কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ

খেতাবি লড়াই সেই জমজমাট

বৃহস্পতিবার দুপুরে বারাসত স্টেডিয়ামের কৃত্রিম ঘাসের মাঠে প্রচণ্ড গরমে ভবানীপুরের বিরুদ্ধে ১৪ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে অসাধারণ গোল করে পিয়ারলেসকে এগিয়ে দেন এডমন্ড পেপরা।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:৪০
Share:

খেতাবের আরও কাছে পিয়ারলেস।—ফাইল চিত্র।

পিয়ারলেস ২ • ভবানীপুর ০

Advertisement

প্রথমবার কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল পিয়ারলেস। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে বারাসত স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে থমথমে মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন আনসুমানা ক্রোমা। হলুদ কার্ড দেখায় মহমেডানের বিরুদ্ধে পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন না জানার পর থেকে এমনিতেই মন খারাপ লাইবেরীয় তারকার। তার মধ্যে আবার স্ত্রী পূজার কাছেও ধমক খেলেন!

বৃহস্পতিবার দুপুরে বারাসত স্টেডিয়ামের কৃত্রিম ঘাসের মাঠে প্রচণ্ড গরমে ভবানীপুরের বিরুদ্ধে ১৪ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে অসাধারণ গোল করে পিয়ারলেসকে এগিয়ে দেন এডমন্ড পেপরা। ৫৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেন জিতেন মুর্মু। কিন্তু ৮১ মিনিটে বিপর্যয় নেমে আসে পিয়ারলেস শিবিরে! বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ক্রোমার শট ভবানীপুর গোলরক্ষক অভিজিৎ দাসের হাত থেকে বেরিয়ে যায়। দ্বিতীয় বারের চেষ্টায় কোনও মতে তিনি বল বার করেন। ক্রোমার দাবি, বল গোললাইন পেরিয়ে গিয়েছিল। ক্ষুব্ধ লাইবেরীয় তারকা রেফারির দিকে তেড়ে যান। সেই সময় গ্যালারিতে বসে থাকা ক্রোমার বাঙালি স্ত্রী পূজা উৎকণ্ঠিত হয়ে বলছিলেন, ‘‘শান্ত হও ক্রোমা। রেফারি তোমাকে কার্ড দেখালে কিন্তু পরের ম্যাচে খেলতে পারবে না।’’ ঠিক সেটাই হল। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে স্ত্রীর ধমকও খেলেন ক্রোমা। তখন তিনি শান্ত। বললেন, ‘‘নিশ্চিত গোল ছিল। অথচ রেফারি দিলেন না। উল্টে আমাকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে দিলেন।’’ তিনি যোগ করলেন, ‘‘মহমেডানের বিরুদ্ধে খেলতে পারব না বলে হতাশ লাগছে। অ্যান্টনি উল‌্‌ফ খেলবে আমার জায়গায়। আশা করছি, জিতব।’’ পিয়ারলেস কোচ জহর দাস বললেন, ‘‘ক্রোমার ছিটকে যাওয়াটা বড় ধাক্কা।’’

Advertisement

এই মুহূর্তে আট ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের শীর্ষে আনসুমানা ক্রোমারা। এক ম্যাচ বেশি খেলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা মহমেডানের পয়েন্ট ১৬। তৃতীয় স্থানে ভবানীপুর। তাদের ন’ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট। চতুর্থ স্থানে থাকা ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্টও ১৪। তবে একটি ম্যাচ কম খেলেছেন খাইমে সান্তোস কোলাদোরা। শেষ তিনটি ম্যাচ জিতলে ২৬ পয়েন্ট হবে পিয়ারলেসের। সে ক্ষেত্রে ইস্টবেঙ্গল বাকি সব ম্যাচ জিতলেও ২৩ পয়েন্টের বেশি পাবে না।

পিয়ারলেস যদি শেষ তিনটি ম্যাচের মধ্যে দু’টিতে জেতে এবং একটিতে হারে, সে ক্ষেত্রে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শেষ করবে তারা। তাতেও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ক্রোমাদের। কারণ, এই মুহূর্তে গোল পার্থক্যে অনেক এগিয়ে পিয়ারলেস। ক্ষীণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে মহমেডানেরও। তাদের ম্যাচ বাকি পিয়ারলেস ও ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে। এই দু’টো ম্যাচ জিতলে ২২ পয়েন্ট হবে মহমেডানের। তবে তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে পিয়ারলেসের দিকে। ক্রোমারা ফের পয়েন্ট নষ্ট করলেই স্বপ্নপূরণ হবে মহমেডানের। বৃহস্পতিবার জয়ের পরে পিয়ারলেস কোচ বলে দিলেন, ‘‘দু’টি ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হব।’’

পিয়ারলেস: জেমস কাইথান, অভিনব বাগ, মনোতোষ চাকলাদার, কালোন কিয়াতাম্বা, ফুলচাঁদ হেমব্রম, প্রদীপ মোহনরাজ (দীপঙ্কর দাস), পঙ্কজ মৌলা (অনিল কিস্কু), এডমন্ড পেপরা, দীপেন্দু দোয়ারি (লক্ষ্মী মাণ্ডি), জিতেন মুর্মু ও আনসুমানা ক্রোমা।

ভবানীপুর: অভিজিৎ দাস, এনজামুল হক, ভিক্টর খামুখা, কিংশুক দেবনাথ, অনুপ রাজ, সুপ্রিয় পণ্ডিত (ফ্রান্সিস জেভিয়ার), শরণ সিংহ, জগন্নাথ সানা, মুমতাজ আখতার, জ়িকাহি দোদোজ় ও বায়ি কামো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন