Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
পুস্তক পরিচয় ৩

অতীত যেখানে বাঙ্ময়

অতীতকে আমরা সকলেই বাঙ্ময় করে তুলতে চাই। লিখিত পুথি পাণ্ডুলিপির জগতে অতীত সব থেকে মুখর সন্দেহ নেই। কিন্তু লেখালিখির যুগ আর কত দূর ব্যাপ্ত? কতটুকু লেখার নিদর্শনই বা আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি? বিশ্ব জুড়ে নানা সংগ্রহশালায় আরও নানা রকম েয সব উপাদান সংগৃহীত হয়েছে, তারাও তো ‘কথা’ বলে। তাদের কথা উদ্ধার করতে যুগ যুগ ধরে পণ্ডিতরা ব্যস্ত।

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৫ ০০:০১
Share: Save:

অতীতকে আমরা সকলেই বাঙ্ময় করে তুলতে চাই। লিখিত পুথি পাণ্ডুলিপির জগতে অতীত সব থেকে মুখর সন্দেহ নেই। কিন্তু লেখালিখির যুগ আর কত দূর ব্যাপ্ত? কতটুকু লেখার নিদর্শনই বা আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি? বিশ্ব জুড়ে নানা সংগ্রহশালায় আরও নানা রকম েয সব উপাদান সংগৃহীত হয়েছে, তারাও তো ‘কথা’ বলে। তাদের কথা উদ্ধার করতে যুগ যুগ ধরে পণ্ডিতরা ব্যস্ত। ব্রিটিশ মিউজিয়মের সংগ্রহ থেকে একশোটি নিদর্শন বেছে নিয়ে সেগুলির মাধ্যমে বিশ্বের ইতিহাস কথনের এক সাড়াজাগানো উদ্যোগ নজরে পড়ে সেই সংগ্রহশালার অধিকর্তা নিল ম্যাকগ্রেগরের আ হিস্টরি অব দ্য ওয়ার্লড ইন হান্ড্রেড অবজেক্টস বইটিতে। এ বার এ দেশেও সেই উদ্যোগের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।

ভারতের অগণিত সংগ্রহশালায় যে পরিমাণ নিদর্শন সংরক্ষিত হয়েছে, তা থেকে বিশ্বের না হলেও ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস নির্মাণের ভিন্নধর্মী উদ্যোগ যে সম্ভব তাতে সন্দেহ নেই। তত দূর না এগোতে পারলেও প্রধান প্রধান সংগ্রহের কমবেশি একশো নিদর্শন বেছে নিয়ে তার বিবরণ তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে, তাও কম কথা নয়। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক, ন্যাশনাল কালচার ফান্ড রয়েছে এর পিছনে, আর ট্রেজার্স শিরোনামে ঝকঝকে বইগুলি প্রকাশ করছে নিয়োগী বুকস। প্রতিটি সংগ্রহশালার সংগ্রহকে গুরুত্ব অনুযায়ী কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে তা থেকে বাছাই নিদর্শন নিয়ে ছবি সহ বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনটি বই প্রকাশ পেয়েছে: হায়দরাবাদের সালার জঙ মিউজিয়ম, মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ বস্তু সংগ্রহালয় (পূর্বতন প্রিন্স অব ওয়েলস মিউজিয়ম) এবং দিল্লির ন্যাশনাল মিউজিয়ম।

সালার জঙ যেমন এক বিশিষ্ট শিল্পানুরাগী পরিবারের ব্যক্তিগত সংগ্রহ, মুম্বইয়ের সংগ্রহশালাটির সূচনা আবার প্রিন্স অব ওয়েলসের ভারতে আগমন উপলক্ষে। তবে সেখানেও বিত্তবান শিল্পানুরাগী নাগরিক সমাজের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এমনকী সংগ্রহ পুষ্ট হয়েছিল তাঁদের দানে। দিল্লির সংগ্রহশালার সৃষ্টি স্বাধীনতা-উত্তর পর্বে দেশের সংস্কৃতিকে সযত্নে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের তাগিদে। এই ভিন্নতা তিন সংগ্রহের চরিত্রেও প্রতিফলিত। বইগুলি এক নজরে এই বিপুল বহুকৌণিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে পেরেছে। ভাল ক্যাটালগ যেখানে কালেভদ্রে প্রকাশিত হয়, সেখানে এই ধরনের বইয়ের মাধ্যমে অন্তত গুরুত্বপূর্ণ শিল্পনিদর্শন আগ্রহী মানুষের নাগালে এল। বইয়ের শেষে সংগ্রহশালার প্রকাশনার হদিশ দেওয়া থাকলে আর একটু উপকার হত, এমনিতে সে সম্বন্ধে তথ্য পাওয়াই ভার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE