Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
আলোচনা

নিঃস্তব্ধতাতেই অনাবিল আনন্দ

এই শিল্পীর অন্য একটি পরিচয় হল, তিনি বহু তেলরঙের প্রতিকৃতি এবং অন্যান্য শিল্পকলার সংরক্ষণের কাজ করেছেন। শিল্পকর্ম সংরক্ষণের কাজে শিল্পী খোকন রাউতকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে মানা যেতে পারে।

শব্দহীন: অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত ‘সাউন্ড অব সাইলেন্স’ শীর্ষক প্রদর্শনীর একটি ছবি

শব্দহীন: অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত ‘সাউন্ড অব সাইলেন্স’ শীর্ষক প্রদর্শনীর একটি ছবি

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

খোকন রাউত তাঁর ৩০টি ছবি নিয়ে যে একক প্রদর্শনী করলেন অ্যাকাডেমিতে, তাঁর শিরোনাম হল ‘সাউন্ড অব সাইলেন্স’। তাঁর ছবিতে বাস্তবের তুলনায় অন্তরের অনুভূতিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। নিস্তব্ধতার তো কোনও শব্দ হয় না, কারণ শব্দহীন অবস্থাই তো নিঃস্তব্ধতা। শিল্পী খোকন রাউত যা বলতে চেয়েছেন তাঁর ছবির মাধ্যমে সেটি হল মানুষের আসল প্রকৃতি হচ্ছে অপরিসীম আনন্দের উৎস। কিন্তু মানুষ সে আনন্দ খুঁজে পায় না। তার বড় কারণ সে পুরো জীবনটাই টাকাপয়সা, শাড়ি, গাড়ি বা বাড়ির সন্ধানরত। এই সব অভ্যাসের দাস হয়েই সে জীবনটা কাটিয়ে দেয়। কিন্তু গতানুগতিক জীবনযাত্রার বাইরে একটি অন্তরের দিকে যাত্রা আছে। সে পথেরই পথিক শিল্পী খোকন রাউত তাঁর শিল্পকর্মকে সম্বল করেছেন। এই পথেই আছে নিজেকে খুঁজে পাওয়া। সেখানেই পাওয়া যায় চরম নিঃস্তব্ধতা। আর এই নিঃস্তব্ধতার মূলে আছে অনাবিল আনন্দ।

এই শিল্পীর অন্য একটি পরিচয় হল, তিনি বহু তেলরঙের প্রতিকৃতি এবং অন্যান্য শিল্পকলার সংরক্ষণের কাজ করেছেন। শিল্পকর্ম সংরক্ষণের কাজে শিল্পী খোকন রাউতকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে মানা যেতে পারে।

খোকন তাঁর অবচেতন মনের খোঁজ পেতে যে সব প্রতীক-চিহ্ন ব্যবহার করেছেন, তার মধ্যে একটি মুখমণ্ডল, অন্যটি ফুলদানি। তাঁর মতে মানুষের মুখাবয়ব হচ্ছে তার অন্তরাত্মার আয়না—অশান্তির ঘোর থেকে প্রশান্তির পথে যাওয়ার মুহূর্ত। এ ছাড়া ফুলদানি হল ঐশ্বরিক শক্তির আধার। ফুলদানি তাঁর কাছে গ্রহণের, স্বীকারের, উর্বরতার এবং আধ্যাত্মিক প্রাচুর্যের অফুরন্ত ভাণ্ডার। তিনি প্রচুর মুখের ছবি এঁকেছেন। মাধ্যম প্রায়শ চারকোল এবং অ্যাক্রিলিক। একটি মুখের কথা উল্লেখযোগ্য, যেটি রামকৃষ্ণ এবং বিবেকানন্দের মিলনে সৃষ্ট। দেখে সহজে চেনা যায় না কার ছবি, কিন্তু মুখমণ্ডলের ভাবখানি অনবদ্য। তাঁর ‘বিসর্জন’ ছবিটিও উল্লেখযোগ্য।

উপরে একটি নারীমূর্তির শায়িত রূপ—নীচে একটি পুজোর ঘট। এতে যেন নিজের অহমিকাকে বিসর্জন দিয়ে নিজের ভিতরের পরমাত্মাকে খুঁজে পাওয়া। ভারী সুন্দর এই শিল্পকর্মটি। এ ছাড়াও অপর একটি ছবি, যার শিরোনাম ‘সাউন্ড অব সাইলেন্স’। নমনীয় ছবি। কোমল একটি ঐশ্বরিক ভাবের উদ্রেক হয়। এটিও চারকোল এবং অ্যাক্রিলিকের মিশ্র মাধ্যমে সৃষ্ট। শিল্পী প্রায় সমস্ত ছবিতেই এই নিঃস্তব্ধতা বা পরমাত্মার অনুসন্ধান করেন।

শমিতা বসু

ভঙ্গিমা ও পদবিন্যাসে অতুলনীয়

সম্প্রতি আইসিসিআর-এ সুন্দর নৃত্যানুষ্ঠান উপভোগ করা গেল কলামণ্ডলমের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে। গুরু থাঙ্কমণি কুট্টির ছাত্র-ছাত্রীরা শাস্ত্রীয় নৃত্য, ভরতনাট্যম পরিবেশন করলেন, যা খুবই উপভোগ্য। তিলানা, দশাবতার, শব্দম, গণিতাবিলাস (জ্যামিতিক)—প্রত্যেকটি পদবিন্যাস, অভিনয়, ভঙ্গিমা দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়।

অনুষ্ঠানের প্রথম শিল্পী ছিলেন মালবিকা সেন। তাঁর নিবেদনে কীর্তনম ও কুচিপুরীও ছিল। প্রত্যেক নিবেদনে অভিনয়, ভঙ্গিমা, পদবিন্যাস অতুলনীয় এবং স্বতঃস্ফূর্ত। নৃত্যাংশে অংশ নিয়েছিলেন ইলিনা, ঝিনুক, তানিয়া, মহুল, বর্ণালি, মৌমিতা, শুচিস্মিতা, শ্রেয়সী প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির পরিকল্পনায় সোমনাথ জি কুট্টি ও পরিচালনায় ছিলেন থাঙ্কমণি কুট্টি। এ দিনের উল্লেখযোগ্য নিবেদন ছিল ‘গণিতাবিলাস’।

পলি গুহ

গানের নস্টালজিয়া

সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে শতাব্দী ব্যালে ট্রুপ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজন করেছিল ‘আমার গানের স্বরলিপি লেখা রবে’। নবীন ও প্রবীণ বহু শিল্পী অংশ নিয়েছিলেন এই অনুষ্ঠানে। রাজকন্যা বসুর সুন্দর পরিচালনায় পরিবেশিত হল একগুচ্ছ গানের নৃত্য কোলাজ। পরে ইন্দ্রনীল সেন দরাজ কণ্ঠে গাইলেন ‘খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার’। নবীন শিল্পী পর্ণাভ ও অরিত্র দাশগুপ্তের গাওয়া ‘যখন ডাকল বাঁশি’ এবং ‘তারে বলে দিও’ মন ছুঁয়ে যায়।

মনোময় ভট্টাচার্য, সৈকত মিত্রের পরিবেশনা যথাযথ। মনোময়ের ‘মৌ বনে আজ’ ও সৈকতের ‘ফুলেশ্বরী ফুলেশ্বরী’ সুগীত। শম্পা কুণ্ডু ‘এই মায়াবী তিথি’ ও ‘আষাঢ় শ্রাবণ’ গান দুটি খুব সুন্দর গেয়েছেন। হৈমন্তী শুক্ল গাইতে বসলেন তাঁর বিশিষ্ট গায়নভঙ্গি নিয়ে। তাঁর কণ্ঠে আজও ‘ওগো বৃষ্টি আমার’ গানটি শ্রোতাদের চোখের পাতা ভিজিয়ে দেয়। শিল্পীর গাওয়া ‘ও সাধের জামাই রে’ শ্রোতাদের মন কেড়ে নেয়।

শিবাজি চট্টোপাধ্যায় ও অরুন্ধতী হোমচৌধুরীর দ্বৈত কণ্ঠে ‘কী গাব আমি’ অসামান্য গান। অরুন্ধতীর ‘যত ভাবনা ছিল’ গানটি এখনও যেন অমলিন। শেষে শিবাজির গাওয়া ‘মুছে যাওয়া দিন’ গানটি শ্রোতাদের সেই পুরনো দিনের আমেজ যেন ফিরিয়ে দেয়। উপস্থাপনায় ছিলেন দেবাশিস বসু।

শ্রীনন্দা মুখোপাধ্যায়

অনুষ্ঠান

সম্প্রতি আইসিসিআর সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে একক রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনালেন অদিতি গুপ্ত। শিরোনাম ছিল ‘এসেছ প্রেম’। বর্ষা ও প্রকৃতি ছাড়াও বিভিন্ন ঋতুর গানগুলিও শোনালেন তিনি। অনুষ্ঠানটির নিবেদনে ছিল ‘কৃষ্টি’।

শুধু ‘বর্ষা’ ঋতু নিয়েই গান ও পাঠের একটি সুন্দর অনুষ্ঠান হয়ে গেল আইসিসিআর-এ। আয়োজক ‘আবির্ভাব’। বর্ষা নিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও আধুনিক গানের পাশাপাশি স্বরচিত কবিতা পাঠও ছিল এ দিনের অনুষ্ঠানে। বাঁধন সেনগুপ্ত, অলক রায়চৌধুরী, তাপস নাগ প্রমুখ শিল্পীর গান ও পাঠ এক অন্য মাত্রা এনে দেয়।•

বিড়লা অ্যাকাডেমিতে ‘সঙ্গীত অনুরাগ’ আয়োজন করেছিল ‘নানা রঙে বর্ষা’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। শুরুতেই নমিতা দেব পরিচালিত ‘আনন্দধ্বনি’র সমবেত সঙ্গীত। পরে গান ও পাঠ। শিল্পীরা ছিলেন মৌসুমী কর্মকার, দেবাশিস মিত্র প্রমুখ।

কসবা সঞ্চারীর নিবেদনে সূর্য সেন মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল ‘বর্ষা’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। নবীন ও প্রবীণ শিল্পীদের কণ্ঠে বর্ষার নানা গান। তার মধ্যে ছিল কিছু রবীন্দ্রসঙ্গীতও। নানা শিল্পীর কণ্ঠে সেই সব গান শুনতে মন্দ লাগেনি। গাইলেন দীপঙ্কর পাল, সুচরিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মালবিকা ভট্টাচার্য প্রমুখ। শুরুতেই সমবেত সঙ্গীত শোনান ‘নব নীহারিকা’ সংস্থার শিল্পীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE