প্রতিহিংসার রাজনীতি: বিজেপি

মুকুল, মনিরুলের বিরুদ্ধে খুনের মামলার চার্জশিট

একে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ মনে করছে বিজেপি। মুকুলবাবুর বক্তব্য, ‘‘চার্জশিটে কী হয়েছে, আমার এখনও জানা নেই। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতিগত ভাবে আমাকে ভয় পাচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

লাভপুর শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৫১
Share:

মুকুল রায় ও মণিরুল ইসলাম

তিন সিপিএম কর্মীকে খুনের মামলায় লাভপুরের বিধায়ক, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিল বীরভূম পুলিশ। জেলা পুলিশ সূত্রের দাবি, চার্জশিটে ৬৩ জনের নাম রয়েছে। হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ওই তালিকায় রয়েছে তখন তৃণমূলে থাকা অধুনা বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নামও।

Advertisement

একে ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’ মনে করছে বিজেপি। মুকুলবাবুর বক্তব্য, ‘‘চার্জশিটে কী হয়েছে, আমার এখনও জানা নেই। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতিগত ভাবে আমাকে ভয় পাচ্ছেন। তাই মামলায় জড়াতে চাইছেন। গোটা রাজ্যে বিশৃঙ্খলা ছড়াতে চাইছে তৃণমূল।’’ অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতিহিংসার কী আছে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি কি চার্জশিট লিখে দিয়েছেন? তদন্তে যদি কারও নাম আসে, পুলিশ তাদের নাম তো চার্জশিটে দিতেই পারে!’’

পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১০ সালে বালিরঘাটের সালিশি সভায় নিজের বাড়িতে ডেকে বুনিয়াডাঙা গ্রামের সিপিএমকর্মী তিন ভাই জাকের আলি, কোটন শেখ ও ওসুদ্দিন শেখকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে মনিরুল ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। তখন মনিরুল সবে ফব থেকে তৃণমূলে গিয়েছেন। ওই অভিযোগের পরে মনিরুল গ্রেফতার হন। মাস তিনেক হাজতবাস করে তৃণমূলের টিকিটে জিতে লাভপুরের বিধায়ক হন। ২০১৪-তে ওই মামলায় পুলিশ মনিরুল-সহ ২২ জনকে বাদ দিয়ে বোলপুর কোর্টে চার্জশিট জমা দেয়।

Advertisement

লোকসভা নির্বাচনের পরে দলের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে দিল্লিতে মুকুল রায়ের হাত ধরে দলবদলে বিজেপিতে যোগ দেন মনিরুল। তার কিছু পরে কলকাতা হাইকোর্টে পুনর্তদন্তের আবেদন জানায় নিহতের পরিবার। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বিচারপতি মধুমতী মিত্র রাজ্য পুলিশকে জেলা পুলিশ সুপারের তদারকিতে তিন মাসের মধ্যে ‘পুনর্তদন্ত’-এর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই চার্জশিটই জমা পড়েছে বোলপুর কোর্টে। বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলছেন, ‘‘এটা পুনর্তদন্ত নয়। নতুন তদন্ত করে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা পড়েছে।’’ পুলিশ সুপারের ব্যাখ্যা, ‘‘কোনও ঘটনায় তদন্তের পরে চার্জশিট জমা পড়ার পরে আবার তদন্ত হলে সেটাকে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট হিসেবেই ধরা হয়। তাতে কত জনের নাম রয়েছে বা কে কে আছেন, সেই নাম বলছি না। সেটা আদালতেরই বিচার্য।’’

পুলিশ সুপার পক্ষপাতের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘৯ বছর আগের যে মামলায় মুকুল রায়ের নামগন্ধও ছিল না, সেখানেও প্ররোচরনার অভিযোগে তাঁর নাম জড়ানো হল। আর যে পুলিশ প্রথম বার চার্জশিট থেকে মনিরুলের নাম বাদ দিয়েছিল, সেই পুলিশই ফের নাম যোগ করল। মনিরুল দলবদল না-করলে এটা হত? একে প্রতিহিংসা ছাড়া আর কী বলব?’’ ফোন, এসএমএস করেও মনিরুল ইসলামের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। নিহতদের মা জরিনা বিবি বলেন, ‘‘২০১০ থেকে সপরিবার গ্রামছাড়া। হত্যাকারীদের শাস্তির পরেই গ্রামে ফিরব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন