Ahmed Patel

আহমেদের জায়গায় কে

শুধু বিক্ষুব্ধদের বোঝানো নয়, আহমেদের প্রয়াণের পরে ছ’বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব এখন কে নেবেন, তা নিয়ে দলের শীর্ষ স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২০ ০৫:০৫
Share:

আহমেদ পটেল।ছবি: পিটিআই।

দলের হালচাল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ২৩ জন কংগ্রেস নেতা সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লেখার পরে আহমেদ পটেলের উপরে এই বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বলার দায়িত্ব পড়েছিল। আহমেদের কাজ ছিল, কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচন ও সংগঠনকে চাঙ্গা করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া।

Advertisement

এখন আহমেদের মৃত্যুর পরে কংগ্রেস নেতারা বলছেন, সনিয়া গাঁধীর বিশ্বস্ত ‘কমরেড’-এর শেষ দায়িত্ব অসম্পূর্ণই রয়ে গেল। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক নেতার কথায়, ‘‘আহমেদভাইয়ের কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ার প্রমাণ হল, বিহারের ভোটে কংগ্রেসের খারাপ ফলের পরে গুলাম নবি আজাদ ও কপিল সিব্বলের মতো বিক্ষুব্ধ নেতারা ফের কংগ্রেসের নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।’’

শুধু বিক্ষুব্ধদের বোঝানো নয়, আহমেদের প্রয়াণের পরে ছ’বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব এখন কে নেবেন, তা নিয়ে দলের শীর্ষ স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে। সনিয়ার রাজনৈতিক সচিব হিসেবে আহমেদ কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যোগাযোগ রক্ষা করতেন। কংগ্রেসের ব্যর্থতার দায় কোনও দিনই সরাসরি সনিয়ার দিকে আসতে দেননি। ভবিষ্যতে সনিয়া-উত্তর জমানায় রাহুল গাঁধীর হয়ে সেই কাজটি কে করবেন? এআইসিসি-র নেতারা মনে করছেন, রণদীপ সুরজেওয়ালা বা কে সি বেণুগোপালের মতো রাহুলের অধুনা আস্থাভাজনদের কারও আহমেদের মতো অভিজ্ঞতা বা যোগাযোগ নেই। তাই প্রবীণদের মধ্যেই কাউকে এই দায়িত্ব দিতে হবে।

Advertisement

শুক্রবার আহমেদ পটেল ও তরুণ গগৈর মৃত্যুর শোকজ্ঞাপনে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। সনিয়া গোয়া থেকে বৈঠকে যোগ দেন। ওয়ার্কিং কমিটির শোকপ্রস্তাবে বলা হয়েছে, “একে অন্যকে টেক্কা দিতে চাওয়া, দলের উচ্চকাঙ্ক্ষী নেতাদের মধ্যে বিবাদ মিটিয়ে ঐক্য গড়ে তুলতে আহমেদের ক্ষমতা ছিল অতুলনীয়।”

যদিও ওয়ার্কিং কমিটির এক নবীন নেতা বলেন, “কংগ্রেস দশ বছর কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকলেও সংগঠন মজবুত হয়নি। তার আংশিক দায় আহমেদভাইয়েরও।” একই সঙ্গে ওই নেতা এ-ও উল্লেখ করেন যে, মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের বেনজির জোট গড়ে তোলার জন্য আহমেদ দিনের পর দিন মুম্বইয়ে পড়ে ছিলেন। একই ভাবে, প্রবীণ অশোক গহলৌতের বিরুদ্ধে সচিন পাইলটের বিদ্রোহের পর এই আহমেদের কাছেই সচিন তাঁর যাবতীয় নালিশ জানিয়েছিলেন।”

২০১৭-য় রাহুল সভাপতি হওয়ার পর থেকেই আহমেদ দিল্লির বদলে গুজরাতে বেশি সময় কাটাতে শুরু করেন। কারণ, রাহুলের সঙ্গে দূরত্ব। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের সিন্দুক প্রায় খালি দেখে রাহুল কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেন আহমেদকেই। এআইসিসি-র এক নেতা বলেন, “রাহুল প্রথমে মহারাষ্ট্রে জোটের পক্ষে ছিলেন না। সচিনের ক্ষেত্রেও কড়া মনোভাব নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দু’বারই তাঁকে আহমেদভাইয়ের পরামর্শ মেনে নিতে হয়। এ বার রাহুলের মন্ত্রণাদাতা কে হয়ে উঠবেন, সেটাই দেখার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন