ভারতের স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন
সম্পাদক: তাপস ভৌমিক
১৫০.০০
কোরক
ইতিহাসের বাঁধা সড়কে কত ব্যক্তিই প্রান্তিক হয়ে পড়েন। তাঁদের তথ্যনথি জড়ো করা গেলে হয়তো সমান্তরাল এক ইতিহাস তৈরি হত। তেমনই এক চেষ্টা ‘ভারতের স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন’ নিয়ে কোরক-এর প্রাক শারদ সংখ্যায়।
‘এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁরা নেপথ্যে থেকে জাতীয় আন্দোলনে প্রভূত সাহায্য করেছেন, অথচ তাঁদের দেশপ্রেম ইতিহাসে গুরুত্ব পায়নি।...’ সম্পাদকের এ কথার সূত্রে এসে পড়েন চন্দননগরের শ্রীশচন্দ্র ঘোষ, যিনি প্রতিদিন কাপড়, গামছা ফেরি করে যা উপার্জন করতেন তা দিয়ে জেলবন্দি চারুচন্দ্র রায়ের পরিবারকে সাহায্য করতেন। শ্রীরামপুরের এক দরিদ্র কর্মকার গোপনে বিপ্লবীদের ভাঙা পিস্তল, পাইপগান সারিয়ে দিতেন। বা বিধবা ননীবালা দেবী, তিনি বিপ্লবী রামচন্দ্র মজুমদারের স্ত্রী সেজে প্রেসিডেন্সি জেলে পুলিশকে বোকা বানিয়ে জেনে এসেছিলেন লুকিয়ে রাখা পিস্তলের হদিশ। সময়টা কিন্তু ১৯১৫!
স্বাধীনতা আন্দোলনে অবিভক্ত বঙ্গের বিভিন্ন জেলা, যেমন চট্টগ্রাম, বরিশাল, চব্বিশ পরগনার বসিরহাট, মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার, ময়মনসিংহ, নদিয়া... সেগুলির ভূমিকাও বিধৃত এ-পত্রে। আছে বিশিষ্টজনের স্মৃতি ও মূল্যায়ন। যেমন সুরজিৎ দাশগুপ্তের স্মৃতিতে ‘স্বাধীনতা মানে দেশভাগ! দেশভাগের সঙ্গে আমাদের পরিবারও ভাগ হয়।’ তাঁর স্মৃতিতে গাঁধীজিকে হত্যার খবরও আছে। ‘বস্তির অবশিষ্ট মুসলমানরা ভয়ে কাঁটা হয়ে দরজা জানলা বন্ধ করে থাকলো। ফিমেল আউটডোরে এসে বস্তির কেউ মাকে বললো, এটা তো ওই খুনে মিয়াঁদের কাজ। আসল খবরটা পরদিনের কাগজেই পাওয়া গেল।’
আবার ‘স্বাধীনতার গোড়ার কথা: নেহরুর ভারত’ নিয়ে লিখেছেন দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায়। ‘সংবিধানেও নেহরু নানাভাবে বদল এনেছিলেন। পাঁচের দশকের শুরুতে পাশ করা দুটি আইন আমাদের সামাজিক ও ব্যক্তিজীবনকে নাড়া দিয়ে গিয়েছিল— একটি জমিদারি উচ্ছেদ বিল, অন্যটি হিন্দু কোড বিল। প্রথমটিতে প্রায় ত্রিশ লক্ষ ভাগচাষী ও অন্যান্যরা জমির অধিকার পেল, দ্বিতীয়টিতে বহু শতাব্দীর বঞ্চনার পর হিন্দু মেয়েরা পৈতৃক সম্পত্তিতে ভাই-এর সঙ্গে সমান ভাগ ও বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার পায়।’
আমাদের সত্তর বছরের স্বাধীনতাকে ফিরে দেখার জন্যে পত্রিকাটি প্রয়োজনীয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy