Hackers

হ্যাকারদের নজরে অ্যাকাউন্ট, অসহায় অফিসার

তাঁর স্যালারি অ্যাকাউন্ট থেকে এক লক্ষ টাকা তুলে নিয়েই শুধু ক্ষান্ত হয়নি হ্যাকারেরা, নিয়মিত সেই অ্যাকাউন্টের উপরে তারা নজরদারিও চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

নেট জালিয়াতির শিকার তো অনেকেই হচ্ছেন। কিন্তু, হ্যাকারদের নজরদারির জন্য নিজের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টাকা তুলতে পারছেন না, এমনটা সচরাচর শোনা যায় না। এমনটাই ঘটেছে কলকাতা বিমানবন্দরের অফিসার নব্যেন্দু বিশ্বাসের সঙ্গে।

Advertisement

তাঁর স্যালারি অ্যাকাউন্ট থেকে এক লক্ষ টাকা তুলে নিয়েই শুধু ক্ষান্ত হয়নি হ্যাকারেরা, নিয়মিত সেই অ্যাকাউন্টের উপরে তারা নজরদারিও চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। সাময়িক লেনদেন বন্ধ (ফ্রিজ) রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সেই অ্যাকাউন্ট থেকে। নব্যেন্দুবাবু নিজের প্রয়োজনেও অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারছেন না। টাকা তুলতে না পারায় মেয়ের স্কুলের ফি দিতেও সমস্যায় পড়েছেন। ব্যাঙ্ক হুঁশিয়ার করেছে এই বলে যে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে গেলেই হ্যাকারেরা এক মুহূর্তে সরিয়ে নেবে বাকি টাকা।

এ কারণে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সেখানে তাঁর বেতন পাঠানোর জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন নব্যেন্দুবাবু। মধ্যমগ্রাম থানাতেও একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। মধ্যমগ্রাম এলাকার একটি রিটেল শপে গিয়ে নিজের জন্য একটি প্যান্ট কেনেন তিনি। কিন্তু, সেটি পরনে ছোটবড় হওয়ায় তিনি বদলে ফেলেন। ৯ জানুয়ারি আবার সেই মলে গিয়ে ফেরত দেওয়া প্যান্টের টাকা চাইতে গেলে এক কর্মী, তাঁর নিজের মোবাইল থেকে একটি ফোন করে নব্যেন্দুবাবুকে বলেন, ‘সংস্থার কলসেন্টারে কথা বলে নিন।’ বিন্দুমাত্র সন্দেহ না করে তিনি সেই ফোনে অপর প্রান্তের ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন। সেই ব্যক্তি নব্যেন্দুবাবুর মোবাইল নম্বর জেনে নিয়ে সেখানে একটি লিঙ্ক পাঠান। নব্যেন্দুবাবুকে বলা হয় সেই লিঙ্কে ক্লিক করতে।

নিজের মোবাইলে আসা সেই লিঙ্কে ক্লিক করতেই দেখেন তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে একের পর এক টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। তড়িঘড়ি ব্যাঙ্কে ফোন করে অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার আগেই প্রতি বার ১৯,৯৯৯ টাকা করে পাঁচ বার টাকা বেরিয়ে যায়। যে কর্মীর ফোন থেকে ফোন করেছিলেন, তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে কোনও সদুত্তর পাননি বলেই তিনি থানায় দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছেন। পরের দিন এসে যোগাযোগ করেন ব্যাঙ্কের সঙ্গে।

নব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমরা যাঁরা পেটিএম, ফোনপে, গুগলপে-র মাধ্যমে কেনাকাটা করি, তাঁদের একটি ইউপিআই (ইউনিফায়েড পেমেন্ট ইন্টারফেস) অ্যাকাউন্ট থাকে। নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ওই অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করা থাকে। ব্যাঙ্ক আমাকে জানিয়েছে, আমার ওই ইউপিআই অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেই টাকা তোলা হয়েছিল এবং এখনও সেই অ্যাকাউন্টের উপরে নিঃশ্বাস ফেলছে হ্যাকারেরা।’’

ব্যাঙ্কের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ইউপিআই অ্যাকাউন্টটি ‘ডি-লিঙ্ক’ করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু, এই ইউপিআই অ্যাকাউন্টটি অন্য ব্যাঙ্কের অ্যাপ থেকে নেওয়া। তাই ‘ডি-লিঙ্ক’ করতে সময় লাগছে। যে সংস্থা থেকে কেনাকাটা করতে গিয়ে এই হেনস্থা, সেটির প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন