COVId-19

মৃত্যুর নিরিখে ব্রিটেনকে টপকালেও আশা জাগাচ্ছে সংক্রমণ ও সুস্থ হওয়ার হার

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৮ লক্ষ ৩০ হাজার ৩৯১ জনের। যা করোনাকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২০ ১০:৪৯
Share:

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৬ হাজার ৯৯৯ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

গত কয়েক দিন ধরে আশা জাগিয়েও বৃহস্পতিবার একটু হলেও চিন্তা বাড়াল দৈনিক নতুন সংক্রমণ। অগস্টের শুরুক ক’দিন ৫২-৫৪ হাজারের গণ্ডিতে ঘোরাফেরার পর নতুন সংক্রমণ ৬০ হাজার ছাড়িয়েছিল। গত কয়েক দিন ৬০-৬২ হাজারের গণ্ডিতেই ঘোরাফেরা করেছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু আজ তা পৌঁছে গেল ৬৭ হাজারে। তবে দেশে করোনা পরীক্ষার সংখ্যাও অনেকটাই বেড়েছে শেষ তিন দিনে। সংক্রমণ হারও নয় শতাংশের নীচেই রয়েছে। সেই সঙ্গে আক্রান্ত রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার হার ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৬ হাজার ৯৯৯ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে, আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৫৫ হাজার ৮০৭ ও ৬৭ হাজার ৬০৫ জন। প্রায় ৬৭ হাজার বৃদ্ধির জেরে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ লক্ষ ৯৬ হাজার ৬৩৭ জন। সেখানে বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৫১ লক্ষ ৫৭ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৩১ লক্ষ ৬৪ হাজার।

প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। মঙ্গলবার থেকেই এই হার রয়েছে নয় শতাংশের কম। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণ হার ৮.০৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৮ লক্ষ ৩০ হাজার ৩৯১ জনের। যা করোনাকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। )

আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও শুরু থেকেই স্বস্তি দিয়ে আসছে। গত ক’দিনে রোজই ৫০ হাজারেও বেশি মানুষ সুস্থ হচ্ছেন। এখনও পর্যন্ত মোট ১৬ লক্ষ ৯৫ হাজার ৯৮২ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের ৭০.৭৭ শতাংশ সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৬ হাজার ৩৮৩ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

স্পেন, ফ্রান্স, ইটালিকে পিছনে ফেলেছিল আগেই। এ বার ব্রিটেনকে পিছনে ফেলে বিশ্বের চতুর্থ স্থানে উঠে এল ভারত। যদিও ভারতে মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৯৪২ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৪৭ হাজার ৩৩ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৮ হাজার ৬৫০ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত ৫ হাজার ২৭৮ জন ছাড়িয়েছে। দেশের রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা ৪ হাজার ১৫৩ জন।

জুলাই জুড়েই মৃত্যু বেড়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছিল কর্নাটক। সেখানে কোভিডের কারণে এখনও অবধি ৩ হাজার ৫১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাতে ২ হাজার ৭১৩ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। অন্ধ্রপ্রদেশ (২,২৯৬), উত্তরপ্রদেশ (২,২৩০) ও পশ্চিমবঙ্গে (২,২০৩) মৃতের সংখ্যা রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (১,০৪৮), রাজস্থান (৮২২), তেলঙ্গানা (৬৬৫), পঞ্জাব (৬৭৫), হরিয়ানা (৫০৩), জম্মু ও কাশ্মীর (৪৯৮), বিহার (৪১৬), ওড়িশা (৩০৫), ঝাড়খণ্ড (১৯৭), উত্তরাখণ্ড (১৪০) ও ছত্তীসগঢ় (১০৯)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

শুরু থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত ৫ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩১৩ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ৩ লক্ষ ১৪ হাজার ৫২০ জন। সংক্রমণ তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ২ লক্ষ ৫৪ হাজার ১৪৬ জন। সংক্রমণের নিরিখে চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ৪৯৪ জন। তবে জুলাই থেকেই রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। রাজধানীতে এখনও অবধি মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৪৮ হাজার ৫০৪ জন। উত্তরপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ২৩৮ জন। পশ্চিমবঙ্গে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৪ হাজার ৩২৬ জন।

বিহার (৯০,৩২১), তেলঙ্গানা (৮৬,৪৭৫), গুজরাত (৭৪,৩১৮), অসম (৬৮,৯৯৯), রাজস্থান (৫৬,১০০) ও ওড়িশাতে (৫০,৬৭২) আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে হরিয়ানা (৪৪,০২৪), মধ্যপ্রদেশ (৪১,৬০৪), কেরল (৩৮,১৪৪), জম্মু ও কাশ্মীর (২৬,৪১৩), পঞ্জাব (২৬,৯০৯), ঝাড়খণ্ড (১৯,৭৪৩), ছত্তীসগঢ় (১৩,৪৯৮) ও উত্তরাখণ্ড (১০,৮৮৬)-এর মতো রাজ্য। গোয়া, ত্রিপুরা, মণিপুর, হিমাচল প্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখনও দশ হাজারের কম।

পশ্চিমবঙ্গেও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে ২ হাজার ৯৩৬ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ৪ হাজার ৩২৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। করোনার কবলে রাজ্যে এখনও অবধি মোট প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ২০৩ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন