প্রতীকী ছবি
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রথম দিকের নির্দেশিকায় উল্লেখ ছিল, আধার কার্ড ছাড়া কোভিড পরীক্ষা করা যাবে না। পরে সেই নির্দেশিকার সংশোধন করে বলা হয়, অন্য সরকারি পরিচয়পত্র থাকলেও কোভিড পরীক্ষা করা যাবে। অথচ অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল প্রথম নির্দেশিকাকে আঁকড়েই জরুরি চিকিৎসার রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন রোগীর পরিজনেদের একটি অংশ।
সম্প্রতি তেমনই একটি ঘটনা সামনে আসতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, নয়া নির্দেশিকার কথা জানা ছিল না!
মঙ্গলবার, সকাল আটটা। একবালপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে চেয়ারে বসে ধুঁকছেন এক মহিলা। তাঁরই কোভিড পরীক্ষার দাবিতে তখন লড়ে চলেছেন স্বামী। সম্প্রতি পেটের যন্ত্রণা নিয়ে সেখানে যান আফসুন্নেসা নামে হাওড়ার বাগনানের বাসিন্দা ওই মহিলা। স্বামী রেজাউল করিম জানান, করোনা পরীক্ষা করার পরেই রোগীকে ভর্তি নেওয়া হবে জানানো হয়। আধার কার্ড না থাকায় পরীক্ষা হবে না বলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অন্য চিকিৎসক জানান, পিত্তনালিতে পাথর জমেছে। জরুরি অস্ত্রোপচার করতে হবে। ফের ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, আধার কার্ড ছাড়া কোভিড পরীক্ষা করবেন না। ভোটার কার্ডেও হবে না।
মঙ্গলবার এ নিয়ে রোগীর পরিজনের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বাক্যালাপের মাঝেই উপস্থিত হন রোগীর আত্মীয় স্থানীয় তৃণমূল নেতা সিরাজুল (বাবলু) করিম। হাসপাতালের কর্মীরা তাঁকে জানান, সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট আপলোড করতে হয়। সেখানে আধার কার্ডের নম্বর আবশ্যক।
বিষয়টি পৌঁছয় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে। ঘণ্টা চারেক টালবাহানার পরে কর্তৃপক্ষ কর্মীদের নির্দেশ দেন ভোটার কার্ড নিয়েই কোভিড পরীক্ষা করতে। তত ক্ষণে বিকেল হয়ে গিয়েছে। তাই বুধবার সকালে ওই রোগী পরীক্ষা করাতে ফের হাসপাতালে যান। ঘণ্টা ছয়েক পরে আসে রিপোর্ট। বিকেলের পরে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়।
ওই হাসপাতালের সিইও উত্তম বসু বলেন, “বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি ছিল। প্রশাসনের কর্তাদের হস্তক্ষেপে সমাধান হয়েছে। রোগী ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।”
কোথায় ভুল বোঝাবুঝি? হাসপাতাল সূত্রের খবর, সংশোধিত নির্দেশিকায় যে রয়েছে, আধার কার্ড ছাড়া অন্য সরকারি পরিচয়পত্র থাকলেও কোভিড পরীক্ষা করা যাবে, সেটাই কর্মীদের জানানো হয়নি।
যা শুনে অবাক এসএসকেএম-এর চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার। তিনি বলছেন, “যে কোনও সরকারি পরিচয়পত্র থাকলেই যে কোভিড পরীক্ষা হয়, সে তো পুরনো নির্দেশিকা। না জানার কথা নয়। এমনকি জরুরি ক্ষেত্রে কোনও পরিচয়পত্র না থাকলেও পরীক্ষা করাচ্ছি আমরা।”
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)