হিরোশিমা শুনছ? তোমার জন্য গভীর অনুশোচনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট!

পাপ তো বটেই। প্রায়শ্চিত্তও নয় কি? ৭১ বছর আগে আর পরে। হিরোশিমায় গিয়ে গভীর অনুশোচনায় নতজানু মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৬ ১৮:৩০
Share:

হিরোশিমায় জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নতজানু মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

পাপ তো বটেই। প্রায়শ্চিত্তও নয় কি?

Advertisement

৭১ বছর আগে আর পরে।

সে বারও বদলে গিয়েছিল ইতিহাস। ধ্বংসের পর। ধ্বজা উড়েছিল মার্কিন জাত্যভিমানের।

Advertisement

এ বারও ইতিহাস অন্য ভাবে লিখতে হবে, কারণ, এই প্রথম কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট গেলেন হিরোশিমায়। সেই হিরোশিমায়, তাঁর দেশের বানানো প্রথম পরমাণু বোমার সফল পরীক্ষার জন্য যে জায়গাটিকে বেছে নিয়েছিলেন তদানীন্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার।

সম্ভবত, ইতিহাসের মোড় ঘোরার ইঙ্গিত দিয়েই হিরোশিমায় শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বললেন, ‘’৭১ বছর আগে ধ্বংসটা আকাশ থেকে ঝরে পড়েছিল। আর তার পর ইতিহাসটা একেবারেই অন্য ভাবে লেখা হয়েছিল।’’

শ্রদ্ধা জানাতে ফুল দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার পর ফুল দিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিন্‌জো অ্যাবে। আর তার পরেই বেশ কিছু ক্ষণ মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে থাকলেন ওবামা। রইলেন চোখ বুঁজে। তাঁর পূর্বসূরীর কোনও ভুলের কথা কি মনে পড়ছিল তাঁর?

প্রায়শ্চিত্ত কি, কোনও গভীর অনুশোচনায়?

১৯৪৫-এর ৬ আর ৯ অগস্ট। জাপানের দু’টি শহর- হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ‘লিটল বয়’ আর ‘ফ্যাট ম্যান’ নামে দু’টি পরমাণু বোমা ফেলেছিল আমেরিকা। ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল শহর দু’টি। মারা গিয়েছিলেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। আর ওই ঘটনার জেরে কয়েক দশক ধরে ওই দু’টি শহরে বংশানুক্রমে পঙ্গু ও অন্ধ হয়েছেন আরও কয়েক লক্ষ মানুষ।

আরও পড়ুন- ‘ভাল জঙ্গি’ বলে কিছু নেই, বার্তা রাষ্ট্রপতির

হিরোশিমার মাটিতে দাঁড়িয়ে সেই অনুশোচনার সুরই তো শোনা গেল মার্কিন প্রেসিডেন্টের গলায়। ওবামা বললেন, ‘’৭১ বছর আগে আমরা জেনেছিলাম, আমাদের হাতেও এমন অস্ত্র রয়েছে, যা দিয়ে আমরা আমাদের পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে পারি। কেন হিরোশিমার এই জায়গাটায় আমরা ফিরে ফিরে আসি? আসি- ধ্বংসের সেই শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শক্তি জোগাতে। যাঁরা সেই ধ্বংসে হারিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের স্মরণ করতে। তাঁদের আত্মা আমাদের বলে, নিজেদের দেখো। নিজেদের খুঁড়ে খুঁড়ে দেখো। বিবেককে প্রশ্ন করতে বলে, আমরা কী করেছিলাম? তাই আমরা এই জায়গাটায় ফিরে আসি। দাঁড়াই। মাথা নুইয়ে যায় আমাদের। কুঁকড়ে যাই বিবেকের তাড়নায়। আর সেই পরমাণু বোমা পড়ার মুহূর্তটাকে চোখ বুঁজে স্মরণ করার চেষ্টা করি। ভাবি, সেই সময় ছোট্ট ছোট্ট শিশুরা কী দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল আর তার পর সেই ফুলগুলো ঝরে পড়েছিল! ওই শিশুদের নীরব কান্না এখনও আমাদের কানে বাজে!’’

‘হিরোশিমা, মাই লভ’- তুমি জয়ী! ৭১ বছর পর।

যারা তোমায় ধ্বংস করে দিয়েছিল, তারা আজ কাঁদছে! গভীর, গভীর অনুশোচনায়।

হিরোশিমা, তুমি শুনছ?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন