সম্প্রতি স্টার থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হল প্রকৃতি পর্যায়ের চব্বিশটি গান ও পাঠ নিয়ে ‘এক সন্ধ্যায় ছয় ঋতু’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। ‘রাগ রঞ্জনী’-র সমবেত সঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিকল্পনা করেছেন চিত্র পরিচালক রাতুল গঙ্গোপাধ্যায়। গ্রীষ্ম ঋতুর গান ‘আকাশ ভরা সূর্য তারা’ দিয়ে শুরু হয় সে দিনের একক শিল্পী সৌমিত রায়ের গান। ‘নাই রস নাই’ গানে গ্রীষ্মের দাবদাহের ছবি আঁকেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বিপ্লব মণ্ডলের তবলা বাদন ‘দারুণ অগ্নিবাণে’ গানে অন্য মাত্রা এনে দেয়। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সে দিনের একক পাঠে। তাঁর কণ্ঠে ‘হে ভৈরব’ আবারও প্রমাণ করে রবীন্দ্রনাথের কবিতা পাঠে শিল্পীর বাচিক দক্ষতা। সৌমিত্রর কণ্ঠে ‘বাদল দিনের’ কবিতাটি বর্ষার পূর্ণ আবহাওয়া তৈরি করে। সেই রেশ নিয়ে সৌমিত সুন্দর পরিবেশন করেন ‘আজি ঝড়ের রাতে’, ‘তিমির অবগুণ্ঠনে’। সৌমিত্র পাঠ করেন ছিন্নপত্রের একটি চিঠি, যেখানে পদ্মার বোটে কবি ‘ঝর ঝর বরিষে’ গানের কথা বলেছেন। সে দিনের সেই দৃশ্য চোখের সামনে ফুটে ওঠে সৌমিত্রর পাঠে। শরৎ আসে ‘অমল ধবল পালে’র লোকায়ত জীবনের স্পর্শ নিয়ে। গ্রন্থণায় ‘হেমন্ত ঋতুর রবীন্দ্রসঙ্গীত চারটি’ বলায় কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। পঞ্চম গান ‘নম নম নম’ গীতবিতানে উল্লেখিত। হেমন্ত ঋতুর গান ‘সে দিন আমায় বলেছিলে’ এবং ‘হিমের রাতের’ সুগীত। শীতের কঠিন তপস্বী রূপ ধরা পড়ল ‘এ কী মায়া’ গানে। সমস্ত ঋতুর রং নিয়ে সেজে এল বসন্ত। ‘অনেক দিনের মনের মানুষ’ সে দিনের শ্রেষ্ঠ উপহার। অনুষ্ঠানে বেশির ভাগ গানেই কিছু কিছু অংশ সমবেত ভাবে গীত হয়েছে। সমবেত অংশগুলি কোন দিক বিবেচনা করে বাছা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। শুধু কি গানটিকে একক না রেখে সমবেত অংশ যোগ করা হয়েছে বৈচিত্রের তাগিদে? তা হলে ‘যাক অবসাদ বিষাদ কালো’ অংশে সমবেত কণ্ঠে এত অবসাদ/বিষাদ কেন? সমস্ত অনুষ্ঠানের বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার চমৎকার। যদিও বাঁশির ব্যবহার আরও সংযত হওয়া বাঞ্ছনীয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy