Vikas Dubey

‘গাড়ি না ওল্টালে গদি উল্টে যেত’, দুবে কাণ্ডেও নিশানা ‘এনকাউন্টার রাজ’

বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশে বিকাশ দুবের নাগাল পায় পুলিশ। এ দিন কানপুর নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের সঙ্গে ‘সংঘর্ষে’ তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ১৩:০৫
Share:

বিকাশ দুবের এনকাউন্টার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।

আদৌ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধেছিল, নাকি পরিকল্পনামাফিক সরিয়ে দেওয়া হল তাকে? কুখ্যাত গ্যাংস্টার বিকাশ দুবের এনকাউন্টার নিয়ে বিরোধী শিবির থেকে এ বার এমনই প্রশ্ন উঠতে শুরু করল।
কনভয়ের গাড়ি উল্টে যাওয়া সংক্রান্ত পুলিশের দাবি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির (এসপি) নেতা অখিলেশ যাদব। টুইটারে তিনি যোগী সরকারকে নিশানা করে লেখেন, ‘‘আসলে গাড়ি ওল্টায়নি। রহস্য ফাঁস হয়ে গেলে সরকার উল্টে যেত। সেটা ঠেকানো গিয়েছে।’’

পরিকল্পনা মাফিক এনকাউন্টার ঘটানো হয়েছে কি না সরাসরি, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে গোটা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত বলে দাবি করেছেন রাজ্যের আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কানপুর পুলিশ হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি, বিকাশ দুবের গাড়ি উল্টে যাওয়া এবং পুলিশের হাতে তার মৃত্যু, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে সমস্ত ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’’

Advertisement

অখিলেশ যাদবের টুট।

মায়াবতীর টুইট।

Advertisement

আরও পড়ুন: কানপুরের কাছে গাড়ি দুর্ঘটনা, পালাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ‘সংঘর্ষে’ নিহত গ্যাংস্টার বিকাশ দুবে​

কানপুর হত্যাকাণ্ড থেকে বিকাশ দুবের গ্রেফতারি, গোপনে কারা তাকে সহযোগিতা জুগিয়ে আসছিল, সেব সবের সিবিআই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে গত কয়েক দিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। এ দিন টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘অপরাধী না হয় শেষ হয়ে গেল, কিন্তু অপরাধীকে যারা নিরাপত্তা দিয়ে আসছিল, তাদের কী হবে?’’

প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর টুইট।

বিকাশ দুবে যে কানপুর পৌঁছতে পারবে না, আগে থেকেই অনেকে এমন আশঙ্কা করেছিলেন এবং শেষমেশ তা-ই হল বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালাও। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘এনকাউন্টারে মৃত্যু বিকাশ দুবের। এমনটা যে হতে চলেছে, আগে থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। কিন্তু কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরাই। ১) যদি পালাতেই হতো, তাহলে উজ্জয়িনীতে ধরা দিল কেন? ২) অপরাধী এমন কী জানত, যা প্রকাশ্যে এলে শাসকের চেহারাটা সামনে চলে আসত? ৩) অপরাধীর গত ১০ দিনের কল রেকর্ডসই বা প্রকাশ করা হল না কেন?’’

বিকাশের কল রেকর্ডস কেন সামনে আনা হল না, প্রশ্ন তুলেছেন সুরজেওয়ালা।

বিকাশ দুবের এনকাউন্টার নিয়ে টুইটারে প্রশ্ন তুলেছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। তাঁর কথায়, ‘‘বিচার করা আদালতের কাজ। পুলিশের কাজ অভিযুক্তকে আদালতে পৌঁছে দেওয়া। দেখে তাজ্জব হচ্ছি যে, বিজেপি শাসিত ভারতে দু’টোর ভূমিকা বদলে গিয়েছে।’’ মহুয়া আরও লেখেন, ‘‘যোগীজির এনকাউন্টার রাজে যদি কারও মৃত্যু হয়ে থাকে, সেটা ন্যায় বিচারের।’’

মহুয়া মৈত্রের টুইট।

কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ টুইটারে লেখেন, ‘‘যা আশঙ্কা করছিলাম, তাই হলো। কোন কোন নেতার সঙ্গে বিকাশ দুবের যোগসাজশ ছিল, পুলিশ এবং আমলাদের সঙ্গে ওর কী সম্পর্ক ছিল, তা আর সামনে আসবে না। গত ৩-৪ দিনে বিকাশ দুবের আন্য দুই সঙ্গীরও এনকাউন্টার হয়েছে। কিন্তু প্রত্যেকের এনকাউন্টারের ধরন এক রকমের কেন?’’

দিগ্বিজয় সিংহের টুইট।

বেশ কয়েক দিন পালিয়ে বেড়ানোর পর বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশে বিকাশ দুবের নাগাল পায় পুলিশ। তবে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে, নাকি সে নিজে থেকে ধরা দেয়, তা নিয়ে বিতর্ক চলছিলই। তার মধ্যেই শুক্রবার সকালে তাকে নিয়ে কানপুরের উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশের তিনটি গাড়ির কনভয়।

আরও পড়ুন: জাতপাত আর রাজনীতির মিশেলেই উত্থান বিকাশের​

কানপুর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে যখন গাড়িটি পৌঁছয়, সেইসময় বৃষ্টিভেজা রাস্তায় বিকাশের গাড়িটি উল্টে যায় বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের দাবি, গাড়ি উল্টে গেলে পুলিশের কাছ থেকে পিস্তল ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করে বিকাশ। আত্মসমর্পণ করতে বললে গুলি চালায় সে। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। তাতেই জখম হয় সে। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় তার।

কিন্তু পুলিশের এই দাবিকেই উড়িয়ে দিয়েছেন বিরোধী নেতারা। কনভয়ের তিনটি গাড়ির মধ্যে বেছে বেছে বিকাশের গাড়িটিই কী ভাবে উল্টে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এমনকি যোগী সরকারের আমলে বারবার এই ধরনের এনকাউন্টারের ঘটনা নিয়েও সরব হয়েছেন তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন