Delhi Diary

দিল্লি ডায়েরি: সংসদের শীতকালীন মেজাজে কাঁটা দূষণ

অনেক সাংসদই আসছেন মাস্ক পরে। কারও কারও মাস্ক স্কুবা ডাইভারদের মতো! গাড়িতে ওঠার আগে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী হতাশ গলায় বললেন, “রাজনীতি ভুলে একজোট হয়ে ভাবুন কী করা যায়। শিয়রে শমন!”

অগ্নি রায়, অনমিত্র সেনগুপ্ত, প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৫:৪৯
Share:

দিল্লির দূষণ ছায়া ফেলেছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে। অথচ গোটা বছর সাংসদ এবং সাংবাদিকরা মুখিয়ে থাকেন এই অধিবেশনটির জন্য। প্রশস্ত চত্বরে ডিসেম্বরের রাজকীয় রোদ আর বরফ ঠান্ডা বাতাসের যুগলবন্দি ক্লান্তিহরা তো বটেই, আরামদায়কও। সাংসদরাও আলো আঁধারি কৃত্রিম আলোর করিডর থেকে বেরিয়ে চত্বরে দাঁড়িয়ে খোশগল্পে বুঁদ হন। খবরও হয়, ভিটামিন ডি-ও আসে! কিন্তু এ বারে রোদ্দুরে দূষণের কাঁটা দৃশ্যমান। অনেক সাংসদই আসছেন মাস্ক পরে। কারও কারও মাস্ক স্কুবা ডাইভারদের মতো! গাড়িতে ওঠার আগে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী হতাশ গলায় বললেন, “রাজনীতি ভুলে একজোট হয়ে ভাবুন কী করা যায়। শিয়রে শমন!” এক ধাপ এগিয়ে কংগ্রেসের ইমরান মাসুদ হাতে করে এনেছিলেন অক্সিজেন সিলিন্ডারের মিনি প্যাক! সেটি গাড়িতে নিয়ে ঢুকলেন, সংসদের ভিতরে। দূষণ বিরোধী প্রচারও হল, আবার যখন দরকার পড়বে বাইরে এসে সিলিন্ডারের ছিপি খুলবেন, জানালেন!

সঙ্কট: দূষণের দাপটে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে নানাবিধ মাস্কের ভিড়।

বাংলার দান

বন্দে মাতরম্ না এসআইআর— কোন আলোচনা আগে হবে, তা নিয়ে উত্তাল ছিল শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দু’দিন। স্পিকার ওম বিড়লার বৈঠকে শেষ পর্যন্ত সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসে। আগে বন্দে মাতরম্‌ গানের দেড়শো বছর পূর্তি সংক্রান্ত আলোচনা। কিন্তু বন্দে মাতরম্‌ নিয়ে বিজেপির অত্যুৎসাহ দেখে বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কাকলি ঘোষ দস্তিদার তাঁদের উদ্দেশে বলেই ওঠেন, “এত যে বন্দে মাতরম্‌ নিয়ে বলছেন, এক জনও আনন্দমঠ পড়েছেন? ভুলে যাবেন না বন্দে মাতরম্‌ থেকে জনগণমন— সবই বাংলার দান। এমনকি ‘জয় হিন্দ’ স্লোগানও।”

তোমার মধুর মূরতি

সামনেই রাজ্যে ভোট। শুরু হয়ে গিয়েছে দলবদলের পালা। এক মাঝবয়সি নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েই সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে উপস্থিত। হাতে উপহার। শমীকের জন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি এনেছেন। উপহারের মোড়ক খুলে দেখা যায়, মূর্তি ঠিকই, কিন্তু তা শ্যামাপ্রসাদের নয়, শ্যামাচরণ লাহিড়ীর। যিনি যোগীরাজ বলেই খ্যাত ছিলেন ভক্তমহলে। শমীক বলছেন, দলে নতুন তো। তাই হয়তো শ্যামাপ্রসাদ শ্যামাচরণে গুলিয়ে ফেলেছেন। আপাতত মূর্তিটি শমীকের আলমারিতে।

মালিশের আন্তরিকতা

প্রাক্তন সেবা করছেন বর্তমানের। কাঁধ টিপে দিচ্ছেন। বিরল দৃশ্য পুরনো সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে। ৩ ডিসেম্বর ছিল দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদের জন্মবার্ষিকী। শ্রদ্ধার্ঘ্য অনুষ্ঠানে হাজির কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলেন। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এসে তাঁর কাঁধ মালিশ করতে শুরু করেন। মল্লিকার্জুন রাহুলের হাত ধরে মানা করলেও প্রিয়ঙ্কা এসে বলেন, ঘাড়ের কাছে কাঁধের জায়গাটা ভাল করে মালিশ করিয়ে নিন। তা হলে আরাম মিলবে। আশেপাশে সবাই হাসতে শুরু করেন। কংগ্রেসের নেতারা বলেছেন, বড়দের প্রতি এই শ্রদ্ধা ও ভালবাসাই গান্ধী পরিবারের সংস্কার।

বাংলার সুসংবাদ

বুধবার সংসদের রাজ্যসভার বিষয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে গোড়া থেকেই খোশমেজাজে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। মুখে মৃদু হাসি। বিজেপির রাজ্যসভার নেতা জে পি নড্ডা ‘ওই হাসির রহস্য কী’ প্রশ্নই করে বসেন ডেরেককে। কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশও বলেন, “বলেই দাও ডেরেক!” চাপে পড়ে ডেরেক রাজ্যসভার চেয়ারম্যান সি পি রাধাকৃষ্ণনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে বলেন, “আসলে আজ বাংলার জন্য ভাল খবর আছে। ৩২ হাজার শিক্ষক আদালতের নির্দেশে চাকরিতে বহাল রয়েছেন। তাই মনটা খুশিতে।”

প্রসন্ন: ডেরেক ও’ব্রায়েন।

‘দাদা, আপনি বসুন’

রাজ্যসভা চেয়ারম্যান হিসাবে উপরাষ্ট্রপতি সি পি রাধাকৃষ্ণনের প্রথম দিনেই তাঁর মুখে বাংলা— “দাদা, বসুন। দাদা, আপনি বসুন।” শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে রাধাকৃষ্ণনকে স্বাগত জানানো হয়। তার পরেই বিরোধীরা এসআইআর নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন। তৃণমূলের দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন উত্তেজিত হয়ে বিরোধী বেঞ্চের এ-দিকে ও-দিকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। তাঁকে শান্ত করতে তামিল হয়েও বাংলায় অনুরোধ করেন রাধাকৃষ্ণন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন