পটুয়া সঙ্গীতের পুনর্বিচার
লেখক: সুজাতা দে
২৫০.০০
অক্ষর প্রকাশনী
পট-পটুয়া চর্চার ধারা শতাব্দীপ্রাচীন। বর্তমান সময়কালে বাংলার লোকশিল্প ও শিল্পীর বহুবিচিত্র অন্বেষণী প্রয়াসে পটশিল্পকথাও অন্যতম আগ্রহের বিষয়। বাংলার পটুয়াদের সামাজিক অবস্থানে ধর্মীয় দোলাচল, পটচিত্রের রঙিন অঙ্কনশৈলীর নানা বিষয়বিন্যাস, কাহিনিভিত্তিক পটকথার সুর-সংগীতে বর্ণনা— সব মিলিয়ে এক বিস্তারি পটভূমি তৈরি করে। প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণার বিষয় হিসাবে পট-পটুয়ার জগৎ তাই বাড়তি নজর টেনেছে। চিত্রকলার বিষয় হিসাবে কালীঘাট পট, পূজার্চনায় ব্যবহৃত পটসহ অন্য চৌকো পটচিত্রের কথা গবেষণায় এলেও জড়ানো পটের কাহিনিভিত্তিক সংগীতের রূপ স্বতন্ত্র দিক। এই বিষয়টিই বইটির আলোচনার কেন্দ্রে। বাংলার বিশেষ বিশেষ জেলাভিত্তিক জনবিন্যাসে পট, গীতিকার ও সঙ্গীতের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেছেন লেখক। পূর্ববর্তী গবেষণার তথ্য উল্লেখ সুপ্রচুর, তুলনায় সংগীতের নমুনা অপ্রতুল। অজস্র তালিকা, ছক, কাঠামো বর্ণনা ও বিষয় বিন্যাসের পরিবেশনায় প্রচলিত গবেষণা সন্দর্ভেরই ধাঁচ। লোকসংস্কৃতি গবেষণার কিছু বিষয়ের প্রতি গবেষক, তত্ত্বাবধায়ক, বিশেষজ্ঞদের ঝোঁক গাঁটছড়া বেঁধেছে। উৎসুক সাধারণ পাঠকের কাছে বহু ক্ষেত্রেই লোকায়তের সরল রূপ এমত গবেষণায় জটিল বিন্যাস তৈরি করে।
গল্পকথায় গাঁধীজি
লেখক: বিপুলরঞ্জন সরকার
২৫০.০০
সিগনেট প্রেস
অহিংসার পূজারি মহাত্মা গাঁধী সত্যের অন্বেষণে ব্যাপৃত ছিলেন চিরকাল। তাঁর আহ্বানে ঘুম ভাঙে পরাধীন ভারতের। আলোচ্য বইটিতে জীবন্ত হয়ে আছে গাঁধীজির জীবনের বিস্ময়কর নানান কাহিনি— ‘সেই সময় একটা নাটক কোম্পানিও আসে। সেখানে গিয়ে নাটক দেখার অনুমতি পেলাম। নাটকের বিষয় ছিল হরিশ্চন্দ্রের আখ্যান।’ সূর্য বংশের ছত্রিশতম রাজা হরিশ্চন্দ্র দান-দক্ষিণা ও ন্যায়বিচারের জন্য বিখ্যাত। তাঁর সুখ্যাতির কথা শুনে দেবতারা নানা ভাবে পরীক্ষা নিয়েছিলেন। পুরাণকথিত এই ‘পরীক্ষা’র গল্পটি সকলেই জানি। গাঁধীজির কথায়, ‘এই নাটক দেখে আমার আশা মিটত না। বারবার ওই নাটক দেখার ইচ্ছে হত। কিন্তু বারবার যেতে দেবে কে?... ‘হরিশ্চন্দ্রের মতো সত্যবাদী সবাই কেন হয় না?’ এই প্রশ্নের অনুরণন মনের মধ্যে চলতে থাকে। ‘হরিশ্চন্দ্রের মতো বিপদে পড়ে তাঁরই মতো সত্যপালন করব, এটাই আমার কাছে সত্য হয়ে উঠল।... হরিশ্চন্দ্রের দুঃখ দেখে তা মনে করে আমি খুব কাঁদতাম।...’ এ রকমই সব গল্প বিধৃত হয়েছে বইটিতে। যা পাঠকের কাছে পৌঁছে দেবে ইতিহাসে অনন্য এক মহাজীবনের সুবাস।
বাংলা পত্রপত্রিকা/ সম্পাদক ও সম্পাদনা
সম্পাদক: তাপস ভৌমিক
২০০.০০
কোরক
বাংলা ভাষায় প্রথম সাময়িকপত্র ‘দিগ্দর্শন’ প্রকাশের পর ঠিক দুশো বছর অতিক্রান্ত। সে দিক দিয়ে এই সময়কাল সাময়িকপত্রের তথ্য আলোচনা, মূল্যায়ন, ধারাপথের নানা কাহিনির খতিয়ানও জরুরি আগ্রহ তৈরি করে। দীর্ঘ সময়ে নানা বিষয়ের যে সমস্ত পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে তাতে বিষয়গত ঝোঁক, পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্য আর সম্পাদকের নিজস্ব পরিকল্পনার জগৎও সমান আকর্ষণীয়। ক্ষণজীবী বা দীর্ঘকাল যাবৎ সজীব থেকে এ সব পত্রিকা বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি-সমাজ অনুশীলনেও যে ভূমিকা পালন করেছিল তা সময়ের সাক্ষী। কালজয়ী বিভিন্ন সাময়িকপত্রের সঙ্গে কোনও কোনও সম্পাদকের নামও সমার্থক হয়ে উঠেছিল। তাঁদের কর্মদিশা, ভাবনায় ছিল স্বকীয় দৃষ্টিভঙ্গি। আবার, অলংকরণ, রেখাচিত্রের বিন্যাস ও পরবর্তীতে আলোকচিত্রের ব্যবহারে কোনও কোনও পত্রিকা নতুন মান ও ধারা তৈরি করেছিল। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, প্রমথ চৌধুরী, জলধর সেন, সজনীকান্ত দাস, চিত্তরঞ্জন দাশ, সঞ্জয় ভট্টাচার্য, বিষ্ণু দে, সুভো ঠাকুর, আনন্দগোপাল সেনগুপ্ত, শিবনারায়ণ রায় প্রমুখ কত দিকপাল সম্পাদক স্পর্শ করেছেন সাময়িকপত্রের বিষয়চেতনাকে। ছত্রিশটি ভিন্ন ভিন্ন লেখায় উঠে এসেছে এমনই সম্পাদক ও সম্পাদনার কথা। সাময়িকপত্রের সুদীর্ঘ ইতিহাসের পর্যালোচনা ও বর্তমানের দিশানির্দেশী এ সব লেখা। প্রবাসী, ভারতবর্ষ, ভারতী, মাসিক বসুমতীর মতো দীর্ঘদিন ধরে চলা পত্রিকা শুধু নয়— নিতান্তই স্বল্পায়ু পত্রপত্রিকা ও সে সবের সম্পাদকের অভিলাষও সুদূরপ্রসারী হয়েছিল। স্বর্ণকুমারী দেবী, রাজেন্দ্রলাল মিত্র-র মতো অনেক কৃতবিদ্য সম্পাদকের আলোচনা যদিও-বা হয়নি; তবু, এই তথ্য-সন্নিবেশ একটি প্রয়োজনীয় কাজ হয়ে রইল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy