বিদায় মেডেনের রাজা, প্রয়াত বাপু নাদকার্নি

দেশের হয়ে খেলেছিলেন মাত্র ৪১টি টেস্ট। বল হাতে নিয়েছিলেন ৮৮ উইকেট।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:২৪
Share:

নির্ভীক: ১৯৬৭ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে বল করছেন বাপু নাদকার্নি। ফাইল চিত্র

চলে গেলেন ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার রমেশচন্দ্র গঙ্গারাম নাদকার্নি। ক্রিকেটমহলে যিনি পরিচিত ছিলেন বাপু নাদকার্নি হিসেবে। তাঁর জামাই বিজয় খারে সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘‘উনি অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন।’’ বাপু রেখে গেলেন স্ত্রী ও দুই মেয়েকে।

Advertisement

দেশের হয়ে খেলেছিলেন মাত্র ৪১টি টেস্ট। বল হাতে নিয়েছিলেন ৮৮ উইকেট। ব্যাটসম্যান হিসেবে মোট ১৪১৪ রান করেন। ছিল একটি সেঞ্চুরিও। তবে নিখুঁত লাইন এবং লেংথে বোলিং করে এই বাঁ হাতি স্পিনার খুব দ্রুত নজর কেড়ে নিয়েছিলেন ক্রিকেটবিশ্বের। ১৯৬৪ সালে মাদ্রাজে (বর্তমানে চেন্নাই) ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে টানা ২১টি মেডেন ওভার করে নাদকার্নি নজির গড়েছিলেন। সেই টেস্টে তাঁর বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৩২-২৭-৫-০।

মহারাষ্ট্রের নাসিকে জন্ম নাদকার্নির। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলেছিলেন ১৯১টি ম্যাচ। ছিলেন বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান। মোট রান ছিল ৮৮৮০। গড় ৪০.৩৬। ছিল ১৪টি সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ ২৮৩। বল হাতে নিয়েছিলেন ৫০০ উইকেট। সেরা বোলিং ছিল ১৭ রানে ৬ উইকেট। ১৯৫৫ সালে দিল্লিতে ভারতের হয়ে প্রথম টেস্ট খেলেন। প্রতিপক্ষ ছিল নিউজ়িল্যান্ড। তাঁর প্রথম অধিনায়ক ছিলেন পলি উমরিগড়। অভিষেক টেস্টে অবশ্য কোনও উইকেট ছিল না তাঁর। কিন্তু ক্রিকেটমহলে ‘অত্যন্ত কৃপণ’ স্পিনার হিসেবে পরিচিত বাপুকে নতুন ভাবে চেনা যায় ১৯৬০-৬১ মরসুমে দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে। কানপুর টেস্টে দুই ইনিংসে তাঁর বোলিং পরিসংখ্যান ছিল যথাক্রমে ৩২-২৪-২৩-০ এবং ৭-৪-৬-০। পরে দিল্লি টেস্টে দুই ইনিংসে তাঁর বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৩৪-২৪-২৪-১ এবং ৫২.৪-৩৮-৪৩-৪। ১৯৬৮ সালে শেষ টেস্ট খেলেন অকল্যান্ডে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধেই। অধিনায়ক ছিলেন মনসুর আলি খান পটৌডি। সেই ম্যাচেও বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ১৪-৬-১৬-১ এবং ২-১-১-১। ভারত জিতেছিল ২৭২ রানে।

Advertisement

তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে সচিন তেন্ডুলকর টুইট করেন, ‘‘বাপু নাদকার্নির মৃত্যুর খবরে মন খারাপ হয়ে গেল। একটি টেস্ট ম্যাচে ওঁর টানা ২১টি মেডেন নেওয়ার গল্প শুনে বড় হয়েছি। ওঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই। শান্তিতে থাকবেন স্যর।’’ স্মৃতিচারণ করেছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সুনীল গাওস্কর। ১৯৮০-৮১ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে তিনি ছিলেন ভারতীয় দলের সহকারী ম্যানেজার। গাওস্কর বলেছেন, ‘‘অনেক সফরেই তাঁকে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে পেয়েছিলাম। সকলকে প্রতি মুহূর্তে খুব উৎসাহ দিতেন। তাঁর সব চেয়ে জনপ্রিয় মন্তব্য ছিল ছোড়না মাত।’’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘বাপু এমন এক সময়ে ক্রিকেট খেলেছিলেন, যখন প্যাড বা গ্লাভস তেমন উন্নত ধরনের ছিল না। কিন্তু নাছোড় মানসিকতার বাপু কোনও সময়ে কেউ হার মানাতে পারেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন