বহুতল থেকে পড়ে মৃত্যু বৃদ্ধের

৬৭ নম্বর গোবিন্দপুর রোডের ওই আবাসনের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন অসীমবাবু। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী শান্তনু চট্টোপাধ্যায় এবং সেখানকার সাফাইকর্মী মহিন্দর দাস জানান, তাঁরা একতলায় গাড়ি রাখার জায়গায় চেয়ারে বসেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০২
Share:

মৃত অসীমকুমার মুখোপাধ্যায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী

বহুতল থেকে নীচে পড়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হল। পুলিশ জানায়, শনিবার সকালে লেক থানা এলাকার গোবিন্দপুর রোডের পাঁচতলা একটি আবাসনের ছাদ থেকে পড়ে যান অসীমকুমার মুখোপাধ্যায় (৭৪) নামে ওই বৃদ্ধ। পরিবারের লোকজন ও পুলিশ তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, অসীমবাবু বছর সাতেক কলকাতা পুলিশে কাজ করেছিলেন। তার পরে তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত একটি তেল সংস্থায় যোগ দেন।

Advertisement

৬৭ নম্বর গোবিন্দপুর রোডের ওই আবাসনের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন অসীমবাবু। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী শান্তনু চট্টোপাধ্যায় এবং সেখানকার সাফাইকর্মী মহিন্দর দাস জানান, তাঁরা একতলায় গাড়ি রাখার জায়গায় চেয়ারে বসেছিলেন। পৌনে ন’টা নাগাদ ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ শুনে মুখ ঘুরিয়ে দেখেন অসীমবাবু চিৎ হয়ে কংক্রিটের চত্বরে পড়ে রয়েছেন। তাঁর হাত ও পায়ে চোট, রক্ত বেরোচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধের ফ্ল্যাটে যান ওই দু’জন। বাড়ির সর্বক্ষণের পরিচারিকা রেবাকে তাঁরা ঘটনাটি জানান। পরিচারিকা টেলিফোন করেন অসীমবাবুর মেয়ে সুনন্দিতাকে। মেয়ে যোধপুর পার্কের শ্বশুরবাড়ি থেকে কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাপের বাড়ি চলে আসেন। তত ক্ষণে পাড়ার লোকজন লেক থানায় টেলিফোন করে বৃদ্ধের পড়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে দেন।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃদ্ধ কিছু দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। আবাসনের ছাদের পাঁচিলের পাশে তাঁর নীল রঙের হাওয়াই চটি পড়েছিল বলে তদন্তকারীরা জানান। চটি জোড়া পড়ে থাকতে দেখে পুলিশের অনুমান, ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন অসীমবাবু।

Advertisement

এ দিন তাঁর ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, পরিচারিকা রেবা অঝোরে কেঁদে চলছেন। এক সময়ে কান্না থামিয়ে তিনি জানান, অসীমবাবুর ছেলে সব্যসাচী বেঙ্গালুরুতে কাজ করেন। বৃদ্ধের স্ত্রী অনিন্দিতাদেবীর বেশ কিছু দিন ধরে ডায়ালিসিস চলছে। সব্যসাচী মাকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে গিয়েছেন চিকিৎসার জন্য। বাড়িতে পরিচারিকা ও অসীমবাবুই কয়েক দিন ধরে ছিলেন। এ দিন সকালে রোজের মতোই সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ টেবিলে জলখাবার সাজিয়ে অসীমবাবুকে খেয়ে নিতে বলেন রেবা। এর পরে তিনি যান বিছানা গুছোতে। সেই সময়ে মহিন্দর ফ্ল্যাটে ঢুকেছিলেন আবর্জনা নিয়ে যেতে। কিছু ক্ষণ পরেই ফের মহিন্দর কলিংবেল বাজান ও অসীমবাবুর পড়ে যাওয়ার খবর দেন রেবাকে। ওই মহিলা জানান, বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে এ দিন বিকেলের উড়ানে মাকে নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে ফিরে আসছেন সব্যসাচী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন