামান্য জল দিয়ে মিশিয়ে তৈরি করা একটি পেস্ট), হলুদ ১ চা-চামচ, লাল লংকার গুঁড়ো ১ চা-চামচ, কাশ্মীরি লংকার গুঁড়ো হাফ চা-চামচ, সরষের তেল ৪-৫ টেব্‌লচামচ, চেরা কাঁচা লংকা ৮-১০টি, হাফ কাপ জল, নুন স্বাদমতো।

পদ্ধতি: একটি বড় পাত্রে উপরে উল্লেখিত উপকরণগুলো একসঙ্গে মেশান। শুধু তার মধ্যে জল কাঁচা লংকা দেবেন না। এবার মাছগুলোকে মিশ্রণটির মধ্যে ঢেলে, গায়ে পরতের মতো মাখিয়ে দিন। ২০ মিনিট থেকে আধঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন। মাছগুলোকে পাত্র থেকে তুলে, হালকাভাবে ঝেড়ে নিন, যাতে গায়ে লেগে থাকা মশলার অতিরিক্ত আস্তরণ পড়ে যায়। এর পর মাছগুলো আলদা পাত্রে রাখুন। এবার মিশ্রণটির মধ্যে জল দিয়ে খুব ভাল করে মেশান।

একটি ছাঁকনির মধ্যে দিয়ে ছেঁকে গরম কড়াইয়ে মশলাটি ঢেলে দিন। চেরা কাঁচা লংকাগুলো দিন এবং ঝোলটা ফোটাতে থাকুন। এবার একটি লেয়ারে মাছগুলো সাজিয়ে দিন, যাতে তা ভেঙে না যায়। কড়াই ঢাকা দিয়ে রেখে, কম আঁচে ১২-১৫ মিনিট বা তার বেশি সময় বসিয়ে রাখুন, যতক্ষণ না মাছ রান্না হচ্ছে এবং তেল উপর পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে। গরম ভাত বা পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন সরষে ইলিশ। খেতে অসাধারণ লাগবে।

মাছের শুক্তো

মাছের শুক্তো

উপকরণ: ছোট ট্যাংরা ২৫০ গ্রাম (পাবদা, পারশে কিংবা অন্য কোনও ছোট মাছ দিয়েও রান্নাটি করতে পারেন), মাঝারি সাইজের ১টি আলু খোসা ছাড়িয়ে ডুমো-ডুমো করে কেটে নিন, মাঝারি সাইজের ১টি বেগুন লম্বা করে টুকরো-টুকরো করুন (দু’ইঞ্চি মাপ রাখলে ভাল হয়), একটি কাঁচাকলা খোসা ছাড়িয়ে টুকরো করুন (এক ইঞ্চি মাপ রাখলে ভাল হয়), পটল ৪টি (লম্বালম্বিভাবে মাঝখান থেকে কেটে ৪ টুকরো করুন), সাদা মুলো ১টি (খোসা ছাড়িয়ে ১ ইঞ্চি মাপে টুকরো করুন), ডাঁটা ৪টি (খোসা ছাড়িয়ে দু’ টুকরো করা), ফুলকপি ১০০ গ্রাম, হলুদ ১ চামচ, জিরেবাটা হাফ টেব্‌ল চামচ, ধনেবাটা হাফ টেব্‌ল চামচ, সরষেবাটা ১ চামচ, পোস্তবাটা ১ চামচ, মেথি সামান্য, মৌরি এক চিমটে, গোটা সরষে এক চিমটে, সরষের তেল বা অন্য তেল ৩-৪ টেব্‌ল চামচ, দুধ ২ টেব্‌ল চামচ বা লাগলে আর একটু বেশি, নুন ও চিনি স্বাদমতো, কোরানো নারকেল ১ টেব্‌ল চামচ, বড়ি ৪টে (ভাল করে ভেজে গুঁড়ো করে নিন)।

পদ্ধতি: একটি পাত্রে হাফ চা-চামচ নুন ও হাফ চা-চামচ হলুদ মিশিয়ে রাখুন। এই নুন-হলুদ মাছের গায়ে মাখিয়ে রাখুন। কড়াইয়ে ২ টেব্‌ল চামচ তেল দিন। ধোঁয়া উঠলে, মাছগুলো ছেড়ে দিন, হালকা করে ভেজে, একটি ঝাঁজরি হাতা দিয়ে তুলে একপাশে রাখুন। এবার কড়াইয়ে বাকি তেলটা দিয়ে গরম করুন। এর মধ্যে দিন মেথি, মৌরি ও গোটা সরষে। একটু নাড়াচাড়া করুন। গ্যাস কমিয়ে এর মধ্যে আদা, জিরে ও ধনে বাটা দিন। মিনিট দুয়েক নেড়ে নিন, তারপর এর মধ্যে সবজিগুলো ঢেলে দিন। পরিমাণমতো হলুদ, পোস্তবাটা ও সরষেবাটা দিয়ে, তিন-চার মিনিট ধরে কষাতে থাকুন। দু’কাপ জল ও স্বাদমতো নুন দিন। গ্যাস কমিয়ে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে দিন। যখন তা প্রায় হয়ে আসবে, ভাজা মাছগুলো ঢেলে দিন। ভাল করে নেড়ে দুধটা ঢেলে দিন। স্বাদমতো চিনি দিন। গ্যাস সিমে রেখে মাছ নরম হতে দিন। খেয়াল রাখবেন, সবজিগুলো যেন ভেঙে না যায়। রান্না হয়ে গেলে শুক্তো একটি পাত্রে রেখে, উপরে কোরানো নারকেল ও ভেজে রাখা বড়ি গুঁড়ো করে ছড়িয়ে দিন।

তেলকই

তেলকই

উপকরণ: কই মাছ ৫০০ গ্রাম, সরষের তেল ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম, কালোজিরে হাফ চা-চামচ, কাঁচা লংকা ৪-৫টি, হলুদ ১ চা-চামচ, লংকার গুঁড়ো হাফ চা-চামচ, জল হাফ কাপ, ধনেপাতা ২ টেবলচামচ, নুন স্বাদমতো।

পদ্ধতি: মাছে নুন-হলুদ মাখিয়ে প্রথমে ভেজে নিন। এবার কড়ায় দিন সরষের তেল। গরম হলে কালোজিরে ফোড়ন ও কাঁচা লংকা দিয়ে দিন। হলুদ ও লংকার গুঁড়ো জলে গুলে এর মধ্যে দিন। মাছটাও ছেড়ে দিন। মাছ নরম হয়ে এলে স্বাদমতো নুন দিন ও ধনেপাতা ছড়িয়ে দিন। ছুটির দিনে দুপুরে গরম ভাতের সঙ্গে তেলকই কিন্তু দারুণ জমে যাবে।

পারমিতা সাহা

ছবি: শুভেন্দু চাকী

নতুন রাঁধুনিদের জন্য

ভাল-ভাল রান্না করতে চান? কিন্তু জানেন না কী ভাবে এগোবেন? আপনার সাহায্যে থাকুক এই অ্যাপগুলো।

বিগ আভেন

প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ রেসিপি আছে এই অ্যাপে। সুতরাং ইতালিয়ান, চাইনিজ যে ধরনের রান্না করতে চান, পেয়ে যাবেন বিগ আভেন অ্যাপে। আপনার নিজের রেসিপির স্ন্যাপশটও রেখে দিতে পারবেন এখানে। কোনও বিশেষ খাবার বানানোর জন্য বাজার থেকে কী-কী জিনিস আনতে হবে, তার একটা লিস্টও বানিয়ে দেবে এই অ্যাপ। ফলে মুদির দোকানে গিয়ে, চিরকুট খুলে পড়তে হবে না।

ফুড নেটওয়ার্ক

রেসিপি তো অনেক অ্যাপেই পাওয়া যায়। ফুড নেটওয়ার্ক ইন দ্য কিচেন অ্যাপে বাড়তি পাওনা হল, এখানে পছন্দের শেফদের ভিডিয়ো পেয়ে যাবেন। কেমন করে রান্না করবেন, কেক কতটা সময় আভেনে রাখবেন, জানার জন্য রেসিপি পড়ার দরকার হবে না। জনপ্রিয় শেফদের ভিডিয়ো দেখেই শিখে নিতে পারবেন। কোনও রেসিপিতে কোনও বাড়তি নোট লিখে রাখতে চাইলে, অ্যাপের মধ্যেই সেটা করতে পারবেন।

ফুড সুইচ

বাচ্চারা কী খাচ্ছে? তা থেকে কতটা পুষ্টি পাচ্ছে? এ সব যদি চব্বিশ ঘণ্টা মাথায় ঘোরে, তা হলে আপনার জন্য ফুড সুইচের থেকে ভাল অ্যাপ আর হতে পারে না। বাজার থেকে কেনা কোনও জিনিসের বারকোড এই অ্যাপের ক্যামেরা দিয়ে স্ক্যান করলেই বলে দেবে, কতটা ফ্যাট, কতটা সুগার, কতটা প্রোটিন আছে তাতে। শুধু তা-ই নয়, সেটা দিয়ে আপনি সুস্বাদু আর পুষ্টিকর কোনও খাবার কী করে বানাতে পারবেন, তার খুঁটিনাটিও পেয়ে যাবেন অ্যাপের মধ্যে।

গোজি

ফ্রিজ ভরা জিনিসে, কিন্তু কী রান্না করবেন বুঝে পাচ্ছেন না? তা হলে গোজি অ্যাপটা ইনস্টল করে নিন। আপনার ফ্রিজে জমে থাকা জিনিসপত্র দিয়ে কী কী রান্না করতে পারেন, তার রেসিপি দিয়ে দেবে এই অ্যাপ। এ ছাড়াও অ্যাপের মধ্যেই খুব ভাল-ভাল ফুড ব্লগ পেয়ে যাবেন। বিশেষ করে ভেজিটেরিয়ান রান্নার রেসিপির জন্য এই ব্লগগুলো দেখতে পারেন।

অরিজিৎ চক্রবর্তী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fish Recipes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE