Biplab Kumar Deb

‘একা’! বিপ্লবের গদি কি টলছে 

উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দ্বায়িত্বে থাকা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অজয় জাম্বোয়াল ত্রিপুরাতে আসেন। তিনি এসে সব মন্ত্রী-বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু ক্ষোভের আঁচ তাতে কমেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদাতা

আগরতলা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২০ ০৫:১২
Share:

—ফাইল চিত্র।

দিল্লিতে গিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তাঁর অপসারণের দাবি জানিয়ে এসেছেন রাজ্যের বিজেপি বিধায়ক ও নেতারা। ফিরে এসে তাঁরা দাবি করেছেন, সফর সফল হয়েছে। দলের এক বিধায়কের এখন দাবি, বিজেপির ৩৬ জন বিধায়কের মধ্যে ২৯ জনই এখন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে বিপ্লব কখনও বলছেন, “ত্রিপুরার আমার চেয়ে একা কেউ নেই।”

Advertisement

কখনও বলছেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রী থাকি আর না-থাকি, যত দিন বেঁচে থাকব, তত দিন রাজ্যে এবং কেন্দ্রে জনকল্যাণমুখী বিজেপি সরকারই থাকবে। ত্রিপুরায় উন্নয়নের গতিও অব্যাহত থাকবে।” তবে কি বিপ্লব মনে করছেন, তাঁর গদি টলমল! তিনি কি টের পেয়ে গিয়েছেন, দিল্লি কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে! সে জন্যই কি এখন এই ধরনের ভাষণ দিচ্ছেন? বিরোধী দলগুলি ওর দলের বিক্ষুব্ধরা এমনটাই মনে করছেন।

সিপিএমের পশ্চিম জেলা সম্পাদক পবিত্র করের বক্তব্য, তিন মাস আগে বিপ্লব দেব দাবি করেছিলেন দল এবং তিনি আজীবন মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। আর এখন বলছেন তিনি না-থাকলেও দল ক্ষমতায় থাকবে। আমরা আগেই বিপ্লবের ভাষণের প্রতিবাদে বলেছিলাম, স্বৈরাচারী হয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। এখন তো তাঁর দলের বিধায়করাই তাঁর স্বৈরাচারী মনোভাবের বিরুদ্ধে সরব। কংগ্রেসের সহসভাপতি তাপস দে বলেন, “মানুষ যখন যাওয়ার আগে সকলের কাছ থেকে বিদায় নেয়, তখন সহানুভুতি পাওয়ার জন্য নানা আচরণ করে। বিপ্লব দেব সেই রকম আচরণ করছেন শেষ বেলায়।”

Advertisement

আরও পড়ুন: রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণের কথা মেনে নিলেন হর্ষ বর্ধন​

রাজ্যের বিজেপি নেতা-বিধায়কদের কয়েক জন সম্প্রতি দিল্লিতে গিয়ে দলের সভাপতি জে পি নড্ডা, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহদের সঙ্গে দেখা করেছেন। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রণজয়কুমার দেবের নেতৃত্বাধীন আর একটি দল দেখা করেন সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহের সঙ্গে। সেখানে বিপ্লবের রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতা এবং প্রশাসনিক কাজকর্মে অনীহা নিয়ে ক্ষোভ জানায় দলটি। এর পরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দ্বায়িত্বে থাকা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অজয় জাম্বোয়াল ত্রিপুরাতে আসেন। তিনি এসে সব মন্ত্রী-বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু ক্ষোভের আঁচ তাতে কমেনি।

বিজেপির এক বিধায়ক রবিবার বলেন, “আমরা সবাই দিল্লি থেকে ফিরে বলেছিলাম দিল্লি সফর সফল হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সকলের কথাই মন দিয়ে শুনেছেন। দলের স্বার্থেই আমরা সাহস করে দিল্লিতে গিয়েছিলাম। আমাদের দাবি ছিল, দলকে শক্তিশালী করতে হলে স্বৈরাচারী এবং একনায়কতন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে সরাতে হবে। তাঁর জন্যই দল এবং সংগঠন নড়বড়ে অবস্থায় এসে ঠেকেছে। বিজেপির ৩৬ বিধায়কের মধ্যে ২৯ জনই তাঁর বিরুদ্ধে। এ বার দিল্লি যে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে, মুখ্যমন্ত্রী সেটা বুঝে গিয়েছেন। তিনি যে এত দিন রাজ্যে বিধায়ক এবং অন্য কার্যকর্তাদের সঙ্গে অন্যায় করছেন, সেটাও তিনি এখন উপলব্ধি করতে পারছেন। বিজেপিতে ওঁর উপরেও লোক রয়েছেন। রাজ্যের জনগণ যে ক্ষমা করবেন না, এটা তিনিও জানেন। তাই কিছু দিন আগে এক অনুষ্ঠানে বলছেন, ত্রিপুরায় নাকি তাঁর চেয়ে একা কেউ নয়।” দিল্লি ফেরত আর এক বিধায়কের ব্যাখ্যা, “মানুষের সহানুভূতি কুড়োতেই এখন এ সব বলছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন