KP Sharma Oli

নেপালে বন্ধ সব ভারতীয় সংবাদ চ্যানেল

দলে কোণঠাসা হয়েই ওলি মানচিত্র বদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে জাতীয়তাবাদের ঝড় তোলার কৌশল নিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ০৫:৪২
Share:

কেপি শর্মা ওলি। —ফাইল চিত্র

বৃহস্পতিবার থেকেই নেপালে একমাত্র দূরদর্শন ছাড়া সব ভারতীয় চ্যানেলের প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া হল। এ দিন সকালে শাসক দলের মুখপাত্র নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠা অভিযোগ করেন, ভারতীয় সংবাদ চ্যানেলগুলিতে নেপাল-বিরোধী অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কে অবমাননামূলক মন্তব্য করা হচ্ছে। তার পরই কেবলে সব ভারতীয় সংবাদ চ্যানেল বন্ধ হয়ে যায়। কবে আবার তা দেখা যাবে, কেবল অপারেটররা কিছু বলতে পারেননি। এর মধ্যেই ভারতের তিনটি এলাকাকে অন্তর্ভূক্ত করে নেপাল সরকার যে নতুন মানচিত্র পার্লামেন্টে পাশ করিয়েছে, দিল্লি তার প্রতিবাদ করে কূটনৈতিক নোট পাঠিয়েছে।

Advertisement

আবার এ দিন সকালেই, শাসক দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির যুগ্ম চেয়ারম্যান পুষ্পকমল দহলের সঙ্গে দেখা করেছেন চিনের রাষ্ট্রদূত হোউ ইয়ানকি। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির ইস্তফা চেয়ে দলের যুগ্ম চেয়ারম্যান দহল সরব হওয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে নেপালে। শাসক দলের ৪৪ সদস্যের স্থায়ী কমিটিতে ৩০ জনই দহলের পাশে এসে দাঁড়ানোয় ওলি বিপাকে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ওলির কুর্সি বাঁচাতে কূটনৈতিক রীতি শিকেয় তুলে আসরে নেমেছেন চিনা রাষ্ট্রদূত।

মে-র ২০ তারিখে ওলি সরকার ভারতের লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখকে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন মানচিত্র প্রকাশের পরে পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধন করে তা অনুমোদন করায়। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব নেপালের পদক্ষেপকে ‘অযৌক্তিক ও একতরফা’ বলে কটাক্ষ করলেও প্রতিবাদ জানানোর কথা উহ্য রেখেছিলেন। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছিল, লাদাখ নিয়ে চিনের সঙ্গে চড়া সুরে বিবাদের আবহে দিল্লি এখনই কাঠমান্ডুর সঙ্গে মতভেদকে প্রাধান্য দিতে চায় না। নেপালের এই পদক্ষেপের পিছনে চিনের উস্কানির বিষয়টিও মাথায় রেখেছে দিল্লি। কিন্তু ঘোষণা না-করেও ভারত ২৪ মে তারিখেই যে কূটনৈতিক নোট পাঠিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে রেখেছে, পার্লামেন্টকে তা জানিয়েছে নেপালের বিদেশ মন্ত্রক।

Advertisement

বস্তুত দলে কোণঠাসা হয়েই ওলি মানচিত্র বদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে জাতীয়তাবাদের ঝড় তোলার কৌশল নিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে তাৎক্ষণিক লাভ হলেও দলের নেতারা এ বার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকায় সংযোজন করেছেন, ক্ষমতা ধরে রাখতে প্রতিবেশী বন্ধু দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে কূটনৈতিক বিপর্যয় ঘটানোর। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, দলে কোণঠাসা ওলি ভারত-বিরোধিতাকে হাতিয়ার করে দেশে সঙ্কট ও অনাস্থার আবহাওয়া তৈরি করেছেন। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশন স্থগিত করে গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে তুলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন