যৌনদাসী করে রেখে লাগাতার ধর্ষণ ও মারধর, জানিয়েছিলেন নির্যাতিতাই

এই শিবম আর তার এক ভাই শুভমের বিরুদ্ধে মার্চে গণধর্ষণের অভিযোগ আনেন নির্যাতিতা। পরশু ওই দু’জনের সঙ্গে আরও তিন জন গিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

উন্নাও শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে গেলে আবার ধর্ষণ করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ধর্ষণের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে দেওয়া হবে বলেও ভয় দেখানো হয়েছিল। সারাক্ষণ রাখা হত নজরে। কিন্তু সাহস জুগিয়ে এক সময়ে পুলিশের কাছে পৌঁছেছিলেন তরুণী। সেটা অবশ্য ধর্ষকের সঙ্গে তাঁর বিয়ের পরে। চলতি বছর মার্চে পর পর দু’দিন দু’টি এফআইআর দায়ের করেছিলেন তিনি। একটা উন্নাওয়ে। অন্যটি রায়বরেলীতে। সেখানকার আদালতে যাওয়ার পথেই গত বৃহস্পতিবার ভোরে পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এফআইআর অনুযায়ী, উন্নাওয়ের সেই নির্যাতিতা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ঘরের মধ্যে আটকে তাঁকে কার্যত যৌনদাসী করে রেখেছিল তাঁরই স্বামী শিবম ত্রিবেদী।

Advertisement

এই শিবম আর তার এক ভাই শুভমের বিরুদ্ধে মার্চে গণধর্ষণের অভিযোগ আনেন নির্যাতিতা। পরশু ওই দু’জনের সঙ্গে আরও তিন জন গিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। গত রাতে মারা গিয়েছেন তেইশ বছরের তরুণী। কিন্তু যাওয়ার আগে নির্যাতনের প্রতিটি বর্ণনা পুলিশের কাছে দিয়ে গিয়েছেন তিনি। পাঁচ জনই এখন বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে।

বিয়ের প্রতিশ্রুতি পেয়ে প্রেমিকের সঙ্গে গ্রাম ছেড়েছিলেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতা। অনেক টালবাহানার পরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তাঁকে বিয়ে করে শিবম। কিন্তু শিবমের বাড়ির লোক সেই সম্পর্ক না মেনে নেওয়ায় এক মাসের মাথায় ফের নিজের বাড়িতে ফিরে যান তরুণী। তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, মাঝের সময়টায় বিভিন্ন শহর পাল্টে পাল্টে তাঁকে ভাড়া বাড়িতে নিয়ে গিয়ে উঠত শিবম। কথা না শুনলেই চলত মারধর আর যৌন নির্যাতন। তরুণী যাতে পালাতে না-পারেন, তার জন্য তাঁকে কড়া নজরদারিতে রাখা হত। বিয়ের পরেও তাঁকে একাধিক বার ধর্ষণ করা হয়। হুমকির হাত থেকে বাঁচতে একটা সময়ে তরুণী পালিয়ে রায়বরেলীর এক আত্মীয়ার বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখানকার ঠিকানা জোগাড় করে শিবম রায়বরেলী গিয়ে নির্যাতিতাকে ফিরিয়ে আনে। এফআইআর-এ তরুণী জানিয়েছিলেন, ফেরার পথে ফাঁকা মাঠে তাঁকে গণধর্ষণ করে শিবম ও তার এক ভাই শুভম। পুলিশের কাছে গেলে শুধু তাঁকেই নয়, তরুণীর পরিবারকেও শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিত শিবম ও শুভম।

Advertisement

মার্চে এফআইআর দায়ের হওয়ার পরে গত সেপ্টেম্বরে গ্রেফতার করা হয় শিবমকে। পুলিশ আর এক অভিযুক্ত শুভমকে খুঁজে পায়নি। গত নভেম্বরে জামিনের আর্জি জানায় শিবম। আদালত তাকে যে যে শর্তে জামিন দেয়, তার মধ্যে অন্যতম ছিল, কোনও ভাবেই নির্যাতিতাকে প্রভাবিত করতে পারবে না সে। তথ্য প্রমাণ নষ্টেরও চেষ্টা করবে না। কিন্তু তার পরেও সেই সব শর্ত লঙ্ঘন করে দিনের পর দিন ওই তরুণীকে হুমকি দিয়ে গিয়েছে অভিযুক্ত শিবম ও তার পরিবার। কোনও মতেই যাতে ওই নির্যাতিতা রায়বরেলীর আদালতে পৌঁছতে না-পারেন, তার জন্য দলবল নিয়ে তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে দিতেও দ্বিধা করেনি সে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন