National News

প্রতিবাদের মধ্যেই চুক্তি সই জাইরের

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টকে ভারতে আমন্ত্রণ করার পরেই এ দেশের বিভিন্ন শিবির থেকে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৪৩
Share:

অতিথি: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

ছাত্র, কৃষক, পরিবেশবিদ এবং মহিলাদের দেশজোড়া প্রতিবাদের মধ্যেই আজ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শক্তি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা-র মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে দু’দেশের মধ্যে সই হল ১৫টি চুক্তি। আগামিকাল প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি হিসেবে দিল্লির রাজপথে থাকবেন বোলসোনারো।

Advertisement

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টকে ভারতে আমন্ত্রণ করার পরেই এ দেশের বিভিন্ন শিবির থেকে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। বাম নেতৃত্বের পাশাপাশি বহু সমাজকর্মী, পরিবেশবিদ বোলসোনারোর ভারতে আসার বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখছেন না। আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানায় বামপন্থী কৃষক, ছাত্র ও মহিলা সংগঠন। দিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসে সারা ভারত কৃষক সভা, সর্বভারতীয় গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি, এসএফআই, সর্বভারতীয় আখচাষি সমিতি। আমাজন বৃষ্টিবনানীতে দাবানল চলাকালীন নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ উঠেছে বোলসোনারোর বিরুদ্ধে। তখন গোটা বিশ্বের কাছে নিন্দিত হন তিনি। গত বছর বোলসোনারোর নেতৃত্বে ব্রাজিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল। ব্রাজিলের দাবি ছিল, ভারত অনুমোদিত সীমা ছাড়িয়ে আখচাষিদের সহায়তা করছে। আজ প্রতিবাদী কৃষকেরা জানান, বোলসোনারোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের অপমান করা হয়েছে। কারণ বোলসোনারো এমন পদক্ষেপ করতে চান, যা তাঁদের জীবিকার জন্য বিপজ্জনক। কী ভাবে বোলসোনারোর নীতি মুষ্টিমেয় শিল্পপতির সুবিধা করে দিচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দিয়ে এসএফআই-এর সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, ‘‘যাকে বিশ্বের ফুসফুস বলা হয়, সেই আমাজনে আগুন ধরার সময় বোলসোনারো কী করছিলেন, তা আমাদের ভাবা উচিত। আমাজনের জল-জমি-জঙ্গল খুলে দেওয়া হয়েছে কর্পোরেটদের জন্য। মোদীও এ দেশে কর্পোরেটদের জন্য সেটাই করছেন।’’

জবাবে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, একটি গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের ভোটে জিতে আসা নেতা বোলসোনারো। ব্রাজিলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ককে এ বার বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে সফল করাটা নয়াদিল্লির অগ্রাধিকার। আজ সেই লক্ষ্যেই পদক্ষেপ করা হয়েছে। মোদী বলেন, ‘‘ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের ভারত সফর দু’টি দেশের সম্পর্কে এক নতুন অধ্যায় গড়ল। ভৌগোলিক দূরত্ব সত্ত্বেও বহু আন্তর্জাতিক বিষয়ে ভারত এবং ব্রাজিলের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। প্রতিরক্ষা এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতাকে জোরদার করতে নতুন নতুন রাস্তা খোঁজা আমাদের লক্ষ্য।’’ তার আগে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গেও বৈঠক করেন বোলসোনারো। তাঁর টুইট, ‘‘এই সফর দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নতুন দরজা খুলল।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: ঘৃণার রাজনীতি রুখলেই শহুরে নকশাল: রাহুল

দু’দেশ আজ যে চুক্তিগুলিতে সই করেছে, তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো সংক্রান্ত চুক্তি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমারের বক্তব্য, ‘‘২০২২-এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ১৫০০ কোটি ডলার।’’ ২০১৮-১৯-এ যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৮ হাজার ২০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক লাফে এই বাণিজ্যকে প্রায় দ্বিগুন করাটাই লক্ষ্য দু’দেশের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন