লারাদের একরোখা মনোভাব দেখছি বিরাটে

বিরাটের এই রকম সাফল্যের রহস্যটা কী? আমার মনে হয়, চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা এবং তার পরে সব কিছু ভুলে লক্ষ্যের দিকে একরোখা ভাবে এগিয়ে যাওয়াটাই বিরাটকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে।

Advertisement

কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৪০
Share:

বিরাটদের এই ভঙ্গিমাতেই ইতিহাস খুঁজে পাচ্ছেন কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত।

অবস্থাটা আমি বুঝতে পারছি। বিরাট কোহালি নিয়ে নতুন কিছু লেখা রীতিমতো কঠিন কাজ হয়ে পড়ছে। সত্যি কথা বলতে কী, কোনও ব্যাটসম্যানের কাছে থেকে এ রকম ধারাবাহিকতা আগে কখনও দেখিনি।

Advertisement

বিরাটের এই রকম সাফল্যের রহস্যটা কী? আমার মনে হয়, চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা এবং তার পরে সব কিছু ভুলে লক্ষ্যের দিকে একরোখা ভাবে এগিয়ে যাওয়াটাই বিরাটকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। ২০০৯ সালে নির্বাচক থাকাকালীন আমরা যখন ওকে ফিরিয়ে আনলাম, তখনই জানতাম বিরাট এক জন বিশেষ প্রতিভাবান ক্রিকেটার। কিন্তু ও সবার প্রত্যাশাই ছাপিয়ে গিয়েছে। আমারও।

বিরাটকে একটা প্রজন্মের সেরা ক্রিকেটার বলাটা এখন নিয়ম হয়ে গিয়েছে। তাও যদি আমাকে কারও সঙ্গে বিরাটের তুলনা করতে বলা হয়, আমি দুটো নাম করব। ব্রায়ান লারা এবং স্টিভ ওয়। সেই একরোখা মনোভাব, সেই কোণঠাসা অবস্থায় পাল্টা লড়াই করার মনোভাব— এই তিন জনকে সমগোত্রীয় করে তুলেছে। এতে লারার কোনও দোষ নেই যে, ওকে তুলনায় একটা দুর্বল দলের হয়ে খেলতে হয়েছে। যার ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ম্যাচের ফল ওর পক্ষে যায়নি। কিন্তু লারার চেষ্টায় কোনও খামতি ছিল না।

Advertisement

রান তাড়া করতে নামলেই বিরাটের খেলা সম্পূর্ণ অন্য একটা গিয়ারে চলে যায়। আমি যে সময়ে খেলতাম, সেই যুগ থেকে ভিভিয়ান রিচার্ডস এবং জাভেদ মিয়াঁদাদের নাম সবার মনে থাকবে। ঠিক তেমনই বর্তমান যুগ স্মরণীয় থেকে যাবে বিরাট কোহালির জন্য। মনে রাখবেন, তিন নম্বরে নামা এক জন ব্যাটসম্যানের পক্ষে কিন্তু ম্যাচ জিতিয়ে, অপরাজিত থেকে ফিরে আসা খুব সহজ কাজ নয়। আর এই কঠিন কাজটাই নিয়মিত করে দেখায় বিরাট।

হায়দরাবাদে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জয় আরও একটা ব্যাপার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। আমাদের বোলিংয়ের ত্রুটিগুলো খুব তাড়াতাড়ি ঢেকে ফেলতে হবে। এটা মনে করবেন না যে, স্রেফ একটা ম্যাচ দেখে আমি সমালোচনা করছি। বিশেষ করে যে ম্যাচে পিচ একেবারে নিষ্প্রাণ ছিল, ফিল্ডিং ভাল হয়নি আর উল্টো দিকে ছিল সব বড় বড় পাওয়ার হিটার। কিন্তু এ সব মাথায় রেখেও বলছি, ডেথ ওভারে ভারতের হাতে আর একটু বেশি বিকল্প থাকা দরকার। তা ছাড়া আরও একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সুযোগ দিতে হবে। না হলে কিন্তু সমস্যা হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপের আগে কিন্তু মাত্র দশটা মতো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আর হাতে আছে ভারতের।

তবে যশপ্রীত বুমরা একবার চলে এলে, মহম্মদ শামি আর কুলদীপ যাদব আবার টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত বোলিং শুরু করলে, ভারতের কৌশল নিশ্চিত ভাবে বদলে যাবে। কিন্তু এখন হাতে যা মশলা তা দিয়ে ভারত আর একটু ভাল কিছু করতে পারে। পরের দুটো ম্যাচ কিন্তু তরুণদের কাছে শেখার একটা ভাল মঞ্চ হবে। আমি আগেও বলেছি, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সব সময় কঠিন প্রতিপক্ষ। তাই ওদের বিরুদ্ধে সিরিজ জিততে পারলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে ভারতীয়দের মনোবল অনেক বেড়ে যাবে। (টিসিএম)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন