Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
শাহি সমাচার

অসহিষ্ণুতা দেখাতে পিছপা নয় মোদী সরকারও

মোদীর আচরণে গণতন্ত্রহীনতা ও সংবাদমাধ্যমের উপর আঘাত হানার চেষ্টা দেখলে তার প্রতিবাদ জানানোই উচিত কাজ। লিখছেন জয়ন্ত ঘোষালমোদীর আচরণে গণতন্ত্রহীনতা ও সংবাদমাধ্যমের উপর আঘাত হানার চেষ্টা দেখলে তার প্রতিবাদ জানানোই উচিত কাজ। লিখছেন জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০৩
Share: Save:

নোট বদল নিয়ে গোটা দেশ এখন তোলপাড়। নোট বদলের সিদ্ধান্ত সঠিক না বেঠিক তা নিয়ে অর্থনীতিবিদরাও এখন জোর বিতর্কের মধ্যে। এ বারের শাহি সমাচারে সেই বিতর্কে প্রবেশ করছি না। করছি না, তার কারণ, এ বিষয়ে লেখালিখি হচ্ছে যথেষ্ট। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় যথেচ্ছ।

আড়াই বছর পর নরেন্দ্র মোদী সরকারের মূল্যায়ন করতে গিয়ে একটা কথা কিন্তু নির্দ্বিধায় বলতে পারি, নরেন্দ্র মোদী তাঁর সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াতে রাজনৈতিক ঐকমত্যের কোনও পরিচয় রাখছেন না। এনডি টিভি চ্যানেলের ওপর নিষেধাজ্ঞাই হোক আর নোট বদলের সিদ্ধান্ত গ্রহণই হোক— এই গণতন্ত্রের প্রতি অনাস্থার প্রকাশ সম্ভবত সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রে।

বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জেতার পর নরেন্দ্র মোদী সংসদ ভবনে প্রবেশের মুহূর্তে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করেছিলেন। সেই দৃশ্যটি এখনও আমাদের স্মৃতিতে সমুজ্জ্বল। তখন অন্য অনেকের মতো এই প্রতিবেদকও আশা করেছিলেন, দশ বছরের হতাশার পর এ বার হয়তো নরেন্দ্র মোদী কর্মক্ষম এক সরকার উপহার দেবেন। তার সঙ্গে সুরক্ষিত হবে গণতন্ত্র, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা। সে দিন দিল্লিতে সতীর্থ কিছু সাংবাদিক বন্ধু আমার আশাকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, গুজরাতে দাঙ্গা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণকারী নরেন্দ্র মোদী দিল্লির মসনদে বসে রাতারাতি নিজেই নিজেকে কি রাতারাতি বদলে ফেলতে পারেন? গণতন্ত্র এবং মোদী, এ তো কাঁঠালের আমসত্ত্ব। তখন বলেছিলাম, আশায় বাঁচে চাষা। নতুন অধ্যায়কে আপাতত স্বাগত জানানো যাক।

আড়াই বছর অতিবাহিত। দেশের হাল-হকিকৎ দেখে মনে হচ্ছে সংসদ ভবনের সামনে ওই সাষ্টাঙ্গ প্রণিপাত শুধুই একটি ছবি। ফোটো অপারচুনিটি। কাশ্মীরের সংবাদপত্র দফতরে তল্লাশি, ব্ল্যাকআউট। শেষ পর্যন্ত এনডিটিভি-র মতো নিউজ চ্যানেল প্রদর্শনে এক দিনের নিষেধাজ্ঞা জারির ফরমান। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বললেন, যা করেছি বেশ করেছি। দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে এটা জরুরি ছিল। তারপর গোটা দেশ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মুখর হল। আদালতের শরণাপন্ন হল চ্যানেল। খুব ভাল করে এনডিটিভি-র ফুটেজ দেখে বলছি, এতে এমন কিছুই দেখানো হয়নি যাতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। আর প্রায় সব চ্যানেলেই তা দেখানো হয়েছে। যদি সরকারের কোনও সন্দেহ থাকত তা হলেও সরকারেরই করা ব্রডকাস্টিং অ্যাক্ট অনুসারে সেল্ফ ইমপোজ রেগুলেটরি বডি নামে সংস্থার কাছে সরকার যেতে পারত। তার জন্য ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং অ্যাসোসিয়েশন ছিল। এমনকী, প্রয়োজনে কোনও বিচারপতি বা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়েও তদন্ত করানো যেত। তা না করে নিজেদের আমলার কমিটিকে দিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করাটা এক বিচিত্র প্রহসন। যা-ই হোক, জনমতের চাপে শেষ পর্যন্ত হয়তো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে সরকার, কিন্তু সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রশ্নে সরকারের মনোভাব দেখে উদ্বিগ্ন বোধ করছি। উদ্বিগ্ন বোধ করছি, কারণ অতীতেও সব দলেরই সরকার এ হেন অগণতান্ত্রিক পথে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর আঘাত হেনেছে। নরেন্দ্র মোদীর সরকার এই অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে ব্যতিক্রম হল না।

নরেন্দ্র মোদী নামক ব্যক্তিটিকে সাংবাদিকতার কারণেই কিঞ্চিত চিনি। দিল্লিতে বিজেপির যখন সাংসদ ছিলেন দু’জন, তখন থেকে অশোক রোডে বিজেপির সদর দফতরে যাচ্ছি। মোদী তখন দলীয় দফতরের পিছনে ব্যারাক ঘরে থাকতেন। যখন তিনি মুখ্যমন্ত্রী হলেন তখনও গুজরাতের ফি বছর শিল্প ও উন্নয়নের প্রশ্নে ভাইব্র্যান্ট গুজরাতের মতো এক বিশাল কর্মযজ্ঞ করতেন। যা দেখে মুগ্ধ হয়েছি। ভয়াবহ ভূমিকম্পপীড়িত ভুজ কভার করেছি, আবার এক বছরের মধ্যে সেই গুজরাতে গিয়ে দেখেছি এনআরআই-দের সক্রিয় সহযোগিতায় সে রাজ্যে কী অসম্ভব সম্ভব হয়েছে। এক নতুন ভুজ শহর গড়ে উঠেছে চোখের সামনে।

নরেন্দ্র মোদীর ‘ইগো’ নামক জিনিসটা বরাবরই খুব প্রবল। সংবাদমাধ্যম নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর ইগো ছিল খুব প্রবল। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর কোনও মিডিয়া উপদেষ্টা তিনি রাখেননি। বিদেশযাত্রার সময় সাংবাদিকদের নিয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন। সাংবাদিকদের নিয়ে বিদেশ যাচ্ছেন না কেন? প্রেসিডেন্ট ওবামাও তো যান। সেই রাজীব গাঁধীর সময় থেকে সব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদেশে গিয়েছি, আপনার সঙ্গে আর যাওয়া হল না। জবাবে মোদী বলেছিলেন, দেখো ভাইয়া, হাম হাওয়াই জাহাজমে পত্রকার লেকে ঘুমনে বালা নেতা নেহি হুঁ। বেশ। আপনি সাংবাদিকদের অতিরিক্ত পাত্তা দেবেন না। কোনও সমস্যা নেই। সেটা আপনার নেই। মিডিয়া উপদেষ্টা তিনি রাখবেন কি রাখবেন না সেটা ওঁর ব্যাপার। কিন্তু বেসরকারি সংবাদ চ্যানেলে কোনটা দেখাবে আর কোনটা দেখাবে না সেই অগ্রাধিকার সাংবাদিকেরাই ঠিক করবে, সরকার নয়।

আড়াই বছর অতিবাহিত হওয়ার পর আমার মনে হয়, এ সরকারের কাজকর্ম দেখে আমি উদ্বেলিত হতে পারছি না। পাকিস্তান নিয়েও এ সরকারের নীতি উত্তরপ্রদেশ ভোটের রাজনীতির সঙ্গেই যুক্ত বলে আমার মনে হচ্ছে। কাশ্মীরে ডান্ডা দিয়ে ঠাণ্ডা করার এই নীতিতে ভারতের বহুত্ববাদ সঙ্কটের মুখে বলে যদি মনে হয় তা হলে সে কথাগুলি আমাদের বলতে হবে। তাতে বিরক্ত হয়ে সরকার যদি চ্যানেল প্রদর্শন বন্ধ করেন তবে সেটা কি গণতন্ত্র?

১৭৬৮ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে উইলিয়াম বোল্টস নামের এক ওলন্দাজ কলকাতায় ছাপাখানা বসিয়ে প্রথম সংবাদপত্র প্রকাশ করার অনুমতি চান ব্রিটিশ প্রভুদের কাছ থেকে। তিনি কোম্পানির অধীনে চাকুরি করতেন। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে দেশীয় নবাবদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রমূলক রাজনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ তুলে জাহাজে তুলে বোল্টসকে ইংল্যান্ডে পৌঁছে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় আরও অনেকে ভয় পেয়ে যান। পরবর্তী বারো বছরের মধ্যে ভারতে সংবাদপত্র প্রকাশের কোনও প্রয়াস দেখা যায়নি। বারো বছর পর ১৭৮০-র ২৯ জানুয়ারি কলকাতা থেকে প্রকাশিত হল বেঙ্গল গেজেট। ইতিহাসের কি অদ্ভুত পুনরাবৃত্তি। আজ বিজেপির শীর্ষনেতারাও ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, একটা নিষেধাজ্ঞার দরকার ছিল। একে বলে সবক শেখা। অন্য মালিকরাও এ বার ভয় পাবে।

প্লেটো বলেছিলেন, শাসক যদি তার নিজের শাসনের প্রেমে পড়ে যান তা হলে মহাবিপদ। সেই শাসনের, সেই যুগের কোনও সমালোচনাই করা যাবে না। সমালোচনা করা মানেই খারাপ সাংবাদিকতা? দিওয়ালি মিলনের অনুষ্ঠানে আর তার এক দিন আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার এক অনুষ্ঠানে এসে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কী ভাবে সাংবাদিকতা করা উচিত। বাজেট হলে বাজেটে কী কী ক্ষেত্রে কর বাড়ল আর কী কী ক্ষেত্রে কর কমল তা লিখুন। কিন্তু তার বদলে নরেন্দ্র মোদীর কোমর ভেঙে দেওয়া বাজেট— এ রকম হেডিং হওয়া উচিত নয়।

ভারতে সংবাদমাধ্যম চিন দেশের মতো রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে নেই। বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আলোচনা সভায় সে দেশের ছাত্ররা বিএসএফের অন্যায় ভাবে গুলি চালানোর নিন্দা করেছিল। সে দিন সকলের সামনেই বলেছিলাম, আমরা সরকার বা রাষ্ট্রের প্রতিনিধি নই। বিএসএফ যদি বৈধ কারণে গুলি চালায় তবে তা বৈধ। কিন্তু এক গরীব কিশোরীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে তাকে গাছে ঝোলানোর ভয়াবহতা প্রদর্শনের বিরোধিতা আমিও করছি, কারণ আমি ভারতের স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি।

কাশ্মীরে সেনাবাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে শুধুমাত্র দেশ ও রাষ্ট্রীয় কারণে তা সমর্থন করতে আমি রাজি নই। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় মার্কিন সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের একটা বড় অংশ রাষ্ট্রের বিরোধিতায় সরব ছিল। এমনকী বার্টান্ড রাসেলের মার্কিন বিরোধিতা দেখে যাঁরা কমিউনিস্ট বলে তাঁকে চিহ্নিত করেন, তাঁদের কাছে রাসেলের বিনীত নিবেদন ছিল, ‘‘যুদ্ধের বর্বরতাজনিত সমস্ত তথ্য তিনি পেয়েছেন নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর মতো মার্কিন সংবাদপত্র থেকেই। স্তালিনের আমলে রাশিয়ার নৃশংস অত্যাচারের সমালোচনা করেছিলাম বলে আমেরিকার উদারপন্থীরা আমাকে তখন চরম কমিউনিস্ট বিরোধী বলে অ্যাখ্যা দেন। কিন্তু এই অত্যাচার মার্কিন সরকার করলে তাকে উপেক্ষা বা ক্ষমা করতে হবে? তার তো কারণ দেখি না।’’ (সূত্র: ওয়ার ক্রাইমস ইন ভিয়েতনাম)

একই ভাবে মনমোহন সিংহের সরকার এসে সংবাদমাধ্যমের উপর যখন খড়্গহস্ত হয়েছিল, তখন তার সমালোচনা করেছিলাম। তখন বিজেপির মনে হয়েছিল সেটা নির্ভীক সাংবাদিকতা। আর আজ সেই কারণে সংবাদমাধ্যমকে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। রাজনেতাদের এই অসহিষ্ণুতা অবশ্য নতুন নয়। সিপাহি বিদ্রোহ সমর্থন করায় উর্দু সংবাদপত্র পয়গম-ই-আজাদির সম্পাদক দেদার বখতকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সম্ভবত তিনি ভারতের প্রথম সাংবাদিক শহিদ।

নেহরু যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সে সময়কার ঘটনা। চিনের আক্রমণের ঝড় সবে মাথার ওপর দিয়ে গিয়েছে। ’৬৩ সাল। এই রকম একটা সময়ে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী সিরিমাভো বন্দরনায়েক দিল্লি এসেছিলেন সরাসরি বেজিং সফর সেরে। ঠিক ওই সময়ে চিনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইয়ের বার্তা নিয়ে একই সময়ে দিল্লি এসে নেহরুর সঙ্গে বৈঠক করেন চিনে কর্মরত তৎকালীন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়।

বন্দরনায়েকের এই দৌত্যে লোকসভায় বিতর্কের ঝড় ওঠে। সেই বিতর্ক কলকাতার কিছু সংবাদপত্র গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করায় বেদম চটে যান নেহরু। ’৬৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্লচন্দ্র সেনকে একটি চিঠি দিয়ে তিনি লেখেন যে, ‘হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড’ (আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠীর সেই সময়কার কাগজ) এবং অমৃতবাজার পত্রিকার কিছু প্রতিবেদন দেখে আমি বিস্মিত ও ব্যথিত।...লেখায় বুদ্ধির চেয়ে রাগ ও অসন্তোষ বেশি বলে মনে হচ্ছে।...এ রকম আচরণ অকাম্য। আমি এটা বলছি না যে তোমাকে এখনই কিছু কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু যেটা প্রয়োজনীয় বলেই মনে করবে সেটা কোরো। আমি আমার মতামত তোমাকে জানালাম।’

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই মতামতটুকুই যথেষ্ট। এই চিঠি পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী আনন্দবাজার পত্রিকার তৎকালীন সম্পাদক অশোক কুমার সরকারের কাছে চিঠি পাঠালেন। চিঠিতে ভুল শুধরোতে বলা হয়। এর পর ১২ ফেব্রুয়ারি প্রফুল্লবাবু জবাবি চিঠিতে জানান, আনন্দবাজার পত্রিকা ও হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ডের বেশ কিছু প্রবন্ধ নিয়ে আমি অশোক সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। অমৃতবাজার পত্রিকা গোষ্ঠী আমাদের সম্পূর্ণ সমর্থন করলেও সমস্যা হচ্ছে আনন্দবাজার পত্রিকা এ ধরনের কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি নন। শুধু প্রফুল্লচন্দ্র সেন নন, বিধান রায় থেকে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়— প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হিসেবে কাজ করেছিলেন যে সাংবাদিক সেই সরোজ চক্রবর্তীর দু’খণ্ডে প্রকাশিত ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে’ শীর্ষক গ্রন্থে এই দু’টি চিঠি-সহ অতীতের এ ঘটনা জানা যাচ্ছে। এর পর প্রফুল্লচন্দ্র সেন আনন্দবাজার পত্রিকাকে দীর্ঘ দিনের জন্য বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেন। কিন্তু আনন্দবাজার তবু আপস করেনি। রাজীব গাঁধীর সময়ে প্রেস বিল করে সাংবাদিকতার স্বাধীনতার উপর খড়্গহস্ত হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে তাঁকেও তা ফিরিয়ে নিতে হয়। সম্প্রতি যেমন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হল মোদীকে।

অতএব, গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলে। মোদীর প্রশাসনিক সংস্কার ও উন্নয়নসাধন বা নতুন কিছু করার ইচ্ছাকে খোলা মনে সমর্থন করতে আমি দ্বিধাহীন। কিন্তু যদি তাঁর আচরণে গণতন্ত্রহীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের উপর আঘাত হানার চেষ্টা দেখা যায় তবে তার প্রতিবাদ জানানোই উচিত কাজ। দোহাই, সাংবাদিকতাটা সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের হাতেই থাকতে দিন। সাংবাদিকতার পাঠ আমরা প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের কাছ থেকে না-ই বা নিলাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE