উৎসবে পাল্টে ফেলুন ঘরের পর্দা।
ঘরের এই জিনিসটির উপরই যেন নির্ভর করে গৃহসজ্জার যাবতীয় রহস্য! গোয়েন্দা যেমন সত্য উন্মোচনে একের পর এক রহস্যের পর্দা খোলেন, তেমনই ঘরের রহস্যও লুকিয়ে থাকে পর্দার উপর। পর্দার প্রতিটা ভাঁজে মিশে থাকে ভাল লাগা, স্বপ্ন, রুচি।
ঘরের অন্দরসজ্জার কথা মাথায় রেখেই পর্দার কথা ভাবতে হয়। যদি ঘরের রং এবং আসবাবগুলো বেশ গাঢ় রঙের হয়, তা হলে পর্দা অবশ্যই হালকা রঙের হবে। তাতে দেখতে ভাল লাগবে।
ঘরে যদি খুব আলো ঢোকে অর্থাৎ রোদ্দুরে ভরপুর থাকে ঘর, সে ক্ষেত্রে কিছুটা গাঢ় রঙের ভারী পর্দা লাগাতে হবে জানালায়। যাতে ঘরের মধ্যে কড়া রোদটা সরাসরি না প্রবেশ করে। ঘরের তাপমাত্রাও না বাড়তে পারে। তা ছাড়াও রোদ সরাসরি লাগলে পর্দার হালকা রং ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। ভারী পর্দা হলে সে সম্ভাবনা কম থাকে কিছুটা।
আরও পড়ুন: ঘরের রং হোক শরতের আকাশের মতো মন ভাল করা
পর্দার ক্ষেত্রেও থিমের ভাবনায় যাওয়া যেতে পারে। আসন্ন উৎসবের কথা মাথায় রেখেই এটা বলা। ফ্যাব্রিক ঠিক কী রাখবেন তার উপরেই থিম নির্ভর করবে। সিল্ক, জামদানি, খাদি কিংবা অন্য কিছু, ঘরের অন্দরসজ্জায় নির্দিষ্ট একটি ফ্যাব্রিককেই হাইলাইট করা হবে। শুধু পর্দাই নয়, বিছানার চাদর, সোফার কভার, কুশন কভার, টেবিল ম্যাট, রানার, দেওয়াল ম্যাট সমস্ত কিছুতেই থাকবে সেই নির্দিষ্ট কাপড়ের ব্যবহার। আর ঘরের অন্যান্য আসবাব হবে থিমের সঙ্গে মিলিয়ে। ধরুন, ঘরে যদি ট্রাডিশনাল ভিক্টোরিয়ান স্টাইলের আসবাব থাকে, সে ক্ষেত্রে নকশিকাঁথার ভাবনাটা থিম হিসাবে মন্দ লাগবে না। অন্য দিকে আধুনিক অন্দরসজ্জা হলে ফ্যাব্রিক হিসাবে সিল্ক অথবা মসলিন বেশ মানানসই হবে।
ছোটদের ঘরের ক্ষেত্রে পর্দায় অবশ্যই কার্টুন, আন্ডার ওয়াটার বা স্পেস থিম রাখুন। ছোটদের ঘরের পর্দা যেন বেশ রংচঙে হয়। যাতে শিশুরা সারা দিনে ভরপুর এনার্জি পায়।
পর্দা ঝোলানোর বেশ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। যেমন রোলিং, ক্লিপিং, লুপিং। এ ছাড়াও ট্র্যাডিশনাল পদ্ধতিতে পেলমেটের নীচে চ্যানেল বা আইলেট দিয়ে পর্দা ঝোলানো হয়।
আরও পড়ুন: জুতোও রাখতে পারেন ওয়ার্ডরোবে
পর্দার ঝুল ঠিক কতটা হলে ভাল লাগবে, এটা বেশ ভাবার বিষয়। আসলে এর নির্দিষ্ট কোন ব্যকরণ নেই। ছোট, বর্গাকার ঘর হলে একটু কম ঝুলের পর্দা জানালায় লাগালে মানাবে। ঘর যদি বেশ বড় হয়, সে ক্ষেত্রে লম্বা ঝুলের পর্দা ব্যবহার করা যেতে পারে।
এখন সরাসরি অনেক দোকানে অর্ডার দিলেই চলে। কর্মী এসে জানালার মাপ নিয়ে যান। সেই মতো বাড়ি বয়ে এসে পর্দা লাগিয়েও দিয়ে যান তাঁরা। যদিও এ ক্ষেত্রে খরচটা একটু বেশি পড়ে।
কম খরচে কাজ মেটাতে চাইলে আপনি নিজে কাপড় কিনে দর্জিকে দিয়ে পর্দা বানিয়ে নিতে পারেন। শুধু কেনার সময় খেয়াল রাখবেন কাপড়ের বহরের মাপে। যাতে মাঝখানে কম সেলাই দিতে হয়। আর চেষ্টা করবেন ভার্টিকাল ডিজাইনের পর্দার কাপড় কিনতে। যাতে সেলাই দিলেও বোঝা না যায়।
আরও পড়ুন: ঘর সাজাতে খরচ ও ঝক্কি নিয়ে চিন্তায়? রইল পকেটসই সমাধান
অনেক কুঁচি দেওয়া পর্দা বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। পুজোর এই ফেস্টিভ মুডের সঙ্গে বেশ মানানসই। এই পর্দার বেশ কয়েকটা স্তর হয়। দেখতেও খুব সুন্দর। তবে ধুলোবালি খুব ঘরে ঢুকলে এই ধরনের ডেকরেটিভ পর্দা ব্যবহার করা সমস্যা। ধুলো জমে যায়। তবে এ ছাড়া অন্য সমস্যা নেই।
জানালা দিয়ে রোদ ঢোকায় ঘর গরম হয়ে যাচ্ছে! স্লাইডিং গ্লাস উইন্ডোতে তাপ আরও বাড়ে। তাই জানালার কাচে ‘গ্লাস ফিল্ম’ ব্যবহার করতে পারেন। এতে তাপমাত্রা অনেকটাই কমবে। এর গায়ে পর্দা দেখতেও ভাল লাগবে।
ছবি সৌজন্য: লেখক।
(লেখক অন্দরসজ্জা বিশেষজ্ঞ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy