Biplab Kumar Deb

দলেই বিপ্লবের মুখে বিপ্লব, নালিশ জানাতে দিল্লি দরবারে সুদীপ

বিক্ষুব্ধরা নিজেদের বক্তব্য জানাতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ও সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষের সঙ্গে দেখা করতে সময় চেয়েছেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২০ ১১:১৮
Share:

সুদীপ রায় বর্মন এবং বিপ্লব কুমার দেব।— ফাইল ছবি

নিজের দলেই ‘বিপ্লব’-এর মুখোমুখি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক নালিশ নিয়ে দিল্লি পৌঁছেছেন বিজেপির ডজন খানেক বিধায়ক। যাঁদের নেতৃত্বে রয়েছেন ত্রিপুরার গেরুয়া শিবিরে বিপ্লবের প্রতিদ্বন্দ্বী সুদীপ রায় বর্মন। বিপ্লবের বিরুদ্ধে ‘দুর্বল নেতৃত্ব’ এবং ‘অপশাসন’-এর অভিযোগ তুলেছেন ‘বিক্ষুব্ধ’-রা।

Advertisement

সুদীপদের বিদ্রোহে ত্রিপুরায় হোঁচট খেয়েছে ‘পরিবর্তন’-এর সরকার। এই পরিস্থিতি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কপালেও ভাঁজ ফেলেছে। বিক্ষুব্ধরা নিজেদের বক্তব্য জানানোর জন্য দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা ও সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষের সঙ্গে দেখা করার সময়ও চেয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁদের প্রতিবাদ তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টাও চালাচ্ছেন।

সুদীপের কথায়, ‘‘আমরা প্রায় ১২ জন বিধায়ক মিলে ঠিক করেছি দলের শীর্ষনেতৃত্বকে মুখ্যমন্ত্রীর দুর্বল প্রশাসন ও স্বৈরাচারিতার কথা জানাব। ইতিমধ্যেই নানা রকম উল্টোপাল্টা মন্তব্য করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন তিনি।’’ সুদীপের অভিযোগ, ‘‘বিপ্লবের জন্যই ত্রিপুরাতে বিজেপির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ছে। আর সেই সুযোগ নিয়েই হারানো জমি ফিরে পেতে ময়দানে নেমে পড়েছে বাম ও কংগ্রেস।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর স্বেচ্ছাচারিতার জন্যই অভিজ্ঞ আইএএস এবং আইপিএস অফিসাররা রাজ্য ছেড়ে দিচ্ছেন বা স্বেচ্ছাবসর নিতে চাইছেন। বিরুদ্ধে কথা বললে সংবাদমাধ্যমকেও হুমকি দেন তিনি।’’ দলের অধিকাংশ বিধায়কই নেতৃত্বের পরিবর্তন চান বলে দাবি করেছেন সুদীপ। তবে তিনি নিজে যে বিজেপির উপরেই আস্থা রাখছেন, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস ও তৃণমূল ঘুরে বিজেপিতে নাম লেখানো সুদীপ।

Advertisement

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৬৬ হাজার, সক্রিয় রোগী কমে ৮.৬১ লক্ষ

সুদীপের বিদ্রোহ নিয়ে বিপ্লবের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত মেলেনি। কিন্তু ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর এক ঘনিষ্ঠের কথায়, ‘‘মাত্র ৮ জন বিধায়ক বিপ্লব দেবের সরকারি কাজকর্মের মসৃণ গতিতে বাধা তৈরি করতে চাইছেন। যাঁরা এ সব করছেন তাঁরা বেশিরভাগই কংগ্রেস থেকে আসা।’’ তাঁর দাবি, বিজেপির নেতা এবং কর্মীদের বেশিরভাগই বিপ্লবের নেতৃত্বেই ভরসা রাখছেন।

আরও পড়ুন: চাষির ভাল চাই বলেই রাগ: মোদী ॥ হাথরসে চুপ কেন, প্রশ্ন বিরোধীদের

ত্রিপুরায় বিপ্লব-সুদীপের দ্বন্দ্বের এই বিস্ফোরণ রাজনৈতিক মহলের কাছে নতুন ঘটনা নয়। দীর্ঘদিন ধরেই দু’পক্ষের মধ্যে ফাটল ক্রমশ চওড়া হচ্ছিল। গত লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বিপ্লবের সরকারের বিরুদ্ধে বার বার সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে সুদীপের গলায়। এ জন্য তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়েও দেন বিপ্লব। সেই পদক্ষেপে যেন আগুনে ঘি পড়ে। বিপ্লবের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়াতে থাকেন সুদীপ। ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের দুই স্তম্ভের মধ্যে দ্বন্দ্ব এমন পর্যায়ে পৌঁছয়, যে চলতি বছরের শুরুতেই আগরতলায় ‘নারীনির্যাতন বিরোধী’ মিছিলের ডাক দেন সুদীপ। তিনি জানিয়েছিলেন, ওই মিছিল ‘অরাজনৈতিক’। কিন্তু ওই কর্মসূচি করে তিনি যে কাকে নিশানা করছেন, তা বুঝতে বাকি ছিল না রাজনৈতিক মহলের। দিল্লির দরবারে বিপ্লব-সুদীপ দীর্ঘ দ্বন্দ্বের সমাধান এখন কোন পথে হয়, আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন