স্মরণ: গ্যাঞ্জেস গ্যালারিতে আয়োজিত প্রদর্শনীর একটি ছবি
প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘থিংস লস্ট রিমেমবারিং দ্য ফিউচার’। দক্ষিণ-এশিয়ার আটটি দেশের ১৪-জন শিল্পীর কাজ নিয়ে সম্মেলকটি অনুষ্ঠিত হল সম্প্রতি গ্যাঞ্জেস গ্যালারিতে। কিউরেট করেছেন কুরচি দাশগুপ্ত ও অমৃতা সেন। বিশ্ব জুড়ে অনেক বড় বড় ঘটনা ঘটে প্রতিনিয়ত। পাশাপাশি ব্যক্তির জীবনে, অভিজ্ঞতায়, স্মৃতিতে বয়ে চলে সফলতা-বিফলতা, সুখ-দুঃখের নানা প্রবাহ। আপাতভাবে উপেক্ষণীয় মনে হলেও সেই ঢেউ নানা ভাবে ছায়া ফেলে বিশ্বের বৃহত্তর বৃত্তেও। শিল্পকলায় সেই সামান্যকেই অসামান্য করে তোলা যায়। সদ্য অতীত সকলেরই কাজের বিষয়। কিন্তু ভবিষ্যৎকে স্মরণ করা যায় কী করে? যা ঘটেনি, তা নিয়ে ভাবা যেতে পারে। কিন্তু স্মরণ করা যায় কি? প্রদর্শনীতে অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি হল— ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মালদ্বীপ।
মায়ানমার-এর আয়ে কো-র রচনাটির শিরোনাম ‘ট্রান্সফিক্সড লুক’। অভিব্যক্তিবাদী সুররিয়ালিস্টধর্মী রচনা। একই মানবী। আতঙ্কিত দৃষ্টি। রক্তমাখা হাতগুলো প্রসারিত। রচনাটি সমগ্র বিশ্বের সন্ত্রাসেরই প্রতীক হতে পারে। নেপালের সুনীল সিগদেল-এর ছবিটির শিরোনাম ‘ব্ল্যু স্লেভারি ইন গোল্ডেন কনস্ট্রাকশন’। ২০২২ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত হবে ফুটবলের বিশ্বকাপ। নির্মাণকাজ চলছে সেখানে। সেই নির্মাণ-শ্রমিকদের ক্রীতদাসের মতো দুর্দশা এই ছবিটির বিষয়। নেপালের আরেক শিল্পী অস্মিতা রঞ্জিৎ ভিডিও করেছেন বাগমতী ও বিষ্ণুমতী নদী পেরিয়ে নেপালের ভিতর তাঁর ১২ কিলোমিটার যাত্রার অভিজ্ঞতা নিয়ে।
শ্রীলঙ্কার শিল্পী থিসাথ থোরাডেমিয়া-র কাজটির শিরোনাম ‘হাউ টল উই ওয়্যার হাউ টল উই আর’। বেঙ্গালুরু শহরের একটি বিমূর্তায়িত নিসর্গমূল ক্যানভাসের উপর রাখা হয়েছে ১৩টি নানা দৈর্ঘের লোহার বাটালি। উন্নয়নের বাস্তবতাকে প্রশ্ন করতে চেয়েছেন শিল্পী, কিন্তু জোরালো কোনও অভিঘাত সৃষ্টি করে না। পাকিস্তান তথা ইউকে-র শিল্পী ডেভিড অ্যালেসওয়াথ ‘রেকর্ড রুম সিরিজ’ শিরোনামের চারটি উপস্থাপনায় অফিসে জড়ো করা কাগজের পুরনো দলিলের আলোকচিত্র দেখিয়েছেন। আরেক মানবী শিল্পী হুমা মুলজি। কারামাতুল্লা নামে এক রুটি বিক্রেতার দুর্দশা নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। বাংলাদেশের তায়েবা বেগম লিপি ‘মেমোরি’ শীর্ষক বিন্যাসে প্রগতির দ্রুততায় পরম্পরাগত সংস্কৃতির বিলয়ের প্রসঙ্গ আনতে চেয়েছেন।
কন্যাশিশুর করুণ বাস্তবতা শিল্পী মাইসুনা হুসেন-এর ‘দ্য ফিমেল চাইল্ড’ আলোকচিত্র-ভিত্তিক রচনার বিষয়। বাংলাদেশের মুস্তাফা জামাল ‘উইটনেসিং দ্য উইটনেস’ শীর্ষক তিনটি রচনায় যেন অস্তিত্বের বিলুপ্ত অতীতকে পুনর্নির্মাণ করতে চেয়েছেন। ভারতের দুই শিল্পী কুর্চি ও অমৃতা। কুর্চি ভূমিকম্পের ধ্বংসের প্রতীকে এঁকেছেন ‘ব্লকেড’। অমৃতা এঁকেছেন ‘লস্ট টাইম’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy