এই পুজোয় মোবাইলে ঠাকুর দেখতে পারেন আপনিও।
পুজো মানেই হই হই রব, উত্তর থেকে দক্ষিণ, দিন থেকে রাত, শুধু মানুষের ভিড়, আনন্দ আর পুজো পরিক্রমা। বছর বছর নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয় জন প্লাবনের, পুজো কর্তাদের চমক আর পুলিশের তৎপরতা বাড়ে ঠিক সেই অনুপাতে।আর পুজো মানেই নতুন প্রযুক্তির চমক।
কিছু বছর আগে বাজারে প্রথম আসে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি। রিয়্যালিটি, কিন্তু রিয়্যাল নয়! চোখের সামনে বাক্সর মতো একটা যন্ত্র লাগিয়ে তাতে চোখ দিয়ে তাকালেই সব মায়া! সব উল্টেপাল্টে একাকার! কখনও পায়ের তলায় আকাশ, কখনও পিরামিডের সামনে! মাথা নাড়ালে দৃশ্য সেভাবেই নড়ছে। মনে হতে পারে সামনে যেটা দেখছি সেটাইহয়ত সত্যি! দিনে দিনে প্রযুক্তি আরও সহজ হয়েছে, আরও সহজলভ্য হয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি।
কিন্তু এর সঙ্গে পুজোর সম্পর্ক কী? কলকাতায় দীর্ঘদিন ধরেই চালু হয়ে গিয়েছে এই ভি-আর প্রযুক্তির মাধ্যমে পুজো দেখা! আপনার অজান্তেই ২০১৩-২০১৪ থেকে দ্য পূজা অ্যাপ (http://thepujaapp.com) কলকাতার বিভিন্ন নামী দামি পুজোর ছবি দিয়ে ভি-আর প্রযুক্তি ব্যবহার করে। না দেখলে বিশ্বাস করবেন না এই অনুভূতি, যখন দেখবেন, মনে হবে আপনি যেন ভিড় পেরিয়ে ঠিক মা দুর্গার মূর্তির সামনে দাড়িয়ে। চারপাশে পুজো, মানুষ, সিকিউরিটি সব দেখতে পাচ্ছেন! আপনার হাতে ধরা মোবাইলেই তা সম্ভব, কোনও অতিরিক্ত খরচের প্রয়োজন নেই। কোনও কিছু ডাউনলোড করার প্রয়োজন নেই। শুধু ফোনের ব্রাউসার থেকে খুলুন ওয়েবসাইটটি।বছর ধরে তালিকা করা আছে, ২০১৮-র উল্লেখ থাকলেও স্বাভাবিক ভাবেই পুজো শুরু হওয়ার আগে সেখানে কোনও তথ্য পাবেন না। ২০১৭-র ২১টি পুজো মণ্ডপের ৩৬০ডিগ্রি ছবি তোলা রয়েছে। আপনি শুধু আপনার পছন্দের মণ্ডপটির ওপর একবার আঙ্গুল দিয়ে স্পর্শ করুন, মুহূর্তে আপনার সামনে সেই মণ্ডপ হাজির হবে, যেন এক আশ্চর্য আলাদিনের প্রদীপ! তবে ২০১৩ থেকে ২০১৬ অবধি পুজোগুলোর ছবি এখন দেখতে পাবেন না, সেগুলির উন্নতিকরণ চলছে।
আরও পড়ুন: পোশাকই নয় কেবল, শপিং লিস্টে থাকুক নতুন মোবাইলও
আরও পড়ুন: পুজোয় ফিট থাকার ফিটনেস ট্র্যাকার
আরও পড়ুন: পুজোয় পেটপুজো এ বার অ্যাপনির্ভর টাচে
গুগল আর্থ, ইউটিউব-এর মতো পরিচিত অ্যাপ্লিকেশনগুলিতেও এখন চলে এসেছে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি। ফোনের ডিসপ্লে ল্যান্ডস্কেপ অবস্থায় ঠিক মাঝামাঝি থেকে দু’টি ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে একটাই দৃশ্য ডিসপ্লের দু’টি অংশে দেখাতে থাকে। ফলে, চোখের সামনেই থাকে ডিসপ্লের দু’টি অংশ। কার্ডবোর্ড, প্লাস্টিকের খাপও পাওয়া যায়, যাতে ফোনটা ঢুকিয়ে দিয়ে চোখের সুবিধে অনুযায়ী লেন্স আগুপিছু করে ঝক ঝকে ভি-আর দেখার সুবিধা পাওয়া যায়।অনেক ক্ষেত্রে ছবি, ভিডিও দেখার সুবিধা আছে এই প্রযুক্তিতে। এমনকি এখন বিভিন্ন গেম নির্মাতারা নতুন নতুন ভি-আর গেম তৈরি করছেন।
এই প্রযুক্তির ফলে কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থাকা মানুষগুলির কাছে যেমন এককথায় মেঘ না চাইতেই জল, কলকাতার মধ্যেও অনেক মানুষের কাছে আরেক পরম প্রাপ্তি। বয়স্ক, শারীরিক ভাবে দুর্বল বা অক্ষম মনুষগুলোর কাছেও এই ভিড়, লাইন, দূরত্ব, অক্ষমতা— কোনও কিছুই প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াবে না।ছোট থেকে বড়, ৯ থেকে ৯০, ঘরে বাইরে যেখান যখন ইচ্ছে, পুজোর ক’দিন আপনি আপনার মতো করে ঠাকুর দর্শন করুন এবার থেকে, আর কোনও বাধা নেই। শুধু প্রয়োজন একটি স্মার্টফোন, আর ইন্টারনেট পরিষেবা। ফলে ভিন রাজ্য থেকে বিদেশ, হাসপাতাল থেকে বৃদ্ধাশ্রম, মা দুর্গা এবার ঘরে ঘরে, ফোনে ফোনে।
ছবি সৌজন্য: শাটারস্টক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy