ফ্যাসিবাদ রুখতে ঐক্যের আহ্বান পড়ুয়া সমাবেশে

ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে এনেছিলেন যিনি, সেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে যোগী-রাজ্যে পরীক্ষা বয়কট চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৪৯
Share:

ফাইল চিত্র।

ডিসেম্বরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সামলাতে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের ঘরের মধ্যেই কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছিল যোগী আদিত্যনাথ সরকারের পুলিশ। রাতের অন্ধকারে ছাত্রদের একের পর এক বাইক আর স্কুটি গুঁড়িয়ে দিচ্ছিল তারা।

Advertisement

পুলিশের সেই এলোপাথাড়ি মারের মুখে মাথা নত করেননি পড়ুয়ারা। ক্যাম্পাসে পুলিশ ডেকে এনেছিলেন যিনি, সেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে যোগী-রাজ্যে পরীক্ষা বয়কট চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্টুডেন্টস এগেনস্ট ফ্যাসিজ়ম’ বা ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীরা’ শীর্ষক কনভেনশনের ফাঁকে এই অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছিলেন আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা ইশতিয়াক আহমেদ। ওই সম্মেলন ডেকেছিল এসএফআই।

তেলঙ্গানা সরকার সংশোধিত নাগরকিত্ব আইনের পক্ষে নেই। তবু রাস্তায় নামা ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ-প্রতিবাদ মেনে নিতে পারছে না তারা। সেখানে সরকারি দমনপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা শোনালেন হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নেতা অভিষেক কুমার।

Advertisement

সারা দেশে অসংখ্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান যখন কণ্ঠরোধের হুমকির মুখে, সেই সময়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ নাড়া দিচ্ছে সমাজকে। এ দিনের সম্মেলনে যোগ দিয়ে সেই প্রতিবাদকেই আরও জোরালো করার আহ্বান জানালেন অভিনেতা চন্দন সেন, চিত্রপরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, প্রেসিডেন্সির অধ্যাপক জাদ মাহমুদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রভাত পট্টনায়ক প্রমুখ। শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনভেনশনের প্রস্তাবনাতেও উঠে এল ক্ষুদ্র রাজনৈতিক মতপার্থক্য সরিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বৃহত্তর ঐক্যের কথা। জাতপাত থেকে অর্থনৈতিক মন্দা— সব কিছু নিয়েই দূরত্বের পাঁচিল ভাঙার কথা বলল ছাত্রদের এই কনভেনশন।

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক প্রভাত পট্টনায়ক বললেন, ‘‘ছাত্রদের প্রশ্ন করার স্পৃহাকে ভয় পায় ফ্যাসিবাদ। কেননা তারা তো আসলে যুক্তির বদলে বিশ্বাসের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’’ তাঁর পর্যবেক্ষণ, সারা দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নিজেদের বশংবদ উপাচার্যদের নিয়োগ করেও ছাত্রদের বশে আনা যায়নি বলেই শাসকের ক্ষোভ হিংসা হয়ে নে‌মে আসছে। ‘‘ক্যাম্পাসের আন্দোলনকে তাই বৃহত্তর সমাজের আঙিনায় নিয়ে নিয়ে যেতে হবে,’’ বললেন পট্টনায়ক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইটালিতে ফ্যাসিবাদ-বিরোধী আন্দোলনের থিমসঙ হয়ে উঠেছিল লোকগান ‘বেলা চাও’। সেই গানে গলা মিলিয়ে এ দিন ফ্যাসিবাদ-বিরোধী ঐক্যের কথা বললেন ছাত্রছাত্রীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন