Siliguri

বাড়ি ঢুকতে বাধা, বৃদ্ধাকে ‘হেনস্থা’ 

শুক্রবার খালপাড়া ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এলাকায় যায়। খবর পেয়ে বাসিন্দারাও যান।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২০ ০৩:৫০
Share:

স্কুলের বারান্দায় রয়েছেন কমলা দাস। নিজস্ব চিত্র

বলতে গেলে তিনি সহায়সম্বলহীন। ছাত্র পড়িয়ে আর এক বোন ও ভাগ্নের সাহায্যে দিন চলত। ফলে ভাড়া দিতে পারছিলেন না সময়মতো। অভিযোগ, সেই কারণে সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা কমলা দাসকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে হেনস্থা করেন তাঁর বাড়ির মালকিন। তাতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান স্থানীয়রা। প্রায় তিন সপ্তাহ সেখানে কাটিয়ে গত বুধবার তিনি বাড়ি ফিরলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। সেই সময়ে বৃদ্ধা এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। তাঁরাও থাকতে দেননি বলে দাবি। শেষ পর্যন্ত ভাড়াবাড়ির কাছে একটি প্রাথমিক স্কুলের বারান্দায় দু’দিন ধরে ঠাঁই হয়েছে কমলাদেবীর। শিলিগুড়ি পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের যাদবপল্লির ঘটনা।

Advertisement

শুক্রবার খালপাড়া ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এলাকায় যায়। খবর পেয়ে বাসিন্দারাও যান। পুলিশ তাঁদের জানায়, বৃদ্ধাকে তারা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নিয়ে যাচ্ছে। পরে কী করা যায় শনিবার দেখা হবে।

ভরা বর্ষায়, ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে স্কুলের খোলা বারান্দায় পড়ে রয়েছেন ওই বৃদ্ধা। বাসিন্দাদের দেওয়া মাদুর পেতে, কম্বল গায়ে দিয়ে কোনও রকমে দিন কাটছে। পাড়ার লোকই দু’দিন ধরে কিছু খাবারের ব্যবস্থা করছেন। কমলা জানান, বিয়ে করেননি তিনি। ছাত্র পড়িয়ে এবং এক বোন ও ভাগ্নের আর্থিক সহায়তায় তাঁর চলে যেত। এক বছর ধরে জলি ঘোষের বাড়িতে মাসে হাজার টাকায় ভাড়া ছিলেন। করোনা পরিস্থিতিতে টিউশন না করতে পারায় আয় হয়নি, ভাড়া দিতে পারছেন না। তাই বাড়ির মালকিন তাঁকে হেনস্থা করছিলেন বলে দাবি। তাঁর অভিযোগ, কখনও তাঁকে দিয়ে বাড়ির নিকাশি সাফ করানো হতো। কখনও গরম চা মুখে ছোড়া হত। অসুস্থ হয়ে পড়ায় ৩১ জুলাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয় বাসিন্দা বুলা রায়, মহম্মদ সালামরা। তাঁরা বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ গেলেও জলিদেবী কিছু শুনতে চাননি বলে দাবি। তিনি বলেন, ‘‘দু’মাসের ভাড়া বাকি। অসুস্থও। তাঁর জিনিসপত্র রাখা। তিনি যেন ভাড়া দিয়ে নিয়ে যান।’’ এলাকার কাউন্সিলর পিন্টু ঘোষ বলেন, ‘‘মহিলাকে কোনও বৃদ্ধাশ্রমে রাখা যায় কি না চেষ্টা হচ্ছে।’’

Advertisement

কমলাদেবীর দাবি, তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়েছে। বলেন, ‘‘চিকিৎসক জানিয়েছে সংক্রমণ মেলেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন