গুয়াহাটি আইআইটি-র ২২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় ধোতরে। ছবি পিটিআই।
উত্তর-পূর্বে বন্যা, ধস, ভূমিক্ষয়ের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য গুয়াহাটি আইআইটি-তে ‘সেন্টার ফর ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিস্ক রিডাকশন’ গড়ে তোলার আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর ওই প্রতিষ্ঠানেই জল ও নদীবিদ্যা সংক্রান্ত গবেষণাকেন্দ্র স্থাপনের জন্য তাঁকে অনুরোধ জানালেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।
আজ গুয়াহাটি আইআইটি-র ২২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান হল। ১৮০৩ জন স্নাতক ও প্রায় তিনশো গবেষক এ দিন শংসাপত্র পেলেন। দিল্লি থেকে সেই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় ধোতরে।
আইআইটি গুয়াহাটি করোনা মোকাবিলায় সাহায্যকারী ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়া, আরএনএ এক্সট্র্যাকশন কিট, আরটি-পিসিআর কিট তৈরি ও সুলভ মূল্যে বিপণন করেছে। এই প্রসঙ্গ তুলে মোদী বলেন, “সঙ্কটকালে শুধু নিজেদের গবেষণা বজায় রাখাই নয়, সমাজের জন্যেও একের পর এক উপকরণ উদ্ভাবন করে চলেছেন এখানকার গবেষকেরা। যাঁরা আজ পিএইডির শংসাপত্র পেলেন তাঁদের কাছে এই গবেষণা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলতে হবে। সমাজ ও দেশকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতে তাঁদের গবেষণাই আমাদের পথ দেখাবে।’’
প্রধানমন্ত্রী আইআইটিকে কেন্দ্র করে ‘সেন্টার ফর ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেম’ গড়ার কথাও বলেন। গবেষকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “অ্যাক্ট ইস্ট নীতির প্রাণকেন্দ্রে এত দিন কাটানোর ফলে আপনারা উত্তর-পূর্বের সমস্যা ও অপার সম্ভাবনা বুঝেছেন। এখানে বিদ্যুৎ তৈরি, বায়ো মাস, চা ও বাঁশ শিল্পের প্রভূত সম্ভাবনা। সেই সঙ্গে আছে জীব বৈচিত্র্য, সমৃদ্ধ বাস্তুতন্ত্র ও পরম্পরাগত জ্ঞান। সেই সব আপনাদের বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও প্রযুক্তির সঙ্গে মিশে এক নতুন সম্ভাবনার জন্ম দিতে পারে।”
এই প্রসঙ্গেই আইআইটিতে ‘উত্তর-পূর্ব সেন্টার ফর ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিস্ক রিডাকশন’ তৈরির কথা বলেন মোদী। যা এখানকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় সামলাবে, প্রাকৃতিক সম্পদ ও অতিরিক্ত শক্তিকে কাজে লাগাবে।
এই অনুষ্ঠানে মোদী সরকারের বহু সমালোচিত জাতীয় শিক্ষানীতির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার দিগন্ত খুলে দেবে নতুন শিক্ষানীতি। জাতীয় শিক্ষা প্রযুক্তি ফোরাম ও জাতীয় রিসার্চ ফাউন্ডেশন গড়া হচ্ছে। দেশের শিক্ষা ক্ষেত্র উন্মুক্ত করে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এ দেশে খোলা, আবার দেশের প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস বিদেশে খোলার ব্যবস্থাও হচ্ছে। গবেষণা ও ছাত্র বিনিময়ে হাত মেলানো হবে বিশ্বের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে। এই সব ক্ষেত্রে আজকের সমাবর্তনে সার্টিফিকেট পাওয়া গবেষকদের এবং আইআইটির মতো প্রতিষ্ঠানের বড় ভূমিকা থাকবে।
অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখানে পাঠ শেষ করা অনেকেই এ বার ফিরে যাবেন। কিন্তু আমি জানাচ্ছি, যাঁরা অসমে থাকতে চান, এখানে আপনাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে স্টার্ট আপ করতে চান, তাঁদের সম্পূর্ণ সাহায্য দেবে রাজ্য সরকার।” রাজ্যে বন্যা সমস্যা মোকাবিলায় আইআইটি গুয়াহাটিতে নদী ও জল বিষয়ক গবেষণা ও উচ্চশিক্ষাকেন্দ্র গঠনের আর্জিও জানান মুখ্যমন্ত্রী।