Hong Kong

অচেনা ব্রিটেনেই ভবিষ্যৎ খুঁজছেন হংকংয়ের মানুষ

হংকংবাসীদের প্রবল আপত্তি উড়িয়ে সম্প্রতি সেখানে জাতীয় নিরাপত্তা আইন বলবৎ করেছে চিন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

হংকং শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০৫:০০
Share:

জাতীয় নিরাপত্তা আইনের বিরোধিতায় গত বছর থেকেই উত্তাল হংকং। ছবি: রয়টার্স।

হংকংয়ের জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালু হওয়ার পরে সেখানে আর নিরাপদ বোধ করছেন না বহু হংকংবাসী। ভিটেমাটি ছেড়ে অনেকেই বিদেশে পাকাপাকি ভাবে থাকার কথা ভাবতে শুরু করেছেন।

Advertisement

হংকংবাসীদের প্রবল আপত্তি উড়িয়ে সম্প্রতি সেখানে জাতীয় নিরাপত্তা আইন বলবৎ করেছে চিন। ৩০ জুন ওই আইন চালুর সময়ে চিনা প্রশাসন দাবি করেছিল, নতুন আইন একান্তই দুষ্কৃতীরা ও অপরাধীদের কথা মাথায় রেখে চালু হয়েছে। কিন্তু শহরবাসীর অভিযোগ, আইন চালু হওয়ার পরে রাতারাতি শহরের ছবিটা বদলে গিয়েছে। স্বাধীন, স্বায়ত্তশাসিত হংকং শহরের প্রাণটাই যেন খাঁচায় আটকে ফেলেছে এই আইন। শহর জুড়ে রাজনৈতিক প্রতিবাদ, মিটিং-মিছিল নিষিদ্ধ হয়েছে। স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা রাজনৈতিক কোনও বিষয়ে অংশ নিতে পারছেন না। এমনকি গ্রন্থাগারে রাজনীতি বিষয়ক যে কোনও বই নেড়েচেড়ে দেখার সুযোগও হারিয়েছেন পাঠকেরা। সব সময়ে মানুষের উপরে নজরদারি চালাচ্ছে রাষ্ট্র। আইনি বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, নয়া আইনে স্পষ্ট করে এই ধরনের নির্দেশিকা ছিল না। তবে এ সবই নিরাপত্তার দাবিতে করা হচ্ছে বলে দাবি পুলিশ-প্রশাসনের।

নিজের শহরটাকে আর চিনতে পারছেন না হংকংবাসী সেরেনা-উইলিয়াম। ওঁদের জন্ম হংকংয়েই। ব্রিটেনে কখনও পা রাখেননি। তবু নিজের শহর ছেড়ে এ বার পাকাপাকি ভাবে ব্রিটেনে চলে যেতে চান মাইকেল ও সেরেনা। ওঁদের কাছে ব্রিটেনের অনাবাসী পাসপোর্ট রয়েছে। সম্প্রতি ব্রিটেন সরকার জানিয়েছে, অনাবাসী পাসপোর্টধারী (বিএনও) হংকংবাসীরা ৬ বছর সে দেশে থাকার পরে ব্রিটেনের নাগরিকত্ব পাবেন। এই ঘোষণার পরে হংকং ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই দম্পতি। ওঁরা জানালেন, মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। মেয়ে আগেই উচ্চশিক্ষার জন্য ব্রিটেনে যেতে চেয়েছিল। তখন শুধু মেয়েকে বিদেশে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু বর্তমানে বদলে যাওয়া পরিস্থিতি দেখে তাঁরা সিদ্ধান্ত বদলেছেন।

Advertisement

জাতীয় নিরাপত্তা আইনের বিরোধিতায় গত বছর থেকেই উত্তাল হংকং। সেরেনা জানান, চিনের একটি সংস্থায় কাজ করার কারণে প্রত্যক্ষ ভাবে কখনও বিক্ষোভে যোগ দেননি তিনি। কিন্তু একটি চিনা ব্যাঙ্কের কর্মী, তাঁর এক বন্ধু বিক্ষোভে যোগ দিয়ে সম্প্রতি চাকরি খুইয়েছেন। ক্ষুব্ধ সেরেনার জাবি, নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হারিয়েছে হংকংয়ের মানুষ। তাঁদের কিশোরী মেয়ের মনেও ছাপ ফেলেছে আইনের কড়াকড়ি।

সেরেনা-মাইকেলের মতো অনেকেই হংকং ছাড়ার কথা ভাবছেন। চিনের নয়া নীতির বিরোধিতা করে কানাডা, অস্ট্রেলিয়াও হংকংবাসীদের জন্য ভিসা সংক্রান্ত ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছে। অভিবাসন সংক্রান্ত নীতি নিয়ে সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে যে আমেরিকা, তারাও জানিয়েছে, হংকংবাসীদের থাকতে দেওয়ার বিষয়টি তারা ভেবে দেখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন