ভারত এবং বাংলাদেশ জল সীমান্ত। — নিজস্ব চিত্র।
অসমে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নদী অধ্যুষিত ৬০ কিলোমিটার অংশ সিল করতে উদ্যোগী হল কেন্দ্র। পন্টুন ব্রিজ, স্লুইস গেট ছাড়াও ওই এলাকায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা ভাবছে বিএসএফ।
অসমে ভোটের আগে অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রুখতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। ক্ষমতায় এসেই বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। সম্প্রতি রাজ্য সফরে গিয়ে সীমান্তের পরিস্থিতি খুঁটিয়ে দেখেন বিএসএফের ডিজি কে কে শর্মা ও অতিরিক্ত ডিজি এ পি মাহেশ্বরী। তার পরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা।
বিএসএফের অফিসারদের মতে, সীমান্তের নদী অধ্যুষিত এলাকায় নজরদারি চালানো অনেক সময়েই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই ওই এলাকার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা প্রয়োজন। আইআইটি-র বিশেষজ্ঞ, অসম সরকার ও বিএসএফের অফিসারদের নিয়ে গড়া একটি বিশেষ দল এই বিষয়ে একটি নীল নকশাও তৈরি করেছে।
বিএসএফ সূত্রে খবর, ওই এলাকায় নদী বা উপনদীর উপরে পন্টুন ব্রিজ তৈরি করা হবে। তার উপরে পোস্ট তৈরি করে নজরদারি চালাতে পারবেন বিএসএফ জওয়ানরা। সেই সঙ্গে ধুবুরি-সহ কয়েকটি এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের উপরে ২৪টিরও বেশি স্লুইস গেট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ, বর্ষায় ব্রহ্মপুত্রের গতি পরিবর্তনের ফলে অনেক সময়ে বিএসএফের পোস্ট নষ্ট হয়ে যায়। স্লুইস গেটের মাধ্যমে জলস্রোত নিয়ন্ত্রণ করে এই সমস্যার কিছুটা সমাধান করতে পারা যাবে বলে ধারণা বিএসএফ কর্তাদের।
তবে এ ভাবে টহলদারি চালিয়ে সমস্যার পুরো সমাধান করা যাবে না বলেই মনে করে বিএসএফ। আর সেখানেই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারির প্রসঙ্গ। নীল নকশা অনুযায়ী, ওই এলাকায় বেলুনে ক্যামেরা বসিয়ে নজরদারি চালানো হবে। নজরদারি পোস্টগুলি ‘অপটিক ফাইবারের’ মাধ্যমে যুক্ত করা হবে একটি বিশেষ কম্যান্ড ও কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে। তাতে যন্ত্র এবং জওয়ানদের নজরদারি থেকে পাওয়া সব তথ্যই আসবে। সেই তথ্য পাঠানো হবে গুয়াহাটি ও দিল্লিতে। ৬০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১১ কিলোমিটারে বিশেষ ধরনের বেড়া বসাতে চায় বিএসএফ। বাকি অংশে ক্যামেরা, রেডার, ইনফ্রা-রেড সেন্সরের মাধ্যমে নজর রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। বিএসএফ সূত্রে খবর, এই পরিকল্পনা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর বেশিরভাগ তৈরি করবে রাজ্য।