Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

খাব তোকে!

দুই পুত্রের বুলেটবিদ্ধ মৃতদেহ নিজের হাতে কবর দেওয়ার পর ডন আর সামনে আসেন না। শুনে শুনে ক্লান্ত হয়েও হাল ছাড়িনি। লাহৌরের প্রকাণ্ড অট্টালিকার বার-মহল অবধি রোজ হাজিরা দিই।

সুমন দে
শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

দুই পুত্রের বুলেটবিদ্ধ মৃতদেহ নিজের হাতে কবর দেওয়ার পর ডন আর সামনে আসেন না।

শুনে শুনে ক্লান্ত হয়েও হাল ছাড়িনি। লাহৌরের প্রকাণ্ড অট্টালিকার বার-মহল অবধি রোজ হাজিরা দিই। একে-৪৭ শোভিত দেহরক্ষীদের রোজ এক বার করে বলি, হিন্দুস্থানের আপামর টেলিভিশন দর্শক নাকি ডন-এর দোর্দণ্ডপ্রতাপের নানা কাহিনি শুনে পুলকিত, এক বার তাঁকে চোখের দেখা দেখতে চায়, অবশ্যই ক্যামেরায়, চ্যানেলের মাধ্যমে।

চিঁড়ে ভেজে না। প্রস্তরকঠিন মুখে অস্ত্রধারীরা বলে, ‘ভাইকো খবর করেঙ্গে। ফিলহাল আপ যাইয়ে।’

ভাই পেহল্ওয়ান। লাহৌরের অন্ধকার দুনিয়ার মুকুটহীন বাদশা। পাকিস্তানের এই ডনের জীবন নিয়েও তৈরি হতে পারে গোটা কয়েক ‘গডফাদার’, অনায়াসে।

এ হেন বজ্রকঠিন চিঁড়েও শেষ পর্যন্ত ভিজল ২০০৭-এর এক শীতের দুপুরে। আরব্য রজনীর উপন্যাসের মতো চার-চারটি মহল পার-করে কার্বাইন-হাতে দেহরক্ষীদের সঙ্গে প্রবেশাধিকার মিলল পালোয়ান সমীপে। পেটানো চেহারার এক দীর্ঘদেহী প্রৌঢ় সিংহাসনে বসে লস্যিতে চুমুক দিচ্ছেন। চেহারা ও কণ্ঠস্বরের গুণে ব্যক্তিত্বটি যেন হুবহু সেলুলয়েড থেকে উঠে আসা! ক্যামেরা বন্ধ করে চলল কথোপকথন। দ্বিধাহীন ভাবে লাহৌরের ডন জানালেন— সে চত্বরের রাজনীতিও চলে তাঁর অঙ্গুলিহেলনে। হ্যাঁ, পেশাগত শত্রুদের গুলিতে তাঁর দুই পুত্রকে হারিয়েছেন বটে, কিন্তু পুত্রহত্যার শোধ নিতে অন্য পক্ষের লাশ তিনিও কম ফেলেননি।

তার পর যা ঘটল তা বোধহয় কেবল অরণ্যদেবের কমিক্‌স-এর ক্লাইম্যাক্সেই কল্পনা করা যায়। ভাই হাত ধরে আমায় নিয়ে গেলেন তাঁর অন্দরমহলে। বিরাট ময়দানের মতো খোলা উঠোনের এক প্রান্তে অ্যালসেশিয়ানের মতো বাঁধা আছে প্রকাণ্ড এক পশুরাজ! হ্যাঁ, পূর্ণবয়স্ক একটি সিংহ!

এ বার সেই প্রবল প্রৌঢ় যা বললেন, শুনে আমার আক্কেল গুড়ুম! তাঁর সাক্ষাৎকারের শর্ত একটাই— সাক্ষাৎকার যে নেবে, তাকেও আক্ষরিক অর্থে সিংহ-হৃদয় হতে হবে। তাঁর পোষ্য পশুরাজের গায়ে হাত বুলোতে বুলোতে যদি নির্ভয়ে ক্যামেরার সামনে টানা কথা বলে যেতে পারি, তবেই আমার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে। সঙ্গে আমার উদ্বেগ চতুর্গুণ বাড়িয়ে ডন যোগ করলেন, দুঃসাহসের এমন পরীক্ষায় যদি আমি সিংহমশায়ের রোষের শিকার হই, আমার উদ্ধার ও চিকিৎসা তাঁরই ‘জিম্মেদারি’। তার মানে সে সম্ভাবনাও আছে!

মনে মনে গুপি গাইনের গানটা পালটে ‘পায়ে পড়ি সিংহমামা’ আওড়াতে আওড়াতে পশুরাজের পিছন দিক থেকে কেশরে হাত রেখে ক্যামেরার সামনে অনর্গল বকে যেতে হয়েছিল সে দিন! মাঝে বিরক্তিতে সিংহমশায় দু’বার ঘাড় ঘুরিয়ে চোখ কুঁচকোলেও বাড়তি হিংস্রতা দেখাননি। ক্যামেরার সামনে কথা শেষ করেই পশুরাজের নাগালের বাইরে এসে মনে হল, সাহসের এমন অভিনয়ের জন্য নিদেন একখানা অস্কার আমার প্রাপ্য। আড়চোখে দেখলাম সহাস্যে পাক ডন হাততালি দিচ্ছেন। তখনও বুঝিনি স্নায়ুর চাপের সেটাই শেষ নয়, বরং শুরু। এর পর ডন জানালেন, হিন্দুস্তানি মেহমানটিকে তাঁর ভারী পছন্দ হয়েছে, আর তাই ‘মেহমান-নওয়াজি’-র যোগ্য ব্যবস্থা হবে এখন!

একেবারে মধ্যযুগীয় সামন্তপ্রভুদের ঢং-এ ভাই পেহল্ওয়ান আমায় নিয়ে গিয়ে বসালেন উঠোনের এক প্রান্তের কাঠের গ্যালারিতে। নিঃশব্দ ইশারায় মুহূর্তে তৎপর অলিন্দ-খিলান-ছাদের আশেপাশে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র হাতে অসংখ্য নিরাপত্তারক্ষী। আমার কাঁধে হাত দিয়ে ডন বললেন, ‘অব খেল শুরু হোগা সাব, মজা লিজিয়ে…’ আমার অবস্থা হুবহু মগনলাল মেঘরাজের প্রাইভেট সার্কাসে লালমোহনবাবুর মতো!

প্রতি মুহূর্তে মনে মনে প্রমাদ গুনছি যে রোমের কলোসিয়ামের এই খুদে পাকিস্তানি সংস্করণে চর্মচক্ষে মানুষ খুন দেখতে হবে কি না! শেষ পর্যন্ত অবশ্য দুর্ভাগ্যের সীমা সারমেয়-রক্ততেই ক্ষান্ত হয়েছিল। তিন দিনের ক্ষুধার্ত দৃশ্যত হিংস্র দুটি কুকুরকে শৃঙ্খলমুক্ত করে সামনের ময়দানে ছেড়ে দিল ডনের আজ্ঞাবহরা। লড়াইয়ের ট্রেনিং-পাওয়া কুকুর দুটো মুহূর্তে পরস্পরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে আমৃত্যু একে অন্যকে রক্তাক্ত করে গেল। বিরক্তিকর সেই অকারণ হিংস্রতার নিরুপায় দর্শক হয়ে বসে থাকতে হয়েছিল আমাকে। শুধু নিজেকে বলছিলাম, সিংহ যে গপাস করে গিলে নেয়নি, এই সৌভাগ্যকে ধন্যবাদ দিয়ে এগুলো সহ্য করে যাও!

সিংহ আমায় খায়নি বটে, আমি কিন্তু কুমিরকে খেয়েছি! ২০১০-এর দক্ষিণ আফ্রিকায় দেখি, সেখানে কুমিরের আবাদের গালভরা নাম— ‘ক্রোকোডাইল ফার্ম’। হাঁস-মুরগি প্রতিপালনের মতোই জোহানেসবার্গের সিডার রোডের এই খামারে কুমির ‘পোষা’ হয় এবং পরম যত্নে কচি পাঁঠাটির মতোই খাইয়ে-দাইয়ে বড় করে যথেষ্ট নধরটি হলে তাকে জবাই করা হয় মাংসের জন্য— বিলকুল হাঁস-মুরগির মতোই!

‘ঠাকুমার ঝুলি’-তে বোকা কুমিরের ডেলিকেসি ছিল— ‘ইলিস-খলিসের চচ্চড়ি, রুই-কাতলার গড়গড়ি, চিতল-বোয়ালের মড়মড়ি’, দক্ষিণ আফ্রিকার খামারের কুমির অবশ্য দিনে পাউন্ড-পাউন্ড গোমাংস খেয়ে এমন কুমড়োপটাশ-গতর বাগায় যে সামান্য নড়াচড়াতেও তাদের প্রবল অনীহা। আর স্বাদ? অমন শক্ত-কর্কশ চেহারা, অমসৃণ কাঁটাময় শরীর আর বীভৎস রূপের প্রাণীটির মাংস— বিশ্বাস করুন— স্বাদে পাল্লা দিতে পারে লেক মার্কেটের সেরা ভেটকি বা দেশি মুরগির সঙ্গে। কুমিরের কোর্মার রেওয়াজি-নরম তুলোপানা চর্বি-জড়ানো মাংসখণ্ড জাস্ট জিভের চাপেই গলে যাবে, আর শুধু অনভ্যাসের জড়তা কাটাতে পারলেই যে-কোনও বাঙালির জিভেই প্রবল ঝংকার তুলবে, বাজি ধরা যায়।

তবে জন্তু-জানোয়ারের মেজাজ-মর্জি নিয়ে বাজি ধরা যে কাজের কথা নয়, তার হাতে-গরম প্রমাণ মিলেছিল আমাজনের নীল জলরাশির বুকে আমাদের ছোট্ট ডিঙিতে। আমাদের পথপ্রদর্শক ছিল অ্যান্টন। আমারই বয়সি এক ব্রাজিলীয়। আমি অন্ধকারে হোঁচট খাই, আর অ্যান্টনের যেন চোখ জ্বলে। সে কুড়ি হাত দূরের জলাবনে কাইমেন দেখতে পায়, পচা পাতার স্তূপে লোমশ ট্যারান্টুলার গর্তে অনায়াসে পা ঢুকিয়ে দেয়। গোটা গায়ে অসংখ্য সাপের ছোবলের দাগ নিয়ে দিব্যি বেঁচে আছে।

আমাজনের সরু খাঁড়ির মধ্যে যেতে যেতে অ্যান্টন হঠাৎ জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা শুকনো একটা গাছের এক্কেবারে মগডালে আবিষ্কার করল— বোয়া কনস্ট্রিক্টর! ধীরে ধীরে গাছে উঠে সযত্নে সাপটাকে হাতে জড়িয়ে নামিয়ে আনল ডিঙিতে। অতি-উৎসাহী আমার বার বার অনুরোধে দীর্ঘ সাপটাকে আমার কাঁধে দিয়ে শিখিয়ে দিল, মুখের নীচে কোন অংশে আঙুল চেপে ধরলে ছোবল খাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সাপ কাঁধে নিয়ে ক্যামেরাবাজি করতে করতেই বুঝলাম, শীতল আর মোম-মসৃণ রঙিন ত্বকের সাপটার শরীরের বাঁধন আমার গলায় আর ঘাড়ে ক্রমশ চেপে বসছে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিপদসীমা অতিক্রমের আগেই ক্যামেরার সামনে কেরামতি বন্ধ করে বোয়াটিকে সটান চালান করতে পেরেছিলাম অ্যান্টনের জিম্মায়। তবে তার পর তিন দিন ঘাড়ের ব্যথাতে মালুম হয়েছিল, আমাজনের অ্যানাকোন্ডা দূরে থাক, বোয়া কনস্ট্রিক্টররাও আদপেই ক্যামেরা-ফ্রেন্ডলি নয়।

সাপ যখন আমায় খেতে পারল না, তখন ঠিক করলাম আমি আরও একটি খাদ্য-খাদক সম্পর্ক উলটে দেব! পিরানহা মাছের গল্প আমরা শুনেছি অনেক, ইন্দ্রজাল কমিক্‌সে পড়েওছি! আমাজনের পিরানহারা ঝাঁক বেঁধে থাকে স্রোতহীন শান্ত জলে। কাকভোরে ছোট্ট ডিঙি নিয়ে ঢোকা হল আমাজনের ‘কোর এরিয়া’-র খাঁড়ির মধ্যে। প্রায় পুরোটাই ছায়া-ছায়া অন্ধকার, মাঝেমধ্যে কষ্টেসৃষ্টে ঝামরে পড়া অতর্কিত আলো। সব চুপচাপ, শুধু কয়েকটা বাঁদরের ডাক আর বৈঠা জলে ধাক্কা দেওয়ার শব্দ। অ্যান্টনের ইশারায়, কালচে-নীল জলে প্রথমে ছড়িয়ে দিলাম ছোট-ছোট মাংসখণ্ড, পিরানহাদের আকৃষ্ট করতে। তার পর আরও ছোট মাংসের টুকরো বঁড়শিতে গেঁথে শুরু হল ধৈর্যের পরীক্ষা। সূর্য ধীরে-ধীরে পশ্চিমে ঢলছে, আর বাড়ছে রক্তচাপ। এমন সময়ে বঁড়শি-বদ্ধ হলেন বহুপ্রতীক্ষিত তিনি! সিলভার পিরানহা। জলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ শিকারি অবশেষে নিজেই শিকার হলেন। প্রায় নিভু আলোতে বঁড়শি থেকে ঝুলন্ত অবস্থাতেই দেখা গেল খুদে করাতের মতো ঝিকিয়ে ওঠা ক্ষুরধার দাঁতের সারি। সে দিন রাতে সিলভার পিরানহা-ই ছিল মেন কোর্সের অন্যতম পদ। মাছটা পরিষ্কার করে নিয়ে আড়াআড়ি আঁচড়ে চিরে গ্রিল করা, সঙ্গে লেমন-সল্ট… খেতে খেতে অ্যান্টনের রসিকতা, ‘আমাজন থেকে ফেরার পর পিরানহারা যদি দল বেঁধে আমাদের উপর প্রতিশোধ নিতে চায়, কী হবে ভেবে দেখেছ?’

হয়তো বাড়াবাড়ি রকমের নাটকীয় শোনাবে, কিন্তু খাবার টেবিলে প্রতিশোধ নেওয়ার অনুভূতি এক বারই এসেছিল মনের কোনায়। বিশ্ববিখ্যাত এক টেলিভিশন ব্যক্তিত্বের অসহায় মৃত্যুর অভিঘাত প্রতিক্রিয়া ঘটিয়েছিল একই পেশায় থাকা দূরদেশের এক সামান্য টিভিকর্মীর মনে। ২০০৬-এর ৪ সেপ্টেম্বর মাত্র ৪৪ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ান বুল রে প্রজাতির একটি ২২০ পাউন্ডের স্টিং রে-র লেজের কাঁটাটি বুকের বাঁ দিকে বিঁধে প্রায় এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছিল অস্ট্রেলীয় টিভি-পেশাদার স্টিভ আরউইনের হৃৎপিণ্ডটি!

‘ক্রোকোডাইল হান্টার’-এর মৃত্যুর খবর পেলাম সিঙ্গাপুর বসে। তার আগে ক্রিকেট বিশ্বকাপ কভার করতে গিয়ে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের অ্যান্টিগা-তে স্টিং রে-র ‘চাষাবাদ’ দেখেছি। তাহিতি দ্বীপপুঞ্জের রিসর্টগুলোর বিজ্ঞাপনে স্টিং রে-র গায়ে হাত বুলিয়ে ‘নিজের হাতে খাইয়ে দেওয়া’-র প্রলোভন দেখেছি। মরক্কোর স্টিং রে-র ফসিল আর ব্রিটিশ মিউজিয়মে স্টিং রে-র লেজের কাঁটা দিয়ে তৈরি হওয়া তিরের ফলা দেখেছি। অঁরি দ্য মঁফ্রে-র লেখায় ওই কাঁটা দিয়ে তৈরি ভয়ংকর চাবুকের কথা পড়েওছি। কিন্তু স্টিভ আরউইনের দুঃসংবাদটা পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সিঙ্গাপুরের নিউটন ফুড সেন্টারে দেখলাম প্রকাণ্ড এক স্টিং রে তুষারাবৃত অবস্থায় গলদা চিংড়ির পাশে বিক্রির অপেক্ষায়। সটান কিনে ‘লাইভ কিচেন’-এ দিয়ে দিলাম রান্নার জন্য। আমার সামনেই শুরু হল ‘অপারেশন স্টিং রে।’ প্রথমেই বাদ দেওয়া হল স্টিভ-ঘাতক মারাত্মক কাঁটাসুদ্ধু লেজটিকে। যকৃৎ ও চোখের পাশের অংশ আলাদা করে, স্টিং রে-র দু’পাশে পাখনার মতো চ্যাপটা মাংসল অংশ দুটি দিয়ে তৈরি হল সুস্বাদু পদ। বাদ গেল বাদবাকি রবারের মতো যাবতীয় কচকচে অংশ। ২৫ মিনিটের মধ্যেই নরম পাকের ধূমায়িত পরিপক্ব ‘সাম্বল স্টিং রে’ পৌঁছল আমার প্লেটে।

আমার জায়গায় অজিত থাকলে তখনই নির্ঘাত ‘শজারুর কাঁটা’-র মতো ‘স্টিং রে-র কাঁটা’ ধরনের কিছু একটা রোমহর্ষক লিখে ফেলত। তবে অস্বীকার করব না, আমারও সুখাদ্যের স্বাদের বাইরে বাড়তি কিঞ্চিৎ আনন্দ হয়েছিল সে রাতে।

হয়তো ছেলেমানুষি, তবুও প্রতিশোধের মধুর অনুভূতি…

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE