স্কুল খুললেও পড়ুয়া নেই কাশ্মীরে, বাহিনী বহালই

ইদ ও স্বাধীনতা দিবস নির্বিঘ্নে কেটে যেতেই উপত্যকায় ধীরে ধীরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। ধীরে ধীরে ফিরে আসতে শুরু করে ফোন সংযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৯ ০৩:১২
Share:

দু’শোটি স্কুল খুলল সোমবার। যদিও অধিকা‌ংশ স্কুলেই আসেনি পড়ুয়া। সুনসান ক্লাসরুম, ফাঁকা খেলার মাঠ। দিনভর স্কুল চত্বরেই দাঁড়িয়ে রইল সারি দেওয়া স্কুলবাস। ছবি:এএফপি।

কার্ফু উঠতেই যে-ভাবে শ্রীনগর-সহ উপত্যকার বিভিন্ন অংশে পাথর ছোড়া ও বিক্ষোভের খবর এসেছে, তাতে আজ নড়েচড়ে বসেছে নয়াদিল্লি। পরিস্থিতি মোটের উপরে স্বাভাবিক হলেও তাই মোতায়েন হওয়া বাড়তি আধাসেনা এখনই সরিয়ে দিতে চাইছে না কেন্দ্র।

Advertisement

ইদ ও স্বাধীনতা দিবস নির্বিঘ্নে কেটে যেতেই উপত্যকায় ধীরে ধীরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। ধীরে ধীরে ফিরে আসতে শুরু করে ফোন সংযোগ। আজ শ্রীনগরের ১৯৬টি প্রাথমিক স্কুল খুলেছিল। তবে কেবল বেমিনার ‘পুলিশ পাবলিক স্কুল’ ও কয়েকটি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে কয়েক জন পড়ুয়া এসেছিল। তারা অধিকাংশই সামরিক বাহিনীর কর্মীদের ছেলেমেয়ে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের কর্মীরাই। গোলমালের আশঙ্কায় ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাতে রাজি নন অধিকাংশ অভিভাবকই। শ্রীনগরের নাটিপোরার বাসিন্দা সাফিয়া তাজামুলের কথায়, ‘‘সরকার বাচ্চাদের জীবন বিপন্ন করে বোঝাতে চাইছে কাশ্মীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের বয়স ১২-এর নীচে। পথে গোলমাল হলে কে আমাদের খবর দেবে? কাশ্মীরে তো প্রায় সব যোগাযোগই বন্ধ।’’ শ্রীনগরের আর এক বাসিন্দা নাসির মিরের বক্তব্য, ‘‘সরকার চায় ইউনিফর্ম পরে স্কুলে যাওয়া পড়ুয়াদের ভিডিয়ো দেখাতে। স্কুল খোলার পরিস্থিতি হয়নি।’’

কিন্তু দুপুরের পর থেকে শ্রীনগরের বিভিন্ন অংশে পাথর ছোড়ার ঘটনা সামনে আসতে শুরু করে। নিরাপত্তাবাহিনীর পাশাপাশি নিশানা করা হয় যানবাহনকেও। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া পাথরে একাধিক গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। আহত হন অনেকে।

Advertisement

পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে তাই আজ দুপুরে দিল্লিতে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গোয়েন্দা প্রধান অরবিন্দ প্রধান। ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও। গত ৪ অগস্ট থেকে উপত্যকায় ঘাঁটি গেড়ে ছিলেন ডোভাল।

সূত্র জানিয়েছে, যে-ভাবে প্রথম দিনেই বিক্ষোভের খবর সামনে এসেছে, তাতে কোনও ঝুঁকি নেওয়ার পক্ষপাতী নয় কেন্দ্র। আশঙ্কা রয়েছে, যতই নিরাপত্তায় ঢিলে দেওয়া হবে, ততই পথে নামবে কাশ্মীরের যুবকেরা। সক্রিয় হবে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলি। তাই অন্তত গোটা অগস্ট মাস বাড়তি বাহিনী উপত্যকায় রাখার পক্ষপাতী কেন্দ্র।

গত ৪ অগস্ট থেকে অশান্তি এড়ানোর যুক্তি দেখিয়ে কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতাদের গৃহবন্দি করে প্রশাসন। এখনও বন্দিদশা থেকে মুক্তি পাননি ওই নেতারা। আটক নেতাদের মধ্যে শাহ ফয়সল দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছেন। তা নিয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।

জম্মু-কাশ্মীরের প্রিন্সিপ্যাল সচিব রোহিত কানসালের অবশ্য দাবি, কয়েক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে আরও বেশি সময়ের জন্য নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে। গত কয়েক দিনে দু’-তিনটি সংঘর্ষের কথা তিনি স্বীকার করেছেন। কিন্তু কানসালের দাবি, মাত্র দু’জন আহত হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন