৫০ বলে অপরাজিত ৯৪। শুক্রবার হায়দরাবাদে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে বিরাট কোহালি দেখিয়ে দিয়েছেন কেন তাঁকে চেজমাস্টার বলা হয়। দুরন্ত ইনিংসে তিন ম্যাচের সিরিজে ভারতকে ১-০ এগিয়ে দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে গড়েছেন কিছু রেকর্ড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথমে ব্যাট করে তুলেছিল ২০৭ রান। জেতার জন্য ভারতকে করতে হত ২০৮ রান। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এত রান তাড়া করে ভারত কখনও জেতেনি। ২০০৯ সালে মোহালিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২০৭ রানের টার্গেট তাড়া করেছিল ভারত। সার্বিক ভাবে, এই ফরম্যাটে এটা পঞ্চম বৃহত্তম রান তাড়া করে জয়।
এই নিয়ে মোট তিন বার টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে দু’শোর বেশি রান তাড়া করে জিতল ভারত। যা ক্রিকেটবিশ্বে অন্য দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা এখনও পর্যন্ত দু’বার দু’শোর বেশি রান তাড়া করে জিতেছে।
বিরাট এই ম্যাচে ৯৪ রানে অপরাজিত থেকেছেন। যা তাঁর টি-টোয়েন্টি কেরিয়ারের সর্বোচ্চ রান। ২০১৬ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অপরাজিত ৯০ এতদিন ছিল তাঁর সেরা।
ভারত যে তিন বার দু’শোর বেশি রান তাড়া করে জিতেছে, তার প্রতিটিই এসেছে দেশের মাঠে। সফরকারী দল এই ফরম্যাটে ভারতে মোট চার বার দু’শোর বেশি রান তুলেছে। তার মধ্যে তিন বার তা তাড়া করে জিতেছে টিম ইন্ডিয়া।
এই ইনিংসে বিরাট ছয়টি ছক্কা মেরেছেন। যা তাঁর কেরিয়ারে যুগ্ম ভাবে এক ইনিংসে সর্বাধিক ছয়। আন্তর্জাতিক টি২০-তে ২৩ হাফ-সেঞ্চুরি করে ফেললেন তিনি। এই রেকর্ড বিশ্বে আর কোনও ক্রিকেটারের নেই।
ঘরের মাঠে ২০১৬ সাল থেকে ধরলে রান তাড়া করে ভারত জিতেছে ১০ ম্যাচ, হেরেছে দুটোতে। দুটো হারই এসেছে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। এই মরসুমে দেশের মাঠে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মোট দুটো টি-টোয়েন্টিতে হেরেছে। কিন্তু তার প্রতিটাতেই প্রথমে ব্যাট করে হারতে হয়েছে।
শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেসরিক উইলিয়ামস দিয়েছেন ৬০ রান। এই ফরম্যাটে ক্যারিবিয়ান কোনও বোলার এত রান আগে দেননি। ভারতের বিরুদ্ধে কোনও বোলারের এটা যুগ্ম ভাবে দ্বিতীয় জঘন্য বোলিং। ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রড ২০০৭ সালে ডারবানে ভারতের বিরুদ্ধে ৬০ রান দিয়েছিলেন।
১৫ ওভারের পর মাত্র ১৬ বলে ৫০ রান করেছেন কোহালি। এর মধ্যে ছিল দুটো চার ও পাঁচটি ছয়। যার ফলে আট বল বাকি থাকতে জিতে যায় ভারত। অন্য প্রান্তে থাকা ঋষভ পন্থ ও শ্রেয়স আইয়ার মিলিত ভাবে এই সময়ে ১৪ বলে করেন ১৬ রান।
টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে হাজার রান পূর্ণ করলেন লোকেশ রাহুল। তাঁর চেয়ে কম ইনিংসে হাজার রান করেছেন মাত্র দু’জন—পাকিস্তানের বাবর আজম (২৬ ইনিংস) ও বিরাট কোহালি (২৭ ইনিংস)। রাহুলের মতো ২৯ ইনিংস নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যারন ফিঞ্চও। ভারতের সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই ফরম্যাটে হাজার রান করলেন কর্নাটকি।
এই নিয়ে ১২ বার টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে ‘ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ’ হলেন কোহালি। বিশ্বক্রিকেটে যা যুগ্ম ভাবে প্রথম। আফগানিস্তানের মহম্মদ নবিও ১২ বার এই ফরম্যাটে ম্যাচের সেরা হয়েছেন। চলতি বছরে এটা বিরাটের এই ফরম্যাটে দ্বিতীয় বার সেরার পুরস্কার।